15/02/2025
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা যত তীব্রই হোক না কেন, জাতীয় নিরাপত্তা ও সংবেদনশীল তথ্যের ক্ষেত্রে প্রায় সব আমেরিকান প্রেসিডেন্টই দায়িত্বশীল অবস্থান নেন। এটাই তাদের রাষ্ট্রীয় নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
জাতীয় নিরাপত্তার শপথ:
প্রতিটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব গ্রহণের সময় একটি শপথ নেন, যেখানে তারা প্রতিশ্রুতি দেন যে, তারা সংবিধান রক্ষা করবেন এবং জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত গোপন তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করবেন। প্রেসিডেন্টদের মধ্যে রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও তারা সাধারণত রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা বজায় রাখার বিষয়ে একমত থাকেন।
উদাহরণ:
• বারাক ওবামা ও ডোনাল্ড ট্রাম্প: দুইজন সম্পূর্ণ ভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শের হলেও, ওবামা কখনোই ট্রাম্পের প্রশাসনের সংবেদনশীল বিষয়গুলো প্রকাশ করেননি। একইভাবে, ট্রাম্প ক্ষমতা হারানোর পরও বেশ কিছু গোপন নথি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হলেও, বাইডেন প্রশাসন এ বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক অবস্থান নেয়।
• জর্জ ডব্লিউ বুশ ও বিল ক্লিনটন: ক্লিনটনের পর বুশ প্রেসিডেন্ট হন, এবং ৯/১১ হামলার পরেও তিনি আগের প্রশাসনের গোপনীয় নীতি বজায় রাখেন, কারণ এটি রাষ্ট্রের নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল।
কেন তারা গোপন তথ্য ফাঁস করেন না?
1. জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে: প্রতিটি দেশের গুরুত্বপূর্ণ কৌশল, সামরিক পরিকল্পনা ও গোপন কার্যক্রম থাকে, যা প্রকাশ হলে রাষ্ট্রের ক্ষতি হতে পারে।
2. বিশ্ব কূটনীতি ও সম্পর্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্টরা অনেক গোপন চুক্তি ও কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখেন, যা ফাঁস হলে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
3. আইনগত বাধ্যবাধকতা: রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা রক্ষা আইন রয়েছে, যা ভঙ্গ করলে জবাবদিহিতার মুখে পড়তে হয়।
ব্যতিক্রমের নজির:
কিছু ক্ষেত্রে সাবেক প্রেসিডেন্টরা তাদের অভিজ্ঞতা বই বা সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে শেয়ার করেন, তবে তারা সচেতনভাবে জাতীয় নিরাপত্তার তথ্য গোপন রাখেন।
অন্য দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে এ নীতি বেশ কঠোরভাবে মেনে চলা হয়। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা যতই থাকুক না কেন, দেশের স্বার্থকে সবার ওপরে রাখা আমেরিকান রাজনীতির একটি বড় শিক্ষা।