20/08/2025
হাদীসের ছাত্রের বিস্ময়কর কাহিনী:
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
একদিন দারুল উলূম দেওবন্দে দাওরায়ে হাদীসের এক ছাত্র ইন্তেকাল করলেন।
তিনি মূলত আফগানিস্তানের বাসিন্দা ছিলেন। অনেক দূর হওয়ায় জানাযা পড়ে তাকে দেওবন্দেই কবরস্থ করা হলো। পত্রের মাধ্যমে খবর পাঠানো হলো তার পরিবারকে। কিন্তু দূরত্ব এত বেশি ছিল যে খবর পৌঁছাতে ছয় মাস লেগে গেলো।
দাফন করার ছয় মাস পর পরিবার এসে বলল,
“আমরা প্রিয় আমাদের সন্তানকে আমাদের দেশে আফগানিস্তানে নিয়ে যেতে চাই।”
তৎকালীন প্রিন্সিপাল হযরত মাওলানা ক্বারী মুহাম্মদ তৈয়্যব সাহেব রহ. তাদেরকে অনেক বুঝালেন, কিন্তু তারা কিছুতেই রাজি হলো না। পরে হযরত বাধ্য হয়ে আফগানিস্তানের অধিবাসী উস্তায হযরত আল্লামা শামসুল হক আফগানীর কাছে তাদেরকে পাঠালেন। তিনি-ও তাদেরকে অনেক বুঝালেন। কিন্তু তারা বলল—
“আমরা হয়তো আমাদের সন্তানের লাশ নিয়ে যাবো, নয়তো আমাদের পুরো পরিবারকে এখানে চলে আসতে হবে।”
শেষমেশ কবর খোঁড়া হলো…
হায়! আল্লাহর কী রহস্য! ছয় মাস পরও সেই হাদীসের ছাত্র তার কাফনে অক্ষত শুয়ে আছেন, দেহ অটুট, আর চারপাশ সুগন্ধে ভরে গেছে!
অশ্রুসিক্ত চোখে তাকে কাঠের বাক্সে রাখা হলো। সাথে পাঠানো হলো দেওবন্দের আরেকজন ছাত্রকে তার সম্মানার্থে। যাত্রাপথে যখন ট্রেন পেশাওয়ারে পৌঁছালো, পুলিশ হঠাৎ বাক্স খুললো। তারা ভেবেছিল—“এটা কোনো মেশক আম্বর (কস্তুরী), যা অবৈধভাবে পাচার হচ্ছে।”
কিন্তু বাক্স খুলতেই দেখা গেলো—
হাদীসের সেই ছাত্র, যার দেহ থেকে অনবরত সুগন্ধ ছড়াচ্ছে।
মানুষ অবাক! উপস্থিত সবাই কান্নায় ভেঙে পড়লো!
দৃশ্যের আরেক দিকও ছিলো সেই দিন…
এক নবাবের ছেলে, যে ইংল্যান্ডে গিয়েছিল পাশ্চাত্য শিক্ষা নিতে, সেখানেই সে মারা গিয়েছিল। তার লাশ তিন দিন পর দেশে ফিরলো। কিন্তু কী ভয়ঙ্কর অবস্থা! পচন আর দুর্গন্ধে আত্মীয়স্বজন কেউ তার চারপাশে দাঁড়াতেই পারছিল না। লাশ বহনের জন্য ভাড়া করতে হয়েছিল শ্রমিকদের।
হায়! কী ভিন্নতা…
একজন হাদীসের সৌভাগ্যবান ছাত্র—মৃত্যুর ছয় মাস পরও তার দেহ অক্ষত, সুগন্ধ ছড়াচ্ছে।
আরেকজন দুনিয়ার চাকচিক্যে মগ্ন ছাত্র—মাত্র তিন দিনেই দুর্গন্ধে ডুবে গেলো!
হযরত আল্লামা আফগানী রহ. এ ঘটনা শুনিয়ে বলতেন:
“হে মানুষ! শিক্ষা নাও! আল্লাহর দীন ও হাদীসের সেবার মর্যাদা কেমন, আর দুনিয়ার নেশায় ডুবে যাওয়ার পরিণাম কেমন!”
📖 (হাওয়ালা: খুতবাতে আফগানী, পৃষ্ঠা ৪৩২)