20/01/2025
১৮তম শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ভাইভা প্রশ্ন:
১.প্রশ্ন:নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ করার বিধান কি?
এবং ইমামের পিছনে মুক্তাদি কী সূরা ফাতিহা পাঠ করবে নাকি চুপ থাকবে?
২প্রশ্ন:জুমার খুতবা এবং দুই ঈদের খুতবা আরবিতে নাকি মাতৃভাষায়?
৩.প্রশ্ন :ইলমুল ফরায়েজকে কেনো নিসফুল ইলেম বলা হয়?
৪.প্রশ্ন:তাভীল পরিচিতি ও তাফসীরের সাথে পার্থক্য কী?
৫.প্রশ্ন : জামে (الجامع)হওয়ার শর্ত কয়টি?
৬.প্রশ্ন: সহীহ আল বুখারীর পূর্ণ নাম কী?
৭.প্রশ্ন:মেশকাত বৈশিষ্ট্য বলুন?
যারা ১৮তম ইবতেদায়ী মৌলভী, সহকারী মৌলভী, প্রভাষক [আদব,তাফসির,হাদিস ও ফিকহ্] এবং আরবি প্রভাষকে ভাইভা দিবেন তারা দেখে যেতে পারেন।
পর্ব-১
আল-হাদিস ও উলুমুল হাদিস।
১.হাদিস কাকে বলে?
উত্তর : নবী করীম (স.) -এর কথা,কাজ ও অনুমোদনকে হাদিস বলে।
২.হাদিসের কয়টি অংশ থাকে ও কি কি?
উত্তর : দুইটি। যথা: সনদ ও মতন।
৩. সনদ কাকে বলে?
উত্তর: হাদিস বর্ণনার সূত্র কে সনদ বলে।হাদিসের প্রথম অংশে থাকে কতিপয় ব্যক্তির নাম (সাহাবী,তাবি'ঈ অন্যান্য হাদিস বর্ণনাকারীর নাম)এই নামগুলি হল সনদ।
৪.মতন কাকে বলে?
উত্তর: হাদিসের মূল কথাকে মতন বলে।রসূল(স.) -এর কথা,কর্মের বর্ণনা ও মৌনসম্মতি বা অনুমোদনের বর্ণনা হল মতন।
৫.হাদিসে সনদের গুরুত্ব কি?
উত্তর: সনদ যাচাই বাছাই করে হাদিসের শুদ্ধাশুদ্ধি ও মান (সহীহ,হাসান,যয়ীফ ইত্যাদি)নির্ণয় করা হয়।
৬.রাবীর(হাদিসের বর্ণনাকারীর)গুণাবলী অনুযায়ী হাদিস কত প্রকার ও কি কি?
উত্তর :চারপ্রকার।যথা:
১.সহীহ
২.হাসান
৩.যয়ীফ
৪.মঊদূ’
৭.সহীহ হাদিস কাকে বলে?
উত্তর:সহীহ হাদিস বলা হয়,যে হাদিসের সনদ মুত্তাসিল এবং প্রত্যেক বর্ণনাকারী আদালত ও যবতের যাবতীয় গুণসম্পন্ন। একই সাথে হাদিসটি শায ও ইল্লাতমুক্ত তাকে সহীহ হাদিস বলে।
৮.সহীহ হাদিসের শর্ত কয়টি?
উত্তর: পাঁচটি।যথা :
১.সনদ মুত্তাসিল
২.রাবী আদালত(ন্যায়পরায়ণ) সম্পন্ন
৩.রাবী যবত(স্মৃতিশক্তি) সম্পন্ন
৪.শায নয়
৫.ইল্লাতমুক্ত
৯.হাসান হাদিস কাকে বলে?
উত্তর:যে হাদিসের সনদ মুত্তাসিল তবে বর্ণনাকারীর স্মরণ শক্তি কম এবং হাদিসটি শায ও ইল্লাতমুক্ত তাকে হাসান হাদিস বলে।
১০.যয়ীফ হাদিস কাকে বলে?
উত্তর: যে হাদিসটি শর্ত পূরণের দিক দিয়ে হাসান হাদিসের সমপর্যায় নয় অর্থাৎ হাসান থেকে নিম্নমানের এরূপ হাদিসকে যয়ীফ হাদিস বলে।
১১.মঊদূ’(জাল) কাকে বল?
উত্তর: রসূলের (স.) হাদিস নয় বা হাদিসের অংশবিশেষও নয় বরং নিজের অথবা অন্যের বানানো শব্দ কিংবা বাক্য রসূলের(স.) হাদিস হিসেবে চালিয়ে দেয়াকে মঊদূ’ হাদিস বলে।
১২.মুতাওয়াতির হাদিস কাকে বলে?
উত্তর: যে হাদিসের বর্ণনাকারীর সংখ্যা এত অধিক যে, তাঁরা সকলেই একত্রিত হয়ে মিথ্যা রচনা করা স্বভাবতই অসম্ভব বলে বিবেচিত হয়, তাকে মুতাওয়াতির হাদিস বলে।
১৩.মাশহুর হাদিস কাকে বলে?
উত্তর:যে হাদিসে প্রত্যেক স্তরে কমপক্ষে তিনজন রাবী বা ততোধিক রাবী বর্ণনা করেছেন। তবে তা মুতাওয়াতির এর পর্যায়ে পৌঁছে নি। তাকে মাশহুর হাদিস বলে।
১৪.সহীহাইন কাকে বলে এবং কয়টি?
উত্তর:হাদিসের দুটি বিশুদ্ধ গ্রন্থকে সহীহাইন বলে।সহীহাইন দুইটি,যথা: সহীহ আল-বুখারী ও সহীহ আল-মুসলিম।
১৫.মুত্তাফাকুল আলাইহি কাকে বলে?
উত্তর : যে হাদিসের বিশুদ্ধতার ব্যাপারে ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম উভয়ই একমত এবং তারা উক্ত হাদিস তাদের নিজেদের কিতাব বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফে লিপিবদ্ধ করেছেন তাই মুত্তাফাকুন আলাইহি হাদিস। যে হাদিস সহিহ বুখারি ও সহিস মুসলিম শরিফে পাওয়া যায় তাকেই মুত্তাফাকুন আলাইহি হাদিস বলা হয়।
অথবা যেসব হাদীস একই সাথে ইমাম বুখারী (রহ.) ও ইমাম মুসলিম (রহ.) স্বীয় গ্রন্থে সংকলন করেছেন ।
সেই হাদিস কে মুত্তাফাকুন আলাইহি বলে।
১৬.হাদিস সংকলনের যুগ কয়টি এবং কি কি?
উত্তর:তিনটি। যথা: হিজরির প্রথম শতক,হিজরির দ্বিতীয় শতক, হিজরির তৃতীয় শতক।
১৭.হাদিস সংকলনের স্বর্ণযুগ বলা হয় কোন যুগকে?
উত্তর: হিজরির তৃতীয় শতককে।
১৮.সাহাবিদের মধ্যে সর্বপ্রথম কে হাদিস গ্রন্থ সংকলন করেন এবং গ্রন্থের নাম কি?
উত্তর: হযরত আমর ইবনে আল আস(র.)।আস সহীফাতুস সাদিকা।
১৯.তাবেঈদের মধ্যে সর্বপ্রথম কে হাদিস গ্রন্থ সংকলন করেন ?
উত্তর: ইমাম ইবনে শিহাব যুহরী।
২০.কাকে প্রথম পূর্নাঙ্গ হাদিস সংকলনকারী বলা হয়?
উত্তর: ইমাম ইবনে শিহাব যুহরী।
২১.সর্বপ্রথম বিশুদ্ধ হাদিসের গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত হতো?
উত্তর: মুয়াত্তা মালেক-ইমাম মালেক (রহ.)।
২২.কুতুবে সিত্তাহ কাকে বলে?
উত্তর: হিজরি তৃতীয় শতকে সংকলিত হাদিসের ছয়টি গ্রন্থকে "কুতুবে সিত্তাহ " বলে।
২৩.কুতুবে সিত্তাহ কয়টি ও কি কি?
উত্তর: ছয়টি।যথা:১.সহীহ আল বুখারী-ইমাম বুখারী(রহ.)।
২.সহীহ আল- মুসলিম- ইমাম মুসলিম(রহ.)।
৩.সুনানে আবু দাউদ- ইমাম আবু দাউদ(রহ.)।
৪.জামে আত-তিরমিজি- ইমাম তিরমিজি(রহ.)।
৫.সুনানে নাসাঈ- ইমাম নাসায়ী(রহ.)। ৬.সুনানে ইবনে মাজাহ-ইমাম ইবনে মাজাহ (রহ.)।
২৪.হাদিস সংকলনের বিখ্যাত কয়েক জন ইমাম বলুন
উত্তর : ইমাম আযম আবু হানীফা (রহ.),ইমাম মালিক(রহ.), ইমাম শাফিঈ(রহ.), ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল(রহ.), ইমাম বুখারী(রহ.), ইমাম মুসলিম(রহ.), ইমাম আবু দাউদ(রহ.), ইমাম তিরমিজি(রহ.), ইমাম নাসায়ী(রহ.), ইমাম ইবনে মাজাহ (রহ.)ও ইমাম তাহাবী (রহ.)।
২৫. জান্নাতে কাদের সংখ্যা বেশি হবে ?
উত্তর: দরিদ্রদের ।
২৬.জাহান্নামে কাদের সংখ্যা বেশি হবে ?
উত্তর: নারীদের ।
২৭.কোন সাহাবীকে (রা:) আল্লাহর তরবারী উপাধি দেওয়া হয়েছিলো ?
উত্তর: খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা:) ।
২৮.একজন মুসলিম ও একজন কাফিরের মধ্যে পার্থক্যকারী ইবাদাত কোনটি ?
উত্তর: সালাত ।
২৯. পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চারজন নারী কে কে ?
উত্তর: আসিয়া (আ:), মারিয়াম (আ:), খাদিজা (রা:), ফাতিমা (রা:) ।
৩০. কোন নবীকে আল্লাহ্ তা'আলা পাখির ভাষা বুঝার ক্ষমতা দিয়েছিলেন ?
উত্তর: সুলাইমান (আ:) ।
৩১. প্রথম রাসূল কে ছিলেন ?
উ: নূহ (আ:) ।
৩২.সর্বপ্রথম অহংকার করে কে ?
উত্তর: ইবলিশ ।
৩৩. বিবাহিত ব্যভিচারীর শাস্তি কি ?
উত্তর: রজম (কোমর/ গলা পর্যন্ত পুতে ঢিল মেরে হত্যা) ।
৩৪. কোন সূরা কে সূরাতুশ 'শিফা' বলে হয়?
উত্তর: সূরা ফাতিহা ।
৩৫. জীবিত অবস্থাতেই কতজন সাহাবী (রা:) জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছিলেন ?
উত্তর: ১০ জন ।
৩৬.মুনাফিদের জন্য কোন কোন সালাত আদায় করা কষ্টকর ?
উত্তর: ইশা ও ফজর ।
৩৭.ইসলামের চারজন খলিফা কে কে?
উত্তর: ইসলামে ৪ জন খলিফা হলেন ১. হযরত আবু বকর (রা.) ২. হযরত ওমর (রা.) ৩. হযরত ওসমান (রা.) ৪. হযরত আলী (রা.)।
পর্ব - ২
১৪.মুশরিক কাকে বলে?
উত্তর : যে ব্যক্তি এক আল্লাহর সাথে কাউকে অংশীদার (শিরক) সাবস্ত করে তাকে মুশরিক বলে।
অথবা যে ব্যক্তি শিরক করে তাকে মুশরিক বলে ।
১৫.শিরক কত প্রকার?
উত্তর :দুই প্রকার।যথা:
১.শিরকে আকবর(বড় শিরক)।যেমন :আল্লাহর স্ত্রী ও ছেলে -মেয়ে আছে বলে বিশ্বাস করা।
২.শিরকে আছগর(ছোট শিরক)।যেমন :রিয়া(লৌকিকতা)।
১৬.শিরক প্রধানত কত প্রকার?
উত্তর :শিরক প্রধানত তিন প্রকার। যথা:
১. আল্লাহর সত্ত্বার সাথে শিরক করা। যেমনঃ আল্লাহর স্ত্রী, পুত্র, কন্যা আছে বলে মনে করা। এরকম শিরক খ্রিষ্টানরা করে থাকে।
২. আল্লাহর গুণাবলিতে শিরক করা। যেমনঃ নবী, রাসূল ও আওলিয়াগণ গায়েব জানেন বলে মনে করা, কারণ গায়েবের জ্ঞান শুধুমাত্র আল্লাহ তয়ালাই জানেন। সূফীগণ সাধারণত এই ধরনের শিরক করে থাকে।
৩. আল্লাহর ইবাদতে শিরক করা। যেমনঃ কবর কিংবা মাজারে সিজদা দেওয়া, কোন পীরকে সিজদা দেওয়া। এমনকি! উপাসনার নিয়্যতে কারো সামনে মাথা নত করাও শিরকের অন্তর্ভুক্ত।
১৭.ফাসিক কাকে বলে?
উত্তর :বাংলাতে ‘ফাসেক’ শব্দের অর্থ করা হয় পাপীষ্ঠ। যে ব্যক্তি নিয়মিত কবীরাহ গুনাহতে লিপ্ত থাকে অথবা প্রকাশ্যে আল্লাহর নিষিদ্ধ ঘোষিত হারাম কাজ করতে অভ্যস্ত এবং তোওবা করে পাপ কাজ থেকে ফিরে আসেনা, তাকে ফাসেক বলা হয়। ফাসেক ব্যক্তি যদি নামাযী মুসলমান হয়, দ্বীনের অন্য বিধি-বিধান মেনে চলে কিন্তু কিছু কবীরাহ গুনাহতে লিপ্ত থাকে, তাহলে মীযানে তার নেক আমল যদি পাপ কাজের ওজনের চাইতে ভারী হয় তাহলে সে জান্নাতে যাবে। অথবা আল্লাহর বিশেষ রহমতে তাকে যদি ক্ষমা করে দেন, তাহলে সে কোন শাস্তি ছাড়াই সরাসরি জান্নাতে যাবে। কিন্তু তার পাপ কাজ যদি নেকীর চাইতে বেশি ভারী হয় এবং আল্লাহর রহমত পেতে ব্যর্থ হয় তাহলে সে জাহান্নামে পাপের শাস্তি ভোগ করবে।
১৮.কাফের কাকে বলে?
উত্তর :কাফির শব্দটি كفار ধাতু থেকে নির্গত। এর শাব্দিক অর্থ হল ঢেকে রাখা, লুকিয়ে রাখা এবং এর ব্যবহারিক অর্থ হল অবাধ্যতা, অস্বীকার, অকৃতজ্ঞতা - ইত্যাদি। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায়, কুফর হল ঈমানের বিপরীত। সংজ্ঞাঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর নাযিলকৃত দ্বীন ইসলাম, যেমনঃ কুরআনুল কারীম বা এর কোনো আয়াত, মুহাম্মাদ (সঃ) অথবা কোনো একজন নবী/রাসূলকে অস্বীকার, ইসলামি আক্বিদার মৌলিক কোনো ধর্মীয় বিশ্বাস বা অকাট্য দলিল দিয়ে প্রমাণিত ইসলামের এমন কোনো বিধি-বিধানকে অস্বীকার করে, অবিশ্বাস করে, প্রত্যাখ্যান অথবা এইগুলো নিয়ে হাসি-ঠাট্টা/অবজ্ঞা করে, তাকে কাফির বলা হয়।
১৯.মুনাফিক কাকে বলে?
উত্তর :মুনাফিক (আরবিতে: منافق, বহুবচন মুনাফিকুন) একটি ইসলামি পরিভাষা যার অর্থ একজন প্রতারক বা "ভন্ড ধার্মিক" ব্যক্তি। যে প্রকাশ্যে ইসলাম চর্চা করে; কিন্তু গোপনে অন্তরে কুফরী বা ইসলামের প্রতি অবিশ্বাস লালন করে। আর এ ধরনের প্রতারণাকে বলা হয় নিফাক (আরবি: نفاق)।
২০.হাদিসে মুনাফিকের আলামত কয়টি রয়েছে?
উত্তর :চারটি। যথা:১. সম্পদ গচ্ছিত রাখা হলে তা হনন করে; ২. কথা বললে মিথ্যা বলে; ৩. অঙ্গীকার করলে ভঙ্গ করে; এবং ৪. বিবাদে লিপ্ত হলে বিস্ফোরিত হয় (فَجَرَ, ফাজারা)/অশ্লীল গালি দেয়/সত্য থেকে বিচ্যুত হয়/অত্যন্ত অবিবেচক, অযৌক্তিক, মূর্খ, মন্দ এবং অপমানজনকভাবে আচরণ করে।"[৪]
অথবা তিনটি। যথা:
(১) কথা বললে মিথ্যা বলে।
(২) ওয়াদা করলে তা খেলাপ করে।
(৩) আমানত রাখা হলে তাতে খিয়ানত করে।’’ মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে, ’’যদিও সে রোযা রাখে এবং নামায পড়ে ও ধারণা করে যে, সে মুসলিম।’’
(৪)আরেকটা হলো হিংসা করা।
২১. প্রধান ফেরেশতা কারা?
উত্তর: জিবরাঈল, ইসরাফীল, মীকাঈল ও মালাকুল মওত (আঃ)।
২২. ওহী নাযিল করার দায়িত্ব কোন ফেরেশতার ছিল?
উত্তর: জিবরাঈল (আঃ) এর।
২৩. কোন ফেরেশতাকে সকল ফেরেশতার সরদার বলা হয়?
উত্তর: জিবরাঈল (আঃ) কে।
২৪. ইসরাফীল (আঃ) এর দায়িত্ব কি?
উত্তর: আল্লাহর নির্দেশ ক্রমে শিংগায় ফুৎকার দেয়া।
২৫. মীকাঈল ফেরেশতার কাজ কি?
উত্তর: তিনি বৃষ্টি বর্ষণ, উদ্ভিদ উৎপাদন প্রভৃতি কাজে নিয়োজিত।
২৬ প্রাণীকুলের জান কবজের কাজে নিয়োজিত ফেরেশতার নাম কি?
উত্তর:মালাকুল মওত। (আজরাঈল নাম বিশুদ্ধ নয়)
২৭. কোন ফেরেশতা কি মানুষের কল্যাণ-অকল্যাণ করতে পারে?
উত্তর: না, আল্লাহ্ ছাড়া কেউ কারো কোন কল্যাণ-অকল্যাণের মালিক নয়- ফেরেশতা, জিন, মানুষ- নবী, ওলী কেউ না।
২৮.জান্নাত স্তর কয়টি ও কি কি?
উত্তর : আটটি।যথা:
আট প্রকার জান্নাতের কথাই আল-কুরআন ও সহীহ হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রকারগুলো হচ্ছে :
১.জান্নাতুল ফিরদাউস।
২.জান্নাতুন্ নায়ীম।
৩.জান্নাতুল মাওয়া।
৪.জান্নাতুল আদন।
৫.জান্নাতু দারুস সালাম।
৬.জান্নাতুদ দারুল খুলদ।
৭.জান্নাতু দারুল মাকাম।
৮.জান্নাতু দারুল কারার।
√১.জান্নাতুল ফিরদাউস – জান্নাতের সর্বোচ্চ বাগান।[৪] (আল-কাহফ,[১৮:১০৭] আল-মু’মিনূন[২৩:১১])
২.দারুল মাকাম – বাড়ি (ফাতির[৩৫:৩৫])
৩.দারুল কারার – আখেরাতের আলয়(আল-আনকাবূত)[২৯:৬৪])
৪.দারুস সালাম – শান্তির নীড় (ইউনুস,[১০:২৫] আল আনআম[৬:১২৭]
৫.জান্নাতুল মাওয়া – বসবাসের জান্নাত (আন-নাজম[৫৩:১৫])
৬.দারুন নাঈম – নেয়ামত পূর্ণ কানন/বাগান (সূরা আল-মায়িদাহ [৫:৬৫] ইউনুস,,[১০:০৯] আল-হাজ্জ[২২:৫৯]
৭.দারুল খুলদ – চিরস্থায়ী বাগান (আল-ফুরকান[২৫:১৫])
৮.জান্নাতুল আদন – অনন্ত সুখের বাগান (আত-তাওবাহ্:[৩:৭২]আর-রাদ[১৩:২৩]
এ আটটি জান্নাতের মধ্যে জান্নাতুল ফিরদৌস হলো সর্বশ্রেষ্ঠ।
২৯.জান্নাতের দরজাসমূহ কয়টি?
উত্তর :
হাদিস অনুসারে জান্নাতের মোট আটটি দরজা রয়েছে।
১.বাবুস সালাহ
২.বাবুল জিহাদ
৩.বাবুস সাদাকাহ
৪.বাবুর রাইয়ান[৫]
৫.বাবুল হজ
৬.বাবুল কাদিমিনুল গায়িধ
৭.বাবুল ইমান
৮.বাবুজ জিকর
(মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৯৫৭)।
৩০.জাহান্নামের স্তর কয়টি ও কি কি?
উত্তর :সাতটি। যথা:
জাহান্নামের স্তর ৭ টি। ১.জাহান্নাম ২. লাজা। ৩.হুতামাহ। ৪.সায়ীর। ৫.সাকার্। ৬.জাহিম। ৭.হাবিয়াহ।
[১]জাহীম ("জ্বলন্ত আগুন"[২]), হুতামাহ ("চূর্ণবিচূর্ণকারী"[৩]), হাবিয়াহ ("অতল গহ্বর"[৪]), লাযা, সা’ঈর ("উজ্জ্বল অগ্নিকাণ্ড"[৫]), সাকার,[৬][৭] আন-নার।
৩১.দ্বীন কয়টি বিষয়ের সমষ্টি এবং কি কি?
উত্তর :তিনটি। যথা:
১.আল -ঈমান।
২.আল- ইসলাম।
৩.আল -ইহসান।
৩২.কবরে কয়টি প্রশ্ন করা হবে এবং কি কি?
উত্তর :তিনটি।যথা :
১.তোমার রবকে?
২.তোমার দ্বীন কি?
৩.এই ব্যক্তি (মুহাম্মদ স.) সম্পর্কে তোমার কি মতামত?
৩৩.ইবাদাত কাকে বল?
উত্তর :
ইবাদাত শব্দটি আবাদা শব্দের ক্রীয়ামূল; যার অর্থ আনুগত্য করা, দাসত্ব করা, গোলামী করা, বিনয়ী হওয়া, অনুগত হওয়া, মেনে চলা ইত্যাদি; ইসলামী পরিভাষায়, আল্লাহর একত্ববাদকে মান্য করে চলার নামই ইবাদাত; এর বাইরে বা বিপরীতে যা কিছু করা হোক না কেন, তা ইবাদাত বলে গণ্য হবে না।
ইবাদতের পরিচয় দিতে গিয়ে শাইখুল ইসলাম ইবনে তায়মিয়া (র:) বলেন,
ইবাদাত হচ্ছে রাসুলগণের মাধ্যমে আল্লাহ যে বিধান দিয়েছেন তা মেনে চলা। তিনি আরো বলেন, আল্লাহ যা ভালবাসেন ও পছন্দ করেন এমন সকল প্রকাশ্য ও গোপনীয় কাজ বর্জন করা।
শেষ পর্ব
আল কুরআন মাজীদ :
৩৬.মুত্তাকি কাকে বলে?
উত্তর: মুত্তাকি শব্দটি এসেছে 'তাকওয়া' শব্দ থেকে। তাকওয়া শব্দের অর্থ হচ্ছে খোদাভীতি তথা গোনাহ থেকে আত্মরক্ষা করা। অর্থাৎ, যিনি আল্লাহকে ভয় করতঃ সকল প্রকার খারাপ কাজ হতে নিজেকে বিরত রাখেন, তাঁকে মুত্তাকি বলা হয়।
মুত্তাকীন কারা বা মু্ত্তাকী ব্যক্তির পরিচয়
মুত্তাকী (مُتٌَقِىْ ) এমন ব্যক্তি যার মধ্যে তাকওয়া রয়েছে। তাকওয়া একটি অসাধারণ নৈতিকগুণ। আল্লাহর কাছে মর্যাদা প্রাপ্তির এক অনিবার্য উপায়। পরকালীন জীবনে ব্যক্তির ক্ষতির কারণ হতে পারে এমন কাজ ও বিষয় থেকে বিরত থাকাই তাকওয়া।
৩৭. সূরা আল-বাকারাহ মুত্তাকীদের কয়টি বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলী বলা হয়েছে ও কি কি?
উত্তর :পাঁচটি। যথা:
১. গায়বের প্রতি বিশ্বাসী : মুত্তাকী ব্যক্তির প্রথম পরিচয় হলাে তারা গায়ব বা অদৃশ্য বিষয়সমূহে ঈমান পােষণ করে। আর গায়ব হলাে এমন বিষয় যা ইন্দ্রিয় দিয়ে অনুভব করা যায় না। সাধারণ বুদ্ধি দিয়ে বােঝা যায়।
২. সালাত কায়েমকারী : মুত্তাকীর দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন- وَيُقِىْمُوْنَ اصٌَلٰوتَ
৩. আল্লাহর পথে সম্পদ ব্যয়কারী : মুত্তাকীর তৃতীয় বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন- وَمِمٌَا رَزَقْنَهُم يُنفِقُوْنَ
৪. আসমানি কিতাবে বিশ্বাসী : মুক্তাকী আসমানি কিতাব এর সত্যতায় বিশ্বাস রাখে।
৫. পরকালে বিশ্বাসী : মুত্তাকীরা পরকালে সুদৃঢ় প্রত্যয় পােষণ করে। আল্লাহ বলেন- وَبِا لْاٰ خِرَتِ هُمْ يُوْ قِنُوْن
৪)। ইয়াকিন হলাে অত্যন্ত সুদৃঢ় বিশ্বাস। মুত্তাকীরা বিশ্বাস করে- পৃথিবী ক্ষণস্থায়ী।
৩৮.সূরা মুমিনুনে মুমিনদের কয়টি গুণের কথা বলা হয়েছে ও কি কি?
উত্তর: এগারোটি। যথা:
মুমিনদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা সূরা মুমিনুনে ইরশাদ করেন।
১. মুমিনরা সফলকাম হয়ে গেছে
২. যারা নিজেদের নামাজে বিনয়াবনত
৩. যারা অনর্থক কথাবার্তায় নির্লিপ্ত
৪. যারা জাকাত দান করে থাকে
৫. যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে
৬.তবে তাদের স্ত্রী ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না
৭.অতঃপর কেউ এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারা সীমা লঙ্ঘনকারী হবে
৮. এবং যারা আমানত ও অঙ্গীকার সম্পর্কে হুঁশিয়ার থাকে
৯.যারা তাদের নামাজসমূহের খবর রাখে
১০. তারাই উত্তরাধিকার লাভ করবে
১১.তারা শীতল ছায়াময় উদ্যানে চিরকাল থাকবে।
৩৯.সূরা আল -ফুরকনে রহমানের বান্দাহর কয়টি গুণের কথা বলা হয়েছে ও কি কি?
উত্তর : বারোটি। যথা:
মহান আল্লাহ্ বর্ণনা করেছেন পবিত্র কুরআনের সূরা ফুরকনে-
প্রথম গুণ : বান্দা হয় প্রভুর মালিকানাধীন ও তার আদেশ-মর্জি অনুসারী।
দ্বিতীয় গুণ : তারা পৃথিবীতে নম্রতা ও বিনয় সহকারে চলাফেরা করে।
তৃতীয় গুণ : যখন অজ্ঞ লোকজন তাদের সাথে কথা বলে, তখন তারা বলে 'সালাম'।
চতুর্থ গুণ : তারা তাদের পালনকর্তার সামনে সিজদারত ও দণ্ডায়মান অবস্থায় রাত্রিযাপন করে।
পঞ্চম গুণ : সর্বদা আখিরাত ও জাহান্নামের আযাব সম্পর্কে ভয় করে।
ষষ্ঠ গুণ : তারা যখন ব্যয় করে, তখন অযথা ব্যয় করে না এবং কৃপণতাও করে না এবং তাদের পন্থা হয় এ দুয়ের মধ্যবর্তী।
সপ্তম গুণ : তারা আল্লাহ্র সাথে অন্য উপাস্যের এবাদত করে না।
অষ্টম গুণ : তারা আল্লাহ্ যার হত্যা অবৈধ করেছেন, সঙ্গত কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না।
নবম গুণ : তারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে।
দশম গুণ : তারা মিথ্যা ও বাতিল কাজে যোগদান করে না,
একাদশ গুণ : যখন তারা মিথ্যা ক্রিয়াকর্মের সম্মুখীন হয়, তখন মান রক্ষার্থে ভদ্রভাবে এড়িয়ে চলে যায়।
দ্বাদশ গুণ : তাদেরকে তাদের পালনকর্তার আয়াতসমূহ বোঝানো হলে তাতে অন্ধ ও বধির সদৃশ আচরণ করে না।
৪০. হযরত লুকমান (আ.) স্বীয় সন্তানকে কয়টি উপদেশ দিয়েছেন ও কি কি?
উত্তর : দশটি। যথা:
১. আল্লাহর সাথে শিরক না করা।[সূরা লুকমান-৩১:১৩]
২.সলাত কায়েম করো।[সূরা লুকমান-৩১:১৩]
৩.সৎ কাজের নির্দেশ দেয়া।[সূরা লুকমান-৩১:১৩]
৪.অসৎকর্মে নিষেধ করা।[সূরা লুকমান-৩১:১৭]
৫.বিপদে -আপদে ধৈর্য্য ধারণ করা।[সূরা লুকমান-৩১:১৭]
৬.অহংকার না করা।[সূরা লুকমান-৩১:১৮]
৭.মানুষকে অবজ্ঞা না করা।[সূরা লুকমান-৩১:১৮]
৮.উচ্ছৃঙ্খলভাবে জমিনে বিচরণ না করা।[সূরা লুকমান-৩১:১৮]
৯.সংযতভাবে জমিনে পদচারণ করা। [সূরা লুকমান-৩১:১৯]
১০.কণ্ঠস্বর নিচু করা।[সূরা লুকমান-৩১:১৯]
৪১.আল -কুরআনে কতজন নবীর নাম উল্লেখ রয়েছে ও কারা কারা?
উত্তর :পঁচিশ জন।যথা:
পবিত্র কুরআনে বর্ণিত ২৫ জন নবীর নাম:-
১. আদম (আ.)
২. নূহ (আ.)
৩. হূদ (আ.)
৪. ছালেহ (আ.)
৫. ইব্রাহীম (আ.)
৬. লূত্ব (আ.)
৭. ইসমাঈল (আ.)
৮. ইসহাক্ব (আ.)
৯. ইয়াকূব (আ.)
১০. ইউসুফ (আ.)
১১. আইয়ূব (আ.)
১২. শু'আয়েব (আ.)
১৩. মূসা (আ.)
১৪. হারুণ (আ.)
১৫. ইউনুস (আ.)
১৬. দাঊদ (আ.)
১৭. সুলায়মান(আ.)
১৮. ইলিয়াস (আ.)
১৯. আল ইয়াসা (আ.)
২০. যুল-কিফল (আ.)
২১. যাকারিয়া (আ.)
২২. ইয়াহ্ইয়া (আ.)
২৩. ইদরীস (আ.)
২৪. ঈসা (আ.)
২৫. মুহাম্মদ (সা.)
৪২.মহান আল্লাহ তায়ালা সূরা" আল হুজরাতে "কয়টি সামাজিক বিধিনিষেধ কথা বলেছেন এবং কি কি?
উত্তর : ছয়টি।যথা:
১.কাউকে উপহাস করা।
২.কাউকে দোষারোপ করা।
৩.কাউকে মন্দ নামে ডাকা।
৪.গিবত করা।
৫.অধিক ধারণা করা।
৬.কারো দোষ-ত্রুটি অন্বেষণ করা।
৪৩.আস-সিখরিয়া কাকে বলে এবং এর হুকুম কী?
উত্তর :অহংকারবশতব অন্যকে ঘৃণা করা,বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা অথবা বিদ্রূপ করাকে আস-সিখরিয়া বলে।এটা করা হারাম।
৪৪.কাউকে দোষারোপ করা যাবে কী?
উত্তর : না।
وَلَا تَلۡمِزُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ
উত্তর : না।
৪৬. গিবত কাকে বলে এবং এর হুকুম কী?
উত্তর :কারো অনুপস্থিতিতে তার দোষ -ত্রুটি বর্ণনা করা।যা শুনলে সে মনে কষ্ট পাবে, যদিও তার মধ্যে উক্ত দোষটি বিদ্যমান থাকে, তাকে গিবত বলে।এটা করা হারাম।
৪৭.অধিক ধারণা করা কী?
উত্তর : পাপ।
اجۡتَنِبُوۡا کَثِیۡرًا مِّنَ الظَّنِّ ۫ اِنَّ بَعۡضَ الظَّنِّ اِثۡمٌ.
সূরা আল হুজুরাত -৪৯: ১২।
৪৮.কারো দোষ-ত্রুটি অন্বেষণ করা কী?
উত্তর : হারাম।
৪৯. সূরা আল- মুনাফিকূনে মুনাফিকের কয়টি বৈশিষ্ট্য বলা হয়েছে এবং কি কি?
উত্তর :এগারোটি।যথা:
১.তারা মিথ্যাবাদী।[ সূরা আল -মুনাফিকূন-৬৩:০১]
২.তারা অন্যদেরকে আল্লাহর পথ থেকে নিবৃত্ত রাখে।[সূরা আল -মুনাফিকূন-৬৩:০২]
৩.তারা বাহ্যিকভাবে ঈমান আনে।[সূরা আল -মুনাফিকূন-৬৩:০৩]
৪.তারা কুফরি করে।[সূরা আল -মুনাফিকূন-৬৩:০৩]
৫.তাদের অন্তরে মোহর মারা। [সূরা আল -মুনাফিকূন-৬৩:০৩]
৬.তারা সত্য বুঝেনা।[সূরা আল -মুনাফিকূন-৬৩:০৩]
৭.তারা যেন(কোন -কিছুতে) ঠেকনা দেওয়া কাঠের মতো।[সূরা আল -মুনাফিকূন-৬৩:০৪]
৮.যে কোন-হাঁক-ডাককে নিজেদের বিরুদ্ধে মনে করে।[সূরা আল -মুনাফিকূন-৬৩:০৪]
৯.তারা মুমিনদের চিরশত্রু। [সূরা আল -মুনাফিকূন-৬৩:০৪]
১০.তারা অহংকারবশত মাথা ও মুখ ফিরিয়ে নেয়।[সূরা আল -মুনাফিকূন-৬৩:০৫]
১১.তারা ইসলামের পথে ব্যয় করতে অপারগতা প্রকাশ করে।[সূরা আল -মুনাফিকূন-৬৩:০৮]
৫০.আল -কুরআনে মানব সৃষ্টির কয়টি পর্যায় বলা হয়েছে এবং কি কি?
উত্তর :সাতটি। যথা:
সূরা আল মুমিনে আল্লাহ তায়ালা বর্ণনা করেছেন।
১.মাটি।
২.শুক্রবিন্দু।
৩.জমাট রক্ত।
৪.শিশু
৫.কিশোর
৬.যুবক (যৌবন)
৭.বৃদ্ধ (বার্ধক্য)
[আল মুমিন-৬৩:৬৭]
৫১.তাওহীদের কয় রোকন?
উত্তর :তাওহীদের দুই রোকন:
১.তাগুতকে বর্জন করা।
২.দৃঢ়ভাবে এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা।
৫২.ঈমান ভঙ্গের কারণ কয়টি?
উত্তর :ঈমান ভঙ্গের কারণ দশটি।যথা:
১.এক. আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা।[সূরা নিসা ৪ : ৪৮]
২.দুই. আল্লাহ এবং বান্দার মধ্যে কাউকে মধ্যস্থতাকারী বানানো। [সূরা ইউনুস, ১০ : ১৮]
৩.তিন. মুশরিক-কাফিরদের কাফির মনে না করা।[সূরা নিসা, ৪ : ৬০]
৪.চার.নবী করীম (স.) আল্লাহর পক্ষ থেকে যা নিয়ে এসেছেন তাকে পরিপূর্ণ মনে না করা।[সূরা আল মায়েদা,৫:১১]
৫.পাঁচ. মুহাম্মাদ (সা.) আনীত কোনো বিধানকে অপছন্দ করা।[সূরা নিসা, ৪ : ৬৫]
৬.ছয়. দ্বীনের কোনো বিধান নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা।[সূরা তাওবা, ৯ : ৬৫-৬৬]
৭.সাত. জাদু করা।[সূরা বাকারা, ২ : ১০২]
৮.আট. মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুশরিকদের সমর্থন ও সহযোগিতা করা।[সূরা তাওবা, ৯ : ২৩]
৯.নয়. কাউকে দ্বীন-শরিয়তের ঊর্ধ্বে মনে করা।[সূরা মায়িদা, ৫ : ৩]
১০.দশ: দ্বীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া।[সূরা সাজদা, ৩২ : ২২]
৫৩.ঈমানের আরকান বা স্তম্ভ কয়টি?
উত্তর :ঈমানের আরকান ছয়টি:
১.আল্লাহর প্রতি ঈমান।
২.ফেরেশতাগণের প্রতি ঈমান।
৩.আসমানী গ্রন্থসমূহের প্রতি ঈমান।
৪.রসূলগণের প্রতি ঈমান।
৫.পুনরুত্থান তথা কিয়ামত ও আখেরাতে প্রতি ঈমান।
৬.তাকদীরের ভালো-মন্দের প্রতি ঈমান।
৫৪.কোন সূরা সময়ে শপথ দিয়ে শুরু হয়েছে?
উত্তর :সূরা আল-আছর।
৫৫.পবিত্র আল-কুরআনের কয়টি সূরা নবীদের নামে নামকরণ করা হয়েছে ও কি কি?
উত্তর :৬টি। যথা :সূরা নুহ (আ.), সূরা ইউনুস(আ.), সূরা ইউসুফ(আ.),সূরা হুদ(আ.), সূরা ইব্রাহিম(আ.), সূরা মুহাম্মাদ(স.)।
৫৬.মক্কা শব্দটি পবিত্র আল-কুরআনের কোন সূরায় এসেছে ?
উত্তর : সূরা আল -ফাতাহ্।
৫৭.পবিত্র আল-কুরআনে মদীনাকে কি নামে অবহিত করা হয়েছে?
উত্তর :ইয়াসরিব।
৫৮.মুমিন ব্যক্তি কার আদর্শে আদর্শবান হবে?
উত্তর :একমাত্র মুহাম্মাদ (স.) এর।
৫৯.পরপুরুষদের সাথে মুমিন নারীরা কিভাবে কথা বলবেন?
উত্তর :কর্কশ ভাষায়।
৬০.ছেলে-মেয়েরা কখন থেকে পর্দা করা শুরু করবে?
উত্তর : ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে(৯-১৩)।
৬১.আল কুরআনের এক-তৃতীয়াংশ বলা হয় কোন সূরাকে?
উত্তর :সূরা আল-ইখলাসকে।
৬২.কবিদের নামে নামকরণকৃত সূরার নাম কি?
উত্তর :সূরা আশ-শুআরা।
৬৩.পশু-পাখিদের নামে কয়টি সূরা নামকরণ করা হয়েছে?
উত্তর :৫টি।যথা: সূরা আল- বাকারাহ,সূরা আনকাবুত,সূরা আন-নাহল,সূরা আন-নমল এবং সূরা আল- ফীল।
৬৪. পবিত্র আল-কুরআনে সবচেয়ে বড় সূরা কোনটি?
উত্তর: সূরা আল-বাকারা।
৬৫.পবিত্র আল- কুরআনে সবচেয়ে ছোট সূরা কোনটি?
উত্তর : সূরা আল- কাওছার।
৬৬.পবিত্র আল- কুরআনের মধ্যে সবচেয়ে বড় আয়াত কোনটি এবং কোন সূরায়?
উত্তর : সূরা আল- বাকারার ২৮৬ নংআয়াত।
৬৭.পবিত্র আল- কুরআনের মধ্যে সবচেয়ে ফযিলত পূর্ণ আয়াত কোনটি?
উত্তর : আয়াতুল কুরশী।
৬৮.ফরয নামাযের পর কোন আয়াতটি পাঠ করলে, মৃত্যু ছাড়া জান্নাতে যেতে কোন বাধা থাকে না?
উত্তর : আয়াতুল কুরশী।
৬৯.পবিত্র আল-কুরআনের কোন সূরাটি পাঠ করলে, কবরের আযাব থেকে রক্ষা পাওয়া যায়?
উত্তর : সূরা আল-মূলক।
৭০.পবিত্র আল-কুরআনের কোন সূরার প্রতি ভালবাসা থাকলে, মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে?
উত্তর : সূরা ইখলাস।
৭১.পবিত্র আল-কুরআনের কোন সূরাটি কুরআনের চতুর্থাংশের সমপরিমাণ?
উত্তর : সূরা কাফিরূন।
৭২.পবিত্র আল-কুরআনের কোন সূরাটি জুমআর দিন বিশেষ ভাবে পাঠ করা মুস্তাহাব?
উত্তর : সূরা কাহাফ।
৭৩.পবিত্র আল- কুরআনের কোন সূরার প্রথমাংশ তিলাওয়াত কারীকে দাজ্জালের ফেতনা থেকে রক্ষা করবে?
উত্তর : সূরা কাহাফের প্রথম দশটি আয়াত।
৭৪.পবিত্র আল-কুরআনের কোন দুইটি সূরা জুমআর দিন ফজরের নামাযে তিলাওয়াত করা সুন্নত?
উত্তর : সূরা সাজদা ও দাহর।
৭৫.পবিত্র আল-কুরআনের কোন দু'টি সূরা জুমআর নামাযে তিলাওয়াত করা সুন্নত?
উত্তর : সূরা আ'লা ও গাশিয়া।
৭৬. পবিত্র আল- কুরআনে কত বছরে নাযিল হয়?
উত্তর :দীর্ঘ তেইশ বছরে।
৭৭. "মুহাম্মদ " (স.) এর নামটি পবিত্র কুরআনে কত স্থানে উল্লেখ হয়েছে?
উত্তর : চার স্থানে। ১.সূরা আল ইমরান-(১১৪নংআয়াত) ২.সূরা আহযাব-(৪০নংআয়াত) ৩.সূরা মুহাম্মদ-(২নংআয়াত) ৪.সূরা ফাতাহ্-(২৯নংআয়াত)।
৭৮.পবিত্র আল-কুরআনের সর্বপ্রথম কোন আয়াত নাযিল হয়?
উত্তর : সূরা আলাকের প্রথম পাঁচটি আয়াত।
৭৯. পবিত্র আল-কুরআনের সর্বপ্রথম কোন সূরাটি পূর্ণরূপে নাযিল হয়?
উত্তর : সূরা আল- ফাতিহা।
৮০. পবিত্র কুরআন প্রথম যুগে কি ভাবে সংরক্ষিত ছিল?
উত্তর : সাহাবায়ে কেরামের নিকট।
৮১.পবিত্র আল-কোরআনের সৌন্দর্য হলো -
উত্তর : সূরা আর রাহমান।
৮২.পবিত্র আল-কোরআনের কলব(হৃদয়) বলা হয় কোন সূরাকে?
উপর :সূরা আর রাহমান।
৮৩.পবিত্র আল-কোরআনের ছাদ(আরশ) বলা হয় কোন সূরাকে?
উত্তর : সূরা ইয়াসিনকে।
৮৪.আল -কুরআনে রসূল (স.)-এর কয়টি নাম এসেছে?
উত্তর : দুইটি।যথা: ১.মুহাম্মাদ, ২.আহমদ।
পর্ব-১
♥আল কুরআন মাজীদ :
১.আল-কুরআন কাকে বলে?
উত্তর: পবিত্র আল-কুরআন হচ্ছে আল্লাহর তায়ালা বাণী, যা হযরত জিবরীল আমিন কর্তৃক রসূল(স.)-এর উপর অবতীর্ণ, যাকে মাসহাফ সমূহে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে এবং সন্দেহমুক্ত প্রক্রিয়ায় ধারাবাহিকভাবে রসূল(স.)থেকে বর্ণিত হয়েছে।
২.মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থের নাম কি?
উত্তর : কুরআন মাজীদ।
৩.পবিত্র কুরআন মাজীদ সর্বপ্রথম কোথায় নাযিল হয়।
উত্তর : হেরা গুহায় (জাবালে নূরে)।
৪.পবিত্র কুরআন মাজীদ কোন মাসে নাযিল হয়?
উত্তর : রমাদ্বান মাসে
شَهْرُ رَمَضَانَ ٱلَّذِىٓ أُنزِلَ فِيهِ ٱلْقُرْءَانُ.
৫.পবিত্র কুরআন মাজীদ কখন নাযিল হয়?
উত্তর : কদরের রাতে।
إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ.
৬.ইসলামি শরী'আতের প্রথম উৎস কি?
উত্তর : পবিত্র কুরআন মাজীদ।
৭.পবিত্র আল কুরআন কার বাণী?
উত্তর : মহান আল্লাহ তায়ালা বাণী।
৮.আল কুরআনের আলোচ্য বিষয় কি?
উত্তর: মানব জাতি।
৯.পবিত্র আল- কুরআনের আয়াত অস্বীকারকারীকে কি বলা হয়?
উত্তর : কাফির।
১০.পবিত্র কুরআন মাজীদে মোট কয়টি আয়াত রয়েছে?
উত্তর: ৬,২৩৬ টি।
১১. পবিত্র আল- কুরআনের আয়াত কত প্রকার ও কি কি?
উত্তর :দুই প্রকার।যথা:
১.আয়াতে মুহকামাত (বিস্তারিত বর্ণিত আয়াত)
২.আয়াতে মুহতাশাবিহাত (সংক্ষিপ্তাকারে আয়াত, যার অর্থ আল্লাহ ও তাঁর রসূল ﷺ ই ভাল জানেন)
১২.পবিত্র আল-কুরআন মাজীদে মোট কয়টি সূরা?
উত্তর : ১১৪টি।
১৩. পবিত্র আল- কুরআনে মাক্কী সূরা কয়টি?
উত্তর :মাক্কী সূরার সংখ্যা মোট ৮৬ টি।
১৪.পবিত্র আল- কুরআনে মাদানী সূরা কয়টি?
উত্তর :মাদানী সূরার সংখ্যা মোট ২৮টি ।
১৫.মাক্কী ও মাদানী সূরা বুঝার মৌলিক নীতি কি?
উত্তর :হিজরত।
১৬.আসমানী কিতাব কাকে বলে?
উত্তর :আসমানী কিতাব হচ্ছে ইসলামের পরিভাষায় মানবজাতি হেদায়েতের জন্য কিতাব সমূহ। অর্থাৎ মহান আল্লাহ তালার বাণীসমূহর গ্রন্থগুলোকে আসমানী কিতাব বলা হয়।
১৭.আসমানী কিতাব মোট কয়টি?
উত্তর : ১০৪ টি।
১৮.সহীফা মোট কয়টি?
উত্তর :১০০টি।এই ১০০খানা আসমানী কিতাব অবতীর্ণ হয়।
হযরত শীস [আ.]-এর উপর ৫০খানা, হযরত ইদ্রিস [আ.]-এর উপর ৩০খানা এবং হযরত ইব্রাহীম [আ.]-এর উপর ২০খানা সহীফা।
১৯.প্রধান আসমানী কিতাব মোট কয়খানা ও কি কি?
উত্তর: চারখানা। যথা : ১. তাওরাত, ২.জাবুর,৩. ইঞ্জিল ও ৪.কোরআন। এই চার বড় গ্রন্থ নাজিল হয়েছে বিশিষ্ট চারজন নবী ও রাসুলের প্রতি। যথা: তাওরাত হজরত মুসা (আ.) –এর প্রতি ইবরানি বা হিব্রু ভাষায়, জাবুর হজরত দাউদ (আ.) প্রতি ইউনানী ভাষায়, ইঞ্জিল হজরত ঈসা (আ.) প্রতি সুরিয়ানি ভাষায়, এবং কুরআন হযরত মুহাম্মাদ (স.) আরবি ভাষায়।
১৮.পবিত্র আল-কুরআন মাজীদের প্রথম সূরা কোনটি?
উত্তর : সূরা আল-ফাতিহা।
২০.পবিত্র আল-কুরআন মাজীদের সর্বশেষ সূরা কোনটি?
উত্তর : সূরা আন-নাস।
২১.পবিত্র আল- কুরআন মাজীদ পড়ার পূর্বে কি পড়তে হয়?
উত্তর : তাআ'উয(আ'উযুবিল্লাহ বলা) ও তাসমিয়াহ্(বিসমিল্লাহ বলা)।
١
২২.ভবিষ্যতে কোন কাজ করার ইচ্ছে করলে কি বলতে হয়?
উত্তর : ইংশাআল্লাহ (إن شاء الله )
২৩.কেউ সালাম দিলে কিভাবে তার জবাব দিতে হয়?
উত্তর : সুন্দরভাবে (শব্দ বৃদ্ধি করে)।
২৪. কারো গৃহে প্রবেশ করতে হলে সর্ব প্রথম কি করতে হবে?
উত্তর : সালাম দিতে অনুমতি চাইতে হবে।
২৫.কারো গৃহে প্রবেশের অনুমতি না পেলে কি করতে হবে?
উত্তর : চলে আসতে হবে।
২৬.মাফাতিহুল গাইব কয়টি?
উত্তর : পাঁচটি। যথা:
(১) কেউ জানে না যে, আগামীকাল কী ঘটবে।
(২) কেউ জানে না যে, আগামীকাল সে কী অর্জন করবে।
(৩) কেউ জানে না যে, মায়ের গর্ভে কী আছে।
(৪) কেউ জানে না যে, সে কোথায় মারা যাবে।
(৫) কেউ জানে না যে, কখন বৃষ্টি হবে।
২৭.শিশু ও সাবালকদের কয় সময় নিজ গৃহে প্রবেশে অনুমতি নিতে হবে?
উত্তর : তিন সময়। যথা:
১.ফজরের নামাযের পূর্বে।
২.দুপুরে যখন তোমরা বস্ত্র খুলে রাখ।
৩.এবং এশার নামাযের পর।
২৮.ওহী কাকে বলে?
উত্তর : ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায়, “জিবরাঈল (আ.) এর মাধ্যমে নবী রাসূলগণের নিকট পাঠানো প্রত্যাদেশই ওহী।”
২৯.ওহী নাযিলের পদ্ধতি কয়টি ও কি কি?
উত্তর :সাতটি। যথা:
ওহী নাযিলের পদ্ধতি
আল্লামা সুহাইলী (রহ.) বলেছেন, ৭ টি পদ্ধতিতে ওহী নাযিল হয়েছে। এগুলো হলো –
১) স্বপ্নযোগে- আল্লাহর রাসূলের নিকট স্বপ্নযোগে অনেক ওহী আসতো। হযরত আয়িশা (রা) বর্ণিত হাদীস থেকে জানা যায়- নুবুওয়াত লাভের প্রাথমিক পর্যায়ে রাসূল (সাঃ) এর নিকট ঘুমন্ত অবস্থায় ওহী আসত।
২) হযরত জিবরাঈল (আঃ) কর্তৃক অন্তঃকর‘ণে ওহী‘ ঢে‘লে দেওয়া‘র মাধ্য‘মে।
৩) ঘন্টাধ্বনির মাধ্যমে- ওহী নাযিলের পূর্ব মুহূর্তে রাসূল (স: ) এর কানে ঘণ্টাধ্বনির ন্যায় আওয়াজ অবিরাম বাজতে থাকতো এবং সঙ্গে সঙ্গেই ফেরেশতাও কথা বলতে থাকতেন। এটা ছিল ওহী নাযিলের কঠিনতম পদ্ধতি। প্রচণ্ড শীতেও নবী কারিম (স: ) ঘামতেন। এ পদ্ধতিকে সালসালাতুল জারাস বলা হয়েছে।
৪) ফেরেশতার মানবাকৃতিতে আগমন – কখনো কখনো ফেরেশতারা মানবাকৃতি ধারণ করে রাসূল (স: ) এর নিকট ওহী পৌঁছে দিতেন। এ পদ্ধতি ছিল সহজতর।
৫) ফেরেশতা নিজের আকৃতিতে আগমন – কখনো কখনো হযরত জিবরাঈল (আ)-কে মহান আল্লাহ তা‘লা যে আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন সে