MR Muhit

MR Muhit Welcome to MR Muhit. Thank you for your support! Love, Mamun.

 #বোকাফুল-২"তোমাকে যদি এই মুহূর্তে আমি একশোটা চুমু খাই, তোমার ব্যথা কি কমে যাবে, জান? তুমি না বলতে, ব্যথা জায়গায় প্রিয়রা...
24/07/2025

#বোকাফুল-২

"তোমাকে যদি এই মুহূর্তে আমি একশোটা চুমু খাই, তোমার ব্যথা কি কমে যাবে, জান? তুমি না বলতে, ব্যথা জায়গায় প্রিয়রা চুমে খেলে ব্যথা সেড়ে যায়!"

প্রিয়তম স্বামীর বুকে মাথা গুঁজে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে মায়া বললো,

"মনের ব্যথা চুমুতে সাড়ে, শরীরের ব্যথা কি করে সাড়াবেন রিহান ভাই? আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে, নেতা সাহেব। বড্ড ভয় লাগলছে আজ!
মনে হচ্ছে, আজই আমার জীবনের শেষ দিন। আমার শেষ মুহূর্তে আপনি আমার পাশে থাকুন নেতা সাহেব। আপনি কোথাও যাবেন, আমার হাত ধরে বসে থাকবেন। ওরা যদি আমায় নিতে আসে, আপনি আমায় যেতে দিবেন না! আপনি আমায় আপনার কাছে রেখে দিবেন, নেতা সাহেব! আমি আপনার সাথে অনেক গুলো বছর বাঁচতে চাই। আপনাকে এখনো অনেক ভালোবাসা বাকি, নেতা সাহেব! "

সিজারিয়ান অপারেশন থিয়েটারে বসে ডেলিভারি পেইন, অদ্ভুত এক যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে মায়া। তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে, ডক্টর, নার্স। এক্ষুণি তার অপারেশন করা হবে। মাএই মায়া'কে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। এখানে এসেই তার ষষ্ঠ ইন্দ্রীয় জানান দিচ্ছে, তার আয়ু ফুরিয়ে এসেছে। এরিমধ্যে মায়া বায়না ধরলো, তার স্বামী'কে একবার দেখবে।

খবর পেয়ে ভিতরে প্রবেশ করলো, নেতা রিহান চৌধুরী। স্ত্রী'র কান্না ভেজা চোখ, তার চিৎকার কলিজায় আ'ঘা'ত করছে যেন! এই নারীটি তার অনেক আদরের! অনেক ভালোবাসা'র!
দিকবিদিকশুন্য হয়ে স্ত্রী'র হাত খানা ধরে অবুঝের মতো আচরণ করছে শক্তপোক্ত, নেতা রিহান চৌধুরী। এই মুহূর্তে তার বিচার শক্তি, বুদ্ধিমত্তা কাজ করছে না। স্ত্রী তার দুর্বলতা! তার কিছু হলে, এলোমেলো হয়ে যায় রিহান চৌধুরী।
স্ত্রীর ব্যথাতু মুখখানা স্পর্ষ করে সবার সামনেই অবুঝের মতো, চুমু খাওয়ার আবদার করলো সে। যা শুনে শুষ্ক ঠোঁটে এক চিলতে হাসলো, মায়া। ডক্টর, নার্সরাও মুখ টিপে হাসছিলো।
সবার নিকট একজন শক্তপোক্ত, কঠিন রাজনৈতিক নেতা রিহান চৌধুরী। এই কঠিন লোকটাও যে কাউকে এতটা ভালোবাসা'সে তা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস'ই হবে না কারো!

স্বামীর কথা শুনে, ভেতর থেকে কান্নারা দলা পাকিয়ে আসছে। পরমুহূর্তে, মায়া রিহানের সাহায্যে শোয়া থেকে উঠে বসলো। প্রিয়তম স্বামীর বুকে মাথা গুঁজে উপরোক্ত কথা গুলো বললো। যা শুনে ভিতরটা দুমড়ে-মুচড়ে যাচ্ছে রিহান চৌধুরী'র। তার চোখেও জল। বুকের সাথে মায়া'কে আরো একটু চেপে ধরে ভেজা কণ্ঠে শুধালো,

"ওমন করে বলে না, জান! কিচ্ছুটি হবে না তোমার। আমি আছি তোমার পাশে, ভয় পেয়ে না জান! কিছু হবে না তোমার, কিছু না। "

মায়া চোখ বন্ধ করলো। রিহান চুমু খেলো স্ত্রীর কপালে, মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। রোগীর অবস্থা শোচনীয়! যা দেখে এই অবস্থায়ই দ্রুত রোগীকে অজ্ঞান হওয়ার ইইঞ্জেকশন পুঁষ করা হলো। মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই রিহানের বুকে ঢলে পড়লো, মায়া। রিহানের হাতখানা এখনো তার মুঠোবন্দী।
ভয়ে, দুশ্চিন্তায় ঘামছে, রিহান চৌধুরী।
ডক্টর রিহানকে পর্যবেক্ষণ করে বাহিরে যেতে বললো। কিন্তু রিহান বললো,

"আমি এখানেই থাকবো ডক্টর। আমার মায়া'র আবদার আমি রাখবো, তার এই হাত ছাড়বো না। বুঝলেন ডক্টর, আমার বউটা অনেক ভয় পাচ্ছে। এখন তার পাশে আমাকে প্রয়োজন। সে চোখ খোলা না অবধি, আমি এভাবেই থাকবো।"

"কিন্তু, আপনাকে ভীষণ নার্ভাস লাগছে স্যার। আপনি নিজ চোখে বউয়ের শরীরে'র কা'টা'ছেঁ'ড়া সহ্য করতে পারবেন? এখানে কিন্তু কোনো প্রকার সিনক্রিয়েট করা যাবে না, স্যার। এতে রোগীর সমস্যা হবে।"

"চিন্তা করবেন না। আমি নিজেকে সামলে নিবো, ডক্টর। আপনারা নিজেদের কাজ করুন। আর শুনুন? ও যেন ব্যথা না পায়!"

এদের ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ হলো ডক্টর। সচারাচর এমন নজরকাঁড়া ভালোবাসা চোখে পড়ে না আজকাল।
ডক্টর আর কথা বাড়ালো না। নিজেদের কাজে মনোযোগী হলো। অপারেশন চলছে, রিহান চৌধুরী প্রিয়তমা স্ত্রী'র একটা হাত ধরে চোখ বন্ধ করে পাশে বসে থাকলো। মনে মনে সৃষ্টিকর্তা'কে ডাকছে।
সিজারিয়ান অপারেশন সাকসেস। ঘন্টাখানিক হলো, ছোট্ট একটা প্রাণের আগমন হলো পৃথিবীতে। সকল কাজ শেষ। কিছুক্ষণ হলো, মা ছেলে কে বেডে দেওয়া হলো। মায়া এখনো অজ্ঞান।
রিহান চৌধুরী, ছেলের আগমনে খুশী হলেও বউয়ের টেনশনে অস্হির হয়ে যাচ্ছে। যা দেখে ডক্টর আশ্বাস দিয়ে বললো,

"রিলাক্স স্যার! কিছুক্ষণ পরই রোগী'র জ্ঞান ফিরবে। "

তবুও স্বস্তি মিলছে না, তার। এক হাতে ছেলেকে অন্য হাতে বউয়ের হাত ধরে, অপেক্ষা করছে রিহান চৌধুরী। এরিমধ্যে, নানি-দাদিরা ছেলেকে তার কাছ থেকে নিয়ে গেলো। ছোট্ট শিশুর আগমনে পুরো চৌধুরী পরিবার বেজায় খুশী।

কিন্তু, এই খুশী স্হায়ী হলো না! এক ঘন্টা, দু'ঘন্টা করতে করতে একটা দিন পাড় হলো, কিন্তু মায়ার জ্ঞান ফিরছে না। দু'শ্চিন্তায় পড়ে গেলো সকল চৌধুরী পরিবার। রিহান চৌধুরী একেবারে নিশ্চুপ!
ডক্টররা চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে,রোগীর অবস্থা করুণ! শ্বাস আঁটকে যাচ্ছে, অক্সিজেন মাস্ক পড়ানো হয়েছে মায়া'কে। এরিমধ্যে ডক্টর পরিক্ষা করে জানতে পারলো, রোগীর ব্রেইনে টিউমার। দীর্ঘদিন ধরে এর বাস। যা এবার সারা মস্তিষ্কে ছড়িয়ে র'ক্ত'ক্ষ'র'ণ হচ্ছে। সৃষ্টিকর্তা জানেন, এই অবস্থায় এই রোগী বাঁচবে কি-না! তবে উনারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এই খবর পেয়ে, পুরো চৌধুরী পরিবারে কান্নার স্রোত বয়ে যাচ্ছে। রিহানের মনে পড়ে যায়, গর্ভকালীন অবস্থায় মায়া প্রায়সই মাথা চেপে ধরতো। জিজ্ঞেস করলে, সবসময় কিছু খুব সূক্ষ্ম ভাবে এড়িয়ে যেতো। তার মানে মেয়েটা জানতো। হয়তো বাচ্চার কথা ভেবে, তাদের জানায়নি সে খবর। বাচ্চা পেটে আসার সময় প্রায়ই মায়া বলতো,

"নেতা সাহেব! যদি আমার কিছু হয়ে যায়, আপনি আমার বাচ্চাটাকে দেখে রাখবেন। মানুষের মতো মানুষ করবেন। কখনো বুঝতে দিবেন না, ওর মা নেই।"

রিহান তখন রাগ করতো, অভিমান করতো। বলতো,

"এমন কথা আর বলবে না, জান। তোমার কিছু হবে না। "

মেয়েটা তখন অদ্ভুত কণ্ঠে খিলখিল করে হাসতো! বলতো,

"আমিও বাঁচবো। কিছু হবে না আমার। সত্যিই কিছু হবে না। এমনিতেই মজা করছি, নেতা সাহেব! স্যরি! আর এমনটা বলবো না। "

পুরোনো কথা মনে পড়তেই, চোখ টলমল করছে রিহান চৌধুরী'র। সে কেন মেয়েটাকে বিশ্বাস করতো! ইশ, যদি তখন জানতো সেসব! আজ হয়তো এই করুণ সময়টা আসতো না।
ততক্ষণাৎ পুরুষটি স্ত্রীর নড়বড়ে হাতটা শক্ত করে ধরে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললো,

"বোকাফুল! তুমি বড্ড স্বার্থপর! তুমি বড্ড মিথ্যুক! তুমি আমাকে ঠকালে!"

পরমুহূর্তে উপরের দিকে তাকিয়ে রবের নিকট বললো,

"ইয়া রব! তুমি আমার আয়ুর অর্ধেক তাকে দিয়ে দেও। তবুও তাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দেও, খোদা! তুমি তো জানো, এই মেয়েটাকে আমি অসম্ভব ভালোবাসি! তার কিছু হলে আমি সহ্য করতে পারবো না খোদা.. তার আগে তুমি আমার মৃ'ত্যু উপহার দিও।"
________

শেষ সময় এসে ডক্টর তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করলো। কিন্তু, হায় বাঁচাতে পারলো না মেয়েটাকে। সৃষ্টিকর্তার সিদ্ধান্তের ওপর কারো হাত নেই।
মেয়েটা দু'দিন আগে যে চোখ বন্ধ করলো,আর চোখ খুললো না। দেখা হলো না, নাড়ি ছেঁড়া পুত্র'কে! দেখলো না, তার জন্য এক পুরুষের হা'হা'কা'র। সকল মায়া ত্যাগ করে, আজ ভোরে মেয়েটা দুনিয়া ছাড়লো।
লা শ'কে ঘিরে ধরে কাঁদছে সবাই।
রিহান চৌধুরী এখনো স্ত্রী'র হাত ধরে আছেন। করুণ কণ্ঠে ডাকছে,

"মায়া ও মায়া! জান, উঠো জান! একটা বার চোখ খুলে দেখো মায়া, তোমার নেতা সাহেব তোমায় ডাকছে।
এই দেখো, তোমার হাত ধরে এখনো বসে আছি আমি। অভিমান করে না জান, সত্যি বলছি এই হাত একটুও ছাড়িনি আমি। এই তোমরা সবাই দেখছো না? ওরে বলো, সত্যি কথা বলো।"

ছেলের এই আকুতি ভরা কন্ঠ স্বর শুনে মায়ার শাশুড়ী ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললো,

"বাবা'রে আর কখনো উঠবে না, আমাদের মায়া। ম'রে গেছে মায়া, ম'রে গেছে।"

"মায়া! ওই বোকাফুল! সত্যিই ম'ই'রা গেছো তুমি! মায়া,এমনটা তো কথা ছিলো না। আমারে ভালোবাসা'র লোভ দেখাইয়া তুমি কেমনে এতো স্বার্থপর হইলা? ও মায়া! আমার কষ্ট হচ্ছে মায়া! উঠো মায়া! আমারে এতো বড় শাস্তি দিও না, খোদা।
ও খোদা! তুমি আমারেও মৃ'ত্যু দেও! খোদা! তারে ছাড়া আমি কেমনে থাকবো একলা ঘরে! আমার যে দ'ম বন্ধ হয়ে আসছে। খোদ!
তুমি যদি তারে নিয়াই যাইবা, তাইলে তুমি তারে আমার কইরা দিছিলা কেন? না! না! তারে আমি কোথাও যাইতে দিবো না!"

বলতে বলতে লা শ টা বুকের মাঝে চেপে ধরে, রিহান চৌধুরী।ছেলেটার এমন ভালোবাসা দেখে হসপিটালে থাকা সবার চোখে জল। ইশ মেয়েটা কত লাকি! এতো ভালোবাসা দিয়েও আগলে রাখা গেলো না, মেয়েটাকে। মৃত্যুর কাছে মানুষ বড্ড অসহায়। এই মেয়েটাকে ভালোবেসে থমকে গেলো, নেতা রিহান চৌধুরী'র জীবন। এরপর আর সেও কখনো স্বাভাবিক হতে পারেনি। নেতা রিহান চৌধুরী আজ বড্ড উ'ম্ম'দ! স্ত্রী'র শো'কে, নেতা রিহান চৌধুরী এখন একজন মানসিক রোগী। তার দিন রাত পেড়োয়, বোকাফুল'র সাথে কল্পনায়। সে কখনো হাসে, কখনো কাঁদে। কখনো কখনো আকাশের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বলে,

"বোকাফুল! তুই বড্ড পা'ষা'ণ! তুই বড্ড স্বার্থপর! তবুও, তোকে আমি ভীষণ ভালোবাসি!"

(সমাপ্ত)

#বোকাফুল

লেখনীতেঃ সুমাইয়া_আফরিন_ঐশী

"বিয়ের পর বরকে সকাল -বিকাল নিয়ম করে তিনবেলা বউয়ের ঠোঁটে চুমু খেতে হয়, এটা আপনি জানেন না রিহান ভাই? বউকে'কে চুমু দিলে ছেল...
24/07/2025

"বিয়ের পর বরকে সকাল -বিকাল নিয়ম করে তিনবেলা বউয়ের ঠোঁটে চুমু খেতে হয়, এটা আপনি জানেন না রিহান ভাই? বউকে'কে চুমু দিলে ছেলেদের চেহারায় গ্লো বাড়ে, চুল পড়া কমে যায় এবং আয়-রোজগার বাড়ে।"

সদ্য ছ্যাকা খাওয়া নেতা রিহান চৌধুরী 'কে বাবা-মায়ের চাপে ঘরোয়া ভাবে বিয়ে করতে হয় এক কিশোরী'কে। মেয়েটা তার চাচা'তো বোন মায়া। চঞ্চল হরিণী মেয়েটার মুখে কিছু আঁটকায় না যেন। বিয়ের পরপরই চলে এসেছে রিহানের রুমে। উদ্দেশ্য তাকে জ্বা'লা'নো! সদ্য বিবাহিত স্ত্রী মায়া'র মুখে এহেন কথা শুনে চোখ গরম করে তাকালো রিহান। এরপর ধমকে বললো,

"আমার রুম থেকে এক্ষুণি বেরিয়ে যা মায়া। তোকে আমি বউ হিসেবে মানি না। সেখানে চুমু খাওয়া বিলাসিতা। স্টুপিট একটা।"

"এ্যাঁ বললেই হলো, আজ থেকে আমি আমার জামাইয়ের রুমেই থাকবো। বউ হিসেবে মানেন না বুঝলাম, তবে এখন থেকে মেনে নিবেন রিহান ভাই। আমি আপনার একমাত্র বউ, আপনার সবকিছুতে আমার অধিকার রয়েছে। আমি আবার আমার অধিকারের ক্ষেএে খুব সচেতন। দিন এখন একটা চুমু দিন।"

"সিরিয়াসলি মায়া? তোকে এখন চুমু খেতে হবে আমার।"

"অবশ্যই। জামাই....! "

"আমাকে একদম জ্বালাবে না মায়া। আমি খুব টায়ার্ড, ঘুমাবো এখন। তুই নিজের রুমে যা।"

বলতে বলতে বিছানায় সুয়ে পড়লো রিহান চৌধুরী। মায়া চটজলদি বললো,

"আমিও আপনার সাথে ঘুমাবো নেতা সাহেব। এই শীতে বিয়ে করছি কি বিবাহিত ব্যাচেলর থাকার জন্য?"

পরমুহূর্তে মায়াও রিহানের কম্বলের ভিতর ঢুকে পড়লো। রিহান নিশ্চুপ। এই মেয়ের সাথে কথা বাড়ানো মানেই এর পাগলামির মাএা বাড়ানো। হঠাৎ মায়া নিজের ঠান্ডা দু'হাত রিহান চৌধুরী'র টি-শার্টের ভিতর ঢুকিয়ে দিয়ে গুণগুণ করে বললো,

"জামাই, জামাই, জামাই চাই.... জামাই ছাড়া এই শীতে উপায় নাই, জামাইর কাছে আদর চাই। ও আমার জামাই।"

বলতে বলতে হাত দিয়ে মায়া সুড়সুড়ি দিচ্ছে রিহানের পেটে। আকস্মিক মেয়েলী স্পর্শে গায়ে কা'টা দিয়ে উঠছে শক্তপোক্ত পুরুষটির। অজানা অনুভূতি'র শিহরণ বইছে হৃদয় জুড়ে। তবুও রিহান শক্ত হয়ে নিজের ইচ্ছে'কে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু, রিহান যতটা শক্ত হতে চাইছে, এই মেয়ের পা'গ'লা'মি ততটা বাড়ছে। এক পর্যায় রিহান চৌধুরী শক্ত হাতে মায়ার কোমড় জড়িয়ে ধরে ফিসফিস করে বললো,

"জামাইয়ের খুব আদর পেতে ইচ্ছে করে তোর তা-ই না? আমাকে উস্কে দিচ্ছিস না, এবার দেখি কতটা সহ্য করতে পারিস তুই।"

এক ঝটকায় দুষ্ট বালিকা'কে কাছে টেনে নিলো রিহান চৌধুরী। পুরুষালী ছোঁয়া পেয়ে জমে গেলো মায়া। শক্ত হাতের স্পর্ষে কা'ত'র হয়ে নিজেকে ছাড়াতে চাইলো। ভয়ে তার শরীর কাঁপছে। ছাড়লো না রিহান চৌধুরী, আরো গভীর হলো সে। এক সময় মায়াও শান্ত হয়ে উপভোগ করছে প্রিয় মানুষটির ছোঁয়া। পরক্ষণে ক্রো'ধ নিয়ে পেটে কামড় বসিয়ে দিলো রিহান চৌধুরী। তাকে জ্বালানোর শাস্তি হিসেবে, রোমান্টিক অত্যাচারে পি'ষে দিচ্ছে মায়ার ছোট্ট দেহখানি। বুঝতে পেরে চুপচাপ মায়া।যদিও তার কষ্ট হচ্ছে, তবুও হার মানা'র মেয়ে সে নয়। কারণ, এই পুরুষটিকে মনেমনে ভীষণ ভালোবাসতো সে। এটাই তার বহু কাঙ্ক্ষিত পুরুষ।
সকালে গোসল সেরে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়েছে রিহান চৌধুরী। মায়া লাজুক হেসে, নিজের পছন্দ অনুযায়ী শার্ট - প্যান্ট এগিয়ে দিলো তাকে। রিহান সেসব না নিলেও জোড় করে কালো রঙের একটা শার্ট স্বামী'কে পড়িয়ে দিলো মায়া। এরিমধ্যে রিহানের জরুরী ফোন।
উপর মহল থেকে এক্ষুণি জরুরী তলব এসেছে। না খেয়েই অফিসে চলে গেলো রিহান।
বেলা বারোটায় খাবার নিয়ে অফিসে চলে গেলো মায়া। কেননা লোকটা বাহিরের খাবার খেতে পারে না একদম। নিশ্চয়ই না খেয়ে আছে।

নিজের অফিসে মায়াকে দেখে রিহান চৌধুরী অবাক হয়ে বললো,

"তুই এখানে?"

"আপনার জন্য খাবার নিয়ে এসেছি।"

মনে মনে সন্তুষ্ট হলো রিহান চৌধুরী। প্রচুর ক্ষুধা ও পেয়েছে তার। জানালো,

" রেখে দে, পরে খেয়ে নিবো। কয়েকটা ফাইল চেক করা বাকি আমার।"

"আপনি দেখুন, আমি খাইয়ে দিচ্ছি। "

রিহান অমত করলেও মায়া খাবার বের করে এক লোকমা ভাত মুখের সামনে ধরলো তার। বাধ্য হয়ে, খেয়ে নিলো রিহান। রিহান ফাইল চেক করছে আর মায়া তাকে খাইয়ে দিলো পুরোটা। খাওয়া শেষ করে নিজের আঁচল দিয়ে মুখ মুছে দিলো।

এরপর থেকে দিনদিন মায়ার পাগলামি, ভালোবাসা, যত্ন বেড়েই চলেছে। রিহান না চাইলেও, তার অধিকার জোড় করে যেন ছিঁনিয়ে নেয় মেয়েটা।
দিনদিন রিহান চৌধুরী পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে যাচ্ছে অর্ধাঙ্গিনী'র উপর। বউয়ের যত্ন, ভালোবাসা পেয়ে ভুলে গিয়েছে প্রথম ক্ষ'ত।

_________

বিয়ের তিন বছর পর। নয় মাসের উঁচু পেট নিয়ে হাসপাতালের বেডে সুয়ে আছে মায়া। রিহান চৌধুরী মাএই খবর পেয়ে ছুটে এসেছে। তার চোখে-মুখে চিন্তার ছাপ, কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম। দৌড়ে গিয়ে মায়ার হাত ধরে উদ্বিগ্ন কণ্ঠে বললো,

" তুই ঠিক আছিস, খুব কষ্ট হচ্ছে জান?"

চিন্তিত স্বামীকে আশ্বাস দিয়ে মায়া বললো,

"আমি ঠিক আছি নেতা সাহেব। আপনি চিন্তা করবেন না। "

বলতে বলতে নিজের হাত দিয়ে স্বামীর কপালের ঘাম মুছে দিলো মায়া। সন্তান সম্ভবা মায়া। ডক্টর জানালো রোগীর শরীরের কন্ডিশন তেমন ভালো নয়। আজই সিজার করাতে হবে। রিহান চৌধুরী"র বুক অজানা ভয়ে কেঁপে উঠলো, দু'হাতে আধ-পাগলা বউকে জড়িয়ে ধরে ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো। এই মেয়েটার যত্ন, ভালোবাসার কাছে বরাবর হেরে গিয়েছে রিহান চৌধুরী। প্রথম প্রেমে প্রতারিত হয়ে, ভালোবাসা এবং মেয়েদের প্রতি এক প্রকার ঘৃণা জমেছিল মনে। শুধু মাএ এই মেয়েটার জন্য, কঠিন রিহান চৌধুরী'র ক্ষত হওয়া দ'গ্ধ মনে পুনরায় ভালোবাসার ফুল ফুটেছে।
একটু একটু করে দ্বিতীয় বার ভালোবেসেছে প্রিয়তমা স্ত্রী'কে। মেয়েটার কিছু হয়ে গেলে, সে কি করে বাঁচবে?

হঠাৎ দুশ্চিন্তা গ্রস্ত স্বামীর কাঁধে হাত দিয়ে মায়া বলে উঠলো,

"ভয় পাবেন না নেতা সাহেব। আপনার পিছু এতো তাড়াতাড়ি আমি ছাড়ছি না। আপনাকে এখনো অনেক জ্বালানো বাকি।"

এতো এতো টেনশনে'র ভিতর মেয়েটার এহেন কথায় হেসে দিলো রিহান চৌধুরী। মায়া স্বামী'র বুকে মাথা রেখে পুনরায় বললো,

"আমাকে একবার ভালোবাসি বলবেন নেতা সাহেব?"

রিহান ততক্ষণাৎ মায়ার কপালে চুমু খেয়ে বললো, " তোমাকে খুব ভালোবাসি বোকা ফুল। একদম ভয় পাবে না জান, কিচ্ছু'টি হবে না তোমার। তোমার নেতা সাহেব তোমার সঙ্গে রয়েছে।"

মায়া প্রশান্তিতে চোখ বন্ধ করে বললো, "এবার মরে গেলেও আমি শান্তি পাবো নেতা সাহেব।"

"ওমন করে বলে না জান! খুব ভালোবাসি তোমাকে।আমার বোকা ফুল...
তোমাকে আমি হারাতে দিবো না বোকাফুল, দরকার হলে রবের কাছে তোমাকে ভিক্ষা চাইবো। তবুও তুমি আমার হয়ে আমার সঙ্গে থাকবে। যতদিন তোমার নেতা সাহেব আছে ততদিন তুমি কোথাও যেতে পারবে না।"

মায়া রিহানের কপালে গাঢ় চুমু দিয়ে আরো একটু শক্ত করে স্বামী'কে জড়িয়ে ধরে বললো,

"আপনিও একদম চিন্তা করবেন না নেতা সাহেব। আমি এই যাবো আর এই আমাদের বাচ্চা'কে সঙ্গে করে নিয়ে আসবো।"

এরিমধ্যে ডক্টর এসে অপারেশন থিয়েটার নিয়ে গেলো মায়া'কে। রিহান চৌধুরী অস্হির হয়ে করিডোরে অপেক্ষা করছে, বারংবার রবের নিকট বউয়ের জন্য দোয়া করছে। এই মেয়েটার জন্য ধোঁকা খাওয়া অগোছালো পুরুষটি পুনরায় হাসতে শিখছে, বাঁচার মতো বাঁচতে শিখেছে।

নারীর ভালোবাসা ভয়ংকর সুন্দর হয় ভাই।
নারী তার শখের পুরুষ'কে অসম্ভব ভালোবাসে। একমাত্র একজন নারী'ই পারে ভালোবাসা দিয়ে একজন ভেঙে গুঁ'ড়ি'য়ে যাওয়া পুরুষ'কে পুনরায় বাঁচাতে।

#বোকাফুল -১

লেখনীতে ঃ সুমাইয়া_আফরিন_ঐশী

24/05/2024
ভবিষ্যত ইন্জিনিয়ার 😂
21/04/2024

ভবিষ্যত ইন্জিনিয়ার 😂

Address

Chittagong

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when MR Muhit posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to MR Muhit:

Share