12/10/2025
🕐 বিশ্বসমাদৃত মাইজভাণ্ডারীয়া ত্বরিকার প্রোজ্জ্বল নক্ষত্র মারাজাল বাহরাইন, মা’জমাউল বাহরাইন, বিশ্বঅলি শাহানশাহ্ হযরত মাওলানা শাহ সুফি সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.)'র চন্দ্রবার্ষিক জন্মদিন।
🌐 মিরাজী বার্তাবাহী মহাদূত : মারাজাল বাহরাইন, মা’জমাউল বাহরাইন, বিশ্বঅলি শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী
💠 ১২ রজব ১৩৪৭ হিজরী।
২৫ ডিসেম্বর ১৯২৮ খৃস্টাব্দ।
মঙ্গলবার সুবহে সাদেক।
🖊️ দ্বাদশীর চাঁদ পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়েছে - আলো ও গতির উৎসের উদ্দেশ্যে যেন শ্রদ্ধা জানালো। কেটে গেছে রাতের নিঝুম প্রহর। পূর্বাকাশে ফুটে উঠেছে ঊষার আলো। পাখির কলকণ্ঠে ঘুমন্ত প্রকৃতি ও মানুষ জেগে উঠতে শুরু করেছে। কন্কনে শীতে ধান মাড়ানোর জন্য আগেই জেগেছে গ্রামের কিষাণ-কিষাণী। সারা বছরের শ্রমের ফসলে গোলা ভরার আশায়। মৃদু-মন্দ হিমেল বাতাসে টিপ্ টিপ্ ঝরে পড়ছে গাছের পাতায় পাতায় জমা শিশির। ভেসে আসা ভোরের আযান ধ্বনি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ (অর্থ: আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নেই) বিশ্বজনীন আহ্বানের সাথে মাইজভাণ্ডার শরিফে ভূমিষ্ঠ হয় এক শিশু।
মহান আল্লাহ্ পবিত্র কোরআনে রজব মাসকে অতি সম্মানিত মাস বলে ঘোষণা করেছেন। রা, জিম ও বা - এই তিন অক্ষরে রজব শব্দ গঠিত। ‘রা’ দিয়ে আল্লাহ’র রহমত, ‘জিম’ দিয়ে জত্ - উপহার এবং ‘বা’ দিয়ে বারণ অর্থাৎ অনুগ্রহ বুঝায়। মূলত: এ মাসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মানুষের জন্য আল্লাহ’র তিনটি কল্যাণই অব্যাহত থাকে। হযরত আকরাম বিন আব্বাস (রা.) বলেন, “রাসূলে খোদা (দ.) বলেছেন, রজব আল্লাহ’র মাস।
হযরত আনাস বিন মালিক (রা.) আল্লাহ’র মাস বলতে কি বোঝায় জানতে চাইলে রাসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেন, ‘বেহেশতের একটি নদীর নাম রযব, যার পানি দুধের চেয়ে সাদা ও মধুর চেয়ে মিষ্টি’। কেউ যদি এ মাসে একটিমাত্র রোজা রাখে তাকে কেয়ামতের দিন ঐ সুস্বাদু পানি পান করতে দেয়া হবে।
এ মাসের সাতাশ রজনীতে মহান স্রষ্টা তাঁর প্রিয় বন্ধু হযরত মোহাম্মদ (দ.)কে একান্ত মিলনে আহ্বান জানালেন। এ আহ্বান পেয়ে ফেরেশতা জিবরাঈলের সঙ্গে বোরাক নামের দ্রুতগতির বাহনে করে তিনি ছুটে যান উর্দ্ধলোকে আল্লাহ’র আরশ অভিমুখে। ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদ করে সপ্ত আসমান পেরিয়ে ‘সিদরাতুল মুনতাহা’ নামক স্থানে পৌঁছলে হযরত জিবরাঈল (আ.) বলেন, ‘এখান পর্যন্ত আমার গতি শেষ। আর কেশাগ্র পরিমাণ উপরে উঠলেই আল্লাহ’র নূরানী তজল্লীতে পুড়ে ছাই হয়ে যাব। এবার আপনার একার পালা’। সে স্থান থেকে রফ্ রফ্ নামক অপর বাহন রাসূলকে (দ.) মহান আরশে নিয়ে পৌঁছায় যেখানে মহামহিম প্রভুর স্বরূপ অবস্থান।
‘সহসা খুলে গেলো চির রুদ্ধ দ্বার
স্রষ্টা ও সৃষ্টিতে হলো মিলন অপার’।
- কবি সুফিয়া কামাল রচিত ‘মেরাজ’ কবিতা হতে।
আল্লাহ’র অভুতপূর্ব মিলনে ধন্য হলেন নবিশ্রেষ্ঠ হযরত মোহাম্মদ (দ.)। এই মিরাজ খুলে দিলো স্রষ্টা প্রভু ও সৃজিত মানবের চিরস্থায়ী বাধাহীন মিলন পথ - বেলায়েত। এই মহা মিলনমাসে সম্মানিত বারোর শুভ ঊষালগ্নে এ কোন্ সূর্যোদয়? মিরাজী বার্তাবাহী কোন মহাদূত?
গড্ দা ফাদার, গড্ দা সন এ্যান্ড গড্ দা হলি স্পিরিট (অর্থ: স্রষ্টাই পিতা, স্রষ্টাই পুত্র এবং স্রষ্টাই পবিত্র শক্তি) এই ত্রিত্ববাদে বিশ্বাসী খৃষ্টানদের ত্রাণকর্তা হযরত ঈসা (আ.) এই দিনেই জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পিতা ছাড়া মাতা মরিয়মের (আ.) রহস্যময় সন্তান। অসংখ্য মোজিজা বা অলৌকিক ঘটনার মাধ্যমে আকৃষ্ট করে মানুষকে তিনি প্রতিবাদহীন আত্মোৎসর্গের প্রেমমন্ত্রে দীক্ষিত করেন। খ্রীষ্টধর্মে বিশ্বাসীদের মতে, এক শিষ্যের বিশ্বাসঘাতকতায় অধর্মী ইহুদীরা তাঁকে ক্রুসবিদ্ধ করে হত্যা করে। মুসলমানদের বিশ্বাস আল্লাহ্ তাঁকে উর্দ্ধে তুলে নিয়েছেন, তিনি চতুর্থ আসমানে এখনো জীবিত। মানুষের মুক্তির জন্য শেষকালে জগতে পুনঃ উদয় হবেন। সমগ্র ইউরোপ, আমেরিকা, অষ্ট্রেলিয়া মহাদেশ জুড়ে এবং আফ্রিকা ও এশিয়ার দেশে দেশে তাঁর পবিত্র জন্মদিন খৃষ্টানদের খৃষ্ট দিবসে সর্বত্র অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে জন্মোৎসব পালিত হয়। বিংশ শতাব্দীতে সেই ঈসার (আ.) মহান জন্মদিনে এ কোন্ ঈসা পুনঃ ভবে এলেন?
হযরত গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারী মাওলানা শাহ্সুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ কুদ্দাসা সিররাহুল বারীর পৌত্র খাদেমুল ফোকারা হযরত মাওলানা সৈয়দ দেলাওর হোসাইন মাইজভাণ্ডারী শিশুর পিতা। হযরত গাউসুল আযম বিল বিরাসত মাওলানা সৈয়দ গোলাম রহমান প্রকাশ বাবা ভাণ্ডারীর দ্বিতীয় কন্যা শাহ্জাদী সৈয়দা সাজেদা খাতুন শিশুর স্নেহময়ী মাতা। এমন দুই মহান মর্যাদাবান অলি-উল্লাহ’র পবিত্র রক্তধারার অপূর্ব সম্মিলন বিশ্ব সুফি সভ্যতার ইতিহাসে বিরল ঘটনা। এ যেন পবিত্র কোরআনে বর্ণিত দুই সাগরের মিলনস্থল ‘মারাজাল বাহরাইন’। যেখানে ভাজা মাছ তাজা (জীবিত) হয়। হযরত মুসা (আ.) যে স্থানে রহস্যজ্ঞানী অলি-উল্লাহ্ হযরত খোয়াজ খিজির (আ.) এর সন্ধান পেয়েছিলেন (সূরা কাহাফ নবম রুকু দ্রষ্টব্য)।
আজি হতে শতবর্ষ পরে / কে তুমি পড়িছ বসে আমার কবিতাখানি
কৌত‚হল ভরে, / আজি হতে শত বর্ষ পরে।
(১৪০০ সাল কবিতা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)
হযরত গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারীর জন্মের একশত বছর পর এই শিশু তাঁর বংশের উত্তরসূরি। তাঁর দর্শনরূপ কবিতার একনিষ্ঠ কৌতুহলী পাঠক, বংশের প্রোজ্জ্বল আলোক প্রদীপ। তিন বোন জন্মের পর পরিবারের প্রথম পুত্র সন্তান; পরম আরাধ্য ধন। তাই দরবার পাকে আনন্দের বান ডাকে। সপ্তম দিবসে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় নবজাতকের নাম রাখা ও আকিকা অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। এটাই দরবার পাকের সকল পরিবার ও আত্মীয় স্বজনের সম্মিলিত একক অনন্য প্রাণবন্ত অনুষ্ঠান। শিশুর নাম রাখা হয় ‘সৈয়দ বদিউর রহমান’।
এই অনুষ্ঠানের পর স্বপ্নে শিশুর পিতাকে হযরত গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারী ভাবগম্ভীর স্বরে বলেন, শিশুর নাম রাখুন জিয়াউল হক। অনুশোচিত পিতা পরদিনই পুনঃ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। দু’টা গরু জবেহ করে রাখা হলো স্বপ্নাদিষ্ট পবিত্র নাম। জিয়া শব্দের অর্থ আলো এবং হক শব্দের অর্থ সত্য।
সুতরাং সত্যের আলোক - জিয়াউল হক। সত্যের বার্তাবাহক আরেক মহাদূত।
[সূত্র: SZHM Trust প্রকাশন ❝আলোকধারা বুকস❞ প্রকাশিত ‘শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.)’]
প্রাপ্তিস্থান: ❝আলোকধারা বুকশপ❞ ১৮-১৯ নং শপ, লেভেল: ১, সাফ আমিন শপিং মল, ১৫৮ কলেজ রোড, চকবাজার, চট্টগ্রাম।
🚚 হোম ডেলিভারিতে নিতে যোগাযোগ করুন
📞 01647533084
💬 WhatsApp: https://wa.me/8801647533084
Official Page link: https://www.facebook.com/share/1AohjTF71Z/
Official Group link: https://www.facebook.com/share/g/piUcWvFBWieoEuJV/?mibextid=A7sQZp