Naib's Talk

Naib's Talk (〜^∇^)〜
🥀প্রয়োজনের বাইরে কেউ কারো প্রিয়জন নয়'🥀🥲💫。

15/10/2025
12/10/2025

শিরোনাম: চাকরিমুখী নয়, মুখস্থভিত্তিক পরীক্ষা ব্যবস্থা — দায় কার?

বাংলাদেশে বিসিএসসহ অধিকাংশ সরকারি ও বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় প্রার্থীদের মূল্যায়ন করা হয় প্রধানত সাধারণ জ্ঞান, বাংলা, ইংরেজি, গণিত, ও মানসিক দক্ষতা যাচাইয়ের মাধ্যমে। কিন্তু বাস্তবতা হলো—এই প্রশ্নগুলোর বেশিরভাগই চাকরির প্রকৃত কাজের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয়। ফলে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর অনেক কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে কাজ শিখতে হয় সম্পূর্ণ নতুনভাবে, যা সময়, সম্পদ ও দক্ষতার অপচয় ঘটায়।

🔹 চাকরিতে প্রবেশের বাস্তব চিত্র

বর্তমানে বিসিএস, ব্যাংক, বা অন্যান্য সরকারি চাকরির পরীক্ষায় ২০০ মার্কসের এমসিকিউ ও লিখিত পরীক্ষায় ইতিহাস, ভূগোল, রাজনীতি, সাহিত্য ইত্যাদি থেকে প্রশ্ন করা হয়।
উদাহরণস্বরূপ—

প্রশাসন ক্যাডারের একজন প্রার্থীকে জিজ্ঞেস করা হয় “বাংলা সাহিত্যের নবজাগরণের সময়কাল কত?”,

কিন্তু প্রশ্ন করা হয় না “সরকারি ফাইল প্রসেসিং কীভাবে হয়?” বা “জনসেবার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ধাপ কী?”।

ফলে যারা ভালো মুখস্থ করতে পারে, তারা পরীক্ষায় ভালো করে; কিন্তু যারা বাস্তব জ্ঞান ও বিশ্লেষণধর্মী চিন্তায় দক্ষ, তারা অনেক সময় পিছিয়ে পড়ে।

🔹 কেন চাকরি সম্পর্কিত প্রশ্ন করা হয় না

বিশেষজ্ঞদের মতে এর পেছনে তিনটি প্রধান কারণ আছে:

1. একক মানদণ্ড বজায় রাখার চেষ্টা:
সব প্রার্থীর একসঙ্গে মূল্যায়ন সহজ করতে সাধারণ জ্ঞানভিত্তিক প্রশ্ন রাখা হয়।
2. প্রশাসনিক কাঠামোর জড়তা:
পুরোনো ধাঁচের সিলেবাস ও প্রশ্ন প্যাটার্ন এখনো হালনাগাদ হয়নি।
3. প্রশিক্ষণনির্ভর কাঠামো:
ধারণা করা হয়, চাকরিতে ঢোকার পর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কাজ শেখানো হবে—তাই আগে সাধারণ মেধা যাচাই করলেই যথেষ্ট।
🔹 ফলাফল ও বাস্তব সমস্যা

অনেক কর্মকর্তা বাস্তব কাজে অদক্ষ থেকে যান।

সময়মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া বা সমস্যা সমাধানে ধীরগতি দেখা যায়।

তরুণ প্রজন্মের মধ্যে “চাকরি মানেই মুখস্থ পরীক্ষা” মানসিকতা তৈরি হয়েছে।

শিক্ষা ও কর্মজীবনের মধ্যে ব্যবধান ক্রমে বাড়ছে।

🔹 দায় কার—নিজের নাকি রাষ্ট্রের?
আসলে দায় উভয়েরই।
রাষ্ট্রের দায়: যুগোপযোগী ও চাকরিমুখী পরীক্ষা কাঠামো না করা, প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার দুর্বলতা, এবং বাস্তব জ্ঞানভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতির অভাব।

ব্যক্তির দায়: মুখস্থভিত্তিক প্রস্তুতিকে সহজ পথ ভেবে বাস্তব দক্ষতা অর্জনের চেষ্টা না করা, যেমন—যোগাযোগ দক্ষতা, কম্পিউটার ব্যবহারে পারদর্শিতা, বা প্রশাসনিক বাস্তব জ্ঞান।
🔹 করণীয়
পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে চাকরি সম্পর্কিত বাস্তব পরিস্থিতি ও বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্ন অন্তর্ভুক্ত করা।

বিশ্ববিদ্যালয় ও চাকরি কমিশনের মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি করা।

পরীক্ষার পর প্রশিক্ষণকে শুধু আনুষ্ঠানিক না রেখে, বাস্তব কাজভিত্তিক করা।

প্রার্থীদেরও নিজের দক্ষতা (communication, IT, problem-solving) উন্নয়নে মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।

চাকরি জীবনের জন্য প্রয়োজন বাস্তব জ্ঞান, দক্ষতা ও চিন্তার স্বাধীনতা। কিন্তু বর্তমান পরীক্ষাব্যবস্থা তা গড়ে তুলছে না। তাই মুখস্থভিত্তিক নয়, কর্মমুখী পরীক্ষা ব্যবস্থার দাবি এখন সময়ের দাবি। রাষ্ট্র ও ব্যক্তি—দুজনকেই পরিবর্তনের উদ্যোগ নিতে হবে, নাহলে শিক্ষিত তরুণরা শুধু “প্রশ্ন মুখস্থকারী” হয়ে থেকে যাবে, দক্ষ কর্মী নয়।

11/10/2025

শিক্ষক–শিক্ষার্থীর সম্পর্ক: শ্রদ্ধা কমে গেল কেন?

একসময় শিক্ষককে বলা হতো “আলোকবর্তিকা”—যিনি নিজের জ্ঞান, নীতি ও আদর্শের আলোয় সমাজকে আলোকিত করেন। ছাত্ররা তাঁদের দেখলে মাথা নিচু করে সালাম দিত, কথা বলত শ্রদ্ধার সঙ্গে, তাঁদের উপস্থিতিতে নীরবতা নামত শ্রেণিকক্ষে। কিন্তু আজ সেই দৃশ্য অনেকটাই বদলে গেছে। এখন অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষককে বন্ধু ভাবছে, সমানভাবে মিশছে—যা একদিকে ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত দিলেও, অন্যদিকে শ্রদ্ধার সম্পর্ককে দুর্বল করছে। প্রশ্ন হলো, এর জন্য দায়ী কে বা কী?

বর্তমান সমাজে শিক্ষার উদ্দেশ্য ও পরিবেশ—দুটোই বদলে গেছে। একসময় শিক্ষা মানে ছিল চরিত্র গঠন, আদর্শ শেখা ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ তৈরি করা। এখন শিক্ষা হয়ে গেছে মূলত চাকরিমুখী বা নম্বরকেন্দ্রিক। স্কুল বা কলেজ এখন অনেকটা সার্টিফিকেট পাওয়ার জায়গা, শিক্ষক হয়ে গেছেন “ক্লাস নেওয়ার লোক”—এমন ধারণাই গড়ে উঠছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে।

এর পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে পরিবার ও সমাজের পরিবর্তন। পরিবারে বাবা-মা যদি শিক্ষককে সম্মান না করেন, তাঁদের সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেন, তাহলে সন্তানও একইভাবে ভাবতে শেখে। একসময় পরিবারে “শিক্ষক মানেই গুরুজন” বলে শিখানো হতো। এখন অনেক অভিভাবক সন্তানের পক্ষে দাঁড়িয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন—যা সন্তানদের মনে শিক্ষক সম্পর্কে শ্রদ্ধার জায়গা নষ্ট করে দিচ্ছে।

এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাবও কম নয়। এখন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর যোগাযোগ অনেক সময় অনলাইন ভিত্তিক। সোশ্যাল মিডিয়ায় শিক্ষককে “ফ্রেন্ড” করে শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগতভাবে মন্তব্য করে, মজা করে, এমনকি বিতর্কেও জড়ায়। এতে সম্পর্কের সীমারেখা ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ যত বাড়ছে, শ্রদ্ধা ও দূরত্বের প্রয়োজনীয়তা তত কমে যাচ্ছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ ও প্রশাসনিক দুর্বলতাও দায়ী। অনেক জায়গায় শিক্ষকদের যোগ্যতা, পেশাদারিত্ব বা নৈতিক মান প্রশ্নবিদ্ধ। শিক্ষকরা যদি নিজেরা দায়িত্বশীল, আদর্শবান ও নীতিবান না হন, তাহলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শ্রদ্ধা আশা করাও কঠিন। শ্রদ্ধা আদায় করতে হয় চরিত্র ও আচরণের মাধ্যমে—পদবি দিয়ে নয়।

অন্যদিকে, সমাজে “শিক্ষক পেশা”র মর্যাদা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। কম বেতন, রাজনৈতিক প্রভাব, অনিয়ম—সব মিলিয়ে অনেক শিক্ষক নিজের পেশার প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্কেও আন্তরিকতার বদলে আনুষ্ঠানিকতা বেড়ে যাচ্ছে।

তবে সব কিছুই নেতিবাচক নয়। অনেক জায়গায় এখনো এমন শিক্ষক আছেন, যাঁরা শিক্ষার্থীদের ভালোবাসেন, উৎসাহ দেন, এবং নিজের আচরণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা অর্জন করেন। শিক্ষার্থীরাও যাঁদের থেকে মানবিকতা ও আন্তরিকতা পায়, তাঁদের প্রতি আজও গভীর শ্রদ্ধা রাখে।

তাই দায় শুধু একপক্ষের নয়—শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পরিবার ও সমাজ—সবাই মিলেই এ অবক্ষয়ের জন্য দায়ী।
সমাধানও তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সম্ভব।
পরিবারে সন্তানকে শেখাতে হবে, শিক্ষক মানে শুধুই পাঠদানকারী নয়—তিনি জীবনের পথপ্রদর্শক।
শিক্ষককেও মনে রাখতে হবে, তাঁর দায়িত্ব শুধু পাঠ নয়, আচরণ দিয়েও শিক্ষা দেওয়া।

শিক্ষা যদি হয় মানুষের উন্নতির মাধ্যম, তবে সেই উন্নতি শুরু হতে হবে শ্রদ্ধা ও নৈতিকতার ভিত্তিতে।
বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ভালো, তবে শ্রদ্ধাহীন সম্পর্ক কখনো ফলপ্রসূ নয়।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীর দূরত্ব নয়, সম্মানজনক ভারসাম্যই এই সম্পর্কের আসল সৌন্দর্য।

✍️ লেখক: সংগ্রাম

11/10/2025

আজকের সন্তানেরা কেন পিতামাতার সেবায় অনিহা?—সামাজিক প্রেক্ষাপটে এক বিশ্লেষণ

✍️ লেখক: ফাইটার

পিতা-মাতা সন্তানের জীবনের প্রথম শিক্ষক, আশ্রয়স্থল এবং সবচেয়ে বড় নির্ভরতা। কিন্তু সমাজে এখন এক হতাশাজনক চিত্র দেখা যায়—অনেক সন্তানই পিতা-মাতার সেবা ও দায়িত্ব পালনে অনীহা প্রকাশ করছে। যাদের ভালোবাসা ও ত্যাগে তারা বড় হয়েছে, বয়সের শেষ প্রান্তে এসে সেই মানুষগুলোই অনেক সময় একাকিত্ব ও অবহেলার শিকার হচ্ছেন। প্রশ্ন জাগে—কেন এই পরিবর্তন? দায়ী কে?

বর্তমান সমাজে পরিবার কাঠামোতে বড় পরিবর্তন এসেছে। আগে ছিল যৌথ পরিবার, যেখানে সন্তানরা ছোটবেলা থেকেই দেখত—বড়রা কেমন করে দাদু-দাদিকে সেবা করছে, সম্মান দিচ্ছে। সেই দেখেই তাদের ভেতরে দায়িত্ববোধ তৈরি হতো। কিন্তু এখন একক পরিবারে সন্তানরা অনেক সময় শুধুই নিজেদের কেন্দ্র করে বেড়ে উঠছে। পরিবারে “আমরা” ভাবটা কমে গিয়ে “আমি” ধারণাটা শক্ত হচ্ছে।

তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রযুক্তি ও ব্যস্ততার যুগ। কর্মজীবনের চাপ, সামাজিক প্রতিযোগিতা আর ব্যক্তিগত স্বার্থের ঘূর্ণিতে আজকের তরুণেরা প্রায়ই ভুলে যাচ্ছে মানবিক সম্পর্কের মূল্য। পিতা-মাতার সঙ্গে সময় কাটানো, কথা বলা, মানসিক সঙ্গ দেওয়া—এসব যেন এখন অপ্রয়োজনীয় মনে হয়। অথচ বয়স্ক পিতা-মাতার কাছে সন্তানের সামান্য মনোযোগই সবচেয়ে বড় আনন্দ।

নৈতিক অবক্ষয়ও এ সমস্যার অন্যতম কারণ। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় এখন অনেকেই শুধুমাত্র নম্বর বা সার্টিফিকেটের পেছনে দৌড়াচ্ছে, কিন্তু নৈতিকতা, শ্রদ্ধা ও মানবিক মূল্যবোধের শিক্ষা তেমনভাবে দেওয়া হয় না। পরিবারেও অনেক সময় বাবা-মা সন্তানদের অর্থ উপার্জনে উৎসাহ দেন, কিন্তু তাদের শেখানো হয় না—“মানুষ হিসেবে দায়িত্ব কী”। ফলে সন্তান বড় হলেও মনে ভালোবাসার জায়গা তৈরি হয় না, তৈরি হয় হিসাব-নিকাশের মানসিকতা।

সামাজিক প্রেক্ষাপটে আরেকটি বড় বিষয় হলো বিদেশগামী প্রজন্ম। কর্মসংস্থানের জন্য অনেক তরুণ বিদেশে চলে যাচ্ছে, সেখানে ব্যস্ত জীবনে পিতা-মাতার সঙ্গে যোগাযোগও কমে যাচ্ছে। অনেকে অর্থ পাঠান ঠিকই, কিন্তু মানসিকভাবে দূরে সরে যান। অথচ অর্থের চেয়ে বেশি প্রয়োজন মানসিক সঙ্গ ও সম্মান।

অন্যদিকে, কিছু ক্ষেত্রে পিতা-মাতার আচরণও দায়ী। অনেক বাবা-মা সন্তানদের ভালোবাসাকে শুধুই আদেশে পরিণত করেন—যেখানে থাকে নিয়ন্ত্রণ, কিন্তু থাকে না বন্ধুত্ব। সন্তান যদি ছোটবেলা থেকেই ভয়, চাপে ও দূরত্বে বেড়ে ওঠে, তবে বড় হয়ে তাদের সঙ্গে সম্পর্কটাও দূরত্বে গড়ায়। সম্পর্কের উষ্ণতা হারিয়ে যায়, এবং সেবার জায়গাটা বাধ্যবাধকতায় পরিণত হয়।

তবে সব কিছুই অন্ধকার নয়। এখনো অসংখ্য তরুণ-তরুণী আছেন যারা পিতা-মাতার পাশে আছেন, তাঁদের সেবা করছেন, হাসিখুশি রাখছেন। সমাজে এই ইতিবাচক দৃষ্টান্তগুলোকেও সামনে আনতে হবে। মিডিয়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় পরিমণ্ডলে পারিবারিক মূল্যবোধের পুনর্জাগরণ ঘটানো এখন সময়ের দাবি।

সবশেষে বলা যায়—পিতা-মাতার সেবায় অনিহা কোনো একদিনের ঘটনা নয়; এটি সমাজ, পরিবার ও শিক্ষার যৌথ ব্যর্থতা। এই সংকট কাটাতে হলে প্রত্যেক পরিবারকে নিজেদের ভেতর থেকে বদল আনতে হবে। সন্তানদের শুধু সফল মানুষ নয়, মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। মনে রাখতে হবে—আজ আমরা যেমন আচরণ করছি, কাল আমাদের সন্তানরাও তেমনি আচরণ করবে।
পিতা-মাতার প্রতি শ্রদ্ধা ও সেবা কোনো বোঝা নয়, এটি মানবতার সবচেয়ে সুন্দর রূপ।

11/10/2025

বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটে নৈতিক অবক্ষয়: দোষ কার?

✍️ লেখক: ফাইটার
মানবজীবনের মূলভিত্তি হলো নীতি ও মূল্যবোধ। সমাজ তখনই টিকে থাকে, যখন সেখানে নৈতিকতা, সহানুভূতি ও মানবিকতা বিদ্যমান থাকে। কিন্তু আজকের সমাজে তাকালে দেখা যায়, এই ভিত্তিটাই ক্রমশ নড়বড়ে হয়ে পড়ছে। শিক্ষিত থেকে অশিক্ষিত—সব শ্রেণির মানুষের মাঝেই নৈতিক অবক্ষয়ের ছাপ স্পষ্ট। প্রশ্ন জাগে, কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের মানবিক মূল্যবোধ?

বর্তমান সমাজে প্রতিযোগিতা ও ভোগবাদী মানসিকতা এতটাই বেড়েছে যে, মানুষ এখন সাফল্যের সংজ্ঞা ঠিক করছে অর্থ, পদ-পদবি আর প্রভাবের মাধ্যমে। কেউ কাকে সম্মান দেবে না, যদি তার হাতে ক্ষমতা বা টাকা না থাকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা যায় কৃত্রিমতা, হিংসা, অপপ্রচার ও অনৈতিকতার প্রদর্শন। পরিবারে সন্তানদের নৈতিক শিক্ষা এখন আর অগ্রাধিকার পায় না—অধিকাংশ সময়ই তারা বড় হচ্ছে স্মার্টফোন আর ইউটিউবের জগতে।

নৈতিক অবক্ষয়ের সবচেয়ে বড় কারণ হলো মূল্যবোধভিত্তিক শিক্ষা ও পারিবারিক আদর্শের অভাব। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এখন বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে পরীক্ষার নম্বরে, কিন্তু চরিত্র গঠনের শিক্ষা কোথায়? শিশুরা মুখস্থ করছে বই, কিন্তু শিখছে না সততা, দায়িত্ববোধ বা অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা। ফলাফল—শিক্ষিত মানুষ হলেও নৈতিকতায় শূন্য প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে।

অন্যদিকে সমাজে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জায়গাটা এখন দুর্বল। দুর্নীতি, ঘুষ, অনিয়ম—এসব যেন “স্বাভাবিক” ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। আমরা অনৈতিক কাজ দেখেও চুপ থাকি, কারণ ভয় পাই বা ভাবি—“আমার কিছু বলায় কী হবে?” এই নীরবতাই আসলে অনৈতিকতার সবচেয়ে বড় শক্তি।

তবে সব কিছু অন্ধকার নয়। এখনো সমাজে অনেক তরুণ আছে যারা সত্য, ন্যায় আর মানবতার পক্ষে কাজ করছে। সামাজিক সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবা আর অনলাইন সচেতনতা কর্মসূচির মাধ্যমে তারা দেখাচ্ছে, এখনো পরিবর্তন সম্ভব। আমাদের শুধু প্রয়োজন প্রত্যেকে নিজের জায়গা থেকে নৈতিকভাবে দায়িত্বশীল হওয়া। পরিবার থেকে শুরু করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত—সবার মিলিত প্রচেষ্টায়ই নৈতিকতার পুনর্জাগরণ সম্ভব।

আমরা যদি চাই সমাজে সত্য ও সৎ মানুষ টিকে থাকুক, তাহলে এখনই নৈতিক শিক্ষার চর্চা বাড়াতে হবে। প্রতিটি পরিবারে বাবা-মাকে হতে হবে সন্তানের প্রথম নৈতিক শিক্ষক। স্কুলে বইয়ের পাশাপাশি জীবনমূল্য শেখাতে হবে। আর রাষ্ট্রকে নীতি ও আদর্শে অনুপ্রাণিত নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে।

নৈতিক অবক্ষয় একদিনে আসেনি—তাই এটি একদিনে দূরও হবে না। কিন্তু যদি প্রত্যেকে নিজের ভেতর থেকে পরিবর্তন শুরু করে, তাহলে একদিন হয়তো আমরা আবারও দেখতে পারব—একটা ন্যায্য, মানবিক ও নৈতিক সমাজ।

11/10/2025
11/10/2025
10/10/2025

Address

Chittagong

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Naib's Talk posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Naib's Talk:

Share