21/08/2025                                                                            
                                    
                                                                            
                                            অনেক দূরের পাহাড়ের কোলে ছিল এক গ্রাম—অরুণপুর। এই গ্রামকে সারা বছর সুরক্ষা দিত এক যাদুকরী প্রদীপ, নাম অগ্নিদীপ। প্রদীপটি জ্বললে গ্রামে কখনো দুঃখ, খরা বা দুর্যোগ আসত না।
কিন্তু এক রাতের ঝড়ে প্রদীপটি হঠাৎ নিভে গেল। গ্রাম অন্ধকারে ডুবে গেল, গাছ শুকিয়ে গেল, আর নদী শুকিয়ে কেবল পাথর পড়ে রইল। সবাই ভয় পেল—“অগ্নিদীপ হারালে আমাদের গ্রামও হারাবে।”
গ্রামে এক সাহসী মেয়ে ছিল, নাম মেঘলা। সে বলল,
“আমি অগ্নিদীপ ফিরিয়ে আনব।”
সবাই অবাক হয়ে হাসল, “তুই এত ছোট, তুই কীভাবে পারবি?”
কিন্তু মেঘলা হাল ছাড়ল না। তার হাতে ছিল শুধু একটি পুরোনো মানচিত্র, যেখানে লেখা ছিল—অগ্নিদীপ পাহারাদারের টাওয়ারে বন্দী।
মেঘলা রওনা দিল ভোরবেলায়। তাকে অতিক্রম করতে হলো—
জ্বলন্ত মরুভূমি, যেখানে বালি আগুনের মতো গরম।
কান্নার নদী, যেখানে প্রতিটি ঢেউ ভেসে আসে মানুষের ভয় নিয়ে।
আর ছায়ার জঙ্গল, যেখানে যে-ই ঢোকে তার প্রতিবিম্ব তাকে ভয় দেখায়।
মেঘলা সাহসী হৃদয়ে প্রতিটি বাধা পার হয়।
শেষে সে পৌঁছাল টাওয়ারে। সেখানে বিশাল এক ড্রাগন পাহারা দিচ্ছিল। ড্রাগন গর্জে উঠল,
“কে আমার আগুন নিতে এসেছে?”
মেঘলা কাঁপল না। সে বলল,
“আমি আলো নিতে আসিনি, আমি আমার গ্রাম বাঁচাতে এসেছি।”
ড্রাগন তার হৃদয়ের সত্যতা বুঝল। সে ধীরে ধীরে চোখ নামিয়ে বলল,
“সাহসী মেয়ে, অগ্নিদীপ তোমার। আলো শুধু তাদেরই প্রাপ্য, যারা স্বার্থ ছাড়া লড়াই করে।”
মেঘলা অগ্নিদীপ নিয়ে গ্রামে ফিরল। প্রদীপ জ্বালতেই আলো চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল। নদী আবার বইতে শুরু করল, গাছে ফুল ফুটল, আর গ্রামে আনন্দ ফিরে এল।
সবাই মেঘলাকে গ্রামের অভিভাবক ঘোষণা করল। আর অগ্নিদীপও প্রতিজ্ঞা করল, সে কখনো আর নিভবে না, যতদিন মানুষ সাহস আর ভালোবাসায় বাঁচবে। 
 #রুপকথার  #গল্প