21/09/2024
পার্বত্য চট্টগ্রামের ৫০.০৬% বাঙ্গালীরা চুয়াল্লিশটা বছর ধরে এই এলাকায় জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে,দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি সদা অনুগত ছিলো বলে এত বছর ধরে একাধিক উপজাতি সশস্ত্র বাহিনীর অস্ত্রের বিপক্ষে নিরস্ত্র জীবন যাপন করেছে।
ইতিহাসের দিকে যদি তাকাই
১৯৮৪ সালের ৩১ মে রাঙামাটি জেলার বরকল উপজেলার ভুষণছড়ায় শান্তিবাহিনীর অতর্কিত আক্রমণে ৩৮৪ জন বাঙালি নিহত হয়েছিল এবং ২৬৪টি ঘর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। একই বছর পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় শান্তিবাহিনীর ও পাহাড়ীদের আক্রমণে আরো অনেক বাঙালি নিহত হয়। ১৯৮৬ সালের ৪ জুন লংগদু উপজেলার রাজনগর গ্রামে হামলা চালিলে ১১ জন বাঙালিকে হত্যা ও দুই শতাধিক বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়, ২ জুলাই দীঘিনালায় ২৪ বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা এবং ৩২ জনকে অপহরণ, একই বছর ১৯ জুলাই খাগড়াছড়িতে আর্মির উপর হামলা চালিয়ে এক সৈনিক ভাইকে হত্যা এবং ৭ জনকে আহত করা, ৭ আগস্ট ২ জন আনসার সিপাহীকে অপহরণ করে হত্যা করা, ১৯৮৭ সালের ২১ জুন দীঘিনালার নারাইছড়িতে আর্মির আব্দুর রাজ্জাক, ইসমাইল হোসেন ও মোহন লালকে গুলি করে হত্যা করা, একই বছর ফেব্রুয়ারি মাসে পানছড়ি উপজেলার ভাইবোনছড়ায় ২২ জন কাঠুরিয়াকে গুম করা, ১৯৮৯ সালের ২ নভেম্বর বাঘাইছড়ির শীলছড়িতে দুইজন আর্মি সৈনিককে গুলি করে হত্যা করা ও একই বছর ২৭ জানুয়ারি বন বিভাগের কর্মকর্তা আবুল হোসেন, বজল আহমেদ এবং মাহবুবুল আলমকে অপহরণ করে নির্মমভাবে হত্যা করা, একই বছর শান্তিবাহিনীর এবং পাহাড়ীদের আক্রমণে পার্বত্য এলাকার বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ১২০০ বাঙালি নিহত হয়। শান্তিবাহিনীর বাঙালি নিধনের ইতিহাস এখানেই শেষ নয়। তারা ১৯৯২ সালের ২৯ জুন মহালছড়ি-রাঙামাটির সড়কে সেনাবাহিনীর চেক পোস্টে আক্রমণ করে দুই জন আর্মি সৈনিককে গুলি করে হত্যা, একই বছর ১০ জানুয়ারি খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়ি উপজেলায় খিরাম বন বিভাগ কার্যলয়ে হামলা চালিয়ে ৬ কর্মচারীকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
একটি স্বাধীন দেশে যেকোন নাগরিকের দেশের যেকোন জেলায় বসবাসের অধিকার থাকার কথা। ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এদেশের একটি অংশ পার্বত্য চট্টগ্রাম। সরকারের ইচ্ছায় বাঙ্গালীদের এখানে পুনর্বাসন করা হয়েছে, কেন তার শান্তিবাহিনী, উপজাতি সন্ত্রাসী সংগঠনের বলির পাঠা হয়ে জীবন হারাবে? কেন তাদেরকে ‘সেটেলার’ বাঙালি বলা হয়? দেশের অন্যান্যস্থানের বাঙালিদের মতো যারা পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাস করছে, তারাতো একই দেশের নাগরিক, কোন ভিন্ন দেশ থেকে নিয়ে এসে তাদেরকে পুনর্বাসন করা হয় নি। জাতির কাছে আমার প্রশ্ন, এতগুলো প্রাণহানির ঘটনায় যারা জড়িত তারা আজ রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করে এ অঞ্চলকে বাংলাদেশ থেকে আলাদা অঞ্চল হিসাবে বিবেচনা করে? এখনও আগের ধারাবাহিকতায় বাঙালীদের হত্যাসহ নানাভাবে নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে, তার কি কোন সুরাহা নেই? একই দেশের দুই ধরণের ব্যবস্থাপনা কেন?
শেষ কথা রাজধানীতে বসে বা চট্টগ্রাম শহরে বসে পাহাড় নিয়ে মন্তব্য করার আগে পাহাড় নিয়ে জানুন।
এখানে বাঙ্গালীরা তাদের একাধিক প্রজন্ম পার করেছে, সন্তানদের বিয়ে দিয়েছে,পুর্ব পুরুষদের কবর দিয়েছে। বাঙ্গালীরা কখনো অস্ত্রধারী হয়ে কাউকে হত্যা বা গুম করে নি। কখনো দাবি তোলে নি এখানে পাহাড়িরা থাকতে পারবে না। বরং যখনই অস্তিত্বের উপর আঘাত এসেছে তখনই অস্ত্রের বিপক্ষে বাশের লাঠি নিয়ে প্রতিরোধ করেছে,সেটেলমেন্টের ৪৫ বছর পর এসে পাহাড় কারো নিজস্ব সম্পত্তি এমন চিন্তা মাথা থেকে ঝেরে ফেলেন।
পাহাড়ে অস্ত্বিত্বের প্রশ্ন ৫০.০৬% বাঙ্গালীরা শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে লড়াই করবে। এই লড়াইয়ে সমতলের আমরাও সর্বশক্তি দিয়ে শামিল হবো ইং শা আল্লহ।