07/10/2025
সর্বোত্তম জিকির ও শ্রেষ্ঠ আমল
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: "সর্বোত্তম জিকির হলো 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ'।" (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)। এই বাক্যটি আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় চারটি বাক্যের মধ্যে অন্যতম। এটি সব আমলের মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ও অধিক সাওয়াবপূর্ণ।
২. জান্নাতে প্রবেশের চাবি
এই কালেমা হলো জান্নাতের চাবি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: "যে ব্যক্তি অন্তরের সাথে 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ' বলবে আর এ বিশ্বাসের ওপর তার মৃত্যু হবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে।" (বুখারি, মুসলিম)।
অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, যে ব্যক্তি একনিষ্ঠতার (খালেস অন্তরে) সাথে এটি বলবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। এখানে 'খালেস অন্তরে' বলার অর্থ হলো - একমাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে এবং তাঁর আদেশ-নিষেধের প্রতি আত্মসমর্পণ করে এই সাক্ষ্য দেওয়া।
৩. জাহান্নাম থেকে মুক্তি
এই সাক্ষ্য প্রদানকারীকে আল্লাহ তাআলা জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দেবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: "যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ' বলবে, কিয়ামতের দিন সে এমনভাবে উপস্থিত হবে যে, তার উপর জাহান্নাম হারাম হয়ে গেছে।" (বুখারি-মুসলিম, মুসনাদে আহমদ)
৪. গুনাহ মাফ ও ক্ষমা লাভ
এই কালেমার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বান্দার বিশাল পাপরাশিও ক্ষমা করে দিতে পারেন, যদি সে শিরক থেকে মুক্ত থেকে এই কালেমার ওপর অবিচল থাকে। একটি হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন:
"হে আদম সন্তান! তুমি যদি জমিন পরিমাণ পাপরাশি নিয়েও আমার কাছে এসে উপস্থিত হও, আর আমার সঙ্গে যদি কিছুর শরীক না করে থাক, তবে আমি সেই পরিমাণ ক্ষমা ও মাগফিরাত তোমাকে দান করব।" (তিরমিজি শরীফ)। 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ' এই কালেমাটিই হলো শিরক না করার মূল সাক্ষ্য।
৫. আমলের পাল্লা ভারী করা
'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ'-এর গুরুত্ব এত বেশি যে তা কিয়ামতের দিন আমলের পাল্লাকে অনেক ভারী করে তুলবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নূহ (আ.)-এর একটি উপদেশ উল্লেখ করে বলেছেন যে:
যদি সাত আসমান ও সাত জমিন এক পাল্লায় রাখা হয় আর 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ'-কে অপর পাল্লায় রাখা হয়, তবুও 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ' তাদের বিপরীত নুয়ে পড়বে (অর্থাৎ পাল্লা ভারী হবে)। (ইবনে হিব্বান)
'মন থেকে' বলার তাৎপর্য
আপনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন, "একবার মন থেকে" বললে। এখানে "মন থেকে" বলার অর্থ হলো:
* ইখলাস (একনিষ্ঠতা): একমাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার এবং তাঁর প্রতি ইবাদতকে নিবেদিত করার ইচ্ছা রাখা।
* দৃঢ় বিশ্বাস: এর অর্থ (আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই) সম্পর্কে নিশ্চিত জ্ঞান ও সন্দেহমুক্ত বিশ্বাস পোষণ করা।
* স্বীকার ও আনুগত্য: এই কথার সাক্ষ্য দেওয়ার পাশাপাশি এর দাবি অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা, অর্থাৎ শিরক ও আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বিরত থাকা।
যেহেতু এটি ঈমানের মূল কালেমা, তাই ইখলাস ও বিশ্বাসের সাথে এর সাক্ষ্য প্রদানকারীর জন্য উপরের বর্ণিত সকল ফজিলত প্রযোজ্য হবে ইনশাআল্লাহ।