25/09/2025
২৪/৯/২৫ ইংরেজী তারিখে ভাইরাল বক্তা " মুফতী আলী হাসান উসামা" র হবিগঞ্জে ৩ টি প্রোগ্রাম ছিল।
১. ১২ নং সুজাতপুর, বানিয়াচং উপজেলা
সময়াঃ বিকাল ৩ ঘটিকা থেকে
২. শাহপুর, ১১ নং মক্রমপুর, বানিয়াচং উপজেলা
সময়ঃ বাদ এশা
৩. নরপতি, চুনারুঘাট উপজেলা
সময়ঃ রাত্র ১০ ঘটিকা
সুজাতপুর এর প্রোগ্রামে দাওয়াত করেন আমার এক ছাত্র মাওঃ বশির আহমদ, শাহপুরের প্রোগ্রামের জন্য দাওয়াত করি আমি মাওঃ আজিজুর রহমান, চুনারুঘাটের প্রোগ্রামের জন্য দাওয়াত করেন আমার আরেক ছাত্র মাওঃ মাহমুদুল হাসান।
আমি দাওয়াত পর যখন ফেইসবুকে পোষ্ট করলাম তখন মাওঃ বশির আহমদ ও মাওঃ মাহমুদুল হাসান আমার পোষ্ট দেখে আমার সাথে যোগাযোগ করেন এবং তারাও যে ২৪ তারিখে দাওয়াত করছেন আমাকে জানান।
আমি তখন একটি সস্তিতেই ছিলাম, কারন আগের প্রোগ্রামও আমার এক ছাত্রের ওখানে, পরেও আমার এক ছাত্রের ওখানে, মধ্যখানে আমার শাহপুরের প্রোগ্রাম। দাওয়াত দেওয়ার পর থেকে আমি আর যোগাযোগ করি নাই। ভাবলাম আমার দুই ছাত্র যেহেতু আমার আগে পিছি আছেন, তারাঐতো যোগাযোগ রাখবেন। তারা যোগাযোগ ঠিক ঠিক মত রেখেছেনও। তারা সব সময় আমাকে বলছেনও। আমি আবার আমার এক বন্ধুকে দায়িত্বও দিয়েছি, কারন আমার ঐ বন্ধুটির সব সময় মুফতী আলী হাসান উসামার সাথে দেখা হয়। আমি উনার কাছ থেকে খবরা-খবর নেই।
ব্যস্ততার কারনে নিজে ফোন দেই নাই, আবার মনে মনে ভাবলাম আমার দুই ছাত্রতো পিছনে লাগাইল আছেই।
যাই হউক গতকালও আমি জানতাম " মুফতী আলী হাসান উসামা " সাহেব ৩ টি প্রোগ্রামেই আসবেন। আমারতো আর চিন্তার কারন নাই। আমি তাফসীর কমিটিকে
বলে দেই যে, উসামা সাহেব আসবেন ( ইনশাআল্লাহ)।
অদ্য ২৪/৯/২৫ ইংরেজী সকাল ১০ ঘটিকায় খবর পাইলাম " মুফতী আলী হাসান উসামা" প্রোগ্রামের আসবেন না। কয়েক ঘন্টা পর তাফসীর শুরু, আর এখন উনি আসবেন না এটা কেমন কথা?
আমি আমার বন্ধু কে জিজ্ঞাসা করলাম কি ব্যাপার? উনি হতাশাগ্রস্ত হয়ে বললেনঃ জ্বি ভাই ঠিকই, উসামা সাহেব আসবেন না।
আমি সুজাতপুরের তাফসীর কমিটির কাছে খবর নিলাম উনারা বলতেছেন যে, সে তো ফোনই ধরে না, চুনারুঘাটের উনারা একই কথা বলতেছেন।
আমি সকাল ১১ ঘটিকায় আমার বন্ধুর কাছ থেকে মুফতী আলী হাসান উসামা সাহেব এর ফোন নাম্বার এবং তার ডাইভার এর ফোন নাম্বার নিলাম। উসামা সাহেব কে ফোন দিলাম, ফোন রিসিভ করে নাই। উনার ডাইভার কে ফোন দিলাম , অনেক্ষন কথা বললাম, এক পর্যায়ে আসল কাহিনী বের হয়ে আসল। ডাইভার ইঙ্গিতে কি জানি বলতে চায়, আমি ডাইভারকে বললাম কি বলতে চান, বলুনঃ।
ডাইভার আমার সাথে ডিমান্ট করতে লাগল, আমিও ডাইভার কে একটু লোভ দিলাম। না দিয়েতো আর উপায় নাই, কারন যুব সমাজ আমাকে খুব চাপ সৃষ্টি করেছে। নিজেরওতো একটা ইজ্জত আছে। আমি তাদের কে মোবাইলে বললাম উসামা সাহেব তো অগ্রিম টাকা চাইতেছে। এখন কি করা যায়? যুব সমাজ আমাকে বললঃ যত টাকা চায় তত দিমু, তারপরও তিনি আসতে হবে।
এদিকে ডাইভারও টাকা দিলে আসবে বলতেছে, অগ্রিম টাকা না দিলে আসবে না, সে অসুস্থ, টাকা পাঠাইলে সুস্থ। শেষ পর্যন্ত দর কষাকষি করতে করতে ২০ হাজার টাকা কন্টাক হয়। ডাইভার আমাকে নাম্বার দেয়, ঐ নাম্বার আমি তাফসীর কমিটি কে দেই। তাফসীর কমিটি বিকাল ৩ ঘটিকার সময় বিকাশে ২০ হাজার টাকা দেয়। তখন ডাইভার আমাকে বলল হজরত টাকা পেয়েছি। আমরা মাহফিলের উদ্দ্যেশ্যে ঢাকা থেকে রওয়ানা হয়েছি।
যাই হউক সুজাতপুর আগেই মিস, এখন শুধু বাকি আছে চুনারুঘাট আর শাহপুর। আমি চুনারুঘাটের আমার ছাত্রকে ফোন দিলাম, খোজ-খবর নিলাম। চুনারুঘাটের তাফসীর কমিটি আমাকে বললঃ হুজুর গতকাল আমাদের কাছ থেকে উসামা সাহেব ২৫ হাজার টাকা অগ্রিম নিয়েছে, এবং উনার ডাইভার ২ হাজার টাকা নিয়েছে। আজকেতো আমাদের আর ফোন রিসিভ করতেছে না। তখন বিকাল ৩ টা হয়ে গেছে। এমন সময় ডাইভার আমাকে বলতেছেঃ হযরত শুধু শায়খের ২০ হাজার দিলেন! আমার জন্যতো ২ হাজার টাকা দিলেন না। আমি বললাম আসেন, বাকীটা আসার পর পাবেন।
যাই হউক অনেক টাল-বাহানার পর উসামা সাহেব ৯.৪৫ মিনিটে শাহপুর আসলেন। ঐ দিকে চুনারুঘাট থেকে ২৭ হাজার অগ্রিম নেওয়া। টাইমও ১০ টা য় দেওয়া।
আমরা উসামা সাহেব কে ৯.৫০ মিনিটে বয়ানে দিলাম। উনি শরির অসুস্থ, রাস্তাঘাট ভাল না, আবুল-তাবুল বলে বয়ান শুরু করলেন। ১০. ১০ মিনিটে বয়ান শেষ। বয়ান মোট ২০ মিনিট, টাকাও ২০ হাজার। বাহঃ কত সুন্দর মিল, প্রতি মিনিটে ১ হাজার। যাক স্টেইজ থেকে নেমেই গাড়ীতে।
আমার চুনারুঘাটের ছাত্রকে ফোন করে বললামঃ সে আমাদের এখানে ২০ মিনিট বয়ান করে তুমাদের এখানে যাইতেছে।
১১.১৫ মিনিটে চুনারুঘাট পৌছল। সেখানে গিয়েও একই কথা, আমি অসুস্থ, বক্ষর-চক্ষর বলতে লাগল।
শাহপুর যদি অসুস্থতার কারনে কথা বলতে পারল না, তাহলে চুনারুঘাট গিয়ে কি করবে? চুনারুঘাট না গিয়েওতো হবে না, কারন সেখান থেকে ২৭ হাজার টাকা অগ্রিম নিয়েছে।
এই হল মভ সৃষ্টিকারী বক্তা মুফতী আলী হাসান উসামার ২৪/৯/২৫ এর কাহিনী।
হে যুব সমাজঃ তুমরা যে, এই সকল মভ সৃষ্টি করে টাকা উসূলকারী বক্তার জন্য পাগল, তাদের ওয়াজে কি হেদায়ত হবে?
এভাবে মভ সৃষ্টি করে টাকা নেওয়া কি হালাল হবে?
ওয়াজ করে এভাবে টাকা নেওয়া হারাম।
এমন হারামখুর বক্তার ওয়াজ শুনাও জায়েজ হবে না।
আমি তওবা করলাম, আমার জীবনে এমন ব্যবসায়ী, হারামখুর বক্তাকে আর দাওয়াত দিব না।
দয়া করে আর জীবনে কেহ আমাকে এমন হারামখুর বক্তাদের কাছে ফোন দেওয়ার জন্যও অনরুধ করবেন না।
এমন বক্তাদেরকে যে মাহফিলে দাওয়াত করা হয়, ঐ সমস্ত মাহফিলে কেহ টাকা দিবেন না।
এতে সোয়াব এর পরিবর্তে আরোও গুনাহ হবে।
হে আল্লাহ এমন মভ সৃষ্টিকারী, গলাকাটা, ব্যবসায়ী বক্তা থেকে জাতিকে হেফাজত কর। আমিন।
আমি আজ স্ব-চুক্ষে যা দেখেছি, তা লেখেছি। কেহ আজে-বাজে কমেন্ট করবেন না।
ইসলামের স্বার্থে আমি এই কথাগুলো লেখলাম। আমার কথা যদি বিশ্বাস না হয়ে থাকে, আমাকে বলবেন। আমি প্রমান সহ দিয়ে দিব।
- আজিজুর রহমান