31/12/2023
৷৷৷৷ ৷৷৷৷ কপি পোস্ট৷ ৷৷
আশা করি, আমার এই পুরো লিখাগুলো কষ্ট করে ০৫ মিনিট মনোযোগ দিয়ে সবাই একটু পড়বেন 🙏🙏🙏😪😥😭💔❤️🔥
❤️🔥৩১শে ডিসেম্বর: রাখাইন ইতিহাসের এক অভিশপ্ত দিন❤️🔥
রাখাই-মারমা-মগ একই ধর্ম একই বর্ণ একই সুতো গাঁথা, তাই যারা (থার্তি ফার্স্ট নাইট) অর্থাৎ ৩১ডিসেম্বর-কে ঘীরে আনন্দ আয়োজন করা কথা ভাবছেন, তার আগে রাখাইন, মারমা,মগ,ইতিহাস একটু জেনে নিলে বোধহয় ভালো হবে বলে আমি মনে করি ☝️၊
৩১শে ডিসেম্বর ইংরেজী বছরের শেষ দিন। এদিবসের সূর্য্যাস্তের সাথে সাথে সবার মাঝ থেকে একটি বছর হারিয়ে যাবে। হিসেব নিকেশও হয়তো মিলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়বে অনেকে প্রত্যাশা আর প্রাপ্তি নিয়ে। পরদিবসের সূর্য্যোদয়কে স্বাগত জানাবে নতুন প্রত্যাশা নিয়ে। কিন্তু রাখাইন জাতির জীবনে ৩১শে ডিসেম্বর একটি অভিশপ্ত দিন হিসেবে চিহ্নিত।
১৭৮৪সালের ৩১শে ডিসেম্বর তারিখে সূর্য্যাস্তের সাথে সাথে লুন্ঠিত হয়ে যায় রাখাইন সাম্রাজ্যের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব। ১৭৮৫ সালের প্রথম সূর্য্যােদয় আনন্দের প্রত্যাশা নিয়ে উদ্বেলিত হয়ে উঠেনি রাখাইনদের মনে। তাঁরা সূর্য্যােদয়ের সাথে সাথে দেখতে পেয়েছে তাদের চির চেনা প্রিয় পিতৃভূমি, যে সাম্রাজ্য সুদীর্ঘ ৫০০০ বছরধরে দূর্দান্ত প্রতাপ নিয়ে স্বাধীন ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে গর্ব করে এসেছে। সে রাখাইন সাম্রাজ্যকে গ্রাস করে নিয়ে রাখাইন সৈন্যদের রক্তের স্রোতের হোলি খেলায় উন্মত্ত হয়ে রয়েছে বর্মীরাজ #বোদ_মং_ওয়েন এর সেনাবাহিনী। আগ্রাসী বর্মীরাজের অনুগামী সেনাগণ স্বাধীন রাখাইন সাম্রাজ্যের শেষ সম্রাট #মাহা_থামাদা রাজাকে ধৃত করে নৃশংসভাবে হত্যা করার মাধ্যমে রাখাইন রাজধানী #ম্রাউক মহানগরকে পদানত করেই ক্ষান্ত হয় নাই। তারা রাখাইন সাম্রাজ্যের জনপদের পর জনপদ আগুন জ্বালিয়ে ভস্মিভুত করে দিয়ে রাখাইনদের ধন সম্পদ লুট করে নেয়। বর্মী বাহিনীর বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ থেকে রাখাইন নারী পুরুষতো বটেই, দোলনায় দুলতে থাকা দুগ্ধ শিশু এমনকি লোলচর্ম অচল বয়োবৃদ্ধরাও রেহাই পায়নি।
খৃষ্টপূর্ব ৩৩২৫ অব্দে #কালাদান_নদীর দক্ষিণ তীরে #ধান্যবতী নাম দিয়ে কুমার #মারায়ু একটি নগর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। তার প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রের অধিবাসীগণ স্বধর্ম ও স্বকৃষ্টির প্রতি অত্যন্ত সুরক্ষিত করার একটা অনন্য প্রয়াস থাকায় এ জনগোষ্ঠীকে নাম রাখেন #রাক্ষিতা_বা_রাখাইন। যা কালক্রমে #রাখাইন_আরাখাইন_আরাকান হিসেবে পশ্চীমাদের নিকট পরিচিতি লাভ করে। রাখাইনদের সুদীর্ঘ ইতিহাসের #ধান্যবতী (ধান্যাওয়াদী), #বৈশালী (ওয়েশালী), #লেম্রো ও #ম্রাউক নামে চারটি শাসনকাল রয়েছে। সর্বশেষ রাখাইন সাম্রাজ্যের #ধান্যাওয়াদী, #রেম্মাওয়াদী, #মেঘাওয়াদী এবং #ধরাওয়াদী নামে চারটি প্রশাসনিক প্রদেশ ছিল। ইতিহাসের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, খৃষ্টপূর্ব ৩৩২৫ অব্দ হতে ৩২৬ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত #ধান্যবতী শাসনামলে ১১০জন নৃপতি নিরবিচ্ছিন্নভাবে রাখাইন সাম্রাজ্য শাসন করেন। এ শাসনামলে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো খৃষ্টপূর্ব ৫৮০ অব্দে রাজা #চেন্দাসুরীয়া শাসনামলে মহামতি গৌতম বুদ্ধ রাখাইন সাম্রাজ্যের রাজধানী #ধান্যবতী নগরে আগমন ঘটে এবং মহামতি গৌতম বুদ্ধের উপস্থিতিতেই সবার শ্রদ্ধার জন্যে নবধাতু দিয়ে #মহামুনি নামে একটি বৌদ্ধ মূর্তি নির্মাণ করা হয়। ৩২৭খৃষ্টাব্দ হতে ৮১৮খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত #বৈশালী শাসনামলে ১৩ জন রাখাইন নৃপতি রাখাইন সাম্রাজ্য শাসন করেন। ৮১৮খৃষ্টাব্দ হতে ১৪০৬খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত #লেম্রো শাসনামলে ৬১ জন রাখাইন নৃপতি এবং সর্বশেষ ১৪৩০খৃষ্টাব্দ হতে ১৭৮৪খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত ৪৯ জন রাখাইন নৃপতি রাখাইন সাম্রাজ্য শাসন করেন। ইতিহাসের এ সুদীর্ঘ সময়ে রাখাইন ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতিসহ অর্থনীতিভাবেও চরম উন্নতি ঘটে। রন কৌশল এবং নৌ চালনায়ও বঙ্গোপসাগর উপকূলে একটি সমীহ জাগানিয়া নাম ছিল রাখাইন। একারণে দূধর্ষ মোগল, পর্তুগীজ, ইংরেজ, বর্মী এবং পাঠানরাও বঙ্গোপসাগরে রাখাইন বাহিনীকে পারত পক্ষে এড়িয়ে চলতে পছন্দ করতো। তৎসত্ত্বেও #ঙা_কুছালা নামে রাজ পরিবারের এক কুলাঙ্গা সদস্য রাজ সিংহাসন দখলের লোভে বর্মীরাজা #বোদ_মংওয়েন (যিনি বর্মীদের নিকট বোদ ফায়া নামে পরিচিত) এর সাথে গোপন আতাঁত করে রাখাইন সাম্রাজ্য দখলের আমন্ত্রণ জানায়। পরবর্তীতে #ঙাকুছালা এর অনুগত বাহিনীর সহায়তায় বর্মীরাজ #বোদ_মঙ_ওয়েন বিশাল বাহিনী নিয়ে অপ্রস্তুত রাখাইন সাম্রাজ্যের আক্রমণ করে সমগ্র রাখাইন সাম্রাজ্য দখল করে নেয়। ১৭৮৪সালের ৩১সে ডিসেম্বর রাত্রের রাখাইন সাম্রাজ্য দখলের পর পরই রাখাইন জাতির গর্ব, বৌদ্ধ সভ্যতার অমূল্যরত্ন এবং ঐক্যের প্রতীক হিসেবে সর্বধিক পরিচিত #মহামুনি বৌদ্ধ মূর্তিকে ও বর্মী যুবরাজের নের্তৃত্বে লুট করে নিয়ে যায়। বর্মী বাহিনীর নির্বিচারের অত্যাচার নির্যাতন এবং #ঙাছেনদে বাহিনীর অনাচার মধ্যেও রাখাইন সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে উঠে। প্রতিরোধকারীদের মধ্যে জাতাভিমান, জাতীয়তাবোধ এবং দেশপ্রেমের কোন ঘাটতি না থাকলেও তাদের মধ্যে সমম্বয়হীনতার কারনে সুশৃঙ্খল বর্মী বাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধ কার্যকর হয়ে উঠতে পারে নাই। অন্যদিকে জাতীয় সংহতিতে এধরনের সীমাবদ্ধতাকে কাজের লাগিয়ে রাখাইনদের জাতীয়বাদী চেতনাকে ধবংস করে দেওয়ার উন্মাদনায় মেতে উঠে দখলদার বর্মী বাহিনী। রাখাইন ভূখন্ডে যত জ্ঞানী গুনী আছেন, তাঁদের অধিকাংশকে বার্মায় ধরে নিয়ে যাওয়া হয় আর যাঁদেরকে নিয়ে যেতে সম্ভব হয়ে উঠে নাই তাদেরকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। বুদ্ধিজীবিদেরকে নিধনের মাধ্যমে জাতির বিবেককে বিনাশ করে দেওয়াই ছিল বর্মীদের লক্ষ্য। বর্মীরাজ বাহিনীর কর্তৃক পরিচালিত নৃশংসতা কাহিনী বর্ণনাতীত। এসম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্যাদির মতে মাত্র চার বৎসরের (১৭৮৪ হতে ১৭৮৮) মধ্যে ২,৩৬,০০০ রাখাইনকে হত্য করা হয়। এসময় বর্মীরা রাখাইন জাতীয়তাবাদে পূণ:জাগরন চিরদিনের জন্য স্তব্ধ করে দেবার লক্ষ্যে প্রয়োজনের তুলনাও অধিক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। তারা রাখাইনদের সাবেক রাজা #আবায়া মাহারাজার পুত্র রাজকুমার #পাটানপতি_চেন_রোয়ি_পো, চেন্দাসুধেম্মারাজার পুত্র, রাজকুমার ক্য জেন, ধেম্মারাইরাজার পুত্র রাজকুমার রীনাউ পতি, রাজকুমার থুদো উ এবং অন্যান্য রাজকুমার, রাজকুমারী, রাজ পরিবারের সদস্যবৃন্দ