01/12/2023
#গুরুদেব শীলমিত্র থের মহোদয়ের সংক্ষিপ্ত জীবনালেখ্য।
★★★★★★★★★★★★★★★★★★★★★★
যো হবে দহরো ভিক্খু, যুঞ্জতি বুদ্ধসাসনে। সোমং লোকং পভাসেতি,অব্ভা মুত্তোব চন্দিমা!
পবিত্র ত্রিপিটকের অন্তর্গত ধর্মপদ গ্রন্থ। গ্রন্থের ২৫তম বর্গের নাম ভিক্খো বর্গ,এই বর্গের আছে মোট ২২টি পালি গাথা তার সর্বশেষ গাথা হলো উপরোক্ত গাথা,যার বাংলা অনুবাদ করলে দাঁড়াই, #নিতান্ত তরুণ হইলেও যে ভিক্ষু বুদ্ধের শাসনে আত্মনিয়োগ করেন,তিনি মেঘমুক্ত চন্দ্রের ন্যায় এই জগৎকে আলোকিত করেন।
উক্ত গাথার আলোকে, একজন আলোকিত ব্যক্তির দু-চারটি লেখনী, ঊনি হলেন,তরুণ আলোকিত, সংঘপুরুষ,শাসন দরদী, বহু আদর্শিক শিষ্যের জনক,বিনয়শীল, বিদর্শনচার্য্য,আচারিয় ধর্মপিতা গুরুদেব ভদন্ত শীলমিত্র থের। জন্মস্থান কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত রম্যভূমি রামু পূর্ব রাজারকুল। শত শত মেধাবী,কৃতি সন্তানের জন্মভূমি এই পূর্ব রাজারকুল গ্রাম তার দৃষ্টান্ত গুরুদেব একজন।
ছোটকাল থেকেই ছিল শান্ত,শিষ্ট,ভদ্রতা ও শিষ্টাচার সম্পন্ন গুরুদেব এই শীলমিত্র থের। ছিল তারঁ যথেষ্ট মাতৃভক্তি ও পিতার প্রতি অনুগত। শান্ত,শিষ্ট, ও ভদ্র স্বভাব ছিল গুরুদেব ভান্তের বৈশিষ্ট্য। ভান্তে যখন ছোট ছিল তখন ভান্তের মাতা প্রয়াত পারুলী বড়ুয়া ছিল গুরুতর অসুস্থ। পিতা-মাতার একমাত্র পুত্র ছিলেন আজকের এই শীলমিত্র থের। দ্বিতীয় কোন ভাই বোন ছিল না,তাই মায়ের অসুস্থতার পাশে সার্বক্ষণিক ভাবে পাশে থেকে সেবা দান করত সব সময়।
পূজ্য গুরুদেব ভান্তের পিতা বাবু রনজিৎ বড়ুয়ার ( প্রজ্ঞা লংকার ভিক্ষু'র) মুখে শুনেছি মা যখন অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর মুখে ধাবিত অবস্থায় তখন মা তারঁ একমাত্র সন্তানকে বলেছিল বাবা, তুই আমার মৃত্যুর পর শ্রামণ হয়ে থাকবি। আবাল্য ব্রহ্মচারী হয়ে বুদ্ধের নিয়ম সঠিকভাবে মেনে চলে মানবতার কাজ করবি। তখন মাকে কথা দিয়েছিল তার আদরের সন্তান, হ্যাঁ, মা তুমি নিশ্চিত থেকো আমি আজীবন বুদ্ধের শাসনে থেকে মানবতার কাজ করব।
মায়ের মৃত্যুর সাপ্তাহিক সংঘদান অনুষ্ঠানে শ্রামণ হয়ে যায়,পূর্ব রাজারকুল সদ্ধর্মোদ্বয় বৌদ্ধ বিহারে। নাম রাখা হয় শীলানন্দ শ্রামণ। গুরু ছিলেন তৎকালীন সেই সময়ের শ্রীকুল মৈত্রী বিহারের পরম পূজনীয় অধ্যক্ষ, বিচিত্র ধর্মকথিক ভদন্ত বিজয়রক্ষিত মহাথের ও এই সময়ের প্রাঞ্জল ধর্মদেশক ভদন্ত এস.ধর্মমিত্র মহোদয়ের কাছে। পরবর্তী এস. ভদন্ত ধর্মমিত্র থেরো হাজারীকুল বিহারে নিয়ে গিয়ে সান্নিধ্যে রেখে সুত্র ও বিনয় শিক্ষা দান করেন এবং শীলানন্দ থেকে শীলমিত্র নামকরণ করেন।
দীর্ঘ শ্রামণ জীবন অতিবাহিত করার পর এস. ধর্মমিত্র থেরো'র তত্ত্বাবধানে ২০০৬ সালে রামু উত্তর মিঠাছড়ি বন বিহারের অধ্যক্ষ পরম শ্রদ্ধেয় বুদ্ধাংকুর প্রয়াত প্রজ্ঞামিত্র মহাথেরোর কাছে উপসম্পদা গ্রহণ করেন শীলমিত্র ভিক্ষু। তারপর থেকে গুরুর সান্নিধ্যে থেকে গুরুর সেবা করে যাচ্ছিল এই শীলমিত্র ভিক্ষু এবং বিদর্শনচার্য্য ভদন্ত করুণাশ্রী মহাথেরো'র ভান্তের সান্নিধ্যে কয়েক বছর অতিবাহিত করে বিদর্শন ধ্যান শিক্ষা অর্জন করেন, ১০০ ফুট ভূবন শান্তি বুদ্ধ মূর্তির প্রতিষ্টাতা ও বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রের পরিচালক,ভদন্ত করুণাশ্রী মহাথেরো'র কাছ থেকে। পাশাপাশি কোটবাজার শাসনতীর্থ সু-দর্শন বিহারে থেকেও সমাজ সংস্কারক, শাসনবংশ মহাথের ভান্তের সেবা করত। তাই মা -বাবা ও গুরুজনের আর্শীবাদ নিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছিল। মাতাকে যেমন কথা দিয়েছিল তেমন কাজ করেই যাচ্ছেন। আমি নিজেও মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যায় এই ভেবে যে, লোকালয়ের ভেতর থেকে বিনয়কে আঁকড়ে ধরে কিভাবে শাসন সদ্ধর্মের কাজ করে তা ভেবে। শ্রদ্ধেয় ভান্তের মতো মানুষ সত্যিই বিরল। খুব কমই দেখা যায়।
সমাজের ভেতরে থেকে বিনয় রক্ষা করাটা এতো সহজ ব্যাপার না হলেও পর ভান্তে তা খুব সহজ করেই মেনে চলে। ভিক্ষুদের প্রাণ "পাতিমোক্ষ গ্রন্থ" এর ক্ষুদ্র শীলও রক্ষা করতে গিয়ে এখনো কোন টাকা স্পর্শ করে না। বিভিন্ন আচার-অনুষ্টানে গিয়ে কয়েক টাকা পেলে তা দিয়ে বুদ্ধের শাসন সদ্ধর্মের উন্নতিরকল্পে এটা করবে নাকি ঐটা করবে ভেবে না পাই। তাই একটার পর একটা লাগাতর শাসনিক কাজ করেই যাচ্ছেন। আর মানবতা? মানবতার কথা যদি বলতে হয়,নিজ হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানের একটি মূল কেন্দ্র " প্রজ্ঞামিত্র বৌদ্ধ ভিক্ষু শ্রামণ প্রশিক্ষণ ও সাধনা পরিবেণে অবস্থানরত অর্ধ-শতাধিক ভিক্ষু শ্রামণের দায়িত্ব নিজে নিয়ে স্বয়ং সম্পূর্ণ দিয়ে সমস্ত কিছু দিয়ে মাতা-পিতার মতো আদর স্নেহ করে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে ভিক্ষু শ্রামণদের মধ্যে বেশীভাগই অনাথ। আজ পর্যন্ত শ্রদ্ধেয় ভান্তের নিজ হাতে গড়া সৃষ্ট প্রতিষ্ঠান ও শিষ্য সংঘের তালিকাসহ শাখা বিহার সমূহঃ
১. প্রজ্ঞামিত্র বৌদ্ধ ভিক্ষু শ্রামণ প্রশিক্ষণ ও সাধনা পরিবেণ, ফারিকুল,রামু,কক্সবাজার। (২০০৮ সাল)
২. প্রিয়সেন প্রভাতী সদ্ধর্ম শিক্ষা নিকেতন,রামু,ফারিকুল। যেখান থেকে প্রতি বছর কক্সবাজার জেলার সকল বৌদ্ধ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বৃত্তি প্রদান করা হয় (২০০৮)
৩. প্রিয়সেন- তিক্খাঞানা উপাসিকা সংঘ (২০০৮)
৪. প্রজ্ঞামিত্র অরণ্য বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র, নাইক্ষ্যংছড়ি, বান্দরবান, পার্বত্য জেলা। (২০০৯)
৫. অহিংসা সেবক সেবিকা সংঘ,ফারিকুল, রামু। (২০০৯)
৬. প্রজ্ঞা প্রকাশনা পরিষদ, ফারিকুল, রামু। (২০১১)
৭. সংঘশক্তি মানব কল্যাণ ট্রাষ্ট, ফারিকুল, রামু। (২০১৩)
৮. ত্রৈমাসিক বিবেক পত্রিকা, ফারিকুল,রামু। (২০১৩)
৯. উমখালী তপোবন বৌদ্ধ বিহার,রামু। ( ২০১৪)
১০. কক্সবাজার প্রজ্ঞালোক বৌদ্ধ বিহার ও ধ্যান কেন্দ্র,কক্সবাজার। (২০১৫)
১১. বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ওয়েলফেয়ার মিশন, (২০১৮)
১২. U.A.E বাংলাদেশ বৌদ্ধ বিহার ও ধ্যান কেন্দ্র, আরব,আমিরাত, দুবাই। (২০২০)
১৩. কোটবাজার শাসনবংশ- শীলমিত্র বৌদ্ধ বিহার (২০২০)
শিষ্যদের নাম সমূহঃ
১. প্রজ্ঞাপাল থের,পরিচালক, কক্সবাজার প্রজ্ঞালোক বৌদ্ধ বিহার ও ধ্যান কেন্দ্র, কক্সবাজার।
২. প্রজ্ঞা প্রিয় থের অধক্ষ্য, U.A.E. বাংলাদেশ বৌদ্ধ বিহার ও ধ্যান কেন্দ্র, আরব, আমিরাত দুবাই।
৩. প্রজ্ঞাতিলোক থের, অধ্যক্ষ,শ্রীকুল মৈত্রী বিহার,রামু।
৪. প্রজ্ঞাকরুণা থের, পরিচালক , নাইক্ষ্যংছড়ি অরণ্য বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র, বান্দরবান।
৫. প্রজ্ঞাকুশল ভিক্ষু, ভারত।
৬. প্রজ্ঞামুদিতা ভিক্ষু ভিক্ষু, অধ্যক্ষ,চকরিয়া কেন্দ্রীয় জেতবন বৌদ্ধ বিহার, প্রতিষ্ঠাতা, লামা শীলালংকার- শীলমিত্র সেবা সদন। চকরিয়া,কক্সবাজার।
৭. প্রজ্ঞাশাক্য ভিক্ষু, অধ্যক্ষ, চৌধুরীপাড়া আর্য্য উপসনা বৌদ্ধ বিহার, উখিয়া।
৮. প্রজ্ঞাসুমন ভিক্ষু, প্রতিষ্ঠাতা, রামু, প্রজ্ঞামিত্র বৌদ্ধ বিহার ও ধ্যান কুঠির, রামু, কক্সবাজার।
৯. প্রজ্ঞাসত্য ভিক্ষু, প্রতিষ্ঠাতা, চারিমহাতীর্থ আন্তর্জাতিক ভাবনা কেন্দ্র, রামু, কক্সবাজার।
১০. প্রজ্ঞাআর্য্য ভিক্ষু, উপাধ্যক্ষ, মধুখালি বন বিহার, চকরিয়া , কক্সবাজার।
১১. প্রজ্ঞাদত্ত ভিক্ষু,অধ্যায়নরত, ভারত।
১২. প্রজ্ঞাসুভদ্র ভিক্ষু, আবাসিক, প্রজ্ঞামিত্র বন বিহার ,রামু, কক্সবাজার।
১৩. প্রজ্ঞাকৌন্ডন্য ভিক্ষু, অধ্যক্ষ,পহঁরচাদা সংঘরাজ সারমেধ বৌদ্ধ বিহার,চকরিয়া,কক্সবাজার।
১৪. প্রজ্ঞাসেন ভিক্ষু, অধ্যায়নরত, ফ্রান্স।
১৫. প্রজ্ঞাবিনয় ভিক্ষু,অধ্যক্ষ, পূর্ব রাজারকুল সদ্ধর্মোদ্বয় বৌদ্ধ বিহার,রামু,কক্সবাজার।
১৬. প্রজ্ঞাশ্বর ভিক্ষু,অধ্যায়নরত, শ্রীলংকা।
১৭. প্রজ্ঞা সুমঙ্গল ভিক্ষু,অধ্যক্ষ,চন্দনাইশ সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহার,চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম।
১৮. প্রজ্ঞাজিৎ ভিক্ষু,ভারত।
১৯. প্রজ্ঞালংকার ভিক্ষু(গুরুদেব এর পিতা) অন্তেবাসী, প্রজ্ঞামিত্র বৌদ্ধ ভিক্ষু শ্রামণ প্রশিক্ষণ ও সাধনা পরিবেণ,রামু,কক্সবাজার।
২০. প্রজ্ঞাক্ষান্তি ভিক্ষু, অধ্যক্ষ,উত্তর বড়বিল ধর্মপাল বৌদ্ধ বিহার।
২১. প্রজ্ঞাব্রত ভিক্ষু,আবাসিক,উমখালী তপোবন বিহার,রামু।
২২. প্রজ্ঞাদর্শন ভিক্ষু,অধ্যক্ষ,আলীপুর অশোক ক্লাব বৌদ্ধ বিহার, ভারত, রিষড়া ধর্মোদ্বয় বৌদ্ধ বিহার, হুগলী ভারত।
২৩. প্রজ্ঞাদর্শী ভিক্ষু,অধ্যায়নরত, থাইল্যান্ড।
২৪. প্রজ্ঞা অগ্র ভিক্ষু ভিক্ষু, অন্তেবাসী, প্রজ্ঞামিত্র ট্রেনিং সেন্টার, রামু, কক্সবাজার।
২৫. প্রজ্ঞাসুরিয়া ভিক্ষু, অন্তেবাসী, প্রজ্ঞামিত্র বন বিহার, রামু ,কক্সবাজার।
২৬. প্রজ্ঞালোক ভিক্ষু,থাইল্যান্ড।
২৭. প্রজ্ঞামৈত্রী ভিক্ষু,অধ্যক্ষ,মানিকপুর বিজয়ানন্দ বৌদ্ধ বিহার,চকরিয়া, কক্সবাজার।
২৮. প্রজ্ঞা শ্রদ্ধা ভিক্ষু,অধ্যক্ষ, কুঞ্জবন বৌদ্ধ বিহার,নাইক্ষ্যংছড়ি, বান্দরবান।
২৯.প্রজ্ঞা চন্দ্র ভিক্ষু, অন্তেবাসী, প্রজ্ঞামিত্র বৌদ্ধ ভিক্ষু শ্রামণ প্রশিক্ষণ ও সাধনা পরিবেণ, রামু,কক্সবাজার।
৩০. প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু, পরিচালক, লামা শীলালংকার - শীলমিত্র সেবা সদন, লামা।
৩১. প্রজ্ঞাকাশ্যপ ভিক্ষু, অধ্যাক্ষ, শাসনবংশ - শীলমিত্র বৌদ্ধ বিহার, উখিয়া, কক্সবাজার।
৩২. প্রজ্ঞারত্ন ভিক্ষু, চন্দনাইশ
৩৩. প্রজ্ঞা রক্ষিত ভিক্ষু,অধ্যক্ষ হারবাং নবরত্ন সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহার,চকরিয়া,কক্সবাজার।
৩৪. প্রজ্ঞাপূর্ণ ভিক্ষু ভিক্ষু,অধ্যক্ষ, সোনাইছড়ি বৌদ্ধ বিহার।
৩৫. প্রজ্ঞাউপেক্ষা ভিক্ষু, অধ্যক্ষ মধুখালি বন বিহার চকরিয়া, কক্সবাজার ।
৩৬. প্রজ্ঞা শ্রী ভিক্ষু, অন্তেবাসী, চৌধুরী পাড়া আর্য্য উপসনা বৌদ্ধ বিহার।
৩৭ এইচ. প্রজ্ঞা কল্যাণ ভিক্ষু, অন্তেবাসী, শ্রীকুল মৈত্রী বিহার, রামু কক্সবাজার।
৩৮. প্রজ্ঞা তাপস ভিক্ষু, অন্তেবাসী, রাজারকুল সদ্ধর্মদয় বৌদ্ধ বিহার, রামু, কক্সবাজার।
৩৯. প্রজ্ঞা কুশল ভিক্ষু, অন্তেবাসী, প্রজ্ঞামিত্র বৌদ্ধ ভিক্ষু শ্রামণ প্রশিক্ষণ ও সাধনা পরিবেণ, রামু, কক্সবাজার।
৪০. প্রজ্ঞা জয় ভিক্ষু, বড়বিল ধর্মপাল বৌদ্ধ বিহার।
৪১. প্রজ্ঞা সমাধি ভিক্ষু, অন্তেবাসী, প্রজ্ঞামিত্র বন বিহার।
৪২. প্রজ্ঞা সার ভিক্ষু, অন্তেবাসী, প্রজ্ঞামিত্র বন বিহার।
৪৩. প্রজ্ঞা জ্যোতি ভিক্ষু, অন্তেবাসী, প্রজ্ঞামিত্র ট্রেনিং সেন্টার, রামু, কক্সবাজার
ইহা ছাড়া, শতাধিক শ্রামণ ও সেবক রয়েছে বিভিন্ন শাখা বিহার ও প্রতিষ্ঠানে।
পূজ্য গুরুদেব শীলমিত্র থের মহোদয় বিভিন্ন শাখা বিহারে ও দূর্গম এলাকায় ধর্মপ্রচার করে যাচ্ছেন অকাতরে। অনেক সময় দেখেছি রাত ১২ টা বাজে রামু থেকে মানিকপুরে গিয়ে সমস্যা সমাধান করতে ছুটে যেতে নিজের সমস্ত কিছু বিসর্জন দিয়ে। জাতির ও জন্য সার্বক্ষণিক চিন্তা মগ্ন থাকতে আমি এই রকম বৌদ্ধ ভিক্ষু খুব কমই দেখেছি। শ্রদ্ধেয় ভান্তের বর্তমানে পনের তম বর্ষাবাস যাপনে আমি লক্ষ্য করেছি একেক বর্ষাবাসে একেক ধুতাঙ্গব্রত পালন করতে। যেমন,নৈসজ্জিক ধুতাঙ্গ, পিন্ডপাতিক ধুতাঙ্গ, ত্রি-চীবরিক ধুতাঙ্গ, শশ্মানিক ধুতাঙ্গ,একাসনিক ধুতাঙ্গ। বর্তমানে কঠিন সময়ের মধ্যেও বুদ্ধের শাসন দীর্ঘস্থায়ীর লক্ষ্যে শাসনিক কাজ করেই যাচ্ছেন,চলমান কাজের মধ্যে চৌধুরীপাড়া আর্য্য উপসনা বৌদ্ধ বিহারের মধ্যে ৮০ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন ধ্যান মুদ্রা বুদ্ধ মূ্র্তি,রামু, ফারিকুল স্কুল ও ছাদের উপর দন্ডায়মান অবস্থায় ২১ ফুট বুদ্ধ মূর্তি সহ কুটির নির্মাণ কাজ এবং নাইক্ষ্যংছড়ি ভাবনা কেন্দ্রে বুদ্ধ মূর্তি ও ভবন নির্মাণ মানিকপুর নতুন মন্দির নির্মাণ কাজ চকরিয়া, পাষাণ সীমা ও উপগুপ্ত মহাথেরো'র আসন সহ কোটবাজার রাস্তা সংলগ্ন আরেকটি নতুন সাংঘিক প্রতিষ্ঠান। শ্রদ্ধেয় ভান্তে প্রতি বছর বিভিন্ন জায়গায় ধ্যান শিক্ষা দিয়ে থাকেন তা আজ অবধি প্রায় ২৫/ ৩০ কোর্স পর্যন্ত। পূজ্য গুরুদেব এর প্রতি শ্রদ্ধাম্বিত হয়ে জিঙ্গেস করেছিল শ্রদ্ধেয় ভান্তে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে যে ধর্মপ্রচার করে যাচ্ছেন সেখানে তো ভান্তের অনেক টাকা গাড়িতে চলে যায় বিনিময়ে তা পাই কিনা তার উত্তরে একজন ভিক্ষু বলে যে, যাদেঁর যতটুকু সামর্থ্য ততো টুকুই দান করে আর বেশীভাগ ক্ষেত্রে যখন বিভিন্ন শাখা বিহারে যায় সেখানে অনেক সময় দেখা যায় ভান্তের অর্থ ব্যয় করে মানুষের সমস্যা সমাধান করে, তখন উক্ত উপাসক,(দুবাই প্রবাসী) বাবু সুজন বড়ুয়য় বলে আমি প্রতিমাসে ভান্তের গাড়ির জন্য ১০,০০০ হাজার টাকা করে দান দিব। এভাবে আরো অনেকেই ভান্তের কর্মকান্ড দেখে অতি প্রসন্ন মনে ভান্তেকে দান দেই, যে দানের অর্থ দিয়ে শ্রদ্ধেয় ভান্তে শাসন সদ্ধর্মের কাজ চলমান রাখতে ও বহু শ্রামণদের পড়ালেখার যাবতীয় খরচ বহন করে যাচ্ছে। এতোসব করার পরেও ভান্তে সাহিত্য রচনার কাজও করে যাচ্ছেন,যেমন ভান্তের প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে লৌকিক লোকোত্তর হিতোপদেশ নামক জীবন যুদ্ধে কীভাবে জয়ী হবে বুদ্ধের আলোকে সুন্দর ব্যাখা দিয়ে সমাজে উপহার দিয়েছে পাশাপাশি আরো কই একটা পান্ডলিপি করা আছে, এমন কীর্তিমান পুরুষ জন্ম হোক প্রতি ঘরে ঘরে। আমি শ্রদ্ধেয় ভান্তের নিরোগ ও শতায়ু কামনা করে সংক্ষিপ্ত জীবনালেখ্য ইতি টানলাম। জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক।