
13/08/2025
"ছেলেটাকে সবাই ডাকত পাগলা রাকিব… কিন্তু আজ সে আমাদের গ্রামের বিজ্ঞানী!
বাংলাদেশের এক শান্ত ছোট্ট গ্রাম—শিমুলপুর। ধানক্ষেতের সবুজ সমুদ্র, কাকের ডাক, আর বাঁশবনের ফাঁক দিয়ে ভেসে আসা বাতাসে কাটত গ্রামবাসীর দিন। এই গ্রামেরই এক কোণে থাকত ১২ বছরের রাকিব।
রাকিব অন্যদের মতো মাঠে গরু চরানো বা মাছ ধরা তেমন পছন্দ করত না। তার সবচেয়ে প্রিয় জিনিস ছিল—পুরনো বিজ্ঞান বই, যা সে বাজারের পুরাতন বইয়ের দোকান থেকে পাঁচ-দশ টাকায় কিনে আনত। কখনও আবার গ্রামের স্কুলের শিক্ষক সোহেল স্যার তাকে পুরনো বিজ্ঞান ম্যাগাজিন উপহার দিতেন।
রাকিবের মাথায় সবসময় প্রশ্ন ঘুরত—
“আকাশ নীল কেন?”
“বিদ্যুৎ কিভাবে আসে?”
“যদি আমি এমন এক মেশিন বানাতে পারতাম যা খাল থেকে পানি তুলে জমিতে পৌঁছে দেবে, তাহলে কৃষকদের কত সুবিধা হতো!”
তার ঘরের এক কোণে একটা ছোট্ট ল্যাব ছিল—আসলে সেটি ছিল তার পুরনো কাঠের পড়ার টেবিল, যেখানে রাখা থাকত ভাঙা টর্চলাইট, পুরনো রেডিওর যন্ত্রাংশ, কাচের শিশি, আর নানা রকম তার। গ্রামের মানুষ তাকে মজা করে বলত—“পাগলা রাকিব”, কিন্তু তার মা হাসিমুখে বলতেন,
— “আমার ছেলে একদিন বড় বিজ্ঞানী হবে।”
একদিন বর্ষাকালে গ্রামের পাশের খাল উপচে পড়ে ধানক্ষেতে পানি ঢুকে গেল। কৃষকেরা হাহাকার শুরু করল। রাকিব তখন নিজের মাথার খাতা খুলল। কয়েকদিন ধরে খাটুনি খেটে, পুরনো সাইকেলের চাকায় আর প্লাস্টিকের ড্রামে বানিয়ে ফেলল এক অদ্ভুত যন্ত্র—যা খালের পানি ঘুরিয়ে দিয়ে অন্য খালে সরিয়ে দিতে পারে।
প্রথমে সবাই অবিশ্বাস করল। কিন্তু যন্ত্রটা চালু হতেই পানি ধীরে ধীরে সরে গেল, ধানক্ষেত বাঁচল। গ্রামের লোকজন অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল রাকিবের দিকে। সেই দিন থেকেই আর কেউ তাকে “পাগলা রাকিব” ডাকল না, বরং সবাই বলল—“আমাদের গ্রামের বিজ্ঞানী”।
রাকিবের স্বপ্ন আরও বড় হল। সে ভাবল, একদিন ঢাকায় গিয়ে পড়াশোনা করবে, বড় বিজ্ঞানী হয়ে নিজের গ্রাম আর দেশের জন্য নতুন কিছু আবিষ্কার করবে। আর প্রতি রাতে তার মা যখন ঘুম পাড়াতেন, তখন তিনি ফিসফিস করে বলতেন—
— “স্বপ্ন দেখে যা, ছেলে, একদিন ওগুলো সত্যি হবে।”
#বিজ্ঞানীহবারস্বপ্ন
#গ্রামেরবিজ্ঞানী
#বাংলারগর্ব
#শিশুরস্বপ্ন
#স্বপ্নবাজরাকিব
#বিজ্ঞানপ্রেমী
#শিক্ষারআলো
#প্রেরণারগল্প
#বাংলারশিশু
#গ্রামেরগল্প