01/11/2025
প্রত্যন্ত মহেশখালী থেকে জাতীয় গৌরবে — সাঁতারু বেলালের অনুপ্রেরণার গল্প..
দূর উপকূলের প্রত্যন্ত মহেশখালীর এক ক্ষুদে ছেলে—
নিত্যদিনের সংগ্রামের মাঝেই যার স্বপ্ন ছিল পানির বুকে উড়ে চলা।
সেই ছেলেটির নাম বেলাল উদ্দিন, মহেশখালী মডেল হাইস্কুলের ৭ম শ্রেণির ছাত্র।
আজ সে জাতীয় গর্বের নাম—
৫২তম গ্রীষ্মকালীন জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় দুইটি ইভেন্টে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে।
এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে বেলালকে অতিক্রম করতে হয়েছে পাহাড়, নদী, সমুদ্র আর অনিশ্চয়তা।
কক্সবাজারের মহেশখালী—যেখানে সুযোগের চেয়ে বাধাই বেশি, সেখানে জন্ম নিয়েও সে হার মানেনি।
জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে সব ইভেন্টে প্রথম হয়ে যখন সে জাতীয় পর্যায়ে জায়গা পায়, তখন গোটা মহেশখালী গর্বে ভরে ওঠে।
বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতির আয়োজনে শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) ঢাকার মিরপুর সুইমিং পুলে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা।
বেলাল অংশ নেয় দুইটি ইভেন্টে—দু’টিতেই গর্বের তৃতীয় স্থান অর্জন করে।
এটাই তার প্রথম নয়—৫০তম ও ৫১তম আসরেও সে ছিল সফল।
তার সাফল্যে আনন্দে ভাসছে মহেশখালীর মানুষ।
গ্রামের মানুষ বলে, “আমাদের এলাকার ছেলেও যে জাতীয় পর্যায়ে দেশের নাম উজ্জ্বল করতে পারে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
সাঁতারু বেলাল উদ্দিনকে উপজেলা থেকে জাতীয় পর্যায়ে তুলে আনার নেপথ্যে রয়েছেন তার কোচ ও মহেশখালী মডেল হাইস্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক এম. গিয়াস উদ্দিন।
তিনি শুধু প্রশিক্ষক নন, বেলালের স্বপ্নযাত্রার সহযাত্রী।
জাতীয় পর্যায়ে বেলালের এই অর্জনে অভিনন্দন জানিয়েছেন মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হেদায়েত উল্যাহ এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন কাদের।
তারা বলেন, ক্ষুদে সাঁতারু বেলাল আজ মহেশখালী, কক্সবাজার তথা চট্টগ্রাম অঞ্চলের মুখ উজ্জ্বল করেছে। ভবিষ্যতে তার সাফল্য আরও সুদৃঢ় হোক।
নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে বেলাল বলে,
এটি সত্যিই আনন্দের। আমি শুধু নিজের জন্য নয়, আমার পরিবার, আমার স্কুল আর আমার মহেশখালীর জন্য সাঁতরি।”
ভবিষ্যৎ নিয়ে স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে এই ক্ষুদে সাঁতারু বলে,
একদিন আমি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে চাই—আমার লাল-সবুজ পতাকাকে নিয়ে পানির বুকে ভাসতে চাই।”