21/05/2025
যেভাবে দ্বীন প্র্যাক্টিস করা শুরু করবেন:__
ফরজ সালাতের প্রতি মনোযোগী হোন। যে করেই হোক,পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ওয়াক্ত মতো আদায় করার চেষ্টা করুন। শয়তানের ওয়াসওয়াসায় সালাত মিস হলে হতাশ হবেন না। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে আবার শুরু করুন।
সকল কিছুতে সুন্নাহর অনুসরণ করার চেষ্টা করুন। ছোট-বড় সব কাজের শুরুতে আল্লাহর নাম নিন। বিসমিল্লাহ বলুন। সকাল সন্ধ্যার হেফাজতের আমলগুলো করুন। শাইখ আহমাদুল্লাহর (হাফিঃ) একটা বই আছে ছোট, ৩০/৩৫ টাকা হতে পারে। সেটা কিনে নিন। সকাল-সন্ধ্যায় দেখে দেখে হলেও মাসনুন আমলগুলো করুন। কিছু না পারলেও তিন কুল মাস্ট। তিন কুল পাঠের কারণে আল্লাহ আপনাকে সকল ক্ষতি থেকে সুরক্ষিত রাখবেন।
নিজের জবানকে যিকরে মশগুল রাখার চেষ্টা করুন। দুরুদ ও ইস্তেগফারকে নিজের জন্য লাযিম(আবশ্যক) করে নিন। দিনে কমপক্ষে ১ হাজার হলেও ইস্তেগফার করুন। বুঝে বুঝে দুরুদে ইবরাহীম পাঠ করুন। দিলে শান্তি আসবে। জীবনে বারাকাহ্ আসবে। অন্তত ১ টাকা হলেও সদকাহ্ করুন প্রতিদিন। সদকাহ্ করলে গুনাহ মাফ হয়। বিপদ দূর হয়।
আপনি পুরুষ মানুষ হলে আপনার পায়জামা টাকনুর উপরে রাখবেন। টাকনুর নিচে পায়জামা পরার ভয়াবহতা সম্পর্কে জেনে নিবেন। বোনেরা পর্দা শুরু করার চেষ্টা করুন। আগে অন্তত হিজাবটা ধরুন। আল্লাহর কাছে দুআ করুন,"ইয়া আল্লাহ, আমাকে হিদায়ত দাও।" দেখবেন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আপনার জন্য তাঁর দ্বীনকে সহজ করে দিয়েছেন।
গীবতের আসরে বসবেন না। খারাপ সঙ্গ পরিত্যাগ করুন। আল্লাহর কাছে উত্তম সঙ্গী চান। নাটক,সিনেমা দেখা ছেড়ে দিন। একেবারে সম্ভব না হলেও আস্তে আস্তে চেষ্টা করুন। আল্লাহ আপনার প্রচেষ্টা দেখছেন।
মানুষকে সরাসরি অপমান করে কথা বলবেন না(অনলাইন/অফলাইন)। তুচ্ছতাচ্ছিল্য করবেন না। অন্যকে অপমান করে, এমন মানুষের জন্য কেবল লাঞ্ছনা!
কুরআনের জন্য সময় বের করুন। প্রতিদিন অন্তত ৫/১০ মিনিট। জাস্ট মুসহাফটা খুলে বসুন।কুরআনের অর্থ পড়ুন। জীবনে চলার পথনির্দেশ পেয়ে যাবেন। কুরআনবিহীন দিন কখনোই বরকতময় হয় না।
অন্যের হক্ব নষ্ট করবেন না। লেনদেনের ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন,পরিচ্ছন্ন থাকবেন। মানুষের হক্ব নষ্ট করলে আল্লাহ তা ক্ষমা করবেন না,যতক্ষণ না ওই মানুষটা আপনাকে ক্ষমা করছে। উপকার করে খোঁটা দিবেন না। খোঁটা দেওয়া হয়,এমন উপকার ও দান আল্লাহ বরবাদ করে দেন।
অন্যকে হিংসা করবেন না। যে রব্ব আপনাকে রিজিক দেন,সে রব্ব তাকেও রিজিক দেন,যাকে আপনি হিংসা করছেন।হিংসামুক্ত থাকার সহজ উপায় হলো অন্যের জন্য বেশি বেশি দুআ করা। নিজের জন্য পবিত্র,নরম হৃদয় চেয়ে দুআ করা।
একটা অবহেলিত সুন্নাহর কথা বলি! রাসুল ﷺ এর জীবনের শেষ আমল ছিলো মিসওয়াক। তিনি মিসওয়াকের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে বলেছেন,উম্মাহর জন্য কষ্টকর না হলে প্রতি ওয়াক্ত নামাজের সময় মিসওয়াক করা ফরজ করে দিতেন। এমন গুরুত্বপূর্ণ আমলকে এড়িয়ে যাওয়া আমাদেরই ক্ষতি। একটা জয়তুনের মিসওয়াক কিনবেন। ৯০/১০০ টাকা নিবে। তা না পারলে ২০/৩০ টাকা দিয়ে সাধারণ মিসওয়াক নিন। তবুও মিসওয়াকের আমল ছাড়া যাবে না।
যেকোনো কিছু আল্লাহর কাছে চেয়ে নেওয়ার অভ্যেস গড়ে তুলেন। যা লাগবে, সব চান আল্লাহর কাছে।এর জন্য প্রতিবারই হাত তুলে দুআ করা লাগবে না। আমাদের রব্ব অতি নিকটে!
রুমে কেউ নেই। পাঁচ মিনিট একাকী সময় কাটাতে পারছেন! হাত তুলুন আল্লাহর কাছে। সূরা ফাতিহার প্রথম তিন আয়াত পড়ে আল্লাহর প্রশংসা করুন। দুআ ইউনুস পড়ুন। দুরুদে ইবরাহীম পড়ুন। নিজের গুনাহের কথা স্বীকার করুন। এরপর আল্লাহর কাছে যা চাওয়ার চান। আল্লাহ ছাড়া কেউই আপনার চাওয়াগুলো পূরণ করতে পারেন না।
রাতের বেলা সূরা মূলক তিলওয়াত করুন। এটি আপনাকে কবরের আযাব থেকে সুরক্ষা দিবে। ঘুমানোর আগে তিন কুল পড়ে শরীরে ফুঁক দিবেন। সূরা বাকারাহ'র শেষ দুই আয়াত পড়বেন। সারারাত নিরাপত্তার জন্য এগুলোই যথেষ্ট ইনশাআল্লাহ। ঘুম না হলে ইস্তেগফার করবেন। ইস্তেগফার করতে করতেই ঘুম চলে আসবে।
দ্বীনকে আমাদের জন্য সহজ করা হয়েছে। ফরজ ইবাদাতের পর যতটুকু সম্ভব, নফল ইবাদাত করবেন। অন্যের হক্ব নষ্ট করবেন না। জুলুম করবেন না কারো উপর, হোক তা মানুষ বা অন্য প্রাণী।
আল্লাহর পথে অগ্রসর হওয়ার আরো অনেক সহজ উপায় আছে। আজকে এটুকুই থাক। ভুল হয়ে গেলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
সংগৃহীত