15/05/2022
Face The People-ফেস দ্যা পিপল এর কর্ণধার জনাব Shaifur Rahman সাগর ভাই গতকাল একটি টকশো'র আয়োজন করেছিলেন। ইতিমধ্যেই আমরা অনেকে সেটা দেখেছি। ৪ জন অতিথি’র মধ্যে ড. মাওলানা এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী, এডভোকেট মিজানুল ইসলাম, ব্যরিস্টার নিঝুম মজুমদার ও ব্যরিস্টার তুরিন আফরোজ ছিলেন মুখ্য আলোচক।
আলোচনায় কুরআন ও সুন্নাহর জ্ঞানহীন মানুষগুলোর জ্ঞানের গভীরতা আসলে কতটা ঠুনকো তা গতকাল আবারো প্রমাণিত হলো। আমাদের সমাজে মিডিয়ার কিছু অনৈতিক সমর্থন পাওয়া সুশীল সমাজ, বিদেশি শক্তির ক্রীড়নকরা কতটা স্ববিরোধী তাও দেশবাসি দেখতে পেয়েছেন।
গতকালের আলোচনায় নিঝুম মজুমদার সরকারী পৃষ্টপোষকতা পেয়ে নিজেদের কতটা মহাপন্ডিত মনে করেন তা তার কথা ও হুমকিতে প্রকাশ পেয়েছে। জঙ্গি বিমান, জঙ্গি পুলিশ ইত্যাদির উদাহরণ দিয়ে বলতে গিয়ে জনাব আব্বাসী সাহেব যখন বললেন, অর্থের ব্যবহারের দিক দিয়ে আমাদের সম্মানিত মুক্তিযোদ্ধারাও জঙ্গী। কারণ তারা ছিলেন যোদ্ধা, দেশপ্রেমিক লড়াকু। জং থেকে জঙ্গী। এই কথার প্রেক্ষিতে নিঝুম সাহেব বলে উঠলেন, আব্বাসী সাহেব আপনি যা বলেছেন তা নিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় মামলা করা যায়। অর্থাৎ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কতটা অপব্যবহার হচ্ছে তার মতো বালিষ্টারের কথাতেই বুঝা যাচ্ছে।
তুরিন আফরোজকে ‘ভদ্র মহিলা’ সম্মোধন করায় তার আঁতে ঘা লাগে। আসলে যে ভদ্র মহিলা না, তাকে ভদ্র মহিলা বললে খারাপ লাগারই কথা। এটা জনাব আব্বাসী সাহেব স্মরণও করিয়ে দিয়েছেন। অথচ এই মহিলা কিছুক্ষণ পরেই যখন জাহানারা ইমামের কথা তুললেন, তখন তিনি নিজেই জাহানারা ইমামকে ভদ্র মহিলা হিসেবে আখ্যায়িত করলেন। এতে বুঝা গেলো এরা কতটা স্ববিরোধী।
তুরিন আফরোজ ইংরেজিতে ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসীকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলে, বাংলায় টকশো হচ্ছে, এখানে কেন আরবীতে কিছু বলা হবে? এরা জাহেল, কিন্তু এতটা জাহেল, মানুষ কী করে বুঝবে? জনাব আব্বাসী সাহেব শুরুতে কিছু রেফারেন্স ও দুআ করেছেন আরবীতে। মুর্খ মহিলা এর অর্থ না বুঝার কারণে সে আরবী উচ্চারণের প্রতিবাদ করছে ইংরেজি ভাষায়। এরপরও এদেরকে রাষ্ট্র- জ্ঞানী মনে করে। শিক্ষিত মনে করে। এদের প্রতিটি কাজই এমন স্ববিরোধী।
এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী সাহেব একজন মেধাবী, যোগ্য, প্রতিভাবান আলেম। তিনি তাঁর আলোচনায় সকল আলেম সমাজের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। জনাব তারেক মনোয়ার, গুনবী, মামুনুল হক সাহেবের পক্ষে ডিফেন্স করেছেন। আলেমদের মধ্যে কোনো প্রকার বিভাজন চিন্তা করেননি। আমাদের অনেক বড় বড় আলেম নিজের পক্ষের আলেমদের পক্ষে বললেও ভিন্নমতের আলেমদের সহ্য করেন না। তাদের পক্ষে যায় এমন কথা বলেন না। আব্বাসী সাহেব সমস্ত আলেমদের মুখ উজ্জ্বল করেছেন। ১১৬জন আলেমের মধ্যে সত্যিকার অর্থেই বিতর্কিত ওয়াজ করেন এমন আলেমও আছেন। কিন্তু তুরিন আফরোজদেরকে তাদের আলাদা মার্ক করে কথা বলার সুযোগ দেননি। এটাই আব্বাসীর বৈশিষ্ট্য। এ জন্যই আজ গোটা ফেসবুক জুড়ে তাঁর প্রশংসা ভাসছে।
একজন আলেমকে এমনই হওয়া উচিত। শত্রুকে কোনো প্রকার সুযোগ দেওয়া ঠিক নয়। শত্রুর সাথে কথা বলার সময় নিজেদের সকল প্রকার দুর্বলতা ঢেকে রাখতে হয়। আমাদেরকে জনাব আব্বাসী সাহেবের আলোচনার বিভিন্ন খুটি-নাটি বিষয় থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। তিনি আরবী, ইংরেজি ও মাতৃভাষায় সমান পারদর্শী। একজন যোগ্য আলেমের পরিচয় এমনই হতে পারে। বর্তমান যুগের একজন শ্রেষ্ঠ আলেম, অথচ তিনি ভালো বাংলা জানবেন না, ভালো আরবী পারবেন না, ইংরেজি বুঝবেন না, এটা হয় না। আমাদের গর্ব আল্লামা তাকী উসমানি সাহেব তিনটি ভাষাতেই সমান পারদর্শী। যে কারণে তিনি সারা বিশ্বে সমাদৃত।
গতকালের টকশোতে একপর্যায়ে ড. আব্বাসী সাহেবের খ্যাপে যাওয়াটা ছিল সময়ের সঠিক দাবি এবং একেবারে যুৎসই খ্যাপা।
কারণ, ডেবিটে যখন ব্যারিস্টার নিঝুম মজুমদার আব্বাসীর তথ্য ও জ্ঞানভিত্তিক কোনো প্রশ্নেরই উত্তর না দিতে পেরে অসংলগ্ন কথা বলছিলেন এবং আপত্তিকর কথা বলতে শুরু করেছিলেন তখন টকশো সঞ্চালক- সাইফুর সাগরের উচিত ছিলো নিঝুম মজুমদারকে ইন্টারাপ করা। কিন্তু সাইফুর সাগর তা করেননি। এই অবস্থায় আব্বাসী সাহেবের খ্যাপে যাওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। তিনি খ্যাপে গিয়ে বুদ্ধিদীপ্ত কাজটাই করেছেন। নিঝুম মজুমদারকে আর অসংলগ্ন কথা বলার সুযোগ দেননি। আব্বাসী সাহেবের তথ্য ও জ্ঞানের সামনে তথাকথিত সুশীলরা যে দশ মিনিটও দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনা গতকালের টকশোতে আব্বাসী সাহেব আবারও নিজেকে প্রমাণ করে দিলেন।
সঞ্চালক- সাইফুর সাগর সাহেবকে বলবো, তিনি যেনো সঞ্চালনায় আরও দক্ষ ও পারঙ্গম হয়ে উঠেন।
এডভোকেট মিজানুল ইসলাম ডেবিটে চমৎকার যৌক্তিক আলোচনা করেছেন। দেশজুড়ে উনার পরিচিতি হওয়া দরকার।
আল্লাহ তা'আলা মুহতারাম আব্বাসী সাহেবকে তাঁর বিশেষ নিরাপত্তার চাদরে আবৃত রাখুন। তাঁর ইলমী যোগ্যতা আরো বাড়িয়ে দিন। ইসলামের একজন নিবেদিত সৈনিক হিসেবে, দ্বীনের একজন বীর মুজাহিদ হিসেবে আল্লাহ তাআলা তাঁকে কবুল করুন।
সংগৃহিত ও সংযোজিত