12/04/2025
অপমানকারীদের মুখ বন্ধ করার উপায় কী?
আপনার চারপাশে নিশ্চয়ই এমন কিছু মানুষ আছেন, যারা সুযোগ পেলেই অপমান করে, খোঁচা দেয়, বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে।
হয়তো অফিসের সহকর্মী, আত্মীয়স্বজন, পরিচিত কেউ বা সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোল করা কিছু লোক— এমন মানুষ সব জায়গায় আছে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, আপনি কীভাবে এসব সামলাবেন?
রাগ দেখাবেন? পাল্টা অপমান করবেন? নাকি চুপ করে সব সহ্য করবেন?
না, এসবের কোনোটাই সঠিক পথ নয়।
বরং নিচের স্টেপগুলো ফলো করেন— দেখবেন, এসব লোক আপনাকে অপমান করার সাহস পাবে না!
১. চুপ থাকুন, কিন্তু দুর্বল হয়ে নয়!
কেউ অপমান করলেই তড়িঘড়ি করে প্রতিক্রিয়া দেখানোর দরকার নেই। কারণ যারা অপমান করে, তারা চায় আপনি রেগে যান, ভেতরে কষ্ট পান। আপনার প্রতিক্রিয়া তাদের কাছে বিনোদন। কিন্তু আপনি যদি ঠান্ডা থাকেন, তারা হতাশ হবে।
এটা ঠিক চুপ থাকলেই যে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে, তা নয়। তবে নীরবতা অনেক সময় কথার চেয়েও বেশি শক্তিশালী হয়।
ধরুন, কেউ বলল—
“তুমি তো জীবনে কিছুই করতে পারবে না!”
আপনি ঠান্ডা মাথায় তাকিয়ে থাকুন। মুচকি হাসুন। একটুও প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না। বিশ্বাস করুন, সে নিজেই অস্বস্তিতে পড়ে যাবে।
২. অপমানের কথাকে শক্তিতে পরিণত করুন
অনেক বড় বড় মানুষ জীবনে অনেক অপমান সহ্য করেছে। কিন্তু তারাই আবার সবাইকে চমকে দিয়ে সফল হয়েছে।
ধরুন, কেউ আপনাকে বলল—
“তুমি তো একদমই স্মার্ট না!”
আপনার উত্তর হতে পারে—
“ঠিকই বলছেন! তবে চেষ্টায় আছি, একদিন স্মার্ট হয়ে যাবো আপনার মতো। দোয়া কইরেন প্লিজ। ”
কেউ যদি বলে—
“এই কাজ তোমার দ্বারা হবে না!”
আপনি ভাবতে পারেন, “সত্যিই কি হবে না? নাকি এই লোকটাই ভয় পাচ্ছে যে আমি সফল হয়ে যাব?”
জীবনে বড় কিছু করতে চাইলে অপমানকে জ্বালানির মতো ব্যবহার করুন।
যখনই কেউ ছোট করবে, মনে মনে বলুন— “দেখে নিস! একদিন তোকে ভুল প্রমাণ করবো।”
৩. প্রতিউত্তর দিন, তবে বুদ্ধিমানের মতো
সব সময় চুপ থাকাও ঠিক নয়। কখনো কখনো এমন উত্তর দিতে হয়, যাতে সামনের মানুষ বুঝে যায় যে আপনাকে অপমান করা সহজ হবে না।
যদি কেউ আপনাকে খোঁচা দিয়ে বলে—
“তোমার কাজকর্ম সব বাজে!”
আপনার উত্তর হতে পারে—
“সত্যি? তাহলে তো তুমি নিশ্চয়ই জানো কীভাবে আরও ভালো করে এটা করা যায়? প্লিজ, শিখায়া দাও!”
এভাবে বললে, অপমানকারীর আসল জায়গাটা বেরিয়ে আসবে। কারণ তারা কেবল মজা পেতে চায়, কিন্তু গঠনমূলক কিছু বলতে চায় না।
৪. দূরত্ব বজায় রাখুন – সবার কথা শুনতে হবে না!
সব মানুষের কথা শোনার দরকার নেই। বিশেষ করে যারা আপনাকে শুধু নিচু দেখাতে চায়, তাদের কথা শোনা মানেই নিজের মানসিক শান্তি নষ্ট করা।
যদি দেখেন, কোনো একজন মানুষ সবসময় আপনাকে ছোট করে কথা বলে, তাহলে তার থেকে নিজেকে দূরত্বে রাখুন।
তার কথাকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজের কাজে ফোকাস করুন।
সফল মানুষরা কখনোই সবার মতামত নিয়ে মাথা ঘামায় না।
তারা শুধু গুরুত্বপূর্ণ মানুষের কথা শোনে।
তাই নিজের মধ্যেও সে অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
৫. নিজেকে এমনভাবে গড়ে তুলুন, যাতে কেউ আপনাকে ছোট করতে না পারে
সবচেয়ে ভালো প্রতিশোধ হলো— নিজেকে এতটা শক্তিশালী বানিয়ে ফেলা যে অপমানকারীরা একদিন আপনার প্রশংসা করতে বাধ্য হয়।
যদি কেউ বলে— “তুমি তো কিছুই জানো না!”
আপনি ভাববেন, “সত্যিই তো, আমি কি প্রতিদিন নতুন কিছু শিখছি? না তো।”
যখন আপনি নিজের দক্ষতা, জ্ঞান, এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াবেন, তখন আর কেউ আপনাকে ছোট করতে পারবে না।
৬. নিজের আত্মবিশ্বাস বজায় রাখুন – আপনি কার কথা শুনবেন, সেটা বেছে নিন
অনেকেই বলবে, “এটা করো না, ওটা করো না, তুমি পারবে না!” কিন্তু যারা প্রকৃতপক্ষে আপনার ভালো চায়, তারা বলবে— “চেষ্টা করো, আমি পাশে আছি!”
তাই ভাবুন, আপনি কাদের কথা শুনবেন?
যারা আপনাকে টেনে নিচে নামাতে চায়, নাকি যারা আপনাকে এগিয়ে যেতে উৎসাহ দেয়?
যাদের কথা আপনাকে শক্তি দেয়, কেবল তাদের কথাই শুনুন।
বাকিদের বাদ দিন।
অপমানকে ভয় পাবেন না। এটাকে নিজের শক্তি বানান। যারা আপনাকে ছোট করতে চায়, তারা নিজেরাই জীবনে কিছু করতে পারেনি।
আপনি নিজের লক্ষ্যে স্থির থাকুন।
সফল হয়ে উঠুন।
দেখবেন, একদিন তারাই আপনাকে সম্মান করবে।
আর যদি না-ও করে, তাতে কিছু যায় আসে না।
কারণ তখন আপনি এত বড় হয়ে যাবেন যে, তাদের কথার আর কোনো মূল্যই থাকবে না!