12/02/2025
প্রতিশ্রুতি
শামিম্ বিন হারুন ভূইয়া
বুকের ভেতর একবুক শূন্যতা নিয়ে বাঁচতে চাইনি বলে,
তোমার শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছি অন্য শহরে ।
তোমার শহরে বড্ড বেশি আলো,
বড্ড বেশি ঝলমলে রাত, গরম রুটি এবং নানা রকম ভাত ।
তোমার টেবিলে ভরা থাকে নানা রকম ফল এবং পানীয় ।
তোমার দিন শুরু হয় হাজার রকম ব্যস্ততাকে কাঁধে নিয়ে,
ঘর শূন্য করে, দেওয়াল গুলোকে একা করে ।
তোমার বেলকনিতে
একা একা ঝুলতে থাকে ভেজা কাপড়,
বাতাসে উড়িয়ে আনে শুকনো ফুল, গাছের পাতা।
এক হাজার বছর আগে ,
একবার তোমায় দেখেছিলাম -----
তখন তুমি ছিলে, সদ্য টলমলে শিশিরের মতো স্নিগ্ধ স্বচ্ছ ।
কোনো এক দিবালোকে দেখেছিলাম তোমায়
সাদা বেলী হাতে।
তাই থেকে বেলী আমারও ভালো লাগে।
প্রকৃতি আর পরিবেশ অনুকূলে ছিলো না বলে ,
বৈরী বাতাস আমাদের উড়িয়ে নিয়ে গেলো,
অজানা অচেনা কোন এক দ্বীপে ।
আমাদের বিচ্ছেদ হলো --------
এক হাজার বছর পরে আবার আমাদের দেখা ,
বিমুগ্ধ চার চোখ একাকার হলো,
বর্ষা এলো, আবার নতুন করে,
ভিজে গেলো বুৃকের পাটাতন।
এবার আরও শক্ত করে আঁকড়ে নিতে গিয়ে,
শেষমেশ রক্তাক্ত হলো হৃদয় ,
রক্ত ছিটকে বেরিয়ে এলো চোখের পাতায় ।
ভেঙ্গে গেলো কফির গ্লাস,
হারিয়ে গেলো রুমাল এবং গুটি কতক চিঠি।
আর হাজার বছর ধরে জমিয়ে রাখা কতোক গুলো শুকনো ফুল।
ভালোবাসলেও কোথায় যেন ছেদ থেকে যায়,
ভাবনারা হয় আশাহত,
স্বপ্ন ভেঙে উড়তে থাকে, পাখির ঝরে পড়া পালকে ,
এক সাথে সমুদ্র দেখবো বলে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম আমরা,
তা প্রতিশ্রুতিই রয়ে গেলো।
আমাদের পাহাড়ে উঠে আর সমুদ্র দেখা হলো না !
একশো বছর পরে আবার যদি দেখা হয়, তোমার আমার,
সেদিন হয়তো আরও পরিপক্ব হয়ে
তোমার হাতে তুলে দেবো এক হাজার বেলীর মালা।
মিটিয়ে নেবো মনের শত আক্ষেপ।
আমাদের প্রতিশ্রুতি হয়তো কখনো কোনো দিন সত্যি হবে না,
তবে এই আশায় বলতে তো পারবো আমরা কোনো এক দিন সমুদ্রে দেখতে যাব।
আর তুমি আমি চিরকাল প্রতিশ্রুতিতে থেকে যাব।