
12/07/2025
আমার নাম মীরা। বয়স তেইশ ছুঁই ছুঁই।
একটা সরকারি স্কুলে পড়াই - সকালে নিয়ম মাফিক স্কুল, দুপুরে বাড়ি, আর সন্ধ্যায় নিঃশব্দ এক সংসার।
আমার বিয়ে হয়েছে বছর পাঁচেক। স্বামী অমিত- চাকরি করে একটা ব্যাঙ্কে। ভদ্র, শান্ত, যত্নশীল সবাই বলে, "তোর তো ভাগ্য ভালো মেয়ে!"
শুরুতে সব ঠিক ছিল, নতুন সংসারের রঙিন দিন গুলোয় আমি ডুবে ছিলাম।
কিন্তু ধীরে ধীরে একটা অদৃশ্য শূন্যতা ঘিরে ধরল আমাকে। রাতে পাশে শুয়ে থাকা মানুষটা যেন ধীরে ধীরে দূরে সরে যেতে লাগল। যখন আমি একটু ছুঁয়ে দিতে চাইলাম – সে মুখ ঘুরিয়ে নিল।
কখনও বলল - মাথা ধরেছে, আবার কখনও অফিসের কাজের ক্লান্তি। আর আমি অপেক্ষা করে গেলাম... রাতের পর রাত।
প্রথমে ভাবতাম - সময় দাও, ঠিক হয়ে যাবে। তারপর নিজেকে দোষ দিতে শুরু করলাম। হয়তো আমি আর ওর চোখে আগের মতো সুন্দর নই?
নিজেকে আরও যত্ন নিতে শুরু করলাম, চুলে নতুন ছাঁট, শাড়িতে রঙিন ভাব, ঠোঁটে একটু বাড়তি লিপস্টিক।
তবুও... অমিতের চোখে কখনও কোনো আগ্রহ দেখিনি। সেই চোখে ছিল কেবল দায়বদ্ধতা, অভ্যাস... আর নিঃস্বর্ত দূরত্ব।
একদিন বলেই ফেললাম
"আমি কি তোমার পছন্দ নই?"
সে একটু চুপ করে রইল, তারপর বলল -
"ভালোবাসি, কিন্তু ঠিক সেভাবে নয়।"
সে উত্তর আমার ভিতরটা ভেঙে দিল।
তখন বুঝলাম, আমার জীবনে একজন স্বামী আছে, কিন্তু সঙ্গী নেই।
দিনগুলো কেটে যায় আমি রান্না করি, সংসার চালাই, স্কুলে ছেলেমেয়েদের শিখাই সম্পর্ক মানে কী, ভালোবাসা মানে কী। আর রাত হলে... নিঃশব্দে নিজেকে জড়িয়ে ধরি।
এই সমাজে অনেক মেয়েই আছে যারা একটা নামধারী সম্পর্কে বেঁধে থাকলেও প্রেম, ছোঁয়া, অন্তরঙ্গতা এই শব্দগুলো শুধু গল্পে খুঁজে পায়।
আর প্রতিদিন এক নতুন মুখোশ পরে বেরোয় হাসিখুশি দেখানোর অভিনয় করে।
আমি আজও বেঁচে আছি।
তবে পূর্ণ নই।
আমি শুধু চাই - আর কোনো মেয়ে যেন এমন 'সুখী' দাম্পত্যে নিঃস্ব না হয়ে পড়ে।
, ,