আল-হিকমাহ ফাউন্ডেশন

আল-হিকমাহ ফাউন্ডেশন One of the goals of the Al-Hikmah Foundation is to build a life and society based on the Qur'an and

আল-হিকমাহ ফাউন্ডেশন একটি অরাজনৈতিক, অলাভজনক শিক্ষা, দাওয়াহ ও পূর্ণত মানবকল্যাণে নিবেদিত সেবামূলক সরকার-নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান । ২০২২ সালে এটি প্রতিষ্ঠা হয়।
এই প্রতিষ্ঠান মানবতার শিক্ষক, মানুষের মুক্তি ও শান্তির দূত, মানবসেবার আদর্শ, মহানবী মুহাম্মদ সা.-এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে আর্তমানবতার সেবা, সমাজ-সংস্কার, মহোত্তম নীতিচেতনার সঞ্চার, পরিচ্ছন্ন মানসিকতা গঠনে নিরন্তর নানা কর্মসূচি পালন, সর্বোপরি একটি আদর

্শ কল্যাণসমাজ বিনির্মাণে যথাশক্তি প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কুরআন ও সুন্নাহ ভিত্তিক জীবন ও সমাজ গঠন করা এবং বিশুদ্ধ ইলমের প্রচার ও ইসলামি সাংস্কৃতি ও ইসলামি বিনোদন বিস্তার আল-হিকমাহ ফাউন্ডেশনের অন্যতম লক্ষ্য। সালফে সালিহীনের পথ ধরে কুরআন ও সুন্নাহ ভিত্তিক মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা আমাদের নীতি।
এক নজরে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের সেবা-কার্যক্রম:
• বেকারত্ব দূরীকরণে ও দারিদ্র্য বিমোচনে হস্তশিল্প, কারিগরি, খামার ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আত্মনির্ভরশীলতার জন্য অর্থ-সহায়তা প্রদান।
• বিভিন্ন সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগকালে উপদ্রুত অঞ্চলে ত্রাণ সহায়তা প্রদান।
• চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনে অক্ষম রোগীদের স্বল্প বা বিনামূল্যে চিকিৎসা সহায়তা দান।
• অব্যবহৃত ওষুধ সংগ্রহ করে বিভিন্ন বুথের মাধ্যমে দুঃস্থ রোগীদের মাঝে সরবারহ করা।
• রমযান মাসে অভাবগ্রস্তদের মধ্যে ইফতার সামগ্রী বিতরণ ও দাওয়াহ কার্যক্রম পরিচালনা।
• দুঃস্থদের মধ্যে ঈদ উপলক্ষ্যে ফিতরা, পোশাক ও ঈদসামগ্রী বিতরণ।
• সচ্ছলদের পক্ষ হতে কুরবানীর আয়োজন করে দুঃস্থদের মধ্যে বিতরণ।
• দুঃস্থদের মধ্যে রিকশা, সেলাই মেশিন ইত্যাদি উপার্জন-উপকরণ বিতরণ।
• সুপেয় পানির সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় নলকূপ ও জলাধার স্থাপন।
• পরিবেশ সুরক্ষা ও স্বাবলম্বীকরণের লক্ষ্যে অভাবী পরিবার ও আবাসিক মাদরাসার আঙিনায় অধিক ফলনশীন বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যা।
• মাদরাসা শিক্ষার্থীদের আত্মনির্ভরশীল করার জন্য নানামুখী প্রশিক্ষণ ও সহায়তা প্রদান।
• পথশিশু ও প্রতিবন্ধীদের সহযোগিতা ও পুনর্বাসন করা।
• বিধবাদের ব্যয়ভার গ্রহণ ও এতিমদের পরিণত হয়ে ওঠা অবধি অভিভাবকের দায়িত্ব গ্রহণপূর্বক শিক্ষাদান ও প্রতিপালন।
স্বপ্ন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মসজিদ সালাত আদায়ের পাশাপাশি বহুবিধ কল্যাণের কেন্দ্র ছিল। ঢাকা মসজিদের শহর হলেও বেশিরভাগ মসজিদে নামাযের জামায়াত এবং বড়জোর মকতবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন ঢাকায় একটি আদর্শ মসজিদ গড়ে তুলতে চায়, যা সালাত আদায় ছাড়াও বিভিন্ন কল্যাণমূলক কাজে মুখর থাকবে। এই কমপ্লেক্সে থাকবে—

১) জেনারেল ও দীনি শিক্ষার সমন্বিত সিলেবাসের আধুনিক (অনাবাসিক) মাদরাসা
২) আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়
৩) শরয়ী সমাধান বিভাগ
৪) উচ্চতর ইসলামী গবেষণাকেন্দ্র
৫) শিশু-কিশোরদের জন্য ইসলামী সংস্কৃতিকেন্দ্র
৬) ইমাম ও খতীবদের জন্য দাওয়াহ প্রশিক্ষণকেন্দ্র
৭) ফ্যামিলি কাউন্সেলিং বিভাগ
৮) সমাজকল্যাণ পরিচালনা বিভাগ
৯) পাবলিক লাইব্রেরি
১০) আধুনিক মিডিয়া বিভাগ
১১) বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা-কেন্দ্র
১২) মুসাফিরখানা

বিকাশ 01867149113/নগদ/রকেট- 01831560826 (পার্সোনাল) (সেন্ড মানি)
বিকাশ/নগদ (মার্চেন্ট) 01942118921 (পেমেন্ট) (পারসোনাল বিকাশ/নগদ থেকে Payment সিলেক্ট করে পাঠাতে হবে)

23/11/2024

নামাজে অলস ও গাফেল ব্যাক্তির করণীয় কি?

23/11/2024

আউটসোর্সিং বা ফ্রিল্যান্সিং এর উপার্জিত টাকা কি হালাল?

05/09/2024

I gained 10 followers, created 1 post and received 1 reaction in the past 90 days! Thank you all for your continued support. I could not have done it without you. 🙏🤗🎉

26/05/2024

Hi everyone! 🌟 You can support me by sending Stars - they help me earn money to keep making content you love.

Whenever you see the Stars icon, you can send me Stars!

05/04/2024

#সাদাকাতুল_ফিতর
তিন কারণে টাকা দ্বারা সাদাকাতুল ফিতর আদায় করা জায়েজ।
১. তাবেয়ীদের আমল পাওয়া যাওয়ার কারণে।
২. নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জামানায় পরিমাণ পরিমাপ (এক সা'য়) টাকার পরিবর্তে ব্যবহার করা হতো।
৩. দরিদ্রদের বেশি উপকার হওয়ার কারণে।
তাবেয়ীদের আমল;
১.
حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ زُهَيْرٍ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا إِسْحَاقَ، يَقُولُ: «أَدْرَكْتُهُمْ وَهُمْ يُعْطُونَ فِي صَدَقَةِ رَمَضَانَ الدَّرَاهِمَ بِقِيمَةِ الطَّعَامِ»
অর্থ : হযরত যুহাইর (রহ.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ ইসহাক (রহ.) থেকে শুনেছি যে, তিনি বলেছেন, আমি সাহাবায়ে কেরাম (রা.) কে এই অবস্থায় পেয়েছি যে, তারা রমজানে সাদাকায়ে ফিতর খাবারের বিনিময়ে টাকা দ্বারা আদায় করতেন। ইবনে আবি শায়বা-২/৩৯৮, হাদীস-১০৩৭১। এটির সনদ সম্পূর্ণ সহীহ তথা প্রমাণযোগ্য।
২.
حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنِ الْحَسَنِ، قَالَ: «لَا بَأْسَ أَنْ تُعْطِيَ الدَّرَاهِمَ فِي صَدَقَةِ الْفِطْرِ»
অর্থ : হযরত হাসান বসরী (রহ.) বলেন, টাকা দ্বারা সাদাকায়ে ফিতর আদায় করার দ্বারা কোন সমস্যা নেই। ইবনে আবি শায়বা-২/৩৯৮, হাদীস-১০৩৭০।
৩.
সাদাকায়ে ফিতর টাকা দ্বারা আদায় করা যাবে এটি ইমাম বুখারী (রহ.) এরও উক্তি-
قَالَ بن رَشِيدٍ وَافَقَ الْبُخَارِيُّ فِي هَذِهِ الْمَسْأَلَةِ الْحَنَفِيَّةَ مَعَ كَثْرَةِ مُخَالَفَتِهِ لَهُمْ لَكِنْ قَادَهُ إِلَى ذَلِكَ الدَّلِيلُ ……الخ

অর্থঃ আল্লামা ইবনু রাশীদ (রহ.) বলেন, উক্ত মাসয়ালাটির মাঝে ইমাম বুখারী (রহ.) হানাফীদের সহমত পোষন করেছেন….। ফাতহুল বারী লি ইবনে হাজার-৩/৩১২।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জামানায় পরিমাণ পরিমাপ টাকার পরিবর্তে ব্যবহার করা হতো
১. আবু তায়েবা রাযিয়াল্লাহু আনহু নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শিঙ্গা লাগালেন। অতঃপর তাকে এক সা খেজুর পারিশ্রমিক স্বরূপ দেওয়া হলো। (মুয়াত্তা মালেক -১৮২০)
২. কেউ বকরি বা গরুর ওলানের দুধ জমা করা পশু ক্রয় করার পর তা চাইলে ফেরত দিতে পারে কিন্তু তা দহন করার বিনিময়ে এক সা খেজুর প্রদান করতে হবে। (সহীহুল বুখারী - ২১৫১)
দিনার দিরহামের হিসাব;
এক দিনারে ৪.২৫ গ্রাম সোনা থাকতো। যার বর্তমান আনুমানিক মূল্য ১৫,৩৩০ টাকা।
এক দিরহামে ৩ গ্রাম রুপা থাকতো। যার বর্তমান আনুমানিক মূল্য ১৪০ টাকা।
তাহলে এখন আপনারাই বলেন ১১০ টাকা বা ১১৫ টাকা সদকাতুল ফিতের হলে সেটা টাকা দিয়ে কিভাবে আদায় করা সম্ভব হতো তখনকার সময়?
এর দাড়ায় বুঝা যায় তখনকার সময়ে এক ছা পরিমাপটা টাকার পরিবর্তে ব্যবহার করা হতো মূল পরিমাপ বোঝানোর জন্য নয়।
দরিদ্রদের বেশি উপকারের দিকে লক্ষ্য করে সাদকাতুল ফিতরে টাকা প্রদান করা হয়।
ঈদের দিন একজন দরিদ্র মানুষ শুধুমাত্র গম, কিসমিস, খেজুর, পনির এসব খাবে না। ঈদের দিন একজন মানুষের সেমাই, চিনি গোশত, ভাত আরো অন্যান্য কিছুর প্রয়োজন আছে।
তাই আমরা যখন কোন একজন দরিদ্র মানুষকে দশ বাড়ীর দশ রকম গম সদকাতুল ফিতের দিব। আর সেই গমটা যখন সে বাজারে বা দোকানে বিক্রি করবে ১০ বাড়ীর দশ গম মিশাল থাকার কারণে খুব কম দামে সেটা বিক্রি করবে। যেটা তার জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
আর আমরা যদি সেই গমটা বিক্রির টাকাটা তাকে সদকাতুল ফিতের হিসেবে দেই তাহলে সেটা দরিদ্র ব্যক্তির জন্য বেশি উপকারের কারণ হবে এবং সে পেরেশানি থেকেও মুক্তি পাবে।
অতএব বর্তমান সময়ে পণ্য দিয়ে সদকাতুল ফিতের আদায় করার চেয়ে টাকা দ্বারায় সুতকাতুল ফিতের আদায় করা ভালো।
و الله اعلم بالصواب

✒️ হাফেজ মাওলানা রাশেদ কবির

#সাদকাতুল_ফিতর #ফিতরা #ফেতরা

05/04/2024

সকল শ্রেণীর মানুষের ক্ষেত্রেই কি একই মানের সদকাতুল ফিতর প্রযোজ্য?

সকল শ্রেণীর মানুষের জন্য একই মানের ফিতরা আদায় করা উচিৎ নয়। অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে যেমন মানুষের মাঝে বিভাজন রয়েছে তেমনিভাবে ফিতরা আদায়ের ক্ষেত্রে এই বিভাজনকে বিবেচনায় রাখা উচিৎ। যারা তুলনামূলক বেশি অর্থশালী তারা উন্নত মানের খেজুর বা কিসমিস বা তার মূল্য দ্বারা সদাকাতুল ফিতর আদায় করবে। আর যারা তুলানামূল কম অর্থের মালিক তারা আটা, ময়দা, ছাতু জাতীয় খাদ্যদ্রব্য বা তার মূল্য দ্বারা সদাকাতুল ফিতর আদায় করবে। তাছাড়া সাহাবায়ে কেরাম রা. অধিকাংশ সময় খেজুর দ্বারাই সদাকাতুল ফিতর আদায় করতেন। আব্দুল্লাহ বিন উমর রা. আজীবন খেজুর দ্বারাই সদাকাতুল ফিতর আদায় করেছেন।

ইমাম শাফেয়ী র. এর মতে হাদীসে বর্ণিত ফিতরার খাদ্যদ্রব্য সমূহের মধ্য হতে সর্বোৎকৃষ্ট ও সর্বোচ্চ মূল্যের দ্রব্য দ্বারা সদাকাতুল ফিতর আদায় করা উত্তম। ইমাম মালেক র. এর মতে খেজুর দ্বারা ফিতরা আদায় করা উত্তম এবং খেজুরের মধ্য হতে সবচেয়ে উন্নত খেজুর আজওয়া দ্বারাই আদায় করা উত্তম। ১ কেজি উন্নত মানের আজওয়া খেজুরের বর্তমান সম্ভাব্য বজার মূল্য ৩,০০০/- টাক। প্রতি কেজি হিসেবে এক সা’ খেজুরের মূল্য প্রায় ১০,০০০/- টাকা। ইমাম আহমদ রহ. মতানুসারে সাহাবায়ে কেরামের অনুসরণ করে খেজুর দ্বারা ফিতরা আদায় করা উত্তম। ইমাম আবু হানীফা রহ. এর মতেও অধিক মূল্যের খাদ্যদ্রব্য দ্বারা ফিতরা আদায় করা উত্তম। আলমুগনী, ৪/২১৯, আওজাযুল মাসালিক, ৬/১২৮ , আল ইসতিযকার ৩/২৪২/৫৮৬।

শেষ কথা

ঈদুল ফিতর শান্তি ও কৃতজ্ঞতা, ক্ষমা ও নৈতিকতা, পুণ্য ও সাফল্য, স্মরণ ও নির্মল বিনোদনের এক অনন্য বার্তা বহন করে থাকে। ঈদুল ফিতরের নির্মল আনন্দে মুখরিত হোক মুমিন জীবনের দিক দিগন্ত। মুছে যাক অতীতের যাবতীয় গ্লানী। আলোয় আলোয় উদ্ভাসিত হোক চারিধার। আল্লাহ আমাদের সকলকে নির্মল আনন্দের পবিত্র আবহে ঈদুল ফিতর উদযাপন করার সৌভাগ্য দান করুন।

পোস্টটি লাইক ও শেয়ার করুন।

05/04/2024

সদাকাতুল ফিতর (ফিতরা) আদায়

সাদাকাহ শব্দটি আরবী সিদক ধাতুমূল থেকে উদগত। এর অর্থ সততা, সত্যবাদিতা। সাদাকাহ ঐ সম্পদকে বলা হয় সত্যনিষ্ঠ হৃদয়ে আন্তরিকতার সাথে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষে ব্যয় করা হয়। কুরআন সুন্নাহর পরিভাষায় এটি একটি ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ। সদাকাতুল ফিতর অর্থ রমাযানের রোযা সমাপ্তির দানব্রত।

ঈদুল ফিতরের দিন সুবহে সাদিকের সময় যদি কারো নিকট ৭.৫ তোলা (৮৭.৪৮ গ্রাম) স্বর্ণ অথবা ৫২.৫ তোলা (৬১২.৩৬ গ্রাম) রুপা অথবা সমপরিমাণ মূল্যের ব্যবসায়িক পণ্য বা তরল (নগদ) অর্থ থাকে তাহলে বৎসর অতিক্রান্ত না হলেও তার উপর সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব হবে। তবে এক্ষেত্রে গৃহের অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী ব্যতীত অন্যান্য আসবাব সামগ্রী, সৌখিন দ্রব্যাদি, অব্যবহৃত ঘর প্রভৃতির মূল্যও ধর্তব্য হবে।

রোজা রাখা ফিতরা ওয়াজিব হওয়ার জন্য শর্ত নয়। কেউ যদি রোজা না রাখে কিংবা না রাখতে পারে তার উপরও সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব হবে।

সদকাতুল ফিতর নিজের পক্ষ থেকে এবং পিতা হলে শিশু সন্তানের পক্ষ থেকে আদায় করা ওয়াজিব। সাবালক সন্তান, স্ত্রী, স্বামী, অধিনস্ত কর্মচারী এবং মাতা পিতা প্রমুখের পক্ষ থেকে সদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব নয়। তবে সাবালক সন্তান উন্মাদ বা বুদ্ধি প্রতিবন্ধি হলে পিতার জন্য তার পক্ষ থেকে আদায় করা ওয়াজিব।

একান্নভুক্ত পরিবার হলে সাবালক সন্তান, মাতা-পিতা এবং স্ত্রীর পক্ষ থেকে সদাকাতুল ফিতর আদায় করা মুস্তাহাব; ওয়াজিব নয়। ওয়াজিব না হলেও সঙ্গতি থাকলে সদাকাতুল ফিতর আদায় করা মুস্তাহাব এবং অনেক পূণ্যের কাজ।

সাদাকাতুল ফিতর বিষয়ক হাদীসগুলোতে পাঁচ ধরনের খাদ্যদ্রব্যের সন্ধান পাওয়া যায়। ১। গম ২। যব ৩। খেজুর ৪। কিশমিশ ৫। পনির।

সদকাতুল ফিতরের ক্ষেত্রে আধা সা’ তথা ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম গম, আটা, ময়দা, ছাতু কিংবা তদসমপরিমাণ মূল্য প্রদান করতে হবে। যব, খেজুর, কিশমিশ বা পনির দ্বারা সদাকাতুল ফিতর আদায় করতে চাইলে এক সা’ তথা ৩ কেজি ২৭২ গ্রাম বা তদসমপরিমাণ মূল্য প্রদান করতে হবে। বর্তমানে ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম গমের সম্ভাব্য বাজার মূল্য ৬৫ টাকা। ৩ কেজি ২৭২ গ্রাম যবের সম্ভাব্য বাজার মূল্য ১০০ টাকা। ৩ কেজি ২৭২ গ্রাম মাঝারি মানের খেজুরের বাজার মূল্য ১০০০ টাকা। ৩ কেজি ২৭২ গ্রাম মাঝারি মানের কিশমিশের সম্ভাব্য বাজার মূল্য ১২০০ টাকা। ৩ কেজি ২৭২ গ্রাম পনিরের সম্ভাব্য বাজার মূল্য ১৬৫০ টাকা।

ধান, চাউল, বুট, কলাই এবং মটর ইত্যাদি দ্বারা সদাকাতুল ফিতর আদায় করতে চাইলে উপরোক্ত গম বা যবের মূল্যে প্রাপ্ত পরিমাণ খাদ্যশস্য প্রদান করতে হবে।

সদকাতুল ফিতর সরাসরি খাদ্যশস্যের তুলনায় তার মূল্য প্রদান করা উত্তম।

ঈদুল ফিতরের দিন ঈদের নামাযের পূর্বেই সদকাতুল ফিতর আদায় করা উত্তম। তবে নামাযের পরে কিংবা রমযানের মধ্যেও প্রদান করার অবকাশ আছে

যেসব ব্যক্তিদেরকে যাকাত দেয়া যায় তাদেরকে সদকাতুল ফিতরও প্রদান করা যায়।

একজনের সদকাতুল ফিতর একজনকে বা একাধিক ব্যক্তিকে প্রদান করা জায়েয আছে। তেমনিভাবে কয়েকজনের সদকাতুল ফিতরও একজনকে প্রদান করা জায়েয আছে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে, যাতে সে এর মাধ্যমে যাকাত বা সদাকাতুল ফিতর প্রদানের উপযুক্ত না হয়ে যায়। অধিকতর উত্তম হলো, একজন ব্যক্তিকে এ পরিমাণ সদাকাতুল ফিতর প্রদান করা যাতে সে ছোটো খাটো প্রয়োজন পূরণ করতে পারে কিংবা পরিবার পরিজন নিয়ে দু তিন বেলা আহার গ্রহণ করতে পারে।Ñ হাশিয়াতুত তহতবী আলা মারাকিল ফালাহ ৭২৩,বাদাইয়ুস সানায়ি’ ২/২০৫,২০৮, আদদুররুল মুখতার ৩/৩২২, ৩২৫, ফাতাওয়া মাহমুদিয়া ১৪/৩৭৫, ৩৮৭,-৩৯০।

05/04/2024

ঈদের দিনের বর্জনীয় বিষয়

ঈদ মুসলিম জাতির গুরুত্বপূর্ণ একটি উৎসব। মুসলিম জাতির রয়েছে নিজস্ব সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি। ঈদের মত পবিত্র একটি দিবসে মুসলিম সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাই বিবেকের দাবি। কিন্তু ঈদ উৎসব এলে আমরা লক্ষ করি ভিন্ন চিত্র। অপসংস্কৃতির অবাধ প্রবাহে পবিত্র এ উৎসবের মান চরমভাবে ক্ষুণœ হয়। নি¤েœ ঈদ উৎসবকেন্দ্রিক কিছু বর্জনীয় বিষয় তুলে ধরা হলো।

১। বিজাতীয় আচার আচরণ ও সভ্যতা সংস্কৃতির প্রদর্শন।

২। নারী পুরুষের পারস্পারিক বেশ ভূষা ধারণ করা।

৩। নারীদের যত্রতত্র খোলা মেলা উন্মুক্ত বিচরণ।

৪। গান বাজনা শ্রবণ ও অশ্লীল সিনেমা নাটক প্রদর্শন।

৫। অনলাইনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অনর্থক সময় নষ্ট করা।

৬। জামাতের সাথে ফরজ নামায আদায়ে অলসতা করা।

৭। অমিত ব্যয়ী হওয়া।

৮। ঈদের দিনকে কবর যিয়ারতের জন্য নির্দিষ্ট করা।

৯। জুয়া খেলা ও আতশবাজি ফুটানো।

১০। মানুষকে কষ্ট দেয়া।

১১। ঈদের নামাজ আদায় না করে আনন্দ ফুর্তিতে মত্ত হওয়া।

১২। বিনোদন স্পটগুলোতে নারী পুরুষের অবাধ যাতায়াত করা।

05/04/2024

ঈদের দিনের সুন্নাহসম্মত আমল

১. ঈদের দিন গোসল করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা ও সুগন্ধি ব্যবহার করা

ঈদের দিন গোসল করার মাধ্যমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা মুস্তাহাব। কারণ এ দিনে সকল মানুষ নামায আদায়ের জন্য মিলিত হয়। ইবনে উমর রা. থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত, তিনি ঈদুল-ফিতরের দিনে ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে গোসল করতেন। (মুআত্তা ইমাম মালেক ১/১৭৭)

সায়ীদ ইবনে মুসাইয়াব রহ. বলেন, ঈদুল ফিতরের সুন্নত তিনটি :

১। ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া

২। ঈদগাহের দিকে যাত্রা করার পূর্বে কিছু আহার করা

৩। গোসল করা। (ইরওয়াউল গালীল ৩/১০৭)

তদ্রূপ সুগন্ধি ব্যবহার করা ও উত্তম পোশাক পরিধান করাও মুস্তাহাব।

ইবনে উমর রা. থেকে বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত,তিনি দু’ঈদের দিনে সর্বোত্তম পোশাক পরিধান করতেন। (ফাতহুলবারী ২/৫১০)

ইমাম মালেক রহ. বলেন, আমি উলামায়ে কেরামের কাছ থেকে শুনেছি, তারা প্রত্যেক ঈদে সুগন্ধি ব্যবহার ও সাজসজ্জাকে মুস্তাহাব বলেছেন। (আলমুগনী লিইবনে কুদামা ঈদ অধ্যায় ফাতহুলবারী ২/৫১০)

২. ঈদের দিনে খাবার গ্রহণ প্রসঙ্গ

সুন্নত হলো ঈদুল ফিতরের দিনে ঈদের নামায আদায়ের পূর্বে খাবার গ্রহণ করা। আর ঈদুল আজহা-তে সুন্নাত হলো ঈদের নামাযের পূর্বে কিছু না খেয়ে নামায আদায়ের পর কোরবানির গোশত দ্বারা আহার গ্রহণ করা।

বুরাইদা রা. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল ফিতরের দিনে কিছু না খেয়ে বের হতেন না। আর ঈদুল আজহার দিনে ঈদের নামাযের পূর্বে কিছু খেতেন না। নামায থেকে ফিরে এসে কোরবানির গোশত দ্বারা আহার গ্রহণ করতেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৪২২)

৩. পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া

আগে আগে ঈদগাহে উপস্থিত হওয়া উত্তম। যাতে ইমাম সাহেবের নিকটবর্তী স্থানে বসা যায় ও ভালো কাজ দ্রুত করার সওয়াব অর্জন করা যায় এবং নামাযের অপেক্ষায় থাকার সওয়াব লাভ করা যায়।

আলী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সুন্নত হলো ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া। (সুনানুত তিরমিযী হাদীস নং ৪৩৭, বাদাইউস সানায়ে’ ১/৬২৫)

৪। ঈদগাহের যাতায়াত পথ পরিবর্তন করা

সুন্নত হলো যে পথে ঈদগাহে যাবে সে পথে না ফিরে অন্য পথে ফিরে আসা।

জাবের রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদের দিনে যাতায়াতের পথ পরিবর্তন করতেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৯৮৬)

৫. ঈদের তাকবীর আদায়

ঈদগাহে যাওয়ার পথে তাকবীর পাঠ করা মুস্তাহাব।

পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে,

হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল ফিতরের দিন ঘর থেকে বের হয়ে ঈদগাহে পৌঁছা পর্যন্ত তাকবীর পাঠ করতেন। ঈদের নামায শেষ হওয়া পর্যন্ত তাকবীর পাঠ করতেন। যখন নামায শেষ হয়ে যেত তখন আর তাকবীর পাঠ করতেন না। (সুনানে দারা কুতনী ২/৩৪)

অন্য বর্ণনায় এসেছে, ইবনে উমর রা. ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনে ঈদগাহে আসা পর্যন্ত উচ্চস্বরে তাকবীর পাঠ করতেন। ঈদগাহে এসে ইমামের আগমন পর্যন্ত এভাবে তাকবীর পাঠ করতেন। (সুনানে দারাকুতনী ২/৩৩; আসসুনানুল কুবরা লিলবাইহাকী ৩/২৭৯)

ইমাম আবু ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মদ রহ. বলেন, ঈদুল ফিতরের সময় সশব্দে তাকবীর পাঠ করা উত্তম। ইবনে উমর রা., আলী রা., আবু উমামা রহ.সহ বহু সাহাবা তাবিয়ী রা. ঈদুল ফিতরের সময়ও সশব্দে তাকবীর পাঠ করতেন। (গুনয়াতুল মুতামাল্লী ৫৬৭, হাশিয়াতু তাহতাবী আলাদ্দুর ১/৩৫৩, বাদায়িউস সানায়ি’ ১৬২৫)

এক নজরে ঈদের সুন্নাতসমূহ

১। অন্য দিনের তুলনায় আগে আগে ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়া। (সুনানে বাইহাকী কুবরা, হাদীস ৬১২৬)

২। ভালভাবে গোসল করা। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৩১৫)

৩। শরীয়তসম্মত সাজসজ্জা গ্রহণ করা। (বুখারী শরীফ ৯৪৮)

৪। সামর্থ্য অনুযায়ী উত্তম ও পরিষ্কার পোশাক পরিধান করা। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৯৪৮)

৫। সুগন্ধি ব্যবহার করা। (মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস ৭৫৬০)

৬। ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে মিষ্টি জাতীয় আহার (যেমন খেজুর) গ্রহণ করা। তবে ঈদুল আজহাতে কিছু না খেয়ে নিজের কোরবানীর গোশ্ত দ্বারা আহার গ্রহণ করা উত্তম। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৯৫৩)

৭। সকাল সকাল ঈদগাহে যাওয়া। (সুনানে আবূ দাঊদ, হাদীস ১১৫৭)

৮। ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে যাওয়ার আগে সদকাতুল ফিত্র আদায় করা। (সুনানে দারা কুতনী, হাদীস ১৬৯৪)

৯। ঈদের নামায ঈদগাহে আদায় করা, বিনা অপারগতায় মসজিদে আদায় না করা। (সহীহ বুখারী, হাদসি ৯৫৬)

১০। সম্ভব হলে এক রাস্তা দিয়ে ঈদগাহে যাওয়া এবং অন্য রাস্তা দিয়ে ঈদগাহ থেকে ফিরে আসা। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৯৮৬)

১১। পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া। (সুনানে আবূ দাঊদ, হাদীস ১১৪৩)

১২। ঈদগাহে যাওয়ার সময় নিম্নোক্ত তাকবীর পাঠ করা :

اَللهُ َكْبَرُ، اَللهُ أَكْبَرُ، لَاإِلَهَ إِلاَّ اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ وَلِلهِ الحَمْدُ

(আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ।)

05/04/2024

ঈদুল ফিতর : তাৎপর্য ও করণীয় বর্জনীয়।

চলছে মুমিনের পুণৈশ্বর্য অর্জনের অন্তিম আয়োজন। চলছে সঙ্কটে স্বাচ্ছন্দে নিরঙ্কুশ আনুগত্যের বিদায় অনুশীলন। আত্মচর্চার এ অন্তিম লগনে পরকালদর্শী মানব সমাজ দিনমান পানাহার-কামাচারের যথেচ্ছা ভোগের রাশ টেনে ধরে দেহজ বৃত্তিসমূহকে নিরুদ্দিপীত করে নিচ্ছে। এ যেন আল্লাহভীতি অর্জনের এক চমৎকার আয়োজন। সর্ব রকমের অমানিশা ও আবিলতা থেকে অন্তকরণকে মুক্ত করে আল্লাহমুখী করার এক মহেন্দ্রক্ষণ। আত্মনুশীলনের এ আয়োজন জীবনের বাঁকে বাঁকে পুঞ্জিভূত গুনাহের আবিলতা থেকে চির মুক্তির অফুরন্ত অফার। রমাযানের এ গোধূলি বেলা পেরিয়ে মুমিনের দুয়ারে উঁকি দিবে বাঁকা ঈদের নতুন চাঁদ। অনাহারের তাবৎ ক্লেশ ভুলে ঈদের আনন্দে মতোয়ারা হবে আল্লাহপ্রাণ মুমিন মুসলমান।

ঈদ শব্দের তাত্ত্বিক পরিচিতি

ঈদ একটি আরবী শব্দ। আইন, ওয়াও, দাল- আরবী এ ত্রি বর্ণের মূলধাতু থেকে ঈদ শব্দটি উদগত। শব্দটির মূল উচ্চারণ হলো ইউদ। ব্যাকরণিক সাহজিক রীতি অনুসারে ইউদ শব্দটি ঈদ শব্দে রূপান্তরিত হয়েছে। এর আভিধানিক অর্থ প্রত্যাগমন, প্রত্যাবর্তন। আরবী অভিধানগুলোতে ঈদ শব্দের পারিভাষিক অর্থ করা হয়েছে, মহিমান্বিত অথবা গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয়কেন্দ্রিক স্মৃতি চারণ বা সম্মিলন দিবস। এ দৃষ্টিকোণ থেকে যে কোনো উৎসব দিবসকে ঈদ হিসেবে অভিহিত করা যায়। তবে ইসলামী শরীয়ত কর্তৃক প্রবর্তিত ঈদ বা বার্ষিক উৎসব দুটি। ১। ঈদুল ফিতর ২। ঈদুল আযহা। ঈদ এর সাথে ফিতর ও আযহা শব্দ যুক্ত করে এ দুটি উৎসবকে স্বাতন্ত্র রূপ দেয়া হয়েছে। ফিতর শব্দের আভিধানিক অর্থ ভঙ্গকরণ বা পরিসমাপ্তি। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় রোযা বা উপবাস ভঙ্গকরণকে ফিতর বা ইফতার নামে অভিহিত করা হয়। ঈদুল ফিতর অর্থ দীর্ঘ এক মাস ব্যাপী রোযা পরিসমাপ্তির আনন্দ উৎসব বা রোজার পূর্ণতার উৎসব। পবিত্র রমাযান মাসে সিয়াম সাধনা ও সংযম পালন শেষে শাওয়াল মাসের প্রথম দিবসে সিয়াম ভঙ্গ করে স্বাভাবিক কর্মজীবনের ফিরে যাওয়ার আনন্দঘন দিবসটিই ঈদুল ফিতর নামে অভিহিত।

ঈদুল ফিতরের প্রেক্ষাপট ও সূচনাকাল

ঈদুল ফিতরের এ মহান পুণ্যময় দিবসটির উদযাপন কালের সূচনা হয় আজ থেকে ১৪ শত বছ পূর্বে। মদীনা নগরীতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হিজরতের অব্যবহিত পরেই ঈদুল ফিতর উৎসব পালনের সূচনা হয়। তখন মদীনাবাসী পারসিক অপসংস্কৃতির প্রভাবে শরতের পূর্ণিমায় নওরোয নামে এবং বসন্তের পূর্ণিমায় মেহেরজান নামে দুটি উৎসব বিভিন্ন ধরনের আনন্দ আহ্লাদ ও নানা রকম কুরুচিপূর্ণ রংতামাশার মাধ্যমে উদযাপন করত। উৎসব দুটির রীতি নীতি ও আচার ব্যবহার ছিল সম্পূর্ণ ইসলামী আদর্শের পরিপন্থী। জরথুস্ত্র প্রবর্তিত নওরোয ছিল একটি নববার্ষিক উৎসব। উৎসবটি ছয় দিন ব্যাপী উদযাপিত হত। এর মধ্যে নওরোযে আম্মা বা কুসাফ নামক দিবসটি ছিল জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। আর অন্য দিনগুলো ছিল অভিজাত ও সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিবর্গের জন্য নির্ধারিত। তদ্রƒপ ছয় দিন ব্যাপী উদযাপিত মেহেরজান অনুষ্ঠানেও শুধুমাত্র একটি দিবস সাধারণ দরিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দ ছিল। শ্রেণী বৈষম্য, ধনী ও দরিদ্রের মাঝে কৃত্রিম প্রবেধ এবং ঐশ্বর্য-অহমিকা ও অশালীনতা প্রকাশে কলুষিত ছিল এ দুটি উৎসব। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মুসলিম উম্মাহর প্রতি রহমত হিসেবে দান করেন অনাবিল আনন্দঘন উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। আনাস ইবনে মালেক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনাতে আগমন করেন তখন মদিনাবাসীর দুটি উৎসব দিবস ছিল। এ উৎসব দিবসে তারা খেলাধুলা করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন এ দুটি উৎসবের তাৎপর্য কী? মদিনাবাসী উত্তর দিলেন : আমরা মূর্খতার যুগে এ দুটি উৎসব দিনে খেলাধুলা করতাম। তখন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ দুটি উৎসব দিবসের পরিবর্তে তোমাদের জন্য এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ দুটি উৎসব দিবস দান করেছেন। তা হলো ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১১৩৪) অনুপম ইসলামী আদর্শে উজ্জ্বীবিত আরববাসীরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশে সূচনা করে সুনির্মল আনন্দ বিধৌত ঈদ উৎসব উদযাপন। জন্ম নেয় শ্রেণী বৈষম্য বিবর্জিত পঙ্কিলতা ও অশালীনতামুক্ত প্রীতি স্নিগ্ধ মিলন উৎসব ঈদুল ফিতর। নিছক খেলাধুলা, আমোদ-ফুর্তির উৎসব দুটিকে আল্লাহ তা‘আলা পরিবর্তন করে এমন দুটি উৎসব দান করলেন যাতে আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া জ্ঞাপন, জিকির আজকার এবং ক্ষমা প্রার্থনার সাথে সাথে রয়েছে শালীন আমোদ-ফুর্তি, সাজসজ্জা ও পানাহারের সুনির্মল বিধান।

ঈদুল ফিতরের তাৎপর্য

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনে, রোজাদার ব্যক্তির জন্য দুটি আনন্দ রয়েছে। ১। যখন সে ইফতার ( দৈনিক ইফতার ও ঈদের ইফতার) করে তখন সে বিনোদিত হয়। ২। যখন সে তার প্রভুর সাথে সাক্ষাৎ করবে তখন সে তার রোযার কারণে আনন্দিত হবে। সহীহ বুখারী, হাদীস ১৯০৪

ইফতার দু ধরনের ১। রমাযানের রোযার ইফতার। দিন শেষে সান্ধ্য আয়োজনে ইফতার করে রোযাদার ব্যক্তি ভাষাতীত আনন্দ অনুভব করে। এটা হলো ছোট ইফতার। ২। রমাযানের দীর্ঘ একটি মাস সমপানান্তে সমাগত ইফতার। রমাযান মাসের পবিত্র আবহ শেষে দিনের বেলা ইফতার করে মুসলিম জাতি সীমাহীন আনন্দ উৎসব পালন করে। এটা হলো বড় ইফতার। সুতরাং ঈদুল ফিতর হলো রোযার পূর্ণতার পুরস্কার। ঈদুল ফিতর সর্বদিক বিবেচনায়ই এক অনন্য বিশিষ্টতা ধারণ করে। প্রাত্যহিক সালাত, সাপ্তাহিক জমায়েত এবং বার্ষিক পুনর্মিলনী মুমিন জীবনের এ তিনটি বৈশিষ্ট্যই ঈদ উৎসবের দিনটিতে অত্যন্ত প্রত্যুজ্জ্বলভাবে ফুটে উঠে। এ পবিত্র দিনটিতে এর নৈতিক ও আধ্যাত্মিক কল্যাণকর বৈশিষ্ট্যগুলোও বিপুল বিস্ময়ে জলজল করে উঠে। কারণ ঈদের এ পবিত্র আয়োজন মহামহিমের পবিত্র আপ্যায়ন। একজন নিষ্ঠাবান রোজাদার ব্যক্তিমাত্রই ঐশী এ আতিথেয়তার মর্ম উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়। ঈদের দিনের প্রতিটি মুহূর্তেই সে ঐশী বিনোদনের অমৃত সুধায় সিক্ত হয়। ভাললাগার এক অপার আনন্দে শিহরিত হয় তার তন ও মন। প্রাপ্তির আনন্দে রোমাঞ্চিত হয় তার কোমল হৃদয়।

ঈদুল ফিতরের প্রস্তুতি

বিশ্ববরেণ্য ইসলামিক স্কলার জাস্টিস আল্লাম তাকী উসমানী রাহ. বলেন, রমাযান মাসে আমাদের সবচেয়ে ব্যাপক ও সীমাহীন কর্ম এটাই যে, এ বর্কতপূর্ণ মাসে নিজেদের জাগতিক চাহিদা ও ব্যায়ের পরিধি সঙ্কুচিত করার পরিবর্তে তা আরো অধিক মাত্রায় বৃদ্ধি করে দেই। ব্যবসায়ী মহোদয়গণ তো এ মাসকে বিশেষ উপার্জনের মাস ঘোষণা দিয়ে রাত দিন সে ধ্যানেই মগ্ন থাকেন। অনেক সময় এ ধ্যান মগ্নতার কারণে নামাযও কুরবান হয়ে যায়। ঈদের প্রস্তুতি আমাদের জন্য এখন একটা বড় ধরনের নৈতিক বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা ঈদুল ফিতরকে মুসলিমদের জন্য আনন্দ উৎসবের দিন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। সার্বজনীন বাৎসরিক আনন্দের বিশেষ দিবস হিসেবে মনোনিত করেছেন। এমন কি এ বিষয়টিও শরীয়তে স্বীকৃত ও প্রমাণিত যে, এ দিনে কেউ যদি সর্বোত্তম পোষাক সহজে লাভ করতে পারে তাহলে সে যেন তা পরিধান করে। কিন্তু বর্তমানে এ উপলক্ষে উত্তম পোষাকের অজুহাতে যে অসীম অগণিত অনর্থক খরচের জোয়ার সৃষ্টি করা হয়, অন্যায় অপব্যয়ের যে মহাপ্লাবন বইয়ে দেয়া হয় এবং সেটাকে ঈদের অপরিহার্য অনুষঙ্গ বলে মনে করা হয় তার সঙ্গে দীন ও ইসলামী শরীয়তের কোনো সম্পর্ক নেই। বর্তমান যুগে ঈদ পালনের জন্য এ বিষয়টি অতি আবশ্যকীয় জরুরী বিষয় মনে করা হয় যে, আর্থিক সচ্ছলতা থাক বা না থাক- যে কোনো উপায়ে পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের জন্য নিত্য নতুন ডিজাইনের ফ্যাশনাবল পরিধেয় সামগ্রীর ব্যবস্থা করা হবে। ঘরের প্রত্যেক সদস্যের জন্য জুতা-টুপি থেকে শুরু করে প্রতিটি জিনিস নতুন নতুন ক্রয় করা হবে। শুধু তাই নয় ঈদের প্রকৃত স্বাদ অনুভবের জন্য ঘরের সাজ সজ্জা শোভাবর্ধনের জন্য নিত্য-নতুন আসবাবপত্র ও আকর্ষণীয় ডিজাইনের ফার্ণিচারের ব্যবস্থাও করা হয়। দূর-দূরান্তে বসবাসকারী আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের নিকট মূল্যবান গিফট ও দামী ঈদকার্ড প্রেরণ করা হয়। আর এসব কাজ এমন এক তীব্র প্রতিযোগিতামূলক মানসিকতা নিয়ে সম্পন্ন করা হয় যে, কেউ যেন কারো থেকে পিছনে পড়ে না যায়। কেউ যেন কারো কাছে কোনো ক্ষেত্রে হেরে না যায়।

এসবের অনিবার্য পরিণতি এটাই হয় যে, একজন মধ্যম স্তরের উপার্জনক্ষম ব্যক্তির জন্য ঈদের প্রস্তুতি একটি বাড়তি দুশ্চিন্তা ও আলাদা মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় যখন সে দেখে যে, হালাল উপার্জনের মাধ্যমে পরিবারের সবার চাহিদা ও আবদার পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না এবং বৈধ টাকা পয়সা তার জন্য পর্যাপ্ত হচ্ছে না তখন সে অবৈধ পথের সন্ধান করে। বিভিন্ন পন্থায় অন্যের পকেট মেরে টাকা পয়সার ব্যবস্থা করে। এবং এর দ্বারা তার সেই লাগামহীন চাহিদা ও অন্তহীন কৃপ্রবৃত্তির উদর পূর্তি করে। মাওলানা মুহাম্মদ হাবীবুর রহমান সংকলিত ঈদ বার্তা পৃষ্ঠা ১৭

সুতরাং পার্থিব ঝুট ঝামেলা থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে পবিত্র রমাযানের অফুরন্ত রহমত, বরকত ও মাগফিরাত অর্জনের সুমহান কর্মে নিরত থাকাই হলো ঈদুল ফিতরের আসল প্রস্তুতি। এ প্রস্তুতি গ্রহণের মাঝেই রয়েছে ইহকালীন ও পারলৌকিক সুমহান সাফল্যের হাতছানি।

ঈদুল ফিতর ও আনন্দ উৎসব

ঈদুল ফিতর নিছক কোনো আনন্দ উৎসবই নয়; বরং ঈদুল ফিতর উদযাপন করা গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদতও বটে। অথচ আমরা আজ পবিত্র এ উৎসব দিবসটিকে নিছক একটি আনন্দ উৎসব দিবসে পরিণত করছি। ফলে এ দিবস উদযাপনের ক্ষেত্রে নীতি নৈতিকতার কোনো পরওয়া করি না। যে পবিত্র সত্তা আমাদের এ আনন্দ উৎসবটির ব্যবস্থা করেছেন তাঁর বিধি নিষেধের প্রতি কোনো ভ্রুক্ষেপ করছি না। আমরা ভিন জাতির উৎসব-পার্বনের সাথে ঈদুল ফিতরকে একাকার করে ফেলছি। ঈদ উদযাপনের নামে সপ্তাহ ব্যাপী যেসব অনুচিত ও গর্হিত কাজে জড়িয়ে পড়ি তা সত্যিই নিতান্ত দুঃখজনক ব্যাপার। নির্মল আনন্দ প্রকাশ, সুস্থ বিনোদন চর্চা ইসলামী শরীয়ত সমর্থিত। সারাক্ষণ চেহারায় বিষণœতা ও গাম্ভীর্যের ছাপ সন্ন্যাসিত্ব গ্রহণ করা ইসলামী শরীয়াসঙ্গত নয়। বরং সুস্থ ও নির্মল আনন্দ প্রকাশের নিমত্তই ঈদুল ফিতরের প্রবর্তন। এবং পবিত্র এ আনন্দ ও বিনোদন চর্চাও ইবাদাত হিসেবে বিবেচিত। সুতরাং ঈদুল ফিতরের আনন্দ ও বিনোদন হবে স্বচ্ছ, পরিচ্ছন্ন ও সুনির্মল। ধর্ম ও বিবেকের সীমার ভিতর থেকেই ঈদকেন্দ্রিক বিনোদন চর্চা করতে হবে। নতুবা হাসি আনন্দের এ ইবাদাত উল্টো পরিণতি ডেকে আনবে।

ঈদের দিনের অবাঞ্ছিত বাধ্যবাধকতা

আমরা ইসলামী শরীয়ত নির্দেশিত বিশেষ কিছু দিবস রজনীকে কেন্দ্র করে অবাঞ্ছিত কিছু কর্মকা-কে আবশ্যক করে ফেলি। ফলে পুণ্যের কাজটিও মন্দত্বের রূপ পরিগ্রহ করে। ঈদের দিন ফিরনী সেমাইয়ের আয়োজন, ঈদ মোবারক বলে কোলাকুলি করা, ঈদের নামাযান্তে আত্মীয় স্বজনের কবর যিয়ারত করা এবং ঈদ বখশিশ বা সালামীর লেনদেন- এগুলোর কোনোটিই স্বতন্ত্রভাবে মন্দ কাজ নয়। কিন্তু ঈদের দিনের সাথে এ বিষয়গুলোকে নির্দিষ্ট করে নিলেই সৃষ্টি হয় বিপত্তি । তাই অবাঞ্ছি এ বাধ্যবাধকতা পরিহার করা চাই। আর পটকাবাজি, আতশবাজি এবং গান বাজনা তো মৌলিকভাবেই পাপের ভাগাড়। সেটা যদি পবিত্র কোনো দিবসকেন্দ্রিক হয় তাহলে তো পাপাচারের ভয়াবহতা আরো শতগুণে বৃদ্ধি পাবে। সারকথা, যদি ঈদুল ফিতরকে শুধু একটি বার্ষিক উৎসব হিসেবে গণ্য করা হয় এবং অন্যান্য জাতির মত ঈদের সাথে মনগড়া অবিধানিক কার্যকলাপ যুক্ত করা হয় তবে এ ঈদ ওঈদ তথা অভিশাপে পরিণত হবে।

তাঁদের ঘরেও যেন পৌঁছে যায় ঈদের আনন্দ

ঈদ আনন্দের শুভ দিনে যেন নিম্নবিত্ত অসহায় মানুষগুলোর চেহারায় ফুটে উঠে ঈদের অকৃত্রিম আনন্দ রেখা। এর জন্য সামর্থবানদের সবটুকু সাধ্য ব্যয় করে উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। ঈদের এ নির্মল আনন্দঘন দিবসে স্বচ্ছ আনন্দ ও পবিত্র বিনোদনের জায়গাটিতে এসে যেন ধনী গরীবের মধ্যকার অবাঞ্ছিত প্রাচীর উঠে যায়। আনন্দ উৎসবে সবাই একাকার হয়ে যায়। পথশিশু আর বস্তিবাসী মানুষের চোখের পানি যেন আমাদের সামাজিক আবহ ও বিবেকবোধকে কলুষিত না করে। এ দিকে দৃষ্টি দেয়া আমাদের সামাজিক দায়িত্বের সাথে ধর্মীয় দায়িত্বও বটে। সাথে সাথে আমাদের ঐসব মুসলিম মা বোনদের কথাও স্মরণে রাখা প্রয়োজন পবিত্র রমাযানে গুলির সাইরেনে যাদের সাহরী হয়েছে, খেজুরের পরিবর্তে বোমার গ্রাস দিয়েই যাদের ইফতার হয়েছে। নির্মল আনন্দের এ ঈদের দিনে কি তাঁদের চেহারায়ও ঈদের আনন্দ রেখা ফুটবে? তারাও কি নতুন জামা কাপড় পরিধান করবে? তাকবীর ধ্বনি দিয়ে তারাও কি ঈদগাহে সমবেত হতে পারবে? তাঁদের জন্য কি আমার হাত দুটি আকাশের দিকে উত্তোলিত হবে? তাদের জন্য কি আমার দু চোখের কোণা একটু ভিজে উঠবে?

ঈদের দিনে শুভেচ্ছা বিনিময়ের ভাষা

একে অপরকে শুভেচ্ছা জানানো, অভিবাদন করা মানুষের সুন্দর চরিত্রের একটি দিক। এতে খারাপ কিছু নেই; বরং এর মাধ্যমে একে অপরের জন্য কল্যাণ কামনা ও দোয়া করা হয়। পরস্পরের মাঝে বন্ধুত্ব ও আন্তরিকতা বৃদ্ধি পায়।

ঈদ উপলক্ষে পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানানো শরিয়ত অনুমোদিত একটি বিষয়। বিভিন্ন বাক্য দ্বারা এ শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়। যেমন,

(ক) হাফেজ ইবনে হাজার রহ. বলেন ‘যুবাইর ইবনে নফীর থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময় সাহাবায়ে কেরাম ঈদের দিন সাক্ষাৎকালে একে অপরকে বলতেন, تَقَبَّلَ اللهُ مِنَّا وَمِنْكَم (তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম)। অর্থ আল্লাহ তা‘আলা আমাদের ও আপনার ভালো কাজগুলো কবুল করুন। (ফাতহুল বারী শরহু সহীহিল বুখারী ৬/২৩৯, আসসুনানুল কুবরা লিলবাইহাকী, হাদীস ৬৫২১)

(খ) প্রতি বছরই আপনারা সুখে থাকুন, ) كل عام وانتم بخير কুল্লা আমিন ওয়া আনতুম বিখাইর ( বলা যায়।

এ ধরনের সকল মার্জিত বাক্য দ্বারা শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়। তবে প্রথমোক্ত বাক্য تَقَبَّلَ اللهُ مِنَّا وَمِنْكَم দ্বারা শুভেচ্ছা বিনিময় করা উত্তম। কারণ সাহাবায়ে কিরাম রা. এবং তাবিয়ীনে কেরাম ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ে এ বাক্য ব্যবহার করতেন। এতে পরস্পরের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নিকট দোয়া-প্রার্থানা রয়েছে। ঈদের দিনে ঈদ মোবারক বলে শুভকামনা প্রকাশ করা যদিও বিধিসম্মত কিন্তু তা আজ প্রথাসর্বস্ব রীতির রূপ পরিগ্রহ করেছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় সালামের পরিবর্তে প্রচলিত এ সম্ভাষণটি ব্যবহার করা হয়। অথচ সাক্ষাৎ হলে প্রথমে সালাম করবে। তারপর অন্য সম্বোধন। তাই তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম কেই ঈদের দিনের সম্ভাষণ রীতি হিসেবে গ্রহণ করা সুন্নাহসম্মত পদ্ধতি। তবে ঈদুল ফিতরের সম্ভাষণ প্রাপ্তির শ্রেষ্ঠ উপযুক্ত ব্যক্তি তো তাঁরাই যাঁরা রমাযানুল মুবারাকে রোযা রেখেছে। পবিত্র কুরআনের দিকনির্দেশনা থেকে বেশি বেশি উপকৃত হয়েছে। তাকওয়া ও খোদাভীতির দীক্ষা গ্রহণ করে পুরো বছর দীনের উপর অবিচল থাকার অঙ্গীকার গ্রহণ করেছে।

26/03/2024

আল-হিকমাহ ফাউন্ডেশন's broadcast

10/03/2024

@কথাবার্তার সৌন্দর্য@

খালেদা হামিদী, মৌলভীবাজার

কথাবার্তা মানুষের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শক্তির জায়গা। মানুষ শুধু সুন্দর বাচনভঙ্গি দ্বারা পাহাড়সম কঠিন কোনো কাজকে একদম সহজ করে দিতে পারে। মানুষের কথা যদি সুন্দর হয়, সবাই তাকে আলাদা মর্যাদার চোখে দেখে। তার সাথে অন্য কেউ কথা বলার সময় শ্রদ্বার সাথে মত প্রকাশ করে এবং যুক্তি সহকারে দ্বিমত পোষণ করে।

কথাবার্তার কিছু সুন্দর দিক নিয়ে নিম্নে
অলোচনা করা হলো:

১। সালাম বিনিময়ের মাধ্যমে বীরস্থিরভাবে কথাবার্তা শুরু করবে।

২। হাসি মুখে কথা বলবে। মুচকি হাসি দিবে, আট্টহাসি নয়।

৩। সুন্দর ও কোমলভাবে কথা বলবে, চিৎকার করে ও কর্কশ ভাষায় নয়।

৪। যার সাথে কথা বলবে, তিনি দাঁড়িয়ে থাকলে তুমিও দাঁড়িয়ে কথা বলবে। কিংবা তাকে বসতে দিবে।

৫। সোজাসুজি কথা বলবে এবং শুনবে।

৬। পূর্ণ মনোযোগ সহকারে অন্যের কথা শুনবে।

৭। অপরের কথা শেষ হওয়ার আগে নিজে কথা বলবেনা।

৮। মানুষকে সম্পূর্ণ কথা বলতে দিবে।

৯। কথার মাধ্যমে শ্রোতাকে কষ্ট দিবেনা।

১০। করো দোষ বর্ণনা করবে না। কারণ, এটা গীবত। আল্লাহ গীবতকারীদেরকে পছন্দ করেন না।
নিরর্থক কথা বলবেনা।

১১। কথাবার্তা বলার সময় বিতর্ক পরিহার করার চেষ্টা করবে। কেউ বিতর্ক করতে চাইলে কথা শেষ করে দিবে।

১২। বেশী শুনবে, কম বলবে।

১৩। অর্থবহ কথা বলবে। বাজে ও নিরর্থক কথা বলবেনা।

১৪। কথাবার্তায় মানুষকে হতাশ ও নিরাশ করবে না, আশান্বিত করতবে ।

১৫। ইনসাফমূলক কথা বলবে। অন্যায় কথা
বলবেনা। সত্য বলবে, মিথ্যা কথা বলবেনা।

১৬। শ্রোতাকে অল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিবে।

১৭। তোমার কথায় শ্রোতার মধ্যে যেনো তাকওয়া এবং অল্লাহর নির্ভরতা বৃদ্ধি পায়।

১৮। নেতিবাচক কথা বলবেনা,গঠনমূলক কথা বলবে। সমস্যার কথা বললে সেই সাথে সমাধানের কথাও বলবে ।

১৯। তোমার কথা হতে হবে উপদেশ ও পরামর্শমূলক, আদেশমূলক নয়।

২০। শ্রোতার জন্য দু'আ করবে।

Address

Cumilla
3500

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when আল-হিকমাহ ফাউন্ডেশন posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to আল-হিকমাহ ফাউন্ডেশন:

Share