17/10/2025
নোয়াখালী বিভাগ আন্দোলন ঘিরে সক্রিয় হচ্ছে নিষিদ্ধ আ.লীগ
নোয়াখালী থেকে আবুল কাশেম আবিদ:
নোয়াখালী বিভাগ আন্দোলনকে ঘিরে মাঠে সক্রিয় হচ্ছে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা। এ নিয়ে আন্দোলনকারীদের মধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠেছে।
নিজেকে নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন সমন্বয় কমিটির সভাপতি পরিচয় দেন সাইফুর রহমান রাসেল। তিনি বিভিন্ন সময় নিজেকে সাংবাদিক হিসেবেও পরিচয় দেন। বর্তমানে মূল ধারার কোনো গণমাধ্যমে সম্পৃক্ত না থাকলেও চ্যানেল নোয়াখালী, নিরাপদ টিভি, নিরাপদ নোয়াখালী চাই সংগঠনসহ নামে বেনাবে ডজন খানে ফেসবুক আইডি ও পেজ পরিচালনা করছেন তিনি।
নোয়াখালী-৩ আসনের নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদের ঘনিষ্ঠ ও আস্থাভাজন রাসেল ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পরেও বিভিন্নভাবে গণঅভ্যুত্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করে আসছেন। তিনি একসময় নিজেকে নোয়াখালী জেলা ছাত্র লীগের সাবেক সহসভাপতি হিসেবে দাবী করতেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাদের নিকট রাসেলের গোপনে তথ্য সরবরাহের একধিক কল রেকর্ড রয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোসহ স্থানীয় গণমাধ্যমের কাছে। থানায় থেকে আটক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ছাড়ানোর জন্য নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দেন দরবারের চেষ্টাও করছেন তিনি।
নোয়াখালী আন্দোলনের নামে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঠে নামানোর জন্য বিভিন্ন নেতাদের থেকে টাকা পয়াসা নেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে৷ তার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এখনো সক্রিয় থাকার একাধিক তথ্য প্রমাণ রয়েছে এই প্রতিবেদকের হাতে।
নোয়াখালী বিভাগ আন্দোলনের নামে রাসেল জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও গণঅভ্যুত্থানের অংশগ্রহণকারীদেরকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তার নামে বেনামে গড়ে উঠা ফেসবুক আইডি ও পেজগুলোতো বিভিন্ন তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছেন। নোয়াখালী বিভাগ আন্দোলনের আড়ালে নিজের রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের পায়তারা করছেন রাসেল। যদিও নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক নেতা তাকে সহযোগিতা করছেন বলা জানা গেছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে তারা রাসেলের রাজনৈতিক বিষয়ে অবগত নন।
বৃহত্তর নোয়াখালী বিভাগীয় আন্দোলনের সমন্বয়কারী পরিচয় দেন আরেক আওয়ামী লীগের নেতা খোরশেদ আলম। কারাগারে আটক নোয়াখালী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের আস্থাভাজন ছিলেন এই আওয়ামী লীগের নেতা। ৫ আগস্টের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে থেকে পুরোনো বেশিরভাগ পোস্ট সরিয়ে নিলেও অনলাইনে আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে তার ঘনিষ্ঠতার বেশ কিছু ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। মোরশেদ আলমসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের জন্য ভোট চাইতেন এই খোরশেদ আলম।
এই বিষয়ে জানতে সাইফুর রহমান রাসেল ও খোরশেদ আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
নোয়াখালী বিভাগ আন্দোলনে আওয়ামী লীগের এসব নেতাদের অংশগ্রহণ সামনে আসায় আন্দোলনকারীদের মনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আন্দোলন পরিচালনায় আরো সতর্ক অবস্থানে থাকার চেষ্টা করছেন তারা।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরেই নোয়াখালীর বাসিন্দারা বৃহত্তর নোয়াখালীকে বিভাগ ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছেন। সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ এতে অংশ নেন নিজ উদ্যোগে ও কয়েকটি সামাজিক সংগঠনের সহযোগিতায়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে গেল কয়েকদিন ধরে জোরালো ভাবেই নোয়াখালীকে বিভাগ করার জোর দাবি জানান বৃহত্তর নোয়াখালীর বাসিন্দারা।
#নোয়াখালী