05/05/2025
একটি হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসার গল্প
রাহুল আর নীলা—দুজনেই একই কলেজে পড়তো। প্রথমবার দেখা হয়েছিল বসন্ত উৎসবে, যখন চারদিকে রঙের ছোঁয়ায় বাতাসও ভালোবাসায় মাখামাখি ছিল। রাহুলের চোখে নীলার সরল হাসি একরকম ঘোর তৈরি করেছিল। সেই এক নজরের প্রেম ধীরে ধীরে পরিণত হয়েছিল গভীর ভালোবাসায়।
তাদের প্রতিদিনের কথা, চায়ের দোকানে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গল্প, কিংবা কলেজের লাইব্রেরিতে নীরবভাবে একসাথে পড়াশোনা—সব কিছুতেই যেন এক অন্যরকম অনুভূতি ছিল। নীলা ছিল শান্ত, অন্তর্মুখী। রাহুল ছিল চঞ্চল, প্রাণবন্ত। কিন্তু দুজনের মনের ভাষা যেন এক।
তবে ভালোবাসার গল্প সবসময়ই সুখের হয় না। একদিন হঠাৎ করেই নীলা রাহুলকে বলা ছাড়াই কলেজে আসা বন্ধ করে দিল। ফোনে ধরছিল না, মেসেজেরও কোনো উত্তর দিচ্ছিল না। রাহুল অস্থির হয়ে উঠেছিল। একদিন অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানতে পারল, নীলার পরিবার হঠাৎ করেই শহর ছেড়ে চলে গেছে। কারণ—নীলার বাবার বদলি।
রাহুল সেই শহরে বহুদিন অপেক্ষা করেছিল। ভেবেছিল, নীলা একদিন ফিরে আসবে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে বুঝতে পেরেছিল, কিছু প্রিয় মানুষ শুধু স্মৃতিতে বাঁচে, বাস্তবে নয়।
বছর পাঁচেক পরে একদিন হঠাৎ রাহুলের হাতে পড়ল এক চিঠি—নীলার লেখা। সেই চিঠিতে নীলা জানিয়েছিল, তার পরিবার তাকে জোর করে বিয়ে দিয়েছিল। সে চেয়েছিল রাহুলকে কিছু না জানিয়ে চলে যেতে, যাতে রাহুল তার জন্য আর কষ্ট না পায়। কিন্তু সে নিজেও রাহুলকে ভুলতে পারেনি, চিঠির প্রতিটি লাইনে ছিল অজস্র অনুতাপ আর ভালোবাসা।
চিঠির শেষে লেখা ছিল—
"ভালো থেকো রাহুল। আমি হয়তো আর কোনোদিন তোমার সামনে আসতে পারবো না, কিন্তু বিশ্বাস করো, আমার হৃদয়ে আজও একমাত্র তুমি।"
রাহুল চিঠিটা বুকের কাছে চেপে ধরেছিল। সে জানত, তাদের গল্পটা অসম্পূর্ণ, কিন্তু সেই অসম্পূর্ণতাই হয়তো এই ভালোবাসাকে এত সুন্দর করে তুলেছিল।