12/10/2024
ছোট বেলা থেকেই সুন্নি পরিবারে বড় হয়েছি, সুন্নি সকল মাহফিলে গিয়েছি, ওরসে গিয়েছি, চট্টগ্রামের মানুষ হওয়ায় আল্লামা হাশেমী র: এর ১২দিন ব্যাপি ঈদে মিলাদুন্নবিতে গিয়েছি, বিভিন্ন সুন্নি গ্রুপে যুক্ত ছিলাম।
এই এতকিছুতে ইনভলভড যে আমি ছিলাম, তাতে আল্টেমেটলি আমি কি জেনেছি জানেন? এই ২৫ বছর বয়সে এসে আমি শুধু তাদের মাহফিল এবং গ্রুপ থেকে শিখলাম-
১) নবী নূর
২) নবী গায়েব জানেন
৩) সকল ক্ষমতা আল্লাহ তায়ালা নবীর হাতে দিয়ে দিয়েছেন
৪) অলিদের অশেষ কেরামতি
৫) কওমি ও জামাতিদের নিয়ে সমালোচনা, গালি, দুশমনে রাসুল ইত্যাদি ইত্যাদি ট্যাগ দেওয়া।
এর বাহিরে আমি আর কিছু শিখিনি।
সুন্নি ওল্ড হুজুরদের মুখে শুধু এইসব-ই শুনে এসেছি। এইসব বললে কোমল সুন্নিদের অন্তরে বিদ্বেষ ঢুকিয়ে দেওয়া যায়, নিজের মার্কেট স্টেবল রাখা যায়।
আকিদাগত ভিন্নতা থাকতে পারে। শব্দচয়নে মানুষের ভুল হতে পারে। একজন মুসলিম হিসেবে বিষয়টা ইন্টারনালি সমাধান করাটা ছিল যৌক্তিক। তাই বলে সে দুশমনে রাসুল, তাওবা করতে হবে! নতুন করে কালেমা পড়তে হবে! তার সাথে কেউ কোলাকুলি করলে তার ও কালেমা পড়ে তাওবা পড়তে হবে! সিরিয়াসলি?
এইসব হুজুর নিজেদের মুসলিম প্রমাণের চেয়ে সুন্নি প্রমাণে বেশি তৎপর। ফলস্বরুপ জাতীয়ভাবে এদের গ্রহণযোগ্যতা খুবই কম। ধর্ম উপদেষ্টা হিসেবে আহমাদুল্লাহ হুজুরকে ডাকে। সুন্নিদের কোথাও কি ডাকল? কেন ডাকেনি, কেন সুন্নিদের পাত্তা দিল না, সেই চিন্তা কি একবারো মাথায় এসেছে আপনাদের?
সুন্নি হুজুররা মিজানুর রহমান আজহারীর সেই শব্দ চয়নকে কেন্দ্র করে বিষয়টাকে জাতীয় ইস্যু বানিয়েছেন। নিজেদের মার্কেট ধরে রাখতে সুন্নি আকিদার মানুষদের অন্তরে বিষ ভরে দিয়েছেন। কিন্তু আলটিমেটলি সুন্নি হুজুররাই দিনশেষে হিংসুটে হিসেবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। দরকার ছিল উনাকে পার্সোনালি কল করে এমন শব্দচয়ন থেকে বিরত থাকার দাওয়াত দেওয়া। বিষয়টা আরো সুন্দর দেখাতো। এগ্রেসিবনেস এই জেনারেশন খায় না ভাই। এই জেনারেশন কোমলতাকে পছন্দ করেন। অথচ সুন্নি হুজুররা সেইসব ট্রিগার পয়েন্ট ধরতে পারেন না।
সুন্নিদের কাছে আশেকে রাসুল বলতে-
সে মিলাদ কিয়াম করতে হবে, নবীকে নূর মানতে হবে, গায়েব জানে সেইসব বিশ্বাস করতে হবে। অথচ রাসুলুল্লাহ সাঃ আল্লাহর প্রেরিত শেষ রাসুল এবং আল্লাহর পড়ে সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদার অধিকারী এই আকিদা পোষণ করাটায় ইনাফ ছিল।
হিন্দুর সাথে হাত মেলালে কেউ যেমন হিন্দু হয়না, তেমনি কোলাকুলি করলে কেউ নিজের আকিদা বিসর্জন দেয় না।
এই যে মুফতিয়ে আহলে সুন্নাত ট্যাগ বহনকারী এই হুজুরটা যে "কোলাকুলি করার কারণে কালেমা পড়ে তাওবা করতে হবে" এমন কথা বললেন না! সেটার ইফেক্ট টের পাবেন আপনারা। দেশ চলে যাচ্ছে সেক্যুদের হাতে। জামাত, কওমিরা সেইসব বিষয় নিয়ে চিন্তিত, কিন্তু সুন্নি হুজুরদের মেজাজ আবার ভিন্ন। দুনিয়া উলটে গেলেও এদের প্রথম পরিচয় হতে হবে এরা সুন্নি। যু*দ্বের সময় এরা মনে হয় আলাদা ভাবেই যু*দ্ধ করতে যাবে।
এখন আর সুন্নি সুন্নি করে আপনারা মার্কেট পাবেন না। লিখে রাখেন। নিজেদের তৈরি করা জগৎ থেকে বের হয়ে রিয়েল লাইফ সিনারিও দেখুন। সামনের জেনারেশনটা সুন্নি নামটাই ভুলে যাবে যদি এইসব বন্ধ না করেন।
Copy