25/03/2023
আব্বু-কে
ভাই-কে
বর-কে
খুব ভালোবাসেন তাই না?
তাহলে পর্দা করে নিজের ভালোবাসার মানুষ গুলোকে দাইয়্যুস উপাধি থেকে মুক্ত করুন…🌿
♣দাইয়্যুস সম্পর্কে কুরআন হাদিস অনেক জায়গাতে আলোচনা করা হয়েছে।দাইয়্যুস এমন এক ব্যাক্তি যিনি সারা বছর আল্লাহর ইবাদত বন্দিগি করেও জাহান্নামী হবে।
একজন ব্যক্তি ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে, সিয়াম পালন করে, যাকাত দিয়ে, হজ করেও দাইয়্যুস হতে পারেন। এই উদাহরণ আমাদের আশেপাশেই ভুরি ভুরি আছে।
ভাইয়েরা আপনারা যারা নিজেদের স্ত্রীদেরকে পরপুরুষের চোখের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করছেন, স্ত্রীদের ছবি ফেইসবুকে দিয়ে সবাইকে দেখাচ্ছেন, স্ত্রীকে সাজিয়ে নিয়ে বাইরে বের হচ্ছেন আর পরপুরুষ ও লম্পটরা চোখকে পরিতৃপ্ত করছে সেসব প্রত্যেক পুরুষের “দাইয়্যুস” টার্মটির ব্যাপারে জ্ঞান থাকা আবশ্যক। একজন পুরুষ হাদিসের ভাষ্যমতে দাইয়্যুস সাব্যস্ত হবে যদি সে তার মা, বোন, স্ত্রী, কন্যাদের বেপর্দাভাবে চলাফেরা করাকে বন্ধ না করে, তাদেরকে অশ্লীলতা, ব্যভিচার থেকে দূরে না রাখে। যেসব ভাইয়েরা এখনও দাইয়্যুসের কাতারে আছেন আজই তাওবা করুন, নিজের পরিবারের মহিলাদের বুঝান, দাওয়াহ দিন। তারপরও না বুঝলে বাধ্য করুন, কেননা তাদের ব্যাপারে আপনি জিজ্ঞাসিত হবেন। কারণ তারা আপনার অধিনস্ত।
اَلدَّيُّوْثُ দাইয়্যুস –এর সংজ্ঞা ও পরিচিতি :
ক. اَلدَّيُّوْثُ শব্দের শাব্দিক অর্থ হলো : অসতী, বেহায়া, বেশরম, নির্লজ্জ, বিবেকহীন, আত্মমর্যাদাহীন ইত্যাদি।
খ. اَلدَّيُّوْثُ শব্দের পারিভাষিক অর্থ হলা : যে ব্যক্তি তার স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের যিনা-ব্যাভিচার ও অশ্লীল কাজ-কর্ম সে ভাল মনে করে গ্রহণ করে অথবা প্রতিবাদ না করে চুপ থাকে।
গ. হাদিসে দাইয়্যুস -এর পরিচয় :
▓ রাসূল (ﷺ) বলেছেন :
এমন বেহায়া, যে তার পরিবারের অশ্লীলতাকে মেনে নেয়।
[আহমাদ ৫৩৭২, ৬১১৩]।
▓ অন্য বর্ণনায় এসেছে :
এমন বেহায়া, যে তার পরিবারের অশ্লীলতা ও খারাপ কর্মসমূহ মেনে নেয়।
▓ অন্য বর্ণনায় এসেছে :
বেহায়া হলো সে ব্যক্তি যে, তার পরিবারের নিকট কে প্রবেশ করল এ ব্যাপারে ভ্রুক্ষেপ করেনা। [বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান ১০৮০০]।
ঘ. মনীষীদের দৃষ্টিতে দাইউস :
▓ জৈনক স্কলার বলেছেন :
দাইয়্যুস ; বেহায়া হলো সে ব্যক্তি যে, তার পরিবারের অশ্লীলতার ব্যাপারে উদাসীন, বিবেকহীন, দায়িত্ববোধহীন, আত্মসম্মানহীন ও আত্মমর্যাদাহীন।
ঙ. اَلدَّيُّوْثُ এর পরিচয় : যে ব্যক্তি তার স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকে যিনা-ব্যভিচার, অন্যায়-অশ্লীল, গর্হিত-ঘৃণিত, বেহায়াপনা-বেলেল্লপনা, শাস্তিযোগ্য পাপাচার মূলক আচার-আচরণসহ ইসলামী শরীয়াহ ও সমাজ বিরোধী কার্যক্রম থেকে বিরত রাখেন না, বাধা দেন না উপরুন্ত সন্তুষ প্রকাশ করে এবং বোবা শয়ত্বানের ন্যায় বধির ও অন্ধেরমত চোখবুজে মৌন সম্মতি জ্ঞাপন করে আর তাদের অবাধ বিচরণে ও তাদের হীন চরিতার্থ করণার্থে সার্বিকভাবে সহযোগিতার হস্বদ্বয় প্রসারিত করেন তিনিই হলেন দাইয়্যুস।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,
“তিনজন আছেন যাদের দিকে আল্লাহ সুবহানু তা'য়ালা কিয়ামাতের দিন নজর দেবেন না। যে পিতামাতার অবাধ্য, যে নারী বেশভূষায় পুরুষের অনুকরণ করে এবং দাইয়্যুস ব্যক্তি।”
[সুনান আন নাসাঈঃ২৫৬২]🍀
♣পবিত্র কুরআনে পর্দার নির্দেশ…
আল্লাহ তা'য়ালা বলেছেন,
"নারীরা যেন তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে।"
[সূরা আল-আহযাবঃ ৩৩]🍀
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেছেন,
“(হে নারীগণ!) তোমরা তোমাদের ঘরের (বাড়ীর চতুর্সীমানার) ভিতর অবস্থান কর এবং বাইরে বের হয়োনা – যেমন ইসলামপূর্ব জাহিলী যুগের মেয়েরা বের হত।”
[সূরা আল-আহযাবঃ ৪৩]🍀
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেছেন,
"(হে নবী!) আপনি আপনার পত্মীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, যখন কোন প্রয়োজনে বাইরে বের হতে হয়, তখন তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দাংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। (যেন পর্দার ফরজ লংঘন না করে। এমনকি চেহারাও যেন খোলা না রাখে। তারা যেন বড় চাদরের ঘোমটা দ্বারা নিজেদের চেহারাকে আবৃত করে রাখে।) ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না।
আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।
[সূরা আল-আহযাবঃ ৬০]🍀
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেছেন,
“মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের ইজ্জৎ হিফাজত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা রয়েছে। নিশ্চয় তারা যা করে, আল্লাহ তা অবহিত আছেন। আর ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের ইজ্জৎ হিফাজত করে। তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশমান – তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের ওড়না বক্ষদেশে দিয়ে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক, অধিকারভুক্তবাদী পুরুষ ও বালক ব্যতীত কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে।”
[সূরা নূরঃ ৩০ – ৩১]🍀