
05/07/2025
অক্সফোর্ড থেকে ফেসবুক লাইভ- স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়া একজন আশিক খানের গল্প।
হ্যাঁ, ঠিকই দেখেছেন। তিনি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়েছেন, আর এখন ফেসবুকে লাইভে কাপড় বিক্রি করেন। নাম আশিক খান। কিন্তু এতেই থেমে গেলে ভুল হবে। কারণ এই লাইভটা শুধুই লাইভ না, এটা একটা উদ্যোক্তার স্বপ্নের বিপ্লব।
যশোরের এক সাধারণ ছেলের অসাধারণ যাত্রা শুরু হয়েছিল বাদশাহ ফয়সাল ইনস্টিটিউট থেকে। এরপর নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ড্যাফোডিল এবং অবশেষে বিশ্ববিখ্যাত অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি। সেখানে পড়তে গিয়েই বুঝতে পারেন, আমাদের দেশের তৈরি পোশাক বিদেশে বিক্রি হয় কয়েকগুণ দামে, অথচ যারা সেই পোশাক তৈরি করে, তাদের ভাগ্যে জোটে না ন্যায্য মজুরি। এই অন্যায়কে চুপচাপ মেনে নেওয়ার লোক তিনি ছিলেন না।
করোনার সময়, যখন চারদিক থমকে গিয়েছিল, তখন তিনি লাইভে এসে নিজের কেনা কাপড় নিজেই বিক্রি করতে শুরু করেন। তাঁর ভাষায়, “ক্রেতার কাছে যেমন দেখাই, হাতে পৌঁছায় তেমনটাই।” এই বিশ্বাসই হয় তাঁর ব্যবসার ভিত্তি।
করোনা ও পরবর্তী সময়ে বেশ কিছু পেজে তাঁকে লাইভ করতে দেখেছিলাম। উচ্চারণ, প্রেজেন্টেশন, আর সেলস টেকনিক দেখে মনে হয়েছিল, তিনি বুঝি কেবল একজন দক্ষ লাইভ প্রেজেন্টার। কে জানতো, এই ‘প্রেজেন্টার’ই একদিন চোখের সামনে হাজারো উদ্যোক্তার অনুপ্রেরণায় পরিণত হবেন! ভালো লাগে, এমন মানুষদের এগিয়ে যেতে দেখতে, তাদের কাজকে বড় হতে দেখতে।
আজ তাঁর ব্যক্তিগত পেজে ২.২ মিলিয়নের বেশি ফলোয়ার, লাইভ শপিং পেজে সাড়ে ৬ লাখের বেশি। নিজস্ব ছয়টি দোকান, একটি পোশাক কারখানা আর ৩০০+ মানুষের কর্মসংস্থান, এসবই তাঁর দৃষ্টি আর দায়বদ্ধতা থেকে গড়ে ওঠা।
আশিক খান প্রমাণ করেছেন, ডিগ্রি শুধুই চাকরির টিকিট নয়। সেটা হতে পারে স্বপ্ন দেখার চোখ, সমাজ বদলানোর হাতিয়ার। ব্যর্থতা আসবেই, ঠকাও আসবে, কিন্তু যে থামে না, সেই-ই ভবিষ্যত গড়ার মানুষ।
আজকের তরুণদের জন্য তিনি কেবল এক জন উদ্যোক্তা নন, তিনি জীবন্ত অনুপ্রেরণা।