24/07/2025
পলককে কাঁদতে দেখলাম।
সত্য কথা বলতে, এই যে বারবার বাইরের পৃথিবীর আলো দেখে পলক কেঁদে ফেলছে, এটা দেখতে আমার ভীষণ খারাপ লাগে। সংবেদনশীল মানুষ হিসেবে, কারও কান্না আমি নিতে পারি না। মনটা খারাপ হয়ে আসে।
পলক কেন কাঁদছেন? হয়তো প্রচণ্ড মন খারাপ তার। তীব্র অপরাধবোধে ভুগছেন। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী হওয়াটাকেই হয়তো জীবনের সবচেয়ে বড় পাপ মনে করছেন। হয়তো মনে মনে হাসিনাকে দিনে কয়েকবার গালিও দিচ্ছেন।
জিজ্ঞাসাবাদে পলক বারবার বলেছেন যে, তিনি এবং আরও কয়েকজন হাসিনাকে থামতে বলেছিলেন—গণহত্যা না করতে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু ‘সুয়োরাণী’ সেটা মানেননি। এখন তিনি ভারতে বসে দেশকে অস্থির করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত!
পলক হয়তো ইতোমধ্যেই জেনে গেছেন, লুৎফুজ্জামান বাবরের মতো বাকিটা জীবন তার জেলেই কাটবে, সংগীহীন, সন্তানহীন! ভীষন একা!
অথচ দেশে-বিদেশে তার হাজার হাজার কোটি টাকা। মানুষের টাকা মেরে সুখ খুঁজতে চেয়েছিলেন, অথচ আজ দীর্ঘ এক অসহায় জীবনকে পাপের ফল হিসেবে ভোগ করছেন।
পলক যদি সেদিন বিমানে করে পালিয়ে যেতে পারতেন, তাহলে আজকের ঘটনাটা ভিন্ন হতো। নির্ধারিত গন্তব্য, ফ্লাইট টিকিট, সবই রেডি ছিল। শুধু ইমিগ্রেশনটা পার হতে পারেননি। ধরা পড়ে আজ জেলে!
পলক যদি সেদিন সত্যি সত্যিই ইমিগ্রেশনটা পার হতেন, তবে আজ টিপিক্যাল আওয়ামী নেতাদের মতো করে গুজবে লিপ্ত থাকতেন। দেশের ক্রান্তিকালে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়াতেন, হাসিনার কুপুত্র গু'জয়-এর পোস্ট শেয়ার করতেন। পলকের আজকের সেই উপলব্ধি হতো আর হতোনা। পলক কাঁদতেন না, হয়তো অন্য কেউ কাঁদতেন তার জায়গায়।
মাইলস্টোন দুর্ঘটনার পর থেকে ঠিকঠাক ঘুমাতে পারছি না। এর মধ্যে ‘লাশ গুম’ নিয়ে যেভাবে পোস্টাপোন্দি হচ্ছে, তার পর নিজেকে আর ধরে রাখতে পারিনি!
হাসিনা জীবিত মানুষ গুম করতো, সন্তানকে ওপাশে ফোনে রেখে র্যাব গুলি করতো, ইলিয়াস আলিদেরকে খুন করে বাসায় ডেকে সন্তানদের সান্তনা দিতো- সেই সাক্ষাত ফারাও থেকে আমরা মুক্তি পেয়েছি।
তারপর ইউনুসকে ক্ষমতা দিয়েছি।
সেই ইউনুস কি তবে মৃত মানুষ গুম করছেন?
পঞ্চাশটিরও বেশি মন্তব্য করেছি বিভিন্ন জায়গায়। যারা বলেছে, ‘একশো বা দুইশো’র বেশি লাশ, আমি তাদের কাছে যেয়ে শুধু একজন অভিভাবককে খুঁজেছি, যিনি সরকারের বা আর্মির ভয়ে লাশ খুঁজতে পারছেন না—কিন্তু একটা কন্টাকও পাইনি!
আমি গতকালকে এ নিয়ে সিরিজ পোস্ট দিলাম, প্রায় ২০ হাজার প্লাস মানুষের কাছে পোস্টগুলো রিচ হইছে, কেউ একটা মন্তব্য করেনাই তথ্য দিয়ে।
বেশ কিছু সাক্ষাৎকার দেখেছি যেখানে একটা ছেলে দাবি করছে সে একাই ১০ জনকে বের করছে, হাসপাতালে যাওয়া রোগীদের রক্ত দিতে যাওয়াদের মন্তব্যও পেয়েছি, যারা প্রচুর মৃত্যুর দাবি করছে, কেউ কোন অভিভাবকের ইনফরমেশন দিতে পারেনি যে লাশ পায়নি, বা লাশ গুম হয়েছে।
মূলত পুরো প্রপাগাণ্ডাটাই ছড়ানো হয়েছে আওয়ামিলীগ এর সুবিধাভোগীদের দ্বারা, যাতে আমার মতন কিছু সাধারণ মানুষও না বুঝে সায় দিয়েছি, কারণ বাচ্চাদের এমন মার্মান্তিক মৃত্যুর পর পুরোদেশটাই ট্রমাটাইজড! আর জুলাই ভুলাতে আওয়ামিলীগ এ অস্ত্রটাই নিয়েছে , সফলও হয়েছে।
গত জুলাইতে নির্বিচারে মানুষ মেরেছে আওয়ামীলীগ, এ বছরে পালিয়ে যেয়ে সেই মৃত্যুকে ভুলাতে, আরেক ট্রেজিক ঘটনাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। আর সেটা পালিয়ে যাওয়া আওয়ামিলীগই করছে, পলক আজকে পালিয়ে যেতে পারলে হয়ত এটাই করতেন!
তাই, আজ পলকের চোখের জলের বিন্দুমাত্রও আমার কাছে মূল্যহীন!
C: Saif