14/05/2025
সরকারি বনাম বেসরকারি চাকরি বনাম ব্যবসাঃ বাংলাদেশের বাস্তবতা
--------------------------------------------------------
এই লেখাটা আমি অনেকদিন ধরেই লিখব লিখব করে সময় হয়ে উঠেনি। জুনিয়র রা অনেক সময় ই মেসেজ দেয়, দেখা করে জানতে চায়, ভাই, পাশ করেছি কিছুদিন হল, সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নিবো কিনা বুঝতে পারছিনা। নাকি বেসরকারি চাকরিতেই থাকব? নাকি ব্যবসা করব?
সবাইকে সব সময় আলাদাভাবে উত্তর দিতে পারিনা। তাই আমার এই লেখা।
আমি রিয়াদ আশরাফ। ১৪ ব্যাচ, সিএসই, বুয়েট। পাশ করেছি ২০১৯ সালে। এরপরে দীর্ঘ ৫ বছর ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও আমেরিকান ও ইউকের দুটো সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিতে রিমোটলি চাকরি করেছি,
বর্তমানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরে ৬ মাসের ও বেশি সময় ধরে কর্মরত আছি।
এবং বিগত দেড় বছর ধরে নিজের দুটো স্টার্ট আপ চালাই। তাই ৩ ঘাটের ই পানি অল্প বিস্তর খেয়েছি। এবং একটা তুলনামূলক চিত্র নিজের ছোটখাটো অভিজ্ঞতা থেকে তুলে ধরতে পারব বলে আশা রাখি ইন শা আল্লাহ।
প্রথমত,
ডিয়ার জুনিয়রস, সরকারি চাকরির পেছনে ছুটোনা। এটা একটা মরীচিকা। এক কথায় বললে এটাই আমার প্রথম এবং শেষ ভার্ডিক্ট। তবে, এর মধ্যে কিছু কিন্তু আছে।
আমার অভিজ্ঞতা বলি-
আমি ২০১৯ সালে পাশ করার পরে ঢাকায় একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে জয়েন করি আইটির হেড হিসেবে। পাশাপাশি ২০১৯ এর সম্ভবত ডিসেম্বরে ৪১ তম বিসিএস এর জন্য আবেদন করি। এরপরে কোভিড শুরু হয়। কোভিডের মাঝেও আমি প্রস্তুতি চালিয়ে নিতে থাকি। এরপরে সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং চাকরি তে ঢুকি ২০২১ এ। এর মধ্যে আস্তে আস্তে প্রিলি, রিটেন পাশ করি। দেন ভাইভা হয়। এইসকল কিছু শেষ হয়ে রেজাল্ট দিতে দিতে ২০২৩ কি ২৪! এরপরে পুলিশ ভেরিফিকেশন, গ্যাজেটে আরো ৬ মাস কি ৮ মাস !
১/ পুরো একটা বিসিএস সম্পন্ন করতে সময় লেগেছে ৪ বছরের বেশি সময় ধরে। এই ৪ বছরে আমি তেমন বেশি কিছু হারাইনি। কারণ, আমি পাশাপাশি আমার টেকনিকাল চাকরি চালিয়ে গেছি। আমরা ৫ জন রুমমেট বিসিএস দিয়েছিলাম। আমি ছাড়া বাকি সবাই ইইই কিংবা মেকা। তারা অন্য কোনো চাকরিতেও ঢুকেনি। ৪ টা বছর বেকারত্বের বোঝা তাদেরকে টানতে হয়েছে।
কোভিডের হিসাব বাদ দিলেও এভারেজ প্রতিটা বিসিএস এ আবেদন থেকে যোগদান পর্যন্ত মিনিমাম ৩ বছর কখনো কখনো ৪ বছর ও লাগে। এই সময়ে তো চাইলে নতুন আরেকটা গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে ফেলা যায় !
২/ এবার আসি বিসিএস কতটা ভাগ্যের উপরে নির্ভরশীল।
আমার ৪১ বিসিএস প্রিপারেশন খুব ই খুব ই ভাল ছিল। এবং আমি রিটেন খুব ই ভাল দিয়েছিলাম আলহামদুলিল্লাহ। ৯০০ নাম্বারের রিটেনে আমি শুধু ৫ নাম্বার ছেড়েছিলাম। উয়ারী বটেশ্বর নিয়ে একটা প্রশ্ন এসেছিল। সেটাও লিখিনি কারণ ভাল ভাবে না জেনে লিখলে স্যারের আমার খাতার প্রতি ইম্প্রেশন নষ্ট হবে।
গণিত, বিজ্ঞানেও ভাল পরীক্ষা দিয়েছি। এমনকি ইইই, সিএসইর যেই ৪০ নাম্বার, সেটাও দুর্দান্ত দিয়েছি। এগুলো বাড়িয়ে বলছিনা। আসলেই দিয়েছি।
মক ভাইভা যখন দিতাম, স্যারেরা বলতেন, তোমার আরো প্র্যাকটিস করা উচিত। তুমি ভাল ডেলিভারি দিতে পারো। কিন্তু ভিতরে অন্তঃসার শূন্য। এক ভাই এর সাথে দেখা করে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ভাই আপনি তো অনেকগুলো বিসিএস দিয়ে এবার এডমিনে হলেন, আমার সামনে ভাইভা। আমাকে কিছু সাজেশন দিন।
তিনি আমাকে বলেছিলেন, রিয়াদ, তোমার কিছুই করা লাগবেনা। তুমি শুধু বডি ল্যাংগুয়েজ ঠিক কর। বাকিটা তুমি এমনিতেই চান্স পেয়ে যাবা। আমি বুঝতে পারিনি আমার বডি ল্যাংগুয়েজে কী এমন সমস্যা। শুধু এইটুকু বুঝেছিলাম, আমার ৪ টা বছরের পরিশ্রম সাফল্যে রূপান্তরিত হবে নাকি ব্যর্থায় পর্যবসিত হবে সেটা নির্ভর করে ভাইভা বোর্ডে বসে থাকা ৩ জন অতীব বিজ্ঞ ব্যক্তির আমাকে করা ২০ মিনিটের জাজমেন্টের উপরে।
অনেক সময় সেটা ১/২ মিনিট ও হয়।
যাইহোক, ভাইভা আমার আহামরি ভাল হয়নি। খারাপ ও হয়নি। বড় কোনো ব্লান্ডার করিনি। আবার স্যারদের জ ড্রপ হবে এরকম কোনো পারফরমেন্স ও করিনি। ৭০/৮০% প্রশ্নের উত্তর পেরেছিলাম। দুটো ইংলিশ স্পিচ দিতে দিয়েছিল। বেশ সুন্দর করে দিয়েছিলাম। কিন্তু যার বোর্ড পরেছিল তিনি দাড়ি নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন করলেন। ইসলাম বনাম দেশ এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে অনেকক্ষণ ঘাঁটালেন। তবে আমার উপরে কোনো অসন্তোষ ও দেখান নি।
আমি চয়েজ দিয়েছিলাম মাত্র ৬ টা। সেবার ১৫ টা চয়েজ দেয়ার সুযোগ ছিল মনে হয়। ওই ওভারকনফিডেন্স আর কি। তবে, আই ডোন্ট রিগ্রেট।
আমার রিটেন এতটাই ভাল হয়েছিল যে আমি ধরে নিয়েছিলাম, ফরেন এডমিন না আসলেও পরের গুলা আসবে যদি ভাইভাতে মিনিমাম ১০০ (অর্থাৎ পাশ মার্ক) পাই।
যেদিন রেজাল্ট দিলো, আমি সেদিন বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমার ৬ টা ক্যাডারের কোনোটাতেই আসেনি। এদিকে ভাইভাতেও পাশ করেছি। বুঝলাম, আমার নন-ক্যাডার এসেছে!
আমার ৪ বছরের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম, দৈনিক ৯ ঘণ্টা চাকরি করে, এর বাইরে ২-৩ ঘণ্টা ঢাকা শহরের জ্যাম ভেঙে, বাকি সময়ে পড়ার টাইম ম্যানেজ করে, ৪ টা বছর খেটে আমার কিছুই হয়নি !
পরে দুঃখ লাঘব হল যখন দেখলাম, আমাদের ৫ রুমমেটের মধ্যে সবচেয়ে যোগ্য যিনি, তার ও হয়নি। এরকম আমার চেয়েও বহু বড় বড় রাঘব বোয়ালের হয়নি। পরে নন ক্যাডারে প্রথম চয়েজ যেটা দেই, মানে আমার বর্তমান চাকরি, সেটাই পেয়ে যাই, তাও আবার একদম প্রথম দিকে মেধাতালিকায়। তখন বুঝতে পারি যে সব চয়েজ দিলে হয়তো কোনো না কোনো ক্যাডার পেতাম।
কিন্তু আমি আমার এই চাকরি নিয়ে হ্যাপি কারণ, সরাসরি অফিস প্রধান হতে পেরেছি। অফিসের ব্যাড কালচার নিজ হাতে দমন করার সুযোগ পেয়েছি। এবং পাসপোর্ট অধিদপ্তর এমন একটা জায়গা যেখানে অসংখ্য মানুষকে সহযোগিতা করা যায়, যেটা এই গ্রুপের অনেককেও করার চেষ্টা করেছি আলহামদুলিল্লাহ।
কিন্তু এই ঝক্কি ঝামেলা সবার জন্য না। তুমি নিজে নিতে চাইলে তুমি নিতে পারো। আই এপ্রিশিয়েট ইট।
দরকার আছে। দেশের জন্য। কিন্তু নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের বারোটা বাজবে। সবাইকে শত্রু মনে হবে। মহানগর সিরিজে ওসি হারুন বলে, " এই সিস্টেমের আনাচে কানাচে ভুত। সেই ভুত ধরতে গিয়ে নিজেই ভুত হয়ে যেতে হয়। "
আসলেই তাই।
৪/ এবার আসি সরকারি চাকরি না করার সর্বশেষ এবং সর্বপ্রধান কারণ নিয়ে।
বেতন। আমার বেতন সর্বসাকুল্যে ৩২৮০০ টাকা। ভাই সিরিয়াসলি?
এই টাকায় এই যুগে কেউ চলতে পারবে? আমার অফিসে আমার বেতন সর্বোচ্চ। অনেকে ১০-১৫ বছর চাকরি করে ২৪ হাজার টাকা বেতন তুলে। তো ওদের দুইটা বাচ্চা, ঘরে ছোট ভাই বোন, মা আছে। ওরা কীভাবে চলবে?
জানি পাবলিক বলবে, এমনিতেই তো ঘুষ খায়। ওটা দিয়ে চলবে।
কিন্তু আমার মতন যারা আছে, তারা কীভাবে চলবে? আমি তো ঘুষ খাইনা। এই চাকরিতে ঢোকার আগে আমি একটা আমেরিকান কোম্পানিতে সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে রিমোটলি চাকরি করতাম। ৬ ডিজিট স্যালারি ছেড়ে লিটারালি ৬ ভাগের এক ভাগ বেতন নিয়ে চলি কীভাবে? চলতে পারিনা।
ধার করি। প্রতি মাসে প্রায় লাখ খানেক করে আমার ধার করা লাগে। গত ৬ মাসে প্রায় ৬ লাখ খানেক আমার ধার হয়েছে।
ঘুষ খেলে পাসপোর্ট অফিসে আমার চেয়েও অনেক ছোট অফিসার ও দিনে লাখ কামাতে পারে। কিন্তু এদিকে আমি প্রতি মাসে বেতন নিয়ে স্ট্রাগল করি। সরকার মহাশয় উন্নয়ন খাতে টাকা বরাদ্ধ করতে পারে। পদ্মা সেতু, টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া উড়াল সড়ক বানাতে পারে।
কিন্তু আমাকে দু চারটে পয়সা দিতে পারেনা।
তো এক বন্ধু আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, আমি তো এই বেতনের কথা আগে থেকেই জানতাম। তবুও কেন জয়েন করেছি?
কারণ, আমি দেখতে চেয়েছিলাম বাংলাদেশের আমলাতন্ত্র কীভাবে কাজ করে। একটা অফিস কীভাবে রান করে। কেন আমলাদের পরিবর্তন করা এত দুষ্কর, কেন আমলাতন্ত্রে হাত দেয়া এত দুষ্কর।
আমি দেখতে চেয়েছিলাম, সিস্টেমে ঢুকে কেন সিস্টেম চেঞ্জ করা যায়না !
যাইহোক, এবার আসি মূল কথায়। সব সরকারি চাকরি একই না। কিন্তু সব জায়গায় তো বেতন সেইম ই। তুমি যদি ঘুষ খাওয়ার নিয়ত নিয়ে সরকারি চাকরিতে ঢুকতে চাও, তাহলে বেশ 'শাইন' করতে পারবা। কিন্তু সেটা না হলে সব ক্যাডার, নন ক্যাডারে ওই ৩২ হাজার ৮ শ টাকা দিয়েই চলতে হবে।
কেউ যদি ফরেনে ঢুকতে পারে, সে বিদেশে চাকরি করাকালে বেশ ভাল বেতন পায়। এডমিনে বেতন কম, লাইফ হেল টাইপের চাকরি, সকাল থেকে রাত। কোনো শুক্র শনি ছুটি নাই। পুলিশেও প্যারা। সব সরকারি চাকরিতেই আসলে এইসকল প্যারা আছেই। তুমি সিস্টেমের বিরুদ্ধে যেতেই পারবানা। গেলেও হয়তো সর্বোচ্চ তোমার গণ্ডি টা পরিষ্কার রাখতে পারবা। এটাও কম কী?
কিন্তু এই যে এত স্যাক্রিফাইস, এত সৎভাবে চলা, এত কর্মদক্ষতা, এইসব করার পরে যখন তুমি মাস শেষে ৩২ হাজার পাবা, চলতে পারবানা। ধার করা লাগবে। ও হ্যাঁ, চাকরিতে ঢোকার পরে জানতে পারলাম, সরকারি চাকরি বিধিমালা অনুসারে তুমি পাশাপাশি অন্য কোনো বেসরকারি চাকরি ও করতে পারবানা। এমনকি ব্যবসাও করতে পারবানা।
আজব দুনিয়া !
এবার বলি, তাও কেন সরকারি চাকরির জন্য তুমি চেষ্টা করতে পারো-
১/ বাংলাদেশ খুব ই ফাকড আপ একটা কান্ট্রি। (অবশ্য পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশ ই নানা দিক থেকে ফাকড আপ) এখানে তুমি তোমার ন্যায্য অধিকারটাও পেতে গেলে তদবির করা লাগে। সরকারি অফিসার হলে তুমি এবং তোমার পরিবার পরিজনের এই ন্যায্য অধিকার পাওয়ার বিষয় টা তুমি নিশ্চিত করতে পারবা।
এটা অনেকটা নিজেকে স্যাক্রিফাইস করে তাঁদেরকে ভাল রাখার মতন।
২/ সোশাল ভ্যালু অনেক। আমার পকেটে নাই দুইটাকা। কিন্তু মানুষ আমাকে অনেক সম্মান করে। আমার আত্মীয় স্বজনদের কাছেও আমি অনেক সমাদৃত।
৩/ এই দেশে থাকলে যেকেউই যেকোনো সময় তোমাকে পেছন থেকে বাঁশ দিয়ে দিবে। সরকারি চাকরি বিশেষ করে এডমিন, ফরেন, পুলিশ এইসবে থাকলে এটা করতে পারবেনা। করতে চাইলে ওরা নিজেরাই মারা খাবে।
মোটাদাগে এইতো ! এর বাইরে " ঘুষ খাওয়ার প্রচুর সুযোগ আছে " যা যদি তোমার সরকারি চাকরিতে ঢোকার কারণ হয়, তুমি দেশের শত্রু। তোমাকে আমার কিছুই বলার নাই।
বেসরকারি চাকরিতে কোনো সোশাল সিকিউরিটি নাই। অনেক বেসরকারি চাকরিতে মানসিক শান্তিও নাই। বস খুব ই টক্সিক। বেতন কম। সময় অনেক বেশি দিতে হয়।
কিন্তু সব ক্ষেত্রে এমন না। ভালভাবে চেষ্টা করলে এমন অনেক চাকরি পাওয়া সম্ভব যেখানে বেতন অনেক ভাল, জব সিকিউরিটি খারাপ না এবং পাশাপাশি ওয়ার্ক এনভাইরনমেন্ট টক্সিক না।
তবে এখানে একদম ই পাওয়ার নাই। রাস্তায় হেঁটে যাচ্ছ, অকারণে পুলিশর গাড়ি থামায়ে তোমাকে হেনস্তা করলেও মামা চাচা ধরা ছাড়া কিছুই করতে পারবানা। কিংবা তোমার ছেলে মেয়েকে কেউ উত্যক্ত করলো, তুমি আসলে কিছুই করতে পারবানা। কিংবা কেউ তোমার ভাইকে হঠাত গুম করে ফেললো। এটাতেও তোমার কিছু করার নাই। এরকম আরো কত ঝামেলা যে আছে !
এবার আসি ব্যবসায়। ব্যবসায় অনেক প্যারা। ব্যবসা করা মানে সর্বক্ষণ চাকরি করার মতন। ব্যবসার সবচেয়ে কঠিন বিষয় হিউম্যান ম্যানেজমেন্ট করা। এছাড়া লাভ ক্ষতির ব্যাপার স্যাপার তো আছেই। আর, অনেক সময় দিয়ে কিছু একটা দাঁড় করানোর পরেও সেটা ব্যর্থ হতে পারে। তবুও আমি বুয়েটিয়ানদেরকে ব্যবসা করার পরামর্শ দিব। একেবারে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে। সবাইকে দিয়ে ব্যবসা হয়না। আবার সব ব্যবসা সবাইকে দিয়ে হয়না।
তাই এটা নিজের ক্যালিবার বুঝে করতে হবে। আর্লি লাইফ থেকে ট্রাই করলে অনেক রিস্ক নেয়া যায়। কারণ এখনো তোমার ফ্যামিলি তোমার উপরে নির্ভরশীল না। তোমার বউ বাচ্চা নাই। তুমি হয়তো ভাবছ আরো বড় হলে ব্যবসা করবে। তুমি আসলে মূর্খের স্বর্গে বাস করছো। তাই, বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই শুরু কর !
ব্যবসা করা তোমাকে দিয়ে না হলে বেসরকারি চাকরি করতে পারো। আস্তে আস্তে ল্যাডারে ভাল জায়গায় উঠতে পারবা। সময় লাগবে কিন্তু পারবা।
যদি পারিবারিক অর্থনৈতিক ব্যাকআপ থাকে, তাহলেই কেবল সরকারি চাকরির দিকে ছুটতে পারো।
দিন শেষে একটা কথা বলি- পৃথিবীর কোনও প্রফেশন ই একদম পিকচার পার্ফেক্ট না। সব কিছুর ই ট্রেড অফ আছে। বিদেশে গেলে কিছু জিনিস পাবা, কিছু জিনিস হারাবা। দেশে থাকলেও কিছু জিনিস পাবা, কিছু জিনিস হারাবা। একইভাবে সরকারি চাকরি করলে কিছু জিনিস পাবা, কিছু জিনিস হারাবা। বেসরকারি চাকরি, ব্যবসা সব ক্ষেত্রেই।
দিন শেষে একটা কথা বলি- পৃথিবীর কোনও প্রফেশন ই একদম পিকচার পার্ফেক্ট না। সব কিছুর ই ট্রেড অফ আছে। বিদেশে গেলে কিছু জিনিস পাবা, কিছু জিনিস হারাবা। দেশে থাকলেও কিছু জিনিস পাবা, কিছু জিনিস হারাবা। একইভাবে সরকারি চাকরি করলে কিছু জিনিস পাবা, কিছু জিনিস হারাবা। বেসরকারি চাকরি, ব্যবসা সব ক্ষেত্রেই সেইম।
আবার ব্যক্তিভেদে এই পাওয়া না পাওয়ার পাল্লা এক না। যেমন - কোনো ছেলের বাবা মা মারা গেছে, ওর জন্য বিদেশ যাওয়াতে তেমন হারানোর কিছু হয়তো নাই। বরংচ গেলেই ট্রেড অফে সে জিতবে। কিন্তু সবার ক্ষেত্রে কি সেটা সেইম? একইভাবে সরকারি চাকরি, ব্যবসা কিংবা অন্য যেকোনো ক্ষেত্রেই এই ট্রেড অফ টা তোমাকেই ক্যালকুলেশন করতে হবে।
একটা সাদা কাগজ নিয়ে প্রতিটা প্রফেশনের সুবিধা এবং অসুবিধা দাগ টেনে দুই পাশেই লিখো। এবার হিসাব কষো। তুমি কোন প্রফেশন টা চুজ করতে চাও? কোন ট্রেড অফ টা তোমার সবচেয়ে ভাল লাগছে ?
মনে রাখবা, তুমি যেটাই চুজ করোনা কেন, এমন অনেক সময় ই আসবে যে তুমি আফসোস করবা। কারণ খারাপ দিক গুলো ফেইস করতে হবে। কিন্তু লোকের কথায় কিংবা সামাজিক চাপে পরে অন্যের চাপায়ে দেয়া সিদ্ধান্তে আফসোস করার চেয়ে নিজে ক্যালকুলেশন করে সিদ্ধান্ত নিয়ে আফসোস কর। এটাই কি ভাল নয়?
Either way you will regret; it's just that you can choose in which way you wanna regret. Choose yourself or let people choose it for you
Also forgot to tell you one thing,
Life is not that bad as this post seems. Why?
If you live long enough, you will figure it out eventually .
Thank you.
© রিয়াদ আশরাফ, সিএসই ১৪, বুয়েট
(সহকারী পরিচালক, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় )