15/07/2025
চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের কাছে ইজারা দেওয়ার অপতৎপরতা বন্ধ করুন
বিদেশি নয় দেশের শ্রমিকদের দক্ষতা, সক্ষমতা আর কর্মসংস্থান বাড়াতে উদ্যোগ নিন
চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের কাছে ইজারা দেওয়ার অপতৎপরতা বন্ধ, বন্ধ কলকারখানা চালু ও জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ৩০ হাজার টাকা নির্ধারণসহ ৯ দফা দাবিতে আজ ১৫ জুলাই ২০২৫, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিকাল ৪ টায়, বাংলাদেশের শীর্ষ ১৪ টি জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের জোট “শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ - স্কপ” এর আহবানে শ্রমিক সমাবেম অনুষ্ঠিত হয়। স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক চৌধুরী আশিকুল আলম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শ্রমিক সমাবেশে ঘোষণা পাঠ করেন স্বপ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, স্ঞ্চালনা করেন খালেকুজ্জামান লিপন। বক্তব্য রাখেন আনোয়ার হোসেন, আব্দুল কাদের হাওলাদার, সাইফুজ্জামান বাদশা, শামীম আরা, মাহাবুবুল আলম, বাদল খান, নইমুল আহসান জুয়েল, নুরুল আমিন, আহসান হাবীব বুলবুল, শহীদুল্লাহ বাদল, পুলক রঞ্জন ধর, ফয়েজ হোসেন, কাজী রুহুল আমিন, কামরুল হাসান প্রমুখ। সংহতি জানিয়ে বক্তব্য: চট্রগ্রাম স্কপ নেতা নুরুল্লা বাহার, বন্দর শ্রমিক নেতা ইব্রাহিম খোকন, তসলিমউদ্দিন সেলিম।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, কোন দেশের সম্পদের উপর মালিকানা কার হাতে থাকবে সারা পৃথিবীতেই এটা এখন একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। সম্পদ-তা মাটির নিচের, মাটির উপরের বা প্রাকৃতিক সম্পদ, মানবসৃষ্ট সম্পদ এমনকি মানব সম্পদ তা যাই হোক না কেন। এর মধ্যে কিছু সম্পদ আছে তার মূল্য টাকার পরিমাণে নির্ধারণ করা যায় না। যে কোন দেশের জন্য তা অপরিসীম গুরুত্ব বহন করে। সমুদ্র বন্দর তেমনি জনগণের এক সম্পদ। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পদগুলোর একটি হলো বন্দর। দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যিক কার্যক্রমের বেশির ভাগ পরিচালিত হয় এই বন্দরের মাধ্যমে। দেশের মাটির নিচের গ্যাস, কয়লা ফুরিয়ে যাবে কিন্তু আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হবে না। এই আমদানি-রপ্তানির প্রধান বন্দর, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) দুবাইভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ডের (দুবাই পোের্ট ওয়ার্ল্ড) কাছে ইজারা দেওয়া দেশের জন্য সর্বনাশা পরিকল্পনা বলে স্কপ মনে করে। সরকার বলছে, ডিপি ওয়ার্ল্ড পৃথিবীর অনেক দেশের বন্দর পরিচালনার কাজ করছে; তারা আন্তর্জাতিক মানের বন্দর পরিচালনায় দক্ষ। ডিপি ওয়ার্ল্ডের মতো অভিজ্ঞ কোম্পানির মাধ্যমে বন্দর আধুনিকায়ন ও প্রযুক্তির উন্নয়ন হবে এবং এর মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে এবং বন্দরের কার্যকারিতা বাড়বে। কিন্তু দেশ বিদেশের উদাহরণ কী বলে? কোন দেশের সমুদ্রবন্দর ইজারা কেবল অর্থনীতির বিষয় নয়; এটি একটি কৌশলগত বিষয়। এর ফলে জাতীয় সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ বিদেশি কোনো কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে কিনা, এই বিষয়টা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দেশের প্রবেশ মুখ বন্দর কিংবা বন্দরের কোন টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানিকে ইজারা দিলে তাঁরা পরিচালনা, বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত এবং প্রবেশাধিকারসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনার ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারবে। দেশ যদি দুর্বল হয় আর বিদেশি কোম্পানি যদি সবল হয় তাহলে জাতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় বিদেশি কর্তৃত্বের অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে; ভবিষ্যতে বন্দর নিয়ে জটিলতা ও বিরোধ তৈরি হতে পারে, এমনকি জাতীয় নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়তে পারে। ফলে আশঙ্কা করা স্বাভাবিক এবং প্রশ্ন তোলাও যৌক্তিক যে, চট্টগ্রাম বন্দরের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার পরিচালনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া দেশের জন্য কতটা ঝুঁকিপূর্ণ। নেতৃবৃন্দ, লাভজনক চট্টগ্রাম বন্দর ইজারা দেওযার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়ে বলেন, বৈষম্য বিলোপের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসিন হয়ে শুণ্য বেকারত্ব, শুণ্য দারিদ্রতার ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্ত বিগত সময়ে বন্ধ করা কল-কারখানা চালু বা কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃস্টির কোন চেষ্টা বিগত এক বছরে দেখা যায়নি। নেতৃবৃন্দ, জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণসহ স্কপের ৯ দফা বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহবান জনান এবং আগামী ২৬ জুলাই ২০২৫, চট্টগ্রামে বন্দর বিদেশি কোম্পানিকে ইজারা দেওয়ার সরকারের ত]পরতা বন্ধের দাবিতে শ্রমিক কনভেনশন কর্মসূচী ঘোষণা করেন।