05/08/2024
ইতিহাসের পাতায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হয়ে থাকবে ৫ই আগস্ট, ২০২৪। অনেকের মতে, বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছে। আমার মতে স্বাধীন হয়েছে বৈকী। ১৯৭১ এ ৯মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ও ৩০ লাখ শহীদ এবং ২ লাখ মা-বোনের সম্মানের বিনিময়ে এই দেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছেন এ দেশের বীর সন্তানেরা। আর আজ তাদেরই উত্তরসূরী দেড় মাসের সংগ্রামে বাংলাদেশেকে এনে দিয়েছে দেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা।
তবে ১৯৭১ এর বাংলাদেশের সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীনতার পরও এই দ্বিতীয় স্বাধীনতার প্রয়োজন পড়লো কেনো? তাহলে ৭১এর স্বাধীন দেশ, স্বাধীন রাষ্ট্র পাওয়ার পরও আমাদের আর কী পাওয়ার অবশিষ্ট ছিলো? ন্যায্য অধিকার? নিরাপত্তা? বাকস্বাধীনতা? খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা? অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা? সুবিচার? অনেক কিছুরই অভাব পরিলক্ষিত ছিল এ দেশে। ক্ষুধার্তকে টাই-স্যুট পড়িয়ে উন্নয়নের গল্প শুনালে যে তার পেট ভরবে না, বর্তমান অবস্থা তারই অন্যতম প্রমাণ। আর তার ফলস্বরূপ শেখ হাসিনা সরকারের দীর্ঘ দেড়দশকের শাসনপত্তন এবং তাদের দেশত্যাগ।
কিন্তু তারপর? কি পড়ে রইল বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের জন্য? ভগ্ন অর্থনৈতিক অবস্থা, বিশাল মাথাপিছু ঋণ, অস্থিতিশীল আইনশৃঙ্খল ব্যাবস্থা, নিরাপত্তাহীনতা, খাদ্য অনিশ্চয়তা? আরও বিভিন্ন নেতিবাচক বিশেষণে ভঙ্গুর বাংলাদেশ বিশেষায়িত হয়ে পড়ে আছে। অবশ্য দেশের অন্যতম ক্রান্তিলগ্নে শক্তিশালী রাষ্ট্র ব্যবস্থা গঠনের আশা করাটাও বোকামী। কারন ইতোমধ্যেই দুধের মাছিদেরও উড়তে দেখা যাচ্ছে। তারা তাদের কার্যক্রম শুরু করেও দিয়েছে।
আজ সারাদিন ব্যাপী ঘটা বিভিন্ন থানা, কারাগার, ভাস্কর্য, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, বক্তিগত স্থাপনা লুট-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, এমনকি বিভিন্ন সংখ্যালঘু ধর্মীয় উপাসনালয়ে আক্রমণ ও অগ্নিসংযোগ তারই প্রমাণ। হিংসা-প্রতিহিংসা, লোভ-লালসা আজ সুশিক্ষাকেও হার মানিয়েছে। যে দেশের জনগণ সুযোগ পেলেই লুট ও অগ্নিসংযোগে মেতে উঠে, সে দেশের পাতি নেতারাও যে স্বৈরাচারী ও দূর্নীতিবাজ হবে না, তা ভাবা আসলেই বোকামী।
একটি দেশের আইনব্যবস্থা তখনই সত্যিকারের অবনতি ঘটে যদি সেই দেশের জনগণ তাদেরই আইনব্যবস্থার অবনমণ করে। দেশের বৈপ্লবিক প্রয়োজনে আইন ব্যবস্থার অস্বীকার সাময়িক সময়ের জন্য ঘটতে পারে। তবে উদ্দেশ্য হাসিল হয়ে যাওয়ার পরও নিজেদের না গুছিয়ে নেয়া, তা দেশের নেতিবাচক পরিস্থিতিকে আরও বেশি বিপদে ফেলে। আর দীর্ঘদিন এমন অবনতি চলতে থাকলে তা ঐ দেশের জন্যেই অশনিসংকেত। বিশেষ করে আজকের দিনে ঘটা অহেতুক মৃত্যুগুলো ভয়ংকর কিছুরই বার্তা দিচ্ছে।
ভুলে গেলে চলবে না, এর আগেও বাংলাদেশে আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারীর পতন ঘটানো হয়েছে, আজও আরেক পতন ঘটানো হলো, হয়তো সুদূর ভবিষ্যতে আবারও ঘটানো হবে। এভাবে হয়তো আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারীরা বারবার নিপাক যাবে, দেশকে পুণঃরায় স্বাধীন করা যাবে, কিন্তু জাতি সুশিক্ষিত না হলে কোনোদিনই গণতন্ত্র মুক্তি পাবে না।
Read the full article:
ইতিহাসের পাতায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হয়ে থাকবে ৫ই আগস্ট, ২০২৪। অনেকের মতে, বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছে। ...