05/04/2024
'আলী হাসান ওসামাঃ একটি হ-য-ব-র-ল আবেগের প্যাকেট।'
ব্রাদার রাহুল মার্চের ১৬ তারিখ ১২ জন হানাফি (দেওবন্দী-ব্রেলভি) আলেমকে তারাবিহের রাকাআতের ব্যাপারে ওপেন চ্যালেন্জ জানিয়েছিল। তা গ্রহণ করার মন-মানসিকতা কারো মধ্যেই দেখা না গেলেও ২০ মার্চ আলী হাসান ওসামা স্বেচ্ছায় বসার মতো আগ্রহ দেখায়, যদিও সে ১২ জনের তালিকায় ছিল না।
যাইহোক, আলী হাসান ওসামা এই মর্মে বসার আগ্রহ দেখায়- যাতে রমজানে আর তারাবিহ নিয়ে কোনো ধরনের বাকবিতন্ডা না হয়, ব্রাদার রাহুল যেন অন্তত রমজান মাসে আর এ বিষয় নিয়ে নতুন করে কোনো কথা না বাড়ায়। ইবাদতের মাস, এসব সমালোচনা-তর্কবিতর্ক হতে দূরে থেকে সবাই যাতে ইবাদতে মনোযোগ দিতে পারে। ২০ মার্চ পরপর দুটো পোস্টে সে মূলত এই বিষয়গুলোই হাইলাইট করে। ব্রাদার রাহুলও প্রস্তাবে সম্মত হয়ে ওসামার কথাগুলোকে আমলে নেয়। এমনকি সেকেন্ড পোস্টে আলী হাসান ওসামা এটাও উল্লেখ করেছিল যে- "এর অর্থ হচ্ছে, রমজানের বাকি দিনগুলো উম্মাহ তারাবিহের রাকআত সংখ্যা নিয়ে চলমান বিবাদ থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছে, আলহামদুলিল্লাহ।" মানে নিজেকে উম্মাহর এক প্রকার কল্যাণকামী, ইবাদতগুজার বুজুর্গ হিসাবে জাহির করেছিল।
অথচ, মার্চের ২৬ তারিখ খোদ আলী হাসান ওসামা নিজেই তার টাইমলাইনে ৮ রাকাআত পড়ে যারা মসজিদ থেকে চলে যায়, তাদের ব্যাপারে অহেতুক ফতোয়াবাজিপূর্ণ নিজেরই একটা বক্তব্যের ভিডিও আপলোড করেছিল। কিন্তু, ৮/২০ এর আলাপ রমজানে আর তোলারই কথা ছিল না। তো এই হচ্ছে বোকা ও আবেগী আলী হাসান ওসামার নীতি-নৈতিকতার অবস্থা! অবশ্য সে অন্যান্য মুকাল্লিদদের চেয়ে যথেষ্ট ভদ্র, এটা মানতে হবে।
এটা একটা বিষয়। তবে খারেজী হওয়ার যোগ্যতাও তার মধ্যে নেই, এটা বলার মূল কারণ হলো, খারেজীরা আল্লাহর বিধান মানার ব্যাপারে খুবই কঠোর। যারা সাহাবীদের মতো মর্যাদাপূর্ণ মানুষকে পর্যন্ত তাকফির করতো! কুসংস্কার, অন্ধত্ব, তরিকা, আকাবির পূজা এসব খারেজীদের ক্ষেত্রে অকল্পনীয়। সেখানে আলী হাসান ওসামার মধ্যে এসব রয়েছে, সে একজন চরম লেভেলের মুকাল্লিদ। তার লেখাগুলোতে এসবে প্রকট ছাপ রয়েছে। সম্প্রতি বিষয়টা আরো পরিষ্কার হলাম ডা. আবুল কালাম আজাদ বাশার (জামাআতি ইসলাম)-কে নিয়ে তার একটা পোস্ট দেখে। সে তার পোস্টের কমেন্ট সেকশনে যে প্রামাণ্য ভিডিও লিংকটা শেয়ার করেছে, সেটা আমি পুরোটাই দেখলাম, কিন্তু কোথাও দেখলাম না যে, আবুল কালাম আজাদ বাশার ইমাম আবু হানিফা রহিমাহুল্লাহকে কোনো প্রকার তুচ্ছতাচ্ছিল্য কিংবা কটাক্ষ করে কিছু বলেছে। মূলত সে নিজেও একজন হানাফি আলেম। এমনকি তাকে প্রকৃত হানাফিই বলতে হবে, কারণ আবু হানিফা রহিমাহুল্লাহর আকিদা-মানহাজের অনেকটাই তার মধ্যে রয়েছে, যা অন্যান্য মুকাল্লিদদের মধ্যে নেই। আবুল কালাম আজাদ উক্ত ভিডিওতে শুধুই এটা বলেছে যে- ইমাম আবু হানিফা রহিমাহুল্লাহর নামে যে কথা চালু আছে, উনি নাকি একাধারে ৪০ বছর ইশার অযু দিয়ে ফজরের নামাজ পড়েছেন, এটা ভিত্তিহীন। এটা যারা বলে তারা আবু হানিফা রহিমাহুল্লাহর মর্যাদা বাড়াতে গিয়ে ক্ষুন্ন করে। কারণ ৪০ বছর এভাবে একাধারে ইশার অযু দিয়ে ফজর পড়া অনেকগুলো সুন্নাহর খেলাফ। ইমাম আবু হানিফা রহিমাহুল্লাহর মতো এত বড় একজন ইমাম কি সুন্নাহ বিরোধী কাজ করতে পারে?
আসলে তার কথায় কোনোই ভুল ছিল না, বরং যা বলেছে একদম সঠিক কথাই বলেছে। এরপরও আলী হাসান ওসামার মতো একজন ভদ্র হানাফিও এই শতভাগ যৌক্তিক কথাগুলোকে হজম করতে পারেনি, উল্টো আবুল কালাম আজাদ বাশারকে যা-তা অপবাদ দিয়ে পোস্ট করেছে। তাহলে ভাবেন মাজহাবি গোঁড়ামি তার মধ্যে কি লেভেলে বিদ্যমান! সে কত বড় একজন মুকাল্লিদ (অন্ধ অনুসারী)!
একদিকে কিছুটা চরম|পন্থী খা|রেজী মানহাজধারী, অন্যদিকে চরম পর্যায়ের মুকাল্লিদ। এ অবস্থায় তাকে যে কি বলে সম্বোধন করা যায়, সেটাই নির্ণয় করা মুশকিল। মানে সে একটা হ-য-ব-র-ল কিংবা জগাখিচুড়ি আরকি।