21/11/2023
শীতে সুস্বাস্থ্যের জন্য ফলিত পুষ্টি বিষয়ক পরামর্শঃ
ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। ঋতু পরিবর্তনের ধারায় ইতোমধ্যে শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। তবে নভেম্বর মাস থেকেই শীতের আমেজ অনুভব করা যায়। আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়; বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে। এ সময় শারীরিক সুস্থতার জন্য নিম্ন লিখিত পরামর্শ/দিক নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করা যেতে পারে :
১। শীতে সর্দি, কাশি, ভাইরাল জ্বর ইত্যাদির প্রবণতা বাড়ে। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এ সময় ভিটামিন সি ও ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ মৌসুমি বিভিন্ন ফল ও শাক-সবজি বেশি করে গ্রহণ করলে উপকার পাওয়া যাবে।
২। শীতে উষ্ণতা পেতে ভেষজ বা মসলাযুক্ত এক কাপ চা তুলনাহীন যেমন- আদা, তুলসী, এলাচ, লবঙ্গ, সাবরাং, পুদিনা যা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয় এবং বিভিন্ন ধরনের প্রতিরোধে কাজ করে। এছাড়াও হালকা কুসুম গরম পানিতে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেলেও সর্দি-কাশি উপশম হয়।
৩। যারা রক্ত স্বল্পতায় (এনিমিয়া) ভুগছেন তাদের মধ্যে এ সময় ঠাণ্ডা লাগাসহ বিভন্ন রোগের প্রবণতা বেশি থাকে। তাই এ সময় আয়রন সমৃদ্ধ খাবার, কলিজা, ডিমের কুসুম, মসুর ডাল, ছোলা, পালং শাক, বাদাম ও বিভিন্ন বীজ, মাশরুম প্রভৃতি বেশি করে খাওয়া প্রয়োজন ।
৪। এ সময় বাচ্চাকে ঘন ঘন মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে। মায়ের মুখ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে শিশু সহজে ঠাণ্ডা, কাশি ইত্যাদিতে আক্রান্ত হবে না।
৫। ছয় মাসের বেশি বয়সী শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মায়ের দুধের পাশাপাশি অন্য খাবার যেমন, ডিম, লাল শাক, পালং শাক ইত্যাদি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি দিতে পারেন। এছাড়া বিভিন্ন স্যুপ, লেবুর রস, কমলার রস খাওয়াতে পারেন।
৬। মৌসুমি বিভিন্ন ফল ও শাক সবজিতে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আঁশ (ফাইবার), অ্যান্টি- অক্সিডেন্ট প্রভৃতি থাকে যা শরীরের সজীবতা রক্ষা করতে এবং ত্বক ও চুল ভালো রাখতে সহায়তা করে। তাই শীতে এ জাতীয় খাদ্য বেশি পরিমাণে গ্রহণ করা যেতে পারে।
৭। এ সময় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য দানাদার শস্য, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, তাজা ফল ও শাকসবজি, বাদাম, বিভিন্ন বীজ জাতীয় খাদ্য ও লেবুর সমন্বয়ে সুষম খাদ্য পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করা যেতে পারে।
৮। শীতে আবহাওয়া শুষ্ক থাকে। শীতের শুরু ও শেষ সময়ে পানি পানের প্রবণতা কমে যাওয়ায় ডিহাইড্রেশনের সমস্যা দেখা দেয়। এই সময় বেশি করে পানি পান করা
প্রয়োজন। হালকা কুসুম গরম পানি পান করা যেতে পারে। পানি আমাদের দেহের
অভ্যন্তরীণ টক্সিন অপসারণ করতে, শরীরের কোষগুলিতে পুষ্টি বহন করতে এবং দেহে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
৯। শারীরিক ক্রিয়াকলাপ বা ব্যায়াম বা খেলাধুলা শরীরকে উষ্ণ রাখতে এবং জ্বর, সর্দি-কাশির মতো মৌসুমি বিভিন্ন অসুস্থতার বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। ।
১০ এ সময় ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত বিষণ্ণতা বেশি পরিলক্ষিত হয়। তাই ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণে পর্যাপ্ত সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসতে হবে। (সংগৃহীত)