রিশাহ্ পাবলিকেশন্স

রিশাহ্ পাবলিকেশন্স রিশাহ্ দাওয়াহ্’র কলমে আলোর দিশা

গণতন্ত্র দীন হওয়ার বিষয়টি এভাবে আরও সুস্পষ্ট হয়েছে যে, একালে পশ্চিমা ক্রুসেডারদের আর মুসলমানদেরকে খ্রিষ্টান বানানোর পদক্...
26/10/2025

গণতন্ত্র দীন হওয়ার বিষয়টি এভাবে আরও সুস্পষ্ট হয়েছে যে, একালে পশ্চিমা ক্রুসেডারদের আর মুসলমানদেরকে খ্রিষ্টান বানানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায় না। বর্তমানে এই প্রচেষ্টা খুবই কমে গেছে। বরং তারা নতুন ধর্মে দীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করে, গণতন্ত্র ধর্ম।

কারণ এতে তারা এমন অনেক লাভ ও উপকার পায় যা গির্জায় প্রবেশ করিয়ে পেত না। তাই তো আমরা দেখি তাদের শত্রু-মিত্র নির্ধারণের মাপকাঠি হয়ে গেছে গণতন্ত্র। যারা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহ মেনে নেয় তাদের সাথে তারা বন্ধুত্ব করে, উপযুক্ত সম্মান দেয়। আর যারা বিরোধিতা করে তাদের বয়কট করে, সম্পর্কচ্ছেদ করে।

মহান আল্লাহ তাআলা সত্যই বলেছেন,
وَلَن تَرۡضَىٰ عَنكَ ٱلۡیَهُودُ وَلَا ٱلنَّصَـٰرَىٰ حَتَّىٰ تَتَّبِعَ مِلَّتَهُمۡۗ قُلۡ إِنَّ هُدَى ٱللَّهِ هُوَ ٱلۡهُدَىٰۗ وَلَىِٕنِ ٱتَّبَعۡتَ أَهۡوَاۤءَهُم بَعۡدَ ٱلَّذِی جَاۤءَكَ مِنَ ٱلۡعِلۡمِ مَا لَكَ مِنَ ٱللَّهِ مِن وَلِیࣲّ وَلَا نَصِیرٍ ۝١٢٠

ইহুদি ও খ্রিষ্টানরা আপনার প্রতি কখনো সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না আপনি তাদের মিল্লাতের অনুসরণ করেন। বলুন নিশ্চয় আল্লাহর হেদায়েতই প্রকৃত হেদায়েত। আর আপনার কাছে জ্ঞান আসার পরও যদি আপনি তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করেন, তবে আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনার কোনো অভিভাবক থাকবে না এবং থাকবে না কোনো সাহায্যকারী। (সুরা বাকারা : ১২০)

আল্লাহ তাআলা আরও বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن تُطِيعُوا الَّذِينَ كَفَرُوا يَرُدُّوكُمْ عَلَىٰ أَعْقَابِكُمْ فَتَنقَلِبُوا خَاسِرِينَ (149) بَلِ اللَّهُ مَوْلَاكُمْ ۖ وَهُوَ خَيْرُ النَّاصِرِينَ (150)

হে মুমিনগণ! যদি তোমরা কাফেরদের আনুগত্য করো তবে তারা তোমাদেরকে বিপরীত দিকে ফিরিয়ে নেবে, ফলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। বরং আল্লাহই তোমাদের অভিভাবক এবং তিনিই শ্রেষ্ঠ সাহায্যকারী। (সুরা আলে ইমরান : ১৪৯-১৫০)

বই: ইসলাম ও বহুজাতিক রাষ্ট্রব্যবস্থা
লেখক: আবদুল মুনয়িম মুস্তফা হালিমাহ
অনুবাদ: Ammarul Hoque
প্রকাশক: রিশাহ্ পাবলিকেশন্স

আর সব ধরনের ফিতনা থেকে পরিত্রাণের উপায় হলো, কুরআন-সুন্নাহ সম্পর্কে গভীর জ্ঞান লাভ করা। আমরা একটা বিষয় লক্ষ করলে বুঝতে পা...
16/10/2025

আর সব ধরনের ফিতনা থেকে পরিত্রাণের উপায় হলো, কুরআন-সুন্নাহ সম্পর্কে গভীর জ্ঞান লাভ করা। আমরা একটা বিষয় লক্ষ করলে বুঝতে পারব যে, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেসব ফিতনা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়েছেন এবং শেষ যুগে যেসব ফিতনা বিস্তারের কথা বলেছেন, সবখানে আল্লাহ তাআলা ফিতনার কথা উল্লেখ করার পাশাপাশি ইলমের অবনতি ও জাহালতের বিস্তারের কথা বলেছেন। এ ব্যাপারে সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিমসহ বিভিন্ন কিতাবের বর্ণনায় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুস্পষ্ট অনেক হাদিস আছে।

ইমাম বুখারি রাহ. হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণনা করেন; নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
কিয়ামত ততক্ষণ হবে না, যতক্ষণ-না ইলমের চর্চা উঠে যাবে, বারবার ভূমিকম্প হবে, সময়ের মূল্য কমে যাবে, ফিতনার বিস্তার ঘটবে, হত্যা ও খুন বেড়ে যাবে। ফলে দেখতে পাবে, তোমাদের ধনসম্পদ অঢেল হয়ে যাবে। (কারণ, অগণিত মানুষ হত্যার কারণে জনসংখ্যা হ্রাস পাবে। ফলে প্রচুর সম্পদ ভোগ করার মতো লোক পাওয়া যাবে না।

আরেকটি বর্ণনায় এসেছে,
ইলম উঠে যাওয়া, হত্যাকাণ্ড বেড়ে যাওয়া, ব্যভিচার ছড়িয়ে পড়া, জাহালতের বিস্তার ঘটা, ফিতনা বৃদ্ধি পাওয়া কিয়ামতের আলামতের অন্তর্ভুক্ত।

এখানে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করে দিয়েছেন যে, ফিতনার বিস্তার ঘটা ইলমচর্চা উঠে যাওয়ার সাথে সম্পৃক্ত। যখন প্রকৃতপক্ষে ইলমচর্চা উঠে যাবে, তখন ফিতনা মানুষের মাঝে সামগ্রিকভাবে ছড়িয়ে পড়বে। তখন মানুষ আল্লাহর পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরীক্ষার মুখোমুখি হবে এবং তাদের মাঝে বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটবে।

তারা বিদআতের চর্চা করে ভাববে সুন্নাহর অনুসরণ করছে। আর সুন্নাহর অনুসরণ করে ধারণা করবে বিদআতের চর্চা করছে। দীনের অনেক পরিভাষাকে তারা পরিবর্তন করে ফেলবে। তাই আমরা বলে থাকি, ফিতনার সাধারণ অর্থ বাস্তবরূপে প্রকাশ পায় হাকিকতের মর্ম-বিকৃতির মধ্য দিয়ে। আর এই মর্ম-বিকৃতির মধ্যেই ফিতনার সকল প্রকার অন্তর্ভুক্ত।

বই: ফিতনার মর্মকথা
লেখক: শাইখ আবদুল আজিজ তারিফি
অনুবাদ: Mizanur Rahman Ibn Ali
ভাষা সম্পাদক: Mutiul Mursalin
প্রকাশক: রিশাহ্ পাবলিকেশন্স

হিজরতের প্রথমবর্ষে নবি সা. যখন নামাজের প্রতি মানুষকে আহ্বানের জন্যে আজানপ্রথা চালু করেন, তখন তিনি আজান দেওয়ার গুরুদায়িত্...
15/10/2025

হিজরতের প্রথমবর্ষে নবি সা. যখন নামাজের প্রতি মানুষকে আহ্বানের জন্যে আজানপ্রথা চালু করেন, তখন তিনি আজান দেওয়ার গুরুদায়িত্ব বেলাল রা. -এর কাঁধে অর্পণ করেন। এ জন্য তাঁর উপাধি ছিল রাসুলের মুআজ্জিন।

কোনো কারণে তিনি আরবি ‘শিন’ বর্ণ ভালোভাবে উচ্চারণ করতে পারতেন না। আশহাদু বলার পরিবর্তে আসহাদু বলতেন। তবু তাঁর একনিষ্ঠতা, ভালোবাসা এবং দীনের জন্য সীমাহীন ত্যাগের ফলে রাসুল সা. কিছুই বলতেন না। যতদিন নবি জীবিত ছিলেন, ততদিন বেলালের আজান মদিনা ও এর আশেপাশে প্রতিধ্বনিত হতো। মক্কা বিজয়ের দিন বেলাল রা. সবার আগে কাবাঘরের ছাদে উঠে আজান দেন।

ইসলাম সাম্যের যে রূপরেখা দিয়েছে, তার এক মহান দৃষ্টান্ত ছিলেন বেলাল রা.। ইসলাম গ্রহণের পর তিনি এতবেশি সম্মানের অধিকারী হয়েছিলেন যে, আরবের বড় বড় নেতা তাঁকে বেলালে হাবশির পরিবর্তে সাইয়িদুনা বেলাল রা. বলে ডাকতেন।

সফরে তিনি সবসময় রাসুলের সাথে থাকতেন। যুদ্ধ-বিগ্রহেও তিনি নবিজির সাহচর্যলাভে ধন্য হন। রাসুলের ইনতিকালের পর তিনি আজান দেওয়া ছেড়ে দেন। কারণ, নবিজির বিচ্ছেদের কথা মনে পড়লে তাঁর হৃদয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হতো, তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে যেতেন।

পরবর্তীকালে তিনি সিরিয়ায় চলে যান এবং বিভিন্ন জিহাদে অংশগ্রহণ করেন।

রাসুলের ইনতিকালের পর তিনি মাত্র দু-বার আজান দিয়েছিলেন। একবার যেদিন সাইয়িদুনা উমর রা. তাঁর খিলাফতকালে বায়তুল মাকদিসে যান। উমর রা. বারবার অনুরোধের পর সেদিন তিনি আজান দেন। তাঁর আজানের ধ্বনি অনুরণিত হয়ে আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে যায়। অন্তরের আবেগ, মায়া মেশানো জাদুকরি আওয়াজ সেনাদের আবেগতাড়িত করে তোলে। চোখ বেয়ে অশ্রুনদী গড়িয়ে পড়তে থাকে সবার। সাইয়িদুনা উমর রা.-এর মতো কঠোর হৃদয়ের অধিকারী ব্যক্তিও ব্যথাতুর হৃদয়ে নিজের অজান্তেই কেঁদে ফেলেন।

দ্বিতীয়বার যখন তিনি সিরিয়া থেকে রাসুলের রওজা জিয়ারত করতে আসেন, তখন হাসান ও হুসাইন রা.-এর পীড়াপীড়িতে পুনর্বার আজান দেন। মাসজিদে নববি থেকে যখন বেলালের আজানের ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হয়, মদিনার চার পাশের আনাচে-কানাচে বিষাদ ও তীব্র শোকের কল্লোলে প্রচণ্ড ঢেউ খেলে যায়। যার কানে এ ধ্বনি পৌঁছেছে, সে-ই মসজিদের দিকে দৌড়ে আসছে। মাসজিদে তখন আবার নববি যুগের পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

বেলাল রা.-এর জীবনী এমন এক পূতপবিত্র ও বরকতময়, যার প্রতিটি মুহূর্ত আল্লাহর অনুসরণ এবং ইসলামের সেবায় অতিবাহিত হয়েছে। একনিষ্ঠতা ও দীনি ত্যাগ তাঁকে এমন এক উঁচু মর্যাদা দান করেছে, যা কোনো বাদশাহের কপালেও জুটেনি।

ছোট্ট বন্ধুরা, সাইয়িদুনা বেলাল রা.-এর এ জীবনী থেকে আমরা জানলাম, ইমান ও ইসলামের পথে অনেক বাধা-বিপত্তি আসবে। কিন্তু সবসময় পাহাড়ের মতো অটল থাকতে হবে। তবেই বেলালে হাবশি থেকে সাইয়িদুনা বেলাল রা. হওয়া সম্ভব।

বই: ছোটদের মহানবি সা.
লেখক: তাহির নাক্কাশ
অনুবাদ: মুফতি ফখরুল ইসলাম
ভাষা সম্পাদক: Mutiul Mursalin
প্রকাশক: রিশাহ্ পাবলিকেশন্স

বুদ্ধিবৃত্তিক ফিতনার অবসান মূলত নিজেদের মধ্যকার একক চেতনাসমৃদ্ধ জামাত প্রতিষ্ঠার পরই সমাজে বিশুদ্ধ চিন্তার চর্চা ও প্রয়ো...
13/10/2025

বুদ্ধিবৃত্তিক ফিতনার অবসান

মূলত নিজেদের মধ্যকার একক চেতনাসমৃদ্ধ জামাত প্রতিষ্ঠার পরই সমাজে বিশুদ্ধ চিন্তার চর্চা ও প্রয়োগ শুরু হয়। কেননা, বিশেষ এই জামাত গঠনের মাধ্যমেই শরয়ি বিধানাবলির বাস্তব প্রতিফলন ঘটে; বিশুদ্ধ চিন্তার সুবিন্যস্ত রূপ ফুটে ওঠে। পাশাপাশি এই বিশুদ্ধ চিন্তা মানব-বিবেককে সঠিক নির্দেশনা দিয়ে সুপথে পরিচালিত করে এবং ভুলচুক থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করে। বলা জরুরি যে, কোনো বিষয়ে ঐক্য সৃষ্টি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তবে মুসলিমদের মধ্যে নীতিগতভাবে বিশেষ কোনো দায়িদল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর, সঠিক রাস্তায় তা টিকিয়ে রাখা আরও বেশি জরুরি। এ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে, যতক্ষণ-না সংঘটিত দলের মূল ভিত্তির ওপর সকলের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হয়। যাতে সুসংহত এ দলটির সত্তায় কোনো বিভাজন সৃষ্টি না হয়, সে জন্য এতে হুটহাট ফাটল ধরতে দেওয়া যাবে না—এই বাস্তবতার দলিল স্বয়ং রাসুলুল্লাহ সা.-এর বাণী।

কেননা, মুসলমানরা এক আমিরের আনুগত্যে থাকাকালীন কোনো দুষ্কৃতকারী এ ঐক্য ভাঙার অপচেষ্টা করলে আল্লাহর রাসুল তাকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। সহিহ মুসলিমে বর্ণিত এ বিষয়ক হাদিস আমরা দেখে নিতে পারি।
আরফাজা রা. থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সা.-কে বলতে শুনেছি, তোমাদের এক নেতার অধীনে একতাবদ্ধ থাকা অবস্থায় যে এসে তোমাদের শক্তি খর্ব করতে উদ্যত হয়, অথবা তোমাদের ঐক্য বিনষ্ট করতে চায়, তাকে তোমরা হত্যা করবে।

হাদিস থেকে সুস্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, সুসংহত জামাত ও এর সংরক্ষণের বিপরীতে একক ব্যক্তি নিতান্তই মূল্যহীন। এ ব্যাপারে প্রাসঙ্গিক আরেকটি দলিল হলো, রাসুলুল্লাহ সা. মুমিনকে ঝগড়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন; যদিও সে ওই বিবাদে হকপন্থি (ইসলামের সরল পথে অবিচল) হোক না কেন। আবু উমামাহ রা. থেকে বর্ণিত; রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন, যে ন্যায়সংগত হওয়া সত্ত্বেও ঝগড়া পরিহার করবে, আমি তার জন্য জান্নাতের বেষ্টনীর মধ্যে একটি ঘরের জিম্মাদার।

হাদিসের এমন নির্দেশনা থেকে সহজেই অনুমিত হয় যে, মুসলিমদের ঐক্য রক্ষা করা অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর ঝগড়াঝাঁটি ঐক্য বিনষ্টের অন্যতম প্রধান কারণ। বস্তুত এ জন্যই আল্লাহর রাসুল সাহাবিদের এবং তাঁদের মাধ্যমে সমস্ত মুমিন জাতিকে এমন নির্দেশ দিয়েছেন।
মুসলিম জামাতের পারস্পরিক সম্পর্ক রক্ষার তুলনায় যদি অন্য কোনো বিষয়ে ঐক্য সৃষ্টি করা অধিক গুরুত্বপূর্ণ হতো, তবে রাসুলুল্লাহ সা. বিবাদে ন্যায়সংগত হওয়া সত্ত্বেও মুমিনকে ঝগড়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিতেন না।

বই: দাওয়াহ ও হিকমাহ (পরিচয়, প্রকৃতি, ব্যবহার ও অপব্যবহার)
লেখক: রিফায়ি সুরুর
অনুবাদ: সাদিক ফারহান
ভাষা সম্পাদক: Mutiul Mursalin
প্রকাশক: রিশাহ্ পাবলিকেশন্স

গির্জা কর্তৃক চর্চিত যাজকতন্ত্রের জুলুম ও দৈহিক-চিন্তাগত আগ্রাসনের ফলস্বরূপ ফরাসি বিপ্লবের পর শাসনব্যবস্থা হিসেবে ইউরোপে...
07/10/2025

গির্জা কর্তৃক চর্চিত যাজকতন্ত্রের জুলুম ও দৈহিক-চিন্তাগত আগ্রাসনের ফলস্বরূপ ফরাসি বিপ্লবের পর শাসনব্যবস্থা হিসেবে ইউরোপে গণতন্ত্র আত্মপ্রকাশ করে। এই শোষণ ছিল জনগণ ও বিশেষভাবে বহু বৈজ্ঞানিক ইস্যুতে গির্জার বিরোধিতাকারী বিজ্ঞানী ও চিন্তকদের ব্যাপারে গির্জার কথিত আসমানি সত্যের একমাত্র ঠিকাদারিত্বের দাবি।

বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ঘটনায় তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত ও ব্যাখ্যা থাকত, যা হতো গির্জার অবস্থানের বিরোধী ও সাংঘর্ষিক। এটি ছিল এমন বিষয়, তৎকালে গির্জার পক্ষে যা মেনে নেওয়া বা সহ্য করা সম্ভব ছিল না। এটি গির্জার যাজকদেরকে গির্জা ও গির্জার শিক্ষাদীক্ষা, ইনকুইজিশন ট্রাইব্যুনাল ও সেখানকার গণহত্যা, নরহত্যা, পাশবিক অত্যাচার, গির্জার তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত বা পরিচালিত প্রহসনমূলক বিচার ইত্যাদি সকল কিছুর যারা বিরোধিতা করে তাদেরকে খতম করতে ও কষ্ট দিতে উদ্বুদ্ধ করে। এসব জনগণের অগোচরে থাকেনি কিছুই।

এমন পরিবেশে আধুনিক গণতন্ত্রের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এই কারণে গণতন্ত্রকে গির্জার শিক্ষা ও ধর্মের নামে প্রচলিত প্রতিটি বিষয়ের ব্যাপারে ক্রুদ্ধ দেখা যায়। গির্জার শিক্ষাদীক্ষা ও আল্লাহর নামে মানুষের ওপর গির্জা যা চাপিয়েছে সবকিছুর প্রতি বিদ্বেষ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার জায়গায় গণতন্ত্র দাঁড়িয়ে যায়।

এই প্রতিহিংসার কারণ হলো, গির্জা মনে করত আল্লাহর স্থলাভিষিক্ত হিসেবে কথা বলার অধিকার একমাত্র তারই রয়েছে, এই অধিকার আর কারও নেই। এরপর গণতন্ত্র গির্জার পোপদের থেকে সার্বভৌমত্বের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার দিকে মনোযোগ দেয়। যেন জনগণের সার্বভৌমত্বের নীতি বাস্তবায়নের নামে গির্জার পোপদের থেকে ছিনিয়ে নিয়ে তা পুরোপুরি সঁপে দেওয়া যায় প্রতিনিধিত্বকারী আইনসভার পোপদের অধিকারে। ফলে সার্বভৌম কর্তৃত্ব চলে যায় এক মাখলুক থেকে ভিন্ন মাখলুকের কাছে। এক সৃষ্টির প্রভুত্ব থেকে ভিন্ন সৃষ্টির প্রভুত্বে। তবে দ্বিতীয় পর্যায়ের এই সৃষ্টির প্রভুত্ব এসেছে ধর্ম ও গির্জা থেকে দূরে, নামসর্বস্ব প্রজাতন্ত্রের নামে!!

এভাবেই গণতন্ত্র সর্বপ্রথম ধর্মকে রাষ্ট্র, শাসনব্যবস্থা ও জীবনব্যবস্থা থেকে পৃথকীকরণের নীতি প্রায়োগিকভাবে তৈরি করে। এটিই প্রসিদ্ধ স্লোগানটি তৈরি করে, "রাজার অধিকার ও আল্লাহর অধিকার প্রতিটি চলবে আপন আপন ক্ষেত্রে।"

গণতন্ত্র বলে, আল্লাহর জন্য রয়েছে শুধুই উপাসনালয় ও গির্জাসমূহের কোণায় বসে বসে ইবাদত, বাকি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও বিচারিক এসব জীবনের সুযোগ-সুবিধার সাথে সম্পর্কিত জীবনের ক্ষেত্রসমূহে আল্লাহর বিশেষ স্বকীয়তা বলে কিছু নেই। এগুলো হলো জনগণ ও জনপ্রতিনিধির বেশ ধরে থাকা সম্রাটের করায়ত্তে। জনগণের অধিকার ও আল্লাহর অধিকার—প্রতিটি চলবে আপন আপন ক্ষেত্রে। যা আল্লাহর অধিকারে দেওয়া হয়েছে সেগুলোতে আবার জনগণের প্রবেশাধিকার রয়েছে। যেহেতু মানুষ মসজিদ ও উপাসনালয়ের কর্মকাণ্ড ও ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি যা কিছু তাদের ধারণায় আল্লাহর জন্য রাখা হয়েছে, সেগুলোতে হস্তক্ষেপে পুরোপুরি সক্ষম ও তার হকদার।

পক্ষান্তরে যা রাখা হয়েছে মানুষের ভাগে, তাতে আল্লাহর ভাগ তৈরি হয় না, আল্লাহর অধিকার নেই তাতে সিদ্ধান্ত দেওয়ার... (তারা যা বলে তা থেকে আল্লাহ তাআলা অনেক ঊর্ধ্বে)। আল্লাহ তাআলা সত্য বলেছেন,

وَجَعَلُوا لِلَّهِ مِمَّا ذَرَأَ مِنَ الْحَرْثِ وَالْأَنْعَامِ نَصِيبًا فَقَالُوا هَٰذَا لِلَّهِ بِزَعْمِهِمْ وَهَٰذَا لِشُرَكَائِنَا ۖ فَمَا كَانَ لِشُرَكَائِهِمْ فَلَا يَصِلُ إِلَى اللَّهِ ۖ وَمَا كَانَ لِلَّهِ فَهُوَ يَصِلُ إِلَىٰ شُرَكَائِهِمْ ۗ سَاءَ مَا يَحْكُمُونَ

আল্লাহ যে শস্য ও গবাদি পশু সৃষ্টি করেছেন তার মধ্য হতে তারা আল্লাহর জন্য একটি অংশ নির্ধারণ করে এবং নিজেদের ধারণা অনুযায়ী বলে, এটা আল্লাহর জন্য আর এটা আমাদের দেবতাদের জন্য, যা তাদের দেবতাদের অংশ তা আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না, অথচ যা আল্লাহর অংশ তা তাদের পৌঁছায়। তারা যা মীমাংসা করে তা নিকৃষ্ট। (সুরা আনআম : ১৩৬)

এমনইভাবে গণতন্ত্র একটি জীবনব্যবস্থা ও ধর্মের মতো অস্তিত্ব, অবিনশ্বর সত্তা ও জীবন সম্পর্কে বিশেষ ব্যাখ্যা প্রদান করেছে। বিশেষ ব্যাখ্যা প্রদান করেছে স্রষ্টার সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক ইত্যাদি বিষয়েও।

যে বলে ‘কোনো স্রষ্টা নেই, জীবন হলো বস্তু’, গণতন্ত্র তাকে বলে, কোনো আপত্তি নেই তোমার ওপর, যতক্ষণ তুমি গণতান্ত্রিক রয়েছ, আল্লাহর ব্যাপারে যা খুশি আকিদা পোষণ করতে পারো। এরই নাম আকিদার স্বাধীনতা।

বই: ইসলাম ও বহুজাতিক রাষ্ট্রব্যবস্থা
লেখক: আবদুল মুনয়িম মুস্তফা হালিমাহ
অনুবাদ: Ammarul Hoque
প্রকাশক: রিশাহ্ পাবলিকেশন্স

05/10/2025

প্রিয় বন্ধুরা, তোমরা কি জানো সে কাফেলার সর্দার কে ছিলেন? তিনি ছিলেন এমন এক মহামানব, যার আলোচনা আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে করেছেন। যার সাথিদের ব্যাপারে তিনি সর্বশেষ ঐশীগ্রন্থ কুরআনে বলেছেন,

আমি দুনিয়াতেই তাঁদের ব্যাপারে সন্তুষ্ট আর আমি তাঁদের জান্নাতি হওয়ার ঘোষণা করছি।

মহান এ নেতার প্রশংসার বর্ণনায় কুরআনে আল্লাহ বলেছেন
আমি তাঁকে পুরো জগদ্বাসীর জন্য রহমত হিসেবে পাঠিয়েছি।
এখন নিশ্চয় বুঝতে পেরেছ এ মহান নেতা কে ছিলেন? হুম, তোমরা একদম ঠিক বুঝেছ। তিনি ছিলেন আমাদের প্রিয় নবি সা. আর সাহাবিরা ছিলেন কাফেলার পূণ্যবান সদস্য। এ তো ছিল সে-সকল মহামানবের পরিচয়পর্ব, এখন তাহলে মূল ঘটনায় যাওয়া যাক।

কাফেলার সর্দার কোনো এক প্রয়োজনে অদূরে কোথাও চলে গেলেন। সাহাবিরা নিজেদের আলাপচারিতায় বুঁদ হয়ে রইলেন। সে সময় তাঁরা হঠাৎ একটি পাখি দেখতে পান। মায়াবতী চাহনীর ছোট্ট একটি পাখি। এদিক-সেদিক ওড়াউড়িতে মেতে উঠেছে।

সোনামণিরা, জানো পরে কী হলো? সাহাবিরা পিছু নিয়ে পাখিটির বাসার কাছে পৌঁছে গেলেন। বাসায় দুর্বল দুটি পুঁচকে পাখির ছানা আতঙ্কিত হয়ে তাদের মায়ের পথ চেয়ে বসে আছে। এ দৃশ্য দেখে সাহাবিরা অনেক অবাক আর আনন্দিত হলেন। এরই মধ্যে হঠাৎ এক সাহাবি সামনে গিয়ে পাখির ছানা দুটো হাতে উঠিয়ে নিলেন। বাচ্চা দুটো হাতে আসতেই ঘাবড়ে গেল। ভয়ে কিচিরমিচির শব্দ করে বসে পড়ল। অনেক দুর্বল ছিল। ছোট্ট ছোট্ট পা, কচি ঠোঁট। তা ছাড়া অত্যধিক দুর্বলতার কারণে বলপ্রয়োগ করে অথবা ঠোঁট দিয়ে আঘাত করে নিজেদের ছাড়িয়ে নিতে চাইলেও পারছিল না।

কারণ, তারা মানুষের মজবুত আর শক্তিশালী হাতের মুষ্টিতে আবদ্ধ ছিল। এ এমন শক্তিশালী হাত, যে হাতের মুষ্টিবদ্ধ তলোয়ার কাফিরদের ওপর খোদার আজাবরূপে যখন আবির্ভূত হয়; তখন তাদের ঘাড় শরীর থেকে আলাদা করে দেয়। এ কচি বাচ্চাপাখি দুটো এমন শক্ত মুঠো থেকে কীভাবে মুক্তি পাবে বলো? না কোনো ক্ষতি করতে পারবে, আর না নিজেদের মুক্ত করে মুক্ত বাতাসে উড়তে পারবে!

বই: ছোটদের মহানবি সা.
লেখক: তাহির নাক্কাশ
অনুবাদ: মুফতি ফখরুল ইসলাম
ভাষা সম্পাদক: Mutiul Mursalin
প্রকাশক: রিশাহ্ পাবলিকেশন্স

01/10/2025

এরপর রাসুল সা.-এর দাওয়াহর বাস্তবতা ও তাঁর সত্যতা প্রমাণের জন্য হিরাক্লিয়াসের দরকার ছিল আরও কিছু সংশয় নিরসনের। তিনি তাই প্রশ্ন করেছিলেন, ‘সমাজের সবচেয়ে গরিব মানুষরা তাঁর অনুসরণ করে, নাকি ধনীরা? তাঁর ধর্ম গ্রহণ করে কেউ আবার প্রত্যাবর্তন করেছে কি? তাদের ও তোমাদের মধ্যকার যুদ্ধের ফলাফল কী? তাঁর অনুসারী দিন দিন বাড়ে, নাকি কমে?’

সুতরাং আমরা সত্য-সঠিক দাওয়াহর আসল ও অনুসরণযোগ্য বাস্তবতা বলতে যা বুঝি তা হলো, প্রকৃত মুসলিম সম্প্রদায়, যারা আল্লাহর কালাম নিরঙ্কুশভাবে পৌঁছে দেন এবং তারপর অকুতোভয় সৈনিকের মতো লড়াই করেন; যতক্ষণ-না ফিতনা নির্মূল হয় এবং আল্লাহর জন্য পূর্ণ দীন প্রতিষ্ঠা হয়। কারণ, এমন চিন্তার সঙ্গে মিলিয়ে বাস্তব পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করা গেলে, তবেই তা ‘বিভক্তি ও বিরোধ’-এর বিপরীত পরিবেশ হিসেবে সমাজে ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করবে।

নিরঙ্কুশভাবে আল্লাহর কালাম মানুষের দ্বারে পৌঁছাতে হবে, এ ব্যাপারে সরাসরি কুরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেন,
"আর তোমাদের থেকে যেন এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহ্বান করবে, ভালো কাজের আদেশ এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে; তারাই সফলকাম। আর তোমরা তাদের মতো হয়ো না, যাদের কাছে সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলি আসার পরও তারা বিভক্ত হয়ে গেছে এবং মতবিরোধ করেছে। মূলত তাদের জন্যই রয়েছে কঠোর আজাব।"

আল্লাহর বাণী পৌঁছে দেওয়া ও তা সমুন্নত করার তাগিদে প্রয়োজনে আল্লাহর পথে জিহাদও যে করতে হবে, সে ব্যাপারে আল্লাহ বলেন,
"হে ইমানদারগণ, তোমরা তা কেন বলো, যা তোমরা করো না? তোমরা যা করো না, তা বলা আল্লাহর কাছে বড়ই রাগের বিষয়। নিশ্চয় আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন, যারা তাঁর পথে সারিবদ্ধ হয়ে যুদ্ধ করে, যেন তারা সিসাঢালা প্রাচীর।"

বিশুদ্ধ বাস্তবতা অনুধাবন হিকমাহর মর্ম বাস্তবায়নের প্রথম ধাপ। আর বিশুদ্ধ বাস্তবতার সত্যিকার বাস্তবায়ন হলো, প্রকৃত মুসলিম দায়িদের একক জামাত তৈরি করা। সে হিসেবে এই মর্ম বাস্তবায়নে উপযোগী পরিবেশ তৈরি ও প্রকৃত মুসলিম জামাতের গঠন এবং হিকমাহধর্মী দাওয়াতি কর্মচিন্তার বাস্তবিক উদ্যোগের শুরু ও সূচনা একান্ত জরুরি বিষয়।

বই: দাওয়াহ ও হিকমাহ (পরিচয়, প্রকৃতি, ব্যবহার ও অপব্যবহার)
লেখক: রিফায়ি সুরুর
অনুবাদ: সাদিক ফারহান
ভাষা সম্পাদক: Mutiul Mursalin
প্রকাশক: রিশাহ্ পাবলিকেশন্স

30/09/2025

তারা বলবে, তোমাদের এই ইচ্ছা পূরণকারী জীবনব্যবস্থার জন্য আরেকটি নাম খুঁজে নাও না কেন?
তাহলে কেন আমরা আমাদের ব্যবস্থাকে গণতন্ত্র নাম দিতে বদ্ধপরিকর? ইসলাম নাম দিতে পারছি না কেন?

আমি বলছি না সেসব শাসনব্যবস্থাসমূহ, যা কথিত ভুয়া গণতন্ত্রের স্থলাভিষিক্ত হয়েছে তা গণতন্ত্রের চেয়ে উত্তম। অসম্ভব, হাজার বার অসম্ভব! সেই জুলুম যা হাজারো মানুষকে অন্তরিন করেছে, মানবতার ইতিহাসে জঘন্যতম বর্বরতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে, লোকদেখানো বিচার করে কারাগারে নির্যাতন করে হত্যা করেছে, তা তো নিখাদ অকল্যাণ। বরং আমি বলি, সমাধান গণতন্ত্র নয়, ইসলামই একমাত্র সমাধান।

কেউ যদি মনে করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ তুলনামূলক সংক্ষিপ্ত ও সহজ আর ইসলাম প্রতিষ্ঠার পথ দীর্ঘ তাকে বলব, মূলগতভাবে গণতন্ত্র ধ্বংসের ক্ষেত্রে ক্ষয়িষ্ণু। কারণ তার মূল ভিত্তির ভাঁজে ভাঁজে থাকে বক্রতা ও বিভ্রান্তি।

ইসলাম থাকবে অবশিষ্ট, কারণ তা আল্লাহর দীন। আল্লাহ তার হেফাজতের দায়িত্ব নিয়েছেন। আর তা-ই রক্ষা করতে সক্ষম মানবজাতিকে গুমরাহির অতলান্ত খাদ থেকে।

পরকথা, সংক্ষেপে এই হলো গণতন্ত্র। এই তার গুরুত্বপূর্ণ আদর্শ ও ভিত্তিসমূহ। যা ছাড়া গণতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ও অর্থহীন হয়ে পড়ে। হারিয়ে ফেলে যৌক্তিকতা। প্রচলন অনুসারেও এসব ছাড়া গণতন্ত্র হতে পারে না।

পূর্ববর্তী আলোচনার ভিত্তিতে কোনো সন্দেহ-সংশয় ছাড়াই আমরা বলতে পারি, গণতন্ত্র এক বিশাল তাগুত। দৃষ্টি ও অন্তর্দৃষ্টিহীন অন্ধ ছাড়া সবার নিকট এর সুস্পষ্ট কুফরি প্রকাশ্য। যে ব্যক্তি কোনো গ্রহণযোগ্য ওজর ছাড়া সদ্যবর্ণিত মূলনীতি ও আদর্শের আলোকে এর প্রতি বিশ্বাস রাখবে, আহ্বান করবে, স্বীকৃতি দেবে, সন্তুষ্ট হবে, পছন্দ করবে, সে অনুসারে কাজ করবে, সে কাফের ও মুরতাদ। যদিও নামে সে মুসলিম হয়। নিজেকে মুসলিম মনে করলেও। কারণ ইসলাম‌ আর এসব বৈশিষ্ট্য একত্র হতে পারে না।

তবে যে অর্থ ও ভিত্তি না বুঝে গণতন্ত্রের কথা বলে তাকে নির্দিষ্টভাবে কাফের বলা থেকে আমরা চুপ থাকি, যদিও তার কথাকে কুফরি কথাই বলি। তার নিকট গণতন্ত্রের কুফর স্পষ্ট হওয়া ও দীনের সাথে সাংঘর্ষিক হওয়ার শরয়ি সীমা পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত। কারণ, অনেকের কাছে গণতন্ত্র উদ্ভুত ও অস্পষ্ট পরিভাষা। জাহালতের ওজর চলে গিয়ে প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত হওয়া পর্যন্ত তাই ব্যক্তিকে মাজুর বা অক্ষম গণ্য করা সম্ভব।

একইভাবে যারা গণতন্ত্র থেকে আমাদের উল্লিখিত ভিত্তি ও আদর্শ উদ্দেশ্য নেবে না, বরং তার উদ্দেশ্য হবে শুরা, বাকস্বাধীনতা বা গঠনমূলক শব্দের ব্যবহার, অথবা জীবনের মৌলিক ও শরয়ি অধিকারসমূহ আদায়ের পথে বাধা অপসারণ—ইত্যাদি বাতিল ব্যাখ্যাসমূহ যা আসলে গণতন্ত্র ধারণ করে না, এ ধরনের ক্ষেত্রে তার ভুল হলেও তাকে তাকফির করা হবে না। তাকে তাকফির করা উচিতও নয়। ইনসাফের এটিই দাবি। দীনের উসুল ও মূলনীতিসমূহ তা-ই সাব্যস্ত করে। আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন।

বই: ইসলাম ও বহুজাতিক রাষ্ট্রব্যবস্থা
লেখক: আবদুল মুনয়িম মুস্তফা হালিমাহ
অনুবাদ: Ammarul Hoque
প্রকাশক: রিশাহ্ পাবলিকেশন্স

আর আমরা যখন বলি, আরবি ভাষায় ফিতনাকে যে অর্থে ব্যক্ত করা হয় সেই অর্থেই আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাকে ফিতনার মুখোমুখি করেন, ত...
28/09/2025

আর আমরা যখন বলি, আরবি ভাষায় ফিতনাকে যে অর্থে ব্যক্ত করা হয় সেই অর্থেই আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাকে ফিতনার মুখোমুখি করেন, তখন ব্যাপারটা আমাদেরকে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে মনোযোগী করে। আর সেটা হলো, কুরআন-হাদিসের ভাষ্যে ফিতনা ও তার আনুষাঙ্গিক বিষয় নিয়ে যা বর্ণনা এসেছে তা একটি আরেকটির সম্পূরক। কোনোটি বিশেষ অবস্থার জন্য প্রযোজ্য আর কোনোটি ব্যাপক পরিস্থিতির জন্য প্রযোজ্য।

আল্লাহ তাআলা কুরআন-সুন্নাহর ভাষ্যে ফিতনাকে যে উদ্দেশ্যে ব্যক্ত করেছেন, সেটা বোধগম্য করতে পারলে মানুষ ফিতনার সঠিক মোকাবিলা করতে পারবে। তাই আমরা সবসময় বলি, মানুষ কোনো একটি বিষয়ের যথাযথ মোকাবিলা করতে চাইলে সে যেন বিষয়টার সঠিক মর্ম অনুধাবন করে।

কারণ, সে যদি বিষয়টার সঠিক মর্ম ও হাকিকত সম্পর্কে অজ্ঞ থাকে, তাহলে বিষয়টার মোকাবিলায় সে ভুল পদক্ষেপ নেবে। হাকিকত ও মর্ম সম্পর্কে যতই অজ্ঞতা থাকবে, প্রতিকারেও ততই অজ্ঞতা প্রকাশ পাবে। কারণ, স্বভাবত বস্তুর হাকিকত বা মূল্যমান না জানলে মানুষ তার মূল্য নির্ধারণে ভুল করে।

বই: ফিতনার মর্মকথা
লেখক: শাইখ আবদুল আজিজ তারিফি
অনুবাদ: Mizanur Rahman Ibn Ali
ভাষা সম্পাদক: Mutiul Mursalin
প্রকাশক: রিশাহ্ পাবলিকেশন্স

হিকমাহর সঙ্গে সত্য ও শরিয়তের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে বিধায় অনুচিত বিষয়ে চিন্তাশক্তিকে কাজে লাগানো এবং শরিয়াহ-বহির্ভূত কোনো ব...
25/09/2025

হিকমাহর সঙ্গে সত্য ও শরিয়তের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে বিধায় অনুচিত বিষয়ে চিন্তাশক্তিকে কাজে লাগানো এবং শরিয়াহ-বহির্ভূত কোনো বিষয়ের মাধ্যমে হিকমাহর পরিচয় প্রদান মূলত হিকমার অপ-সংজ্ঞায়ন বই কিছু নয়।

ইমাম বাগবি রাহ. রচিত কুল্লিয়াত গ্রন্থে উদ্ধৃত হয়েছে, হিকমাহর অপব্যবহার হলো—ব্যক্তির চিন্তাশক্তিকে ‘মুতাশাবিহ’ আয়াতের মতো ব্যক্তিগত গবেষণায় কাজে লাগানো, যা একেবারেই অনুচিত। মুতাশাবিহ আয়াতের ব্যাখা যেমন নিজ নিজ চিন্তা অনুযায়ী দেয়া হয় সেরূপ ব্যক্তিগত চিন্তাকে এভাবে বৈধ করার সুযোগ নেই। অনুরূপ বৈধ কাজেও শরিয়াহ-বিবর্জিত পন্থায় ব্যক্তিগত চিন্তাশক্তিকে কাজে লাগানো হিকমাহর অপব্যবহার।

উপরের আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারি, প্রথম বিবেচনায়—সত্য ও শরিয়তের মধ্যকার বিশেষ সম্পর্কই হলো হিকমাহর মর্মার্থ। কোনো কথা, কাজ বা চিন্তা, তা বাহ্যত যতই তাত্ত্বিক ও সত্য মনে হোক না কেনো—ইমান ও ইসলামের পরিভাষায় তা হিকমাহ হতে পারে না। সত্যিকার হিকমাহ তা-ই, যাতে আছে সত্য, আছে শাশ্বত দীন, আছে শরিয়তের সুস্পষ্ট উপস্থিতি।

বই: দাওয়াহ ও হিকমাহ (পরিচয়, প্রকৃতি, ব্যবহার ও অপব্যবহার)
লেখক: রিফায়ি সুরুর
অনুবাদ: সাদিক ফারহান
ভাষা সম্পাদক: Mutiul Mursalin
প্রকাশক: রিশাহ্ পাবলিকেশন্স

আকাবির-আসলাফদের যোগ্যতাসম্পন্ন হওয়ার মূল রহস্য আমাদের পূর্ববর্তী শ্রদ্ধেয় আলিমরা অত্যধিক যোগ্যতাসম্পন্ন হওয়ার কারণ হলো, ...
23/09/2025

আকাবির-আসলাফদের যোগ্যতাসম্পন্ন হওয়ার মূল রহস্য

আমাদের পূর্ববর্তী শ্রদ্ধেয় আলিমরা অত্যধিক যোগ্যতাসম্পন্ন হওয়ার কারণ হলো, তাঁরা উপরিউক্ত নিয়মেই নিজেদের জ্ঞানসাধনার জীবন অতিবাহিত করতেন।
আজকেও যদি কাজের বাস্তবতা ও যথার্থতা সৃষ্টি করতে হয়, তাহলে জাগ্রত বিবেকবোধ নিয়ে নিজেদের পূর্বসূরি ও আসলাফদের জীবনীর আয়নায় নিজেদের মুখ দেখতে হবে এবং তাঁদের ছাত্রকালের বিভিন্ন বিধান ও প্রতিবন্ধকতা বুঝে নিয়ে সেসবের ওপর আমল করতে হবে। তবেই তুমি বাস্তব ইলমের স্বাদ ও সৌভাগ্য অর্জন করবে।

এবং সেসব কাজ বাস্তবায়ন করবে, যা নিয়ে ইতিহাস, জাতি ও মিল্লাত গর্ববোধ করবে। তুমি আসলাফের পথ-পদ্ধতিতে জীবন পরিচালিত করে সফলতা লাভ করতে পারবে।

বই: সফল ছাত্র জীবন
লেখক: সাইয়েদ মুহাম্মাদ রিয়াজ নদভী
অনুবাদক: মুহিবুল্লাহ খন্দকার

গণতন্ত্রের ভিত্তি ও মূলনীতিসমূহের ব্যবচ্ছেদগণতন্ত্রের দিকে আহ্বানকারীরা শারীরিকভাবে মুসলমানদের ভূখণ্ডে বসবাস করলেও মন-মা...
22/09/2025

গণতন্ত্রের ভিত্তি ও মূলনীতিসমূহের ব্যবচ্ছেদ

গণতন্ত্রের দিকে আহ্বানকারীরা শারীরিকভাবে মুসলমানদের ভূখণ্ডে বসবাস করলেও মন-মানসিকতা ও ধ্যান-ধারণায় কুফরি পশ্চিমা বিশ্বে বসবাস করে। তারা আমাদের সামনে নানা প্রকারের ব্যাখ্যা ও ধর্মের সাথে গণতন্ত্রের সংশ্লিষ্টতা প্রকাশের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে আঞ্চলিক বা ধর্মীয় কিংবা জাতীয় পোশাক পরাতে যত চেষ্টাই করুক—তারা গণতন্ত্রের পরিভাষার ওপর এমন অনেক ব্যাখ্যা চাপিয়ে দেয় যা বহন করার যোগ্যতা বা সামর্থ্য তার নেই।

কেননা, যে ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হোক, যেখানেই প্রতিষ্ঠা লাভ করুক, গণতন্ত্রের এমন কিছু ভিত্তি ও মূলনীতি রয়েছে, যার ওপর তা প্রতিষ্ঠিত এবং সেগুলো তার সাথে সব সময় পাওয়া যায়। সেগুলো এতই দৃঢ় যে, কোনোভাবেই পরিবর্তন করা বা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। সেগুলোর অনুপস্থিতিতে গণতন্ত্রকে তার প্রতিষ্ঠাতাদের ভাষায় গণতন্ত্রই বলা যায় না।

নানা ব্যাখ্যা ও প্রকারভেদের পার্থক্য সত্ত্বেও গণতন্ত্র সুনির্দিষ্ট কিছু ভিত্তি ও মূলনীতির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। নিম্নোক্ত পয়েন্টগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মূলনীতির আলোচনা সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো।

বই: ইসলাম ও বহুজাতিক রাষ্ট্রব্যবস্থা
লেখক: আবদুল মুনয়িম মুস্তফা হালিমাহ
অনুবাদ: Ammarul Hoque
প্রকাশক: রিশাহ্ পাবলিকেশন্স

Address

Dhaka
1100

Telephone

+8801712121119

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when রিশাহ্ পাবলিকেশন্স posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to রিশাহ্ পাবলিকেশন্স:

Share

Category