
18/10/2024
সাকিব আল হাসান বাংলাদেশ ক্রিকেটের পোষ্টার বয়। একজন জীবন্ত কিংবদন্তি পৃথিবীর ক্রিকেট ইতিহাসে জলজল করে জ্বলতে থাকা এক তারার নাম। এই বিশ্বে যতদিন ক্রিকেট থাকবে ততদিন কোন না কোনভাবে রেকর্ড বইয়ের পাতায় পাতায় বারবার ফিরে আসবে সাকিব আল হাসান এবং সেই সাথে তার নামের পাশে ভেসে উঠবে লালসবুজের পতাকা।আপনি তাকে ঘৃণা করেন আর ভালোবাসেন বাংলাদেশী হিসাবে সে আপনাকে বিশ্বের কাছে গর্বিত করবেই।
সাকিব আল হাসান,২০০৬ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সের লিকলিকে এক যুবক বাংলাদেশের হয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামেন। কে ভেবেছিল এই মানুষটাই বিশ্ব ক্রিকেটে দাপটের সাথে বাংলাদেশে প্রতিনিধিত্ব করবেন। একসময় আমরা শুধু জিততাম কেনিয়া আর জিম্বাবুয়ের সাথে সেখানে থেকে আস্তে আস্তে আমরা নিয়মিত বড় দল গুলোর বিপক্ষে জিততে শুরু করি। দেশের ক্রিকেট আজকে যেখানে সেখানে সাকিব আল হাসানের যেমন পারফরমেন্সর অবদান আছে তেমন আছে মনস্তাত্ত্বিক অবদান। তিনি দেশের হয়ে জিতেছেন জিততে শিখিয়েছেন।সাকিব আল হাসান ক্রিকেটের এমন এক বিরল প্রতিভা যা শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্ব ক্রিকেটেই হাজার বছরেও এমন প্রতিভা আর জন্ম নিবে না।
ক্রিকেটীয় পরিসংখ্যানে ও কিছু পুরুষ্কারে সাকিব আল হাসান যে কত বড় নাম তা একটু দেখে নেই :
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে :
টেষ্টে ৭০ ম্যাচে ৪৬০০ রান উইকেট ২৪২
ওডিআই ২৪৭ ম্যাচে ৭৫৭০ রান উইকেট ৩১৭
টি২০, ১২৯ ম্যাচে ২৫৫১ রান উইকেট ১৪৯
কিছু রেকর্ড যা সাকিব আল হাসানকে করেছে অনন্য।
১. একই সাথে ১৪০০০ হাজারের বেশি রান এবং ৭০০ উইকেট। যা পৃথিবীর ইতিহাসে আর কখনো কেউ করতে পারবে কি সন্দেহ আছে।
২.ক্রিকেট জন্মের পর থেকে এখন পর্যন্ত রানের(১৪৭৩০) দিক থেকে বিশ্বের ৪৪তম, এবং বলার হিসাবে ৭১৭ উইকেট নিয়ে ১৫তম।
৩.বাংলাদেশ দেশের হয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান(১৪৭৩০) সংগ্রাহক প্রথমে আছেন মুশফিকুর রহমান (১৫২৫৩)রান, দ্বিতীয় তামিম ইকবাল খান (১৫১৯২) রান। এবং একই সাথে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী। আপনি চিন্তা করতে পারেন একজন ক্রিকেটার একই সাথে দেশের হয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এবং সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী।
৪.মোষ্ট প্লেয়ার অব দি সিরিজ টেস্ট +অডিআই+টি২০
মিলিয়ে তৃতীয় মোট ১৭ বার পেয়েছেন এই পুরুষ্কার। তার আগে আছেন কিং ভিরাট কোহলি ২১ বার, এবং ক্রিকেট ইশ্বর টেন্ডুলকার ২০ বার।
৫.তিনি বিশ্বের দ্রুততম, সর্বকনিষ্ঠ এবং সপ্তম ক্রিকেটার যিনি ওয়ানডেতে ৪০০০ রান এবং ২০০ উইকেট অর্জন করেছেন।
৬.সাকিব আল হাসান ক্রিকেট ইতিহাসের একমাত্র খেলোয়াড় যিনি প্রতিটি ফরম্যাটেই কমপক্ষে ৫ বার প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন।
পুরুষ্কার এবং পদক :
১.বাংলাদেশের অনেক বার বর্ষসেরা ক্রিয়াবিদের পুরুষ্কার পেয়েছেন।
২.করোনা কালীন মহামারীতে মানবতার সেবায় অবদানের জন্য মানবাধিকার ব্যূরো অব হিউম্যান রাইটস অব বাংলাদেশ।
৩.২০২৩ সালের মে মাসে আইসিসি কর্তৃক প্লেয়ার অব দ্যা মান্থ নির্বাচিত হন।
৪.ইংল্যান্ডের ক্রিকেট সাময়িকী উইজডেন (যাকে বাইবেল অব ক্রিকেট বলা হয়) কর্তৃক ২০০৯ সালে সাকিব আল হাসান বর্ষসেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হন।
৫.২০২০ সালে উইজডেন সাময়িকী আবারও সাকিব আল হাসানকে একুশ শতকের ওয়ানডেতে দ্বিতীয় ও টেস্টে ষষ্ঠ মূল্যবান বা সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত করেন সাকিব আল হাসানকে।
৬.তিনি ২০১৩ সাল থেকে ইউনিসেফ এর ন্যাশনাল ব্রান্ড আমব্যাসেডর হিসাবে আছেন।
৭.সাকিব আল হাসান কলকাতায় ২০১২ সালে সেরা বাঙ্গালী পুরুষ্কার পান।
সাকিবের ক্রিকেটের অর্জনের সংখ্যা লিখতে গেলে অনেক সময় এবং কাগজের প্রয়োজন।সেগুলো আমরা সবাই জানি এখানে বেশি আর লিখলাম না। এমন শত শত ক্রিকেটীয় পরিসংখ্যানে বা রেকর্ডের বই সাকিব আল হাসান অমর হয়ে থাকবেন। ক্রিকেটের সাকিব বাংলাদেশের ক্রিকেটের সাকিব যিনি নিজে ড্রাইভিং স্লটে থেকে জিতিয়েছেন সেই সাথে অন্য সব খেলোয়াড় এবং মানুষের মধ্যে জিতার স্পৃহা তৈরি করেছেন।তিনি থাকবেন মানুষের হৃদয়ে তিনি থাকবেন বাংলার ক্রিকেটের নবাব হয়ে।
সমালোচনা :
তিনি মানুষ কোন ফেরেশতা নন, তারও কিছু ভুল আছে। এত এত অর্জন আর সাফল্য যার নামের পাশে সেই নামের পাশে কিছুটা সমালোচনা হয়ত চলে আসবেই।
১.রাজনীতিতে যোগদান:রাজনীতি করা একজন নাগরিকের অধিকার আছে। রাষ্ট্র তার নাগরিকের রাজনৈতিক অধিকার বা নিজস্ব মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে,এটাই রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কিন্তু আমি মনে করি খেলোয়াড় থাকা অবস্থায় তার রাজনীতিতে যোগদান করা একটা ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।রাজনৈতিক পরিচয় যেহেতু আমাদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে দেয় সেহেতু খেলোয়াড় থাকা অবস্থায় তিনি সার্বজনীন থাকলে সেটা ভালো হত।
২.শেয়ার মার্কেট :সাকিব আল হাসান ব্যক্তিগতভাবে নিজে কখনো শেয়ার মার্কেটে ট্রেডিং করেননি।তবে তার ব্যবসায়িক অংশীদার এই কাজের সাথে জড়িত স্বাভাবিক কারণেই তার নামটাও এর সাথে এসে যায়। তবে দেশের ল' এন্ড অর্ডারের প্রতি সম্মান দেখিয়ে সেখানে তার প্রতিষ্ঠান অলরেডি ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা দিয়েছে।
৩.বেটিং সাইট:প্রথমত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে এমন কোন সুস্পষ্ট আইন ছিল না, এই বেটিং সাইট নিয়ে তারপর বোর্ড থেকে নিষেধ করার সাথে সাথে তিনি চুক্তি বাতিল কারেন। কিন্তু এই ব্যাপারে নৈতিক প্রশ্ন আসে সাকিব আল হাসান এর মত একজন মানুষ এমন কিছু করতে পারেন কি না, আমার স্পষ্ট উত্তর তিনি পারেন না। তবে আমরা যখন ইন্টারন্যাশনাল খেলা দেখি তখন অনেক বেটিং সাইটের বিজ্ঞাপন আমাদের সামনে আসে এবং তারা অনেক টিমের স্পন্সরও। সো স্পোর্টস এরিনাতে বেটিং সাইটগুলো খুব কমন।
৪.ম্যাচ পাতানো :ম্যাচ পাতানো এজেন্ট আগারওয়াল তার সাথে যোগাযোগ করে আইসিসি এর নিয়ম অনুযায়ী তিনি সেটা আইসিসি কে জানাননি যেটা অপরাধ এবং তিনি তার শাস্তি স্বরূপ ১.৫ বছর নিষিদ্ধ ছিলেন। তবে অনেকে বলেন সাকিব আল হাসান ম্যাচ পাতানোর সাথে জড়িত ছিলেন। তবে এই দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন কারণ হল আইসিসি কোন পাড়ার টং দোকানের মত সংস্থা নয় যে কোন খেলোয়াড়ের যোগ সাজোস পাওয়ার পর সেই খেলোয়াড় যদি ম্যাচ পাতিয়ে থাকে সেটা বের করতে পারবে না।আমরা জানি ডেভিড ওয়ার্নার, আডাম স্মিথ বা মোহাম্মদ আমিরের ম্যাচ পাতানোর অপরাধ আইসিসি কিভাবে বের করেছিল। সো এখানে এই তথ্য গোপন করাটাই তার অপরাধ তিনি কোন ম্যাচ পাতাননি।
৫.কাঁকড়া ফার্ম:কাঁকড় ফার্মের ব্যবসায়িদের টাকা না দেওয়ার কথা আসছে, একটা ব্যবসা অনেক টার্মস এন্ড কন্ডিশনের ভিতর দিয়ে যায়। এখানে আমরা হয়ত এক পক্ষের বক্তব্য শুনেছি তাও স্পষ্ট নয়। কেন টাকা দেওয়া হয়নি এর পিছনে কারণ কি তা আমরা জানি না।তবে তবে দেশে আইন আছে আদালত আছে যারা টাকা পায়নি তারা আইনের সাহায্য নিতে পারেন। তবে শুধু এক পক্ষের কথা শুনেই সাকিব আল হাসানকে মিডিয়া ট্রায়ালে দোষী করা সমীচীন নয়।
৬.বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন,২০২৪ ও তার ভূমিকা :বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, যেটা শুরুতে শুধুমাত্র কোটা সংস্কার এর একটা আন্দোলন ছিল। যেটা পরে গোপন অংশগ্রহন এবং অলিখিত রাজনৈতিক আন্দোলনে রুপ নেয় এবং উদ্ভুত নানা পরিস্থিতিতে যেটা সর্বশেষ গনঅভ্যুত্থানে রুপ নেয়। এবং সরকার পতন হয়। যেখানে স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ ছাত্ররা মারখাচ্ছিল তখন সাকিব আল হাসানের মত আইকনিক মানুষের কাছ থেকে সবাই একটা সহানুভূতিমূলক স্ট্যাটাস আশা করেছিল।তিনি সেখানে সাধারণ ছাত্রদের সাথে অংশ গ্রহণ করতে পারেননি।এটা আমাদের আশাহত করেছে কিন্তু তিনি চুপ ছিলেন তবে ভালো দিক হল ছাত্রদের বিপক্ষেও তিনি কোন কথা বলেননি।এবং পরবর্তীতে তিনি এই আন্দোলন এবং সাধারণ ছাত্রদের পাশে থাকতে না পেরে দুঃখ প্রকাশ করেছেন যেটা মানুষ হিসাবে সাকিব আল হাসান তার মানবিক গুনেরই বহিঃপ্রকাশ করেছেন। যে মানুষটা কোন অপরাধ করে নাই এবং এই আন্দোলনে অংশগ্রহন মুলুক কোন কর্মকান্ড করতে না পারার জন্য দু:খ প্রকাশ করেছেন, এই অবস্থায় তাকে গ্রহণ না করাটা আমাদের চরমপন্থী অমানবিক মানসিকতার প্রকাশ ঘটায়।
মানবসেবায় সাকিব আল হাসান :
১.দি সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশন :সাকিব আল হাসান তার এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে অনেক মানবসেবার কাজ করেছেন। করোনা কালীন সময় থেকে থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি ক্রান্তিলগ্নে তিনি দেশের মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন। করোনা কালীন সময়ে সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশন এবং মাস্তুল ফাউন্ডেশন মিলে এ্যামবুলেন্স সার্ভিস এবং লাশ দাফনের কাজ করেছে।এইত কিছু দিন আগেও বঙ্গবাজার মার্কেট পুড়ে যাওয়াতে তিনি তাৎক্ষনিক অল্প হলেও অর্থ সহায়তা দিয়ে অন্যদের আহবান জানিয়ে ছিলেন এগিয়ে আসার জন্য। সর্বশেষ বন্য পরিস্থিতিতেও সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশন ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছে। তার নিজের এলাকা মাগুরাতে মসজিদ বানিয়েছেন এতিম বাচ্চাদের মাঝে অর্থ সহায়তা দিয়েছেন।
গতবছর সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশন একটি ক্যান্সার হাসপিটাল তৈরি করার প্রকল্প উদ্বোধন করেন।যেখানে সহজে ও সুলভ মূল্যে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার অঙ্গীকার করা হয়।
ক্রিকেটার মোশাররফ রুবেলের চিকিৎসার জন্য ১০লক্ষ টাকা অর্থ সহায়তা দেয় সাকিবের কোম্পানি মোনার্ক মার্ট৷চিটাগংয়ে ম্যাচ জিতে তার পুরুষ্কারের তিন লক্ষ টাকা তিনি গ্রাউন্ডস ম্যানদের মাঝে বন্টন করে দেন। সাকিব আল হাসান এমন আরো অসংখ্য মানবতার সেবায় কাজ করেছেন যা খুব বেশি প্রকাশ পায়নি কারণ তিনি মানব সেবাটা গোপনে করতে ভালবাসেন।
২.মাস্কো সাকিব ক্রিকেট একাডেমি :মাস্কো এবং সাকিব আল হাসান মিলে দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক মানের এই একাডেমি করেন। যেখানে অলরেডি অনেক তরুণ ক্রিকেটার উন্নত সু্যোগ-সুবিধা পেয়ে অনেক উপকৃত হয়েছেন।ভবিষ্যতে সাকিবের ক্রিকেট একাডেমি আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেটার তৈরিতে এবং দেশের ক্রিকেটের মান উন্নয়নে সহায়তা করবে।
মানবসেবা ও ক্রিকেটের উন্নয়নে সাকিব আল হাসানের অনেক অবদান আছে, আমরা হয়ত ওয়ান আই ব্লাইন্ড ব্যক্তির মত তার এই সমস্ত মানবিক গুন বা কাজের কথা এড়িয়ে গেছি।
শেষ কথা:
যখন সাকিব শ্রীলঙ্কায় মাঠের বাইরে কলার উচিয়ে আম্পায়ারের সাথে বুক ফুলিয়ে নিজের দেশের অধিকার আর বিজয়ের জন্য লড়াই করলেন তখন আমাদের বুক অহংকার আর গর্বে ভরে গিয়েছিল। তিনি দেশ আর দেশের পতাকাকেই উচু করে তুলে ধরে ছিলেন।এম এস ধনী যখন ফিজ কে ধাক্কা দিল তারপর সাকিব ধোনীর উইকেট তুলে নিয়ে যে ছিড়ে ফুঁড়ে উদযাপন করলেন তাতে আমরাই সবাই সাহসের সাথে চিৎকার করেছিলাম আমাদের ধাক্কা দেওয়া এত সহজ নয়, আমাদের ধাক্কা দিলে আমিও আঘাত করব।আবার যখন তিনি ক্রিজের মাঝে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানের খেলোয়াড়ের সাথে গলার রগ ফুলিয়ে তার অপমান জনক কথার কড়া জবাব দেন তখনও তিনি আমাদের সাহস দেন বাংলাদেশী হিসাবে মর্যাদার সাথে সারা পৃথিবীর সাথে বুক চিতিয়ে চলার উদাহরণ তৈরি করেন। পৃথিবীর নানা প্রান্তে সাকিব খেলেছেন, কাউন্টি থেকে ক্যরীবিয়ন লীগ, আইপিএল থেকে বিগ ব্যাশ। ক্যরীবিয়ন লিগে যখন ৬ রানে ৬ উইকেট বা বিগ ব্যাশে নিজের প্রথম ম্যাচে যখন ৯৫ রান করেন অথবা বলার হিসাবে ছক্কা খাওয়ার পরের বলেই উইকেট তুলে নেওয়ার পর যতবার গ্যালারী থেকে সাকিব সাকিব স্লোগান এ উত্তাল হয় বা দর্শকরা সাকিবকে করতালি দিয়ে অভিনন্দন জানান তখন ব্যক্তি সাকিবের পাশাপাশি তার দেশের নাম বাংলাদেশও উজ্জ্বলিত হয় পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ছড়িয়ে যায় সাকিব আর বাংলাদেশের নাম। সাউথ এশিয়ার বাইরে খুব বেশি মানুষ বাংলাদেশকে চিনে না তাদেরকে বাংলাদেশ সম্পর্কে পরিচিত করতে গেলেও কিছু উদাহরণের মাঝে আপনিও হয়ত গর্ব করে সাকিব আল হাসানের নাম নিবেন বলবেন তিনিও বাংলাদেশী।
আমরা হয়ত এমন এক নক্ষত্র চেয়েছিলাম যার কোন খুত থাকবে না। কিন্তু ঐ যে চাঁদেরও কলঙ্ক থাকে সোনাতেও খাদ থাকে। তাই হয়ত আমরা কিছুটা আহত হয়েছি। আমাদের সামনে আন্তর্জাতিকভাবে তেমন কেউ নেই যাকে আমরা আইডল হিসাবে নিতে পারি আমরা হয়ত আশা করেছিলাম তিনি এমন একজন হবেন, যার কোন খুত থাকবে তিনি হবেন সর্ব বাঙালির আবেগ ভালোবাসা আর গর্বের নাম।তবুও তিনি যতটুকু করেছেন দেশকে যত যশ নাম পরিচিতি এনে দিয়েছেন এর জন্যই আমরা গর্ব করতে পারি।
এই সাকিব আল হাসান আমাদের হাজারো সুন্দর এবং গর্বের মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন।সে আমাদের কাছে ত খুব বেশি কিছু চাই নাই। শুধু তার জীবনের শেষ ম্যাচটা দেশের মাটিতে খেলতে চেয়েছেন।এই চাওয়াটা কি খুব বেশি নয়। দেশ বা সরকার চাইলেই খুব সহজেই এটা আয়োজন করতে পারে। এই মানুষটার এই শেষ চাওয়া কি আমরা দেশবাসী পূরণ করতে পারি না। আমি মনে করি একটি পরিচ্ছন্ন এবং সুন্দর দেশের উদাহরণ তৈরি করতে হলে রাষ্ট্রের দায়িত্ব জাতির এই একজন শ্রেষ্ঠ সন্তান কে সম্মানের সহিত সুন্দর বিদায়ের আয়োজন করা।
রিপন হোসাইন রেজা
প্রাক্তন শিক্ষার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
একজন সাকিব ভক্ত হিসাবে তার জন্য এই লেখা আমার তরফ থেকে একটা ছোট উপহার।