15/11/2025
অসুস্থ বাবাকে রেখে ব্যবসার জন্য ঢাকায় এসে হলেন ২৬ টু*ক*রো, কে হ ত্যা করলো আশরাফুলকে!
তিন দিন আগে অসুস্থ বাবাকে হাসপাতালে রেখে প্রবাসী বন্ধু জরেজ মিয়ার সঙ্গে ঢাকা যান কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল হক। এর পর থেকে স্ত্রী লাকী বেগম আশরাফুলকে ফোন করলে তাঁর বন্ধু জরেজ ফোন রিসিভ করতেন। আশরাফুলের খোঁজ করলে তিনি বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত আছেন বলে জানাতেন। স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে ভাইয়ের সঙ্গে বদরগঞ্জ থানায় যান লাকী বেগম। সেখানে জানতে পারেন, ঢাকায় স্বামী আশরাফুল হকের খ*ণ্ডি*ত ম*র*দেহ উদ্ধার হয়েছে। শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। বারবার মূ*র্ছা যান।
আশরাফুল হকের বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামে।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার হাইকোর্ট এলাকায় নীল রঙের ড্রামের ভেতরে আশরাফুলের ২৬ টুক*রা ম*র*দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
খু*ন হওয়া আশরাফুল হকের শ্যালক আব্দুল মজিদ বদরগঞ্জ থানার সামনে জানান, আশরাফুল তাঁর বাবাকে রংপুরে একটি হাসপাতালে রেখে মঙ্গলবার মালয়েশিয়াফেরত বন্ধু জরেজের সঙ্গে ঢাকায় যান। গতকাল বুধবার বিকেল ৫টায় আশরাফুল তাঁর স্ত্রী লাকী বেগমের সঙ্গে শেষ কথা বলেন। এরপর আর যোগাযোগ হয়নি। তাই তাঁরা আজ বিকেলে বদরগঞ্জ থানায় জিডি করতে আসেন। এখানে এসে জানতে পারেন, আশরাফুল হককে ঢাকায় খু*ন করা হয়।
আব্দুল মজিদ বলেন, ‘গতকাল বিকেলে আমার বোনের সঙ্গে কথা হয় আশরাফুলের। তখন তিনি বলেছেন, ‘‘বাবা হাসপাতালে, রিলিজ দেবে, টাকাপয়সা দিছি। বাবাক নিয়া আইসো।’’ এটাই শেষ কথা। এরপর থাকি আশরাফুলকে কল দিলে তাঁর বন্ধু জরেজ ধরে, আর বলে, “আশরাফুল ব্যস্ত আছে, কালেকশনে গেছে।”’
আব্দুল মজিদ বলেন, ‘ দুপুরে ফোন দিলে ফের জরেজ ফোন ধরে। কিন্তু আশরাফুলকে দেয় না। এ জন্য বোন জরেজের স্ত্রীর কাছে যান। জরেজের স্ত্রী তাঁকে ফোন দিলে আশরাফুলের ফোন ধরে না কেন জানতে চাইলে জরেজ বলে, আশরাফুলের ফোন ড্রেনে কুড়ায় পাইছে। এরপর বোনসহ থানায় আসি। এসে শুনি তাঁকে খু*ন করছে। তাঁর লা*শ উদ্ধার হইছে ঢাকায়। এ কথা শোনার পর আমার বোন তো পাগল হয়ে গেছে। আমরা হ*ত্যা*কারীর বিচার চাই।’
এ প্রসঙ্গে বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, ‘নি*হ*ত আশরাফুল হকের স্ত্রী ও স্বজনেরা থানায় এসেছিল। তাদের কাছ থেকে আমরা বিভিন্ন প্রকার তথ্য নিয়েছি। সেগুলো দিয়ে ওসি রমনা, শাহবাগকে সহযোগিতা করছি। এ ঘটনায় ঢাকাতে মামলা হচ্ছে। নি*হ"তের পরিবার সেখানে যাচ্ছে।’
আশরাফুল হক হিলি থেকে কাঁচামাল কিনে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় পাইকারি বিক্রি করতেন। তাঁর বন্ধু জরেজ মিয়া শ্যামপুর এলাকার বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন তাঁর পরিবার। তিনি মালয়েশিয়া ছিলেন। দেশে আশার পর আশরাফুল হকের সঙ্গে ঘুরতেন।
তার বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, আশরাফুল সহজসরল প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। গ্রামের বিভিন্ন গরীব-অসহায় মানুষদের পাশে থাকার পাশাপাশি সামাজিক ও ধর্মীয় কাজে তিনি সবসময় সহযোগিতা করতেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ আশরাফুল হকের পরিচিত কয়েকজন জানান, গত মঙ্গলবার দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে জমির রেজিস্ট্রি করতে ওয়ারিশ সনদ সংগ্রহ করেন। ওই দিন সন্ধ্যায় তিনি স্থানীয় মসজিদে মাগরিবের নামাজও আদায় করেন। এরপর রাতে তার অসুস্থ বাবাকে হাসপাতালে রেখে বন্ধু জরেজ মিয়ার সঙ্গে ঢাকায় যান।
এদিকে, নি*হ*ত আশরাফুল হকের মৃ*ত্যু*তে বদরগঞ্জের গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজনরা বলছেন, কারা কেন তাকে এমন নি*ষ্ঠু*র*ভাবে হ"ত্যা করেছে, তা তাদের বোধগম্য নয়।
Source:drbnews