14/08/2025
এত্ত সুন্দর জায়গা, সুবহানাল্লাহ 🥺❤️
যেটা চোখে না দেখলে এর সৌন্দর্য উপলব্ধি করা কঠিন 🥺
কিছু নরপিশাচরা এটা ধ্বংস করে দিতেছে, হায়রে অভাগা দেশ আমার 😔
সাদাপাথর কথন... 😞
গত বছর প্রকৃতির চরম সান্নিধ্যে গিয়েছিলাম সিলেটের সেই “সাদা পাথর”-এ, আজ যেন হৃদয়ের অন্তঃস্থলে অমানিশার আঁধার! ‘দুঃসময়ের কপাল-চুম্বন’-এ আমি এখন প্রকৃতি-লুণ্ঠিত, নদী নিঃস্ব, মানুষের লোভে অপমানিত এক চরিত্র। মনে হচ্ছে, আমরা সবাই যেন আধুনিক কবি বঙ্কিমচন্দ্রের “বিষণ্ন বাংলা” কিংবা জীবনানন্দের “রূপসী বাংলার” শেষজীবনের পুষ্পবিহীন বাগান সমৃদ্ধি ছিল, এখন শূন্যতা।
আজকের সাদা পাথরহীন ভোলাগঞ্জ ভাবিয়ে তোলে, কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায়,
“দূর দুর দুর দুর কান্দে কে রে জগৎজোড়া..
জননীর কোলে সন্তানের কান্না,
হে মা গো! হায় গেছো ছিঁড়ে আঁচলপাতা।”
ভোলাগঞ্জ আজ এক অকূল পাথার, সেই বিদ্রোহী কবির মতো লিখতে ইচ্ছা করে,
“আমি বিদ্রোহী ভোলাগঞ্জ, পাথরের লাশ নিয়ে
আজ প্রভাত ফেরি করি পদ্মপাতায় জল হয়ে!”
কান্নার গভীরতায় যেন তারাশঙ্করের “হাঁসুলীবাঁকের উপকথা”-য় হারানো গ্রাম, অথবা মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের “পদ্মা নদীর মাঝি”-এর ভাঙ্গাগড়া পৃথিবীর প্রতিচ্ছবি; নদীর বুক থেকে পাথর হারিয়ে আমরা হয়েছি “মানুষ” নামক মহামন্দার বোঝা নিজের নদী, নিজস্ব প্রকৃতি, নিজের ভবিষ্যত কেউ রেখে দিল না!
পৃথিবীর কবিদের প্রতি ন্যায় অবিচার; রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার মতো,
“অজস্র ফসলের নীচে
পড়ে আছে বাতিল বীজ
কেউ তাকায় না।”
ঠিক তেমনি আজকের প্রশাসনিক উদ্বাস্তু প্রকৃতি নাটকের মঞ্চে রাখতে গেলে হবে নাট্যকার স্যামুয়েল বেকেটের “ওয়েটিং ফর গডো”। আমরা সদা অপেক্ষার প্রহরে আর কবে প্রশাসনের কঠিন পদক্ষেপ, কবে প্রকৃতি হাসবে!
হায়, লোভের জ্বরে আমরা শচীন কর্ত্তনের “প্রাণের বেদন” হয়ে গেছি,
“এই পলাশবনের ঢলে/ পাথরের প্রাণ ঝরেনা!”
এ যেন পুষ্টিময় মাটিতে আগাছার দৌরাত্ম্য, প্রেমেন্দ্র মিত্রের “টেলিফোন” কবিতার মতো পরিবেশের নির্জনতায় “হ্যালো হ্যালো” কিন্তু কেউ শুনছে না, কেউ সাড়া দেয় না।
তবে বিদ্রোহ করব—কাজী নজরুলের সুরে, জীবনানন্দের যন্ত্রণায়, রবীন্দ্রনাথের সুবর্ণ কল্পনায়, বরং শঙ্খ ঘোষের বিদ্রুপে দাঁড়িয়ে,
“করিনি কখনো তোমাদের যে অপমান,
তবে কিসের দায়ে পাথরের এই শূন্যতা?”
এখনই সময় প্রতিবাদের, সময় আমার-আপনার শিল্পিত দাবিতে মুখরিত হবার
“তুলুন শ্লোগান, তুলুন কবিতা, তুলুন প্রতিবাদের পুরনো আধুলি
ভবিষ্যতের নদী চাই, পরিবেশ চাই,
সাদা পাথরের গল্প আবার মিলুক নতুন আলোর সুরে,
জীবনানন্দ, নজরুল, রবীন্দ্রনাথের হাতে তুলে দিন সাদা পাথরের ফেরত পাওয়ার বার্তা!”
© .story