01/09/2025
ডাকসুর বিরুদ্ধে রিটের নেপথ্যে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র'
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে দায়েরকৃত রিট করার নেপথ্যে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র'র সম্পৃক্ততার কথা জানা গেছে।
বাংলাদেশের একটি প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র জানিয়েছে, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র’ এর স্টেশন চিফ রাজিব কুমার অগ্নিহোত্রীর উদ্যোগে এ রিট করা হয়। রিটের সঙ্গে জড়িত বাদী, আইনজীবী ও বিচারপতিরা সবাই র’র নেটওয়ার্কে জড়িত।
রিট আবেদনকারী হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অঙ্কন ও চিত্রায়ন বিভাগের ছাত্রী বিএম ফাহমিদা আলম। তিনি 'অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪' নামে তিন বাম ছাত্রসংগঠনের প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণআন্দোলন বিষয় সম্পাদক।
তার ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থা জানতে পারে, 'অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪' প্যানেলের প্রার্থী হলেও ফাহমিদা আলমের চব্বিশের জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত কোটা আন্দোলনের বিরোধিতা করেন। তার ফেসবুকে কোটা আন্দোলন বিরোধী ও গণহত্যার পক্ষে পোস্ট ছিল। কিন্তু ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর ২০২৪ এর জুলাই থেকে আগস্টের ৭ তারিখ পর্যন্ত নিজ ফেসবুক টাইম লাইনের সব পোস্ট গোপন করে ফেলেন।
গোয়েন্দা সংস্থার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ফাহমিদা আলম তার জুলাই বিরোধী পোস্ট গোপন করলেও তার বিরোধী মনোভাব পুরোপুরি স্পষ্ট। কারণ গত এক বছরেও তিনি জুলাইয়ের পক্ষে কোনো পোস্ট দেননি। এমনকি কোন শহীদ কিংবা আহতকে নিয়ে তিনি কিছু লেখেননি।
ফাহমিদা আলমের তৎপরতা সম্পরকে গোয়েন্দা তথ্য হলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র টিএসসিতে শিবিরের জুলাই প্রদর্শনীতে হাঙ্গামায় তিনি জড়িত ছিলেন। এরপর একজন পথচারী হাঙ্গামাকারীদের যৌনাক্ত ভঙ্গিতে ছবি তোলেন বলে প্রচারটিও তিনি করেন। চারুকলা অনুষদে শিবিরের ফেস্টুন ভেঙে ফেলার সঙ্গেও তার সম্পৃক্ততার তথ্য উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার মিশনে ফাহমিদা আলম ভূমিকা রাখছে বলে তার তৎপরতায় প্রতীয়মান হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার বিভিন্ন তথ্যের বিশ্লেষক গৌতম দাস দাবি করেছেন, র’ এর স্টেশন চিফ রাজিব কুমার অগ্নিহোত্রী ঢাকায় বসে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় গেঞ্জাম লাগানর চেষ্টা করছেন। এর অংশ হিসেবে ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে একযোগে হামলা ও নির্বাচন বিরোধী রিট করা হয়েছে। এর মাধ্যমে র’ শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ ফেরত পাঠানো ও ফের ক্ষমতায় বসাতে চায় বলে গৌতম দাসের পর্যবেক্ষণ।
রিট আবেদন নিয়ে র’র সম্পৃক্ততার বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয় আবেদনকারীর পক্ষের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার শাহবাগী পরিচয় ও লীগের বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিএনপির বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর বিষয়ে আগে থেকে প্রাপ্ত ভারত কানেকশনের কারণে।
জানা গেছে, ফাহমিদার 'অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪' প্যানেলে রয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএল। এ তিনটি সংগঠন সিপিবি, বাসদ ও বাংলাদেশ জাসদের ছাত্র সংগঠন। সংগঠনগুলো ২০১৩ সালে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার মদদে পরিচালিত শাহবাগ এমবি সন্ত্রাসে সক্রিয় ছিল। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর বেকায়দায় পড়া র’কে পুনর্গঠনে এ সংগঠনগুলো ভূমিকা পালন করছে।
এদিকে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র’ এর স্টেশন চিফ রাজিব কুমার অগ্নিহোত্রী ঢাকায় তৎপরতা চালাতে ভারতীয় হাইকমিশনের কমার্শিয়াল কাউন্সিলরের পরিচয় ব্যবহার করেন। তবে শেখ হাসিনা আজীবন ক্ষমতায় থাকবেন মনে করে রাজিব কুমার অগ্নিহোত্রী তার পরিচয় নিজেই উন্মোচন করেছিলেন।
Khomenee Ehsan ফেসবুক থেকে সংগৃহীত.