12/08/2025
অনেকে পরিকল্পনা করে ব্যাংক বা ফিনানশিয়াল ইন্সটিটিউট থেকে লোন নেন।
উদ্দেশ্য থাকে—বিজনেস দাঁড় করানো, বাড়ি বানানো, গাড়ি কেনা বা অন্য কিছু।
কিন্তু ভুলে যাবেন না—লোন মানে শুধু টাকা ধার নয়, বরং প্রতি মাসে সুদের আগুনে পুড়তে শুরু করা!
একটা উদাহরণ শুনুন—
আপনি ২৫ লাখ টাকার লোন নিলেন ৫ বছরের জন্য, ইন্টারেস্ট রেট ১৪.৪৯%।
প্রতিমাসে আপনার EMI দাঁড়াল প্রায় ৫৫,৫০০ টাকা।
মানে বছরে প্রায় ৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা আপনাকে দিতে হবে।
আপনি ভাবলেন—
“বছরে ৬.৬ লাখ দিচ্ছি, নিশ্চয়ই ৫ লাখ প্রিন্সিপাল কমবে, আর ১.৫ লাখ ইন্টারেস্ট যাবে।”
কিন্তু না!
বাস্তবে প্রথম বছরে আপনি যত টাকা দেন, তার অর্ধেকেরও বেশি চলে যায় সুদে!
আপনার মূল লোন কমে মাত্র ৩–৩.৫ লাখ টাকা।
বাকি ৩ লাখ বা তার বেশি টাকা কেটে নেয় ‘সুদ’—এই শোষণ ব্যবস্থা।
কেন এমন হয়?
এটা হলো Reducing Balance Loan বা Amortized Loan সিস্টেম।
এখানে শুরুর দিকে EMI থেকে বেশি অংশ সুদ হিসেবে কেটে নেয়, আর প্রিন্সিপালের অংশ কম রাখে।
সময় যত বাড়ে, তত সুদের অংশ কমে, প্রিন্সিপালের অংশ বাড়ে।
সমস্যা হয় কখন?
যদি মাঝপথে চাকরি হারান, আয় বন্ধ হয়, অসুস্থতা আসে বা ব্যবসা ডুবে যায়—
তবুও আপনাকে EMI দিতে হবে।
না পারলে লোনের ফাঁস আপনার পরিবার, সম্পদ, এমনকি মানসিক শান্তিও কেড়ে নেবে।
তাহলে কী করবেন?
লোন নেওয়ার আগে সম্পূর্ণ EMI Schedule ভালোভাবে দেখে নিন।
প্রতি কিস্তিতে কত সুদ আর কত প্রিন্সিপাল যাচ্ছে তা জেনে নিন।
সুযোগ থাকলে ১–২ বছরের মধ্যে আর্লি সেটেলমেন্ট করুন।
সম্ভব হলে লোন না নিয়ে বিকল্প পথ খুঁজুন।
কেন ইসলামে সুদ হারাম?
কারণ এতে ধনী আরও ধনী হয়, গরীব আরও গরীব হয়।
সুদভিত্তিক অর্থনীতি আসলে নিপীড়নের হাতিয়ার—
যেখানে ধনীর গলায় মালা, আর গরীবের গলায় দড়ি!
সতর্ক থাকুন, সচেতন থাকুন।
একটি ভুল সিদ্ধান্ত আপনার আগামী ১০ বছর কেড়ে নিতে পারে।
এই লেখা পরিবার, বন্ধু, আত্মীয়—সবার সঙ্গে শেয়ার করুন।
হয়তো আজই কেউ লোন নিতে যাচ্ছেন, অথচ জানেন না এর ভিতরের ভয়াবহতা!