07/02/2023
কন্যা সন্তান জাহান্নাম থেকে মুক্তির উপায় :
হজরত আয়েশা রাযিআল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তিকে কন্যা সন্তান লালন-পালনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এবং সে ধৈর্যের সঙ্গে তা সম্পাদন করেছে সেই কন্যা সন্তান তার জন্য জাহান্নাম থেকে আড়াল হবে। (জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯১৩)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গী হওয়া : জান্নাতে প্রবেশ করার মাধ্যমও হলো কন্যা সন্তানের লালনপালন করা। আবার জাহান্নাম থেকেও মুক্তি মিলবে কন্যা সন্তানের উত্তমরূপে প্রতিপালন করার দ্বারা। এর চেয়ে বড় আরেকটি ফজিলত হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। হজরত আনাস রাযিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি দুইজন কন্যা সন্তানকে লালনপালন ও দেখাশুনা করল (বিয়ের সময় হলে ভালো পাত্রের কাছে বিবাহ দিল) সে এবং আমি জান্নাতে এরূপ একসঙ্গে প্রবেশ করব যেরূপ এ দুটি আঙুল। তিনি নিজের দুই আঙুল মিলিয়ে দেখালেন। (জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯১৪)
কন্যা সন্তান প্রতিপালনের তিনটি ফজিলত : এক. আল্লাহ তায়ালা জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিবেন। দুই. জান্নাত দান করবেন। যা নিআমত ও আরাম আয়েশের স্থান। তিন. আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গী হওয়ার সৌভাগ্য দান করবেন। যা সফলতার সর্বোচ্চ চূড়া। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ তিনটি ফজিলত বর্ণনা করেছেন কন্যা সন্তান লালনপালনকারীদের জন্য।
কন্যা সন্তানের জন্মে অধিক আনন্দ প্রকাশ করা : ইসলামের শিক্ষা হলো, কন্যা সন্তান জন্ম নিলে আনন্দ প্রকাশ করা; তাইতো কন্যা জন্মের সংবাদকে ‘সুসংবাদ’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। আর সুসংবাদ শুনে মানুষ আনন্দই প্রকাশ করে। এজন্য অনেক উলামায়ে কেরাম লেখেন, যেহেতু কন্যা সন্তান জন্মানোর কারণে নিজেকে ছোট মনে করা, একে অপমান ও অসম্মানের কারণ মনে করা কাফিদের কর্মপন্থা, তাই মুসলমানগণের উচিত, তারা কন্যা সন্তানের জন্মের কারণে অধিক খুশি ও আনন্দ প্রকাশ করবে। যাতে কাফিরদের এ নিচু রীতির প্রতিবাদ হয় এবং এ রীতি যেন বিলুপ্ত হয়ে যায়।
কন্যা সন্তানের হকসমূহ : কন্যা সন্তানের লালনপালনের ফজিলত বর্ণনার পাশাপাশি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কন্যা সন্তানের হকসমূহও বর্ণনা করেছেন। জাহেলী যুগে এ হকসমূহ থেকে কন্যা সন্তানকে বঞ্চিত করা হত। আজকালও তাদের হকসমূহ আদায়ের ব্যাপারে অবহেলা করা হয়। এজন্য তাদের হকগুলো বুঝে নেয়া জরুরি। যেন এ ব্যাপারে আমাদের অবহেলা না হয়। ভালোবাসা প্রকাশের ক্ষেত্রে সমতা রক্ষা করা কারো পুত্র সন্তানের প্রতি ভালোবাসা বেশি আবার কারো কন্যা সন্তানের প্রতি।
অধিকাংশ লোকের পুত্র সন্তানের তুলনায় কন্যা সন্তানের প্রতি ভালোবাসা কম থাকে। ভালোবাসা ও মহব্বতের সম্পর্ক হরো অন্তরের সঙ্গে। এতে মানুষের ইচ্ছার দখল নেই। এজন্য এ ক্ষেত্রে সমতা রক্ষার বিষয়ে মানুষ বাধ্যও নয়। তবে ভালোবাসা প্রকাশ মানুষের ইচ্ছার অধীন। এ ক্ষেত্রে সমতা রক্ষা করা আবশ্যক।
মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে পবিত্র কোরআন ও হাদিসের বর্ণনা মেনে কন্যা সন্তানের প্রতি অবহেলা না করে- এলেম-কালাম, আদব-কায়দা শিক্ষা দিয়ে, যত্নের সঙ্গে প্রতিপালন করে এবং তাদের নায্য প্রাপ্ত প্রদান করার ব্যাপারে উপযুক্ত মর্যাদা প্রদান করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন