18/03/2025
#ওমরাহ_হজ_আজ_সেলফি_রোগে_আক্রান্ত আহ!!
হাজার হাজার মাইল দূর থেকে ছুটে এসে একজন মুমিন যখন কালো কাবার আলোকিত চত্বরে হাজির হয়; তখন তো তার মনের সব আবেগ, উচ্ছ্বাস, উদ্দীপনা, ভালোলাগা কাবাকে নিয়ে হওয়ার কথা। কাবার দর্শনে আবেগাপ্লুত হয়ে নিজের অস্তিত্বকেই ভুলে যাওয়ার কথা। কাবার দিকে উদাস মনে তাকিয়ে থাকাও তো ইবাদত। কিন্তু সেলফি রোগে আক্রান্তদের মনের সেই অনুভূতি যেন মোবাইলের ফ্ল্যাশে জ্বলে ছাই হয়ে গেছে। কাবা দেখার চেয়ে ফেসবুকে নিজের ছবি আপলোড দিতেই তাদের বেশি আগ্রহ।
অনেক কষ্টে আমার রবের অনুগ্রহে ইসলাম গ্রহন করেছি!!! আমার রবের আমার প্রতি এই দয়া যখনই মনে হয় তখনই চোখে পানি আসে। আমার রবের প্রতি এই ভালোবাসা বোঝানো সম্ভব না। তাই আমার রবের প্রতি কোন অসম্মান গায়ে লাগে!!
কাবাসহ সেলফি ধারণ করতে গিয়ে পবিত্র কাবার দিকে পেছন দিয়ে দাঁড়াতেও তাদের মন কুণ্ঠিত হয় না। পবিত্র কাবাকে পেছনে রেখে সেলফিসমৃদ্ধ ছবিগুলো দেখলে কাবাপ্রেমিকদের মনে বড় ব্যাথা লাগে। কাবাকে পেছনে রেখে একজন মুমিন কিভাবে হাসিমুখে দাঁড়ায়!
পবিত্র কাবার সামনে দাঁড়িয়ে কাবার প্রভুর আরাধনায় নিজেকে বিলীন না করে উল্টো নিজেকে ক্যামেরার সামনে ধরে রাখার ইচ্ছা কাবামুখি একজন মুমিনের কিভাবে হয়- তা ভাবতেও গা শিহরিত হয়। শরীরের পশম দাঁড়িয়ে যায়।
জেদ্দাভিত্তিক বিশিষ্ট ইসলামী আলেমে দ্বীন শাইখ আসিম আল-হাকীম দাঃবাঃ বলছিলেন, কোন যৌক্তিক কারণ ছাড়া ছবি তোলা ইসলামী বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ভিন্নমত থাকা সত্ত্বেও, যখন হজের প্রকৃত অর্থ ও তাৎপর্যের বিষয়টি বিবেচনা করা হয়, তখন কোন বিতর্কই সৃষ্টি হওয়া উচিত নয়। এটা অকৃত্রিমতা ও সুন্নত তরিকা অনুসরণের ভিত্তিমূলে প্রতিষ্ঠিত। তিনি আরও বলেন, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) যখন হজে গিয়েছিলেন, তিনি বলেছিলেন: হে আল্লাহ, আমি এমন একটি হজ পালন করতে চাই, যা কোন দম্ভ প্রকাশ বা লোক দেখানো হবে না। এ ধরনের সেলফি তোলা ও ভিডিও করা আমাদের নবীজীর ইচ্ছার পরিপন্থি।
যে সব স্থান ও স্থাপনা ইবাদতের স্থান, ইসলামের মর্যাদার প্রতীক ওমরাহ/হজের সফরে সে সব স্থানে সেলফি উঠানোর দ্বারা একদিকে পবিত্র স্থানসমূহের অবমাননা করা হয়, দ্বিতীয়ত রিয়ার বিষাক্ত ছোবলে হজ/ওমরাহ হয় প্রভাবহীন। এমন হজ/ওমরাহ মানব জীবনে কোনো কাজে আসে না। তাই আমাদের নিরন্তর প্রত্যাশা হলো-ইবাদত হোক সেলফিমুক্ত, হোক একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। আল্লাহতায়ালা আমাদের তওফিক দান করুন। আমিন।