05/11/2025
জাপানের এক শান্ত ছোট্ট শহরে এক ব্যক্তি তার পুরনো বাড়িটি সংস্কার করছিলেন। প্রায় ১০ বছর আগে মেরামত করা কাঠের দেয়ালগুলো খুলতে খুলতে হঠাৎ তিনি থমকে গেলেন।
একটি কাঠের পাটাতনের পেছনে তিনি যা দেখলেন, তা দেখে তাঁর বুক কেঁপে উঠল—
একটি ছোট্ট টিকটিকি জীবিত অবস্থায় দেয়ালের সঙ্গে পেরেক দিয়ে আটকে আছে!
পেরেকটি সরাসরি তার ক্ষুদ্র পা ভেদ করে কাঠের ভেতর ঢুকে গেছে। ফলে একই জায়গাতে সে আটকে আছে।
মানুষটি হতভম্ব হয়ে ভাবলেন— কী করে এখনো বেঁচে আছে এই প্রাণীটা? এখানে কোন আলো নেই, বাতাসের পরিমাণ কম। তিনি জানতেন, এই দেয়ালটি বসানো হয়েছিল দশ বছর আগে।
তাহলে কি এই টিকটিকিটি পুরো দশ বছর ধরে এখানেই আটকে ছিল?
অবিশ্বাস্য! তবুও সে এখনো নিঃশ্বাস নিচ্ছে, চোখ মেলে তাকিয়ে আছে নিঃশব্দে।
মানুষটি স্থির হয়ে তাকিয়ে রইলেন।
হঠাৎ তিনি দেখতে পেলেন, দেয়ালের ফাঁক থেকে আরেকটি টিকটিকি ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে।
তার মুখে খাবার! লোকটি একটু দূরে সরে গেলেন ঘটনা দেখার জন্য। খাবার মুখে টিকটিকিটি আটকে থাকার টিকটিকে খাবার এনে দিচ্ছে।
মুহূর্তের মধ্যেই সত্যটা স্পষ্ট হলো—
এই দ্বিতীয় টিকটিকিটিই এত বছর ধরে খাবার এনে দিচ্ছিল তার বন্দি সঙ্গীকে।
সেই দৃশ্য দেখে মানুষের চোখে পানি চলে এলো।
তিনি সাবধানে পেরেকটি খুলে টিকটিকিটিকে মুক্ত করলেন।
তার মনটা ভারী হয়ে উঠল—
এমন ক্ষুদ্র প্রাণীর মধ্যেও এত অটুট ভালোবাসা, এত গভীর বন্ধন!
তিনি নিঃশব্দে ভাবলেন,
“যেখানে মানুষ ভালোবাসায় ভরসা হারায়, সেখানে প্রকৃতি কত শান্তভাবে ভালোবাসার পাঠ শেখায়…”
সেদিনের পর থেকে সেই গল্প ছড়িয়ে পড়ল দূরদূরান্তে।
মানুষ বুঝল, এই পৃথিবীতে ভালোবাসা কেবল মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়—
নিঃশব্দ দেয়ালের আড়ালেও, কারও অদেখা জীবনে, ভালোবাসা বেঁচে থাকে নিঃস্বার্থভাবে।