14/07/2025
আজকের ডিজিটাল ফুটবল যুগে, আলো ও ক্যামেরার সামনে যারা থাকে, তারাই স্মরণীয় হয়ে ওঠে। কিন্তু ইতিহাসের পাতায় এমন একজন আছেন, যিনি ফুটবল খেলতেন যেন যুদ্ধ, আর গোল করতেন যেন কবিতা লিখছেন নিজের দেশের জন্য।
তিনি হলেন—মারিও কেম্পস।
"El Matador" নামে পরিচিত, কিন্তু বাস্তবে তিনি ছিলেন আর্জেন্টিনার সেই নিঃশব্দ তলোয়ার, যে ১৯৭৮ সালে গোটা বিশ্বের মানচিত্রে চিরস্থায়ীভাবে বসিয়ে দিয়েছিল আকাশি-সাদা এক পতাকা।
মেসি-পেলের নাম ইতিহাসে লেখা থাকে প্রতিদিন, কিন্তু কেউ কেউ আছে যারা একবারেই সব লিখে দিয়ে যায়—কেম্পস ছিলেন সেরকমই। এক বিশ্বকাপে, মাত্র সাতটি ম্যাচে, ছয়টি গোল, দুটি ফাইনালে—একাই আর্জেন্টিনাকে এনে দিয়েছিলেন প্রথম বিশ্বকাপ।
সে সময় পাসিং প্যাটার্ন বা পজিশনিং বোঝার যুগ ছিল না, ছিল প্যাশন আর শরীর দিয়ে খেলার যুগ।
আর কেম্পস?
প্রতি দৌড়েই প্রতিপক্ষের বুক চিরে ছুটতেন, যেন তলোয়ার টেনে নেমেছেন দেশের হয়ে যুদ্ধ করতে।
তাঁর স্টাইল ছিল সহজ—মাঠের মাঝখানে বল পেলেই ড্রিবল, এক-দুই পাস, তারপর বক্সের দিকেই ছুট। মাথা নিচু, কিন্তু লক্ষ্য পরিষ্কার—জাল কাঁপানো।
তিনি ছিলেন না কৌশলগত জাদুকর, ছিলেন আবেগের বিস্ফোরণ। আর প্রতিপক্ষের বক্স ছিল তাঁর কবিতার খাতা।
১৯৭৮ সালের ফাইনালে দুটি গোল করে এনে দিলেন আর্জেন্টিনার প্রথম বিশ্বকাপ। পুরো স্টেডিয়াম জুড়ে যখন উল্লাস, কেম্পস দাঁড়িয়ে ছিলেন নিজের মতো—মাথা নিচু, নিঃশব্দ, যেন বলছিলেন:
“আমি তো শুধু নিজের কাজটাই করলাম।”
একবার ডিয়েগো ম্যারাডোনা বলেছিলেন—
“Before I made Argentina dream, Mario Kempes made it possible.”
শুভ জন্মদিন, মারিও কেম্পস — আর্জেন্টিনার প্রথম বিশ্বজয়ী বীর, মাঠের যোদ্ধা, যিনি গোল দিয়ে নয়—গৌরব দিয়ে ইতিহাস লিখেছিলেন।
আপনি ছিলেন আর্জেন্টিনার পেছনের বাতিঘর, সেই নিঃশব্দ আলো যা পথ দেখায় আজও, ১৯৭৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত।
আপনি না থাকলে, আকাশি-সাদা গল্পটাই লেখা হতো না।
football freak থেকে শেখ মাহির