Moments by Lamia

Moments by Lamia জীবন সুন্দর ❤❤❤

 #সুখের_আশায়_বাঁধি_খেলাঘর  #লামিয়া_ইসলাম  #পর্ব_১২-তুই কোনো ধরনের চিন্তা করবি না। তোর এই ভাই এখনো বেঁচে আছে। আমি আবার আপ...
23/11/2025

#সুখের_আশায়_বাঁধি_খেলাঘর
#লামিয়া_ইসলাম
#পর্ব_১২

-তুই কোনো ধরনের চিন্তা করবি না। তোর এই ভাই এখনো বেঁচে আছে। আমি আবার আপিল করবো।যত টাকা খরচ করা লাগবে তা আমি করবো।

রাহাত তনুকে সান্তনা দিয়ে কথাগুলো বললো। রিমিও তার কথায় সায় দিয়ে বললো,

হ্যা, তনু। তুমি একদম ভেঙে পড়বে না। ওদের পৈশাচিক হাসি আর বেশি দিন হাসতে পারবে না। সব গুলোকে নিয়ে জেলে ঢুকাবো।

-ভাইয়া, ভাবী এসবের একদমই প্রয়োজন নেই। কেস নিয়ে আমি আবার আপিল করতে চাইছি না।

রাহাত আর রিমি তনুর কথা শুনে অবাক হয়ে গেলো।

-এসব কিছু বলছো তনু? যারা তোমাকে এবার অত্যাচার করেছে তাঁদের এভাবেই ছেড়ে দেবে?

-কে বলেছে ছেড়ে দিয়েছি ভাইয়া? আমি আল্লাহর কাছে বিচার করেছিলাম আর আল্লাহ অলরেডি ওদের শাস্তি দেয়া শুরু করে দিয়েছে।

-মানে?

-ওদের বাড়ির পাশে এক পরিচিত ভাবীর সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিলো। উনি একটু আগে ফোন দিয়েছিলো। মাহমুদের বড় বোন ভাবনার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। ভাবনা আর শশুরবাড়ি যেতে চাচ্ছে না। আর ওর ছোট বোন হেনা নাকি বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছে। জানি না হেনা কই গিয়েছে তবে যেখানে গিয়েছে সেখানে ভালো থাকুক। আমার বদদোয়া অলরেডি ওদের গায়ে লেগেছে।

-তারপর ও.... ওরা এইভাবে ছাড় পেয়ে যাবে।

-ভাবী এখন আবার আপিল করলে একগাদা টাকা নষ্ট হবে। আমি ওদের মতো বাজে মানুষের পিছনে এই টাকা গুলো নষ্ট করতে চাই না। তুমি আর ভাইয়া মিলে আমাকে উন্মুক্ততে ভর্তি করে দেও। আমি আবার পড়াশুনা শুরু করতে চাই।

- খুব ভালো ডিসিশন নিয়েছো এটা। কাল তো তোমার থেরাপি সেশন শেষ হচ্ছে। পরশু আমি তোমার ভর্তির ব্যবস্থা করছি।

-----------------

-এখনই যাওয়ার লাগবে তোর?মাত্র ১ মাস হলো বাড়ি ফিরলি। আবার কবে না কবে ফিরবি। আরো কয়টা দিন থেকে যা।

-সম্ভব না মা। হায়ার অথোরিটি থেকে কল এসেছে।আমাকে ইমিডিয়েটলি থাইল্যান্ড যেতে হবে।

-তো আবার কবে ফিরছিস?

-শিউর বলতে পারছি না। তবে মনে হয় না যে ৩ মাসের আগে ফিরতে পারবো।

-এতদিন ঐখানে কি করবি?

-মা আমার হাতে এবার একটা নতুন কেস এসেছে, কেসটা খুব কনফিডেন্সিয়াল। সেটার ইনভেস্টিগেশনের জন্য যাওয়ার লাগছে।

-তাহলে আমাকে কথা দে তিন মাস পর ফিরে এসে তুই বিয়ে করবি।

-মা বাচ্চাদের মতো এমন জেদ কেনো করছো?

-ঠিক আছে,তোর যেখানে ইচ্ছে সেখানে যা। আমি খাবার ও ঠিকমতো খাবোনা। প্রেসারের ওষুধ ও খাবো না। যা ইচ্ছে হয়ে যাক আমার। তোর তো তাতে কিছু যায় আসে না।

-ঠিক আছে, করবো।তবে আমার কিন্তু ম্যাচিউর টাইপের মেয়ে লাগবে। কোনো আন্ডার এইজের বাচ্চা মেয়েকে আবার আমার জন্য পছন্দ করে রেখো না।

-আচ্ছা, ঠিক আছে।

আরমান তার পাসপোর্ট কাজের ফাইল সব একে একে গুছিয়ে নিতে ব্যস্ত হয়ে গেলো। আরমানের মা আশা আহমেদের চোখে জল চিকচিক করছে।পুরো রুমজুড়ে আলাদা এক নীরবতা নেমে এলো, সেই নীরবতার ভেতরে ছিলো গভীর মমতা আর অদ্ভুত টান।

৩ মাস পর,

বিকেলের নরম আলো পুরো বাড়িটাতে এক রকমের আরামদায়ক আবহ ছড়িয়েছে । তনু বারান্দায় দাঁড়িয়ে টবে লাগানো বেলি গাছে পানি দিচ্ছিল। হালকা বাতাসে কচি পাতাগুলো দুলে উঠছে।এই তিন মাসে তনুর জীবন অনেক বদলে গেছে। অস্থিরতা আর ভয়ের জায়গা দখল করেছে পরিপক্বতা আর শান্তি। নিজের জন্য সময় রাখা, নিজের মত করে দিন সাজানো এসব যেন সে আবার শিখে নিয়েছে।।ঠিক তখনই রান্নাঘর থেকে রিমির হাসির শব্দ ভেসে আসে।

—তনু, দেখো তো! পুচকিটা আজকে আবার লাথি দিল!

রিমি দু’হাত দিয়ে পেটটা ধরে দাঁড়িয়ে আছে, মুখে অদ্ভুত এক খুশির আলো।রাহাত তার কাছে ছুটে এসে বলল,

—ডাক্তার তো বলেছে আর মাত্র ৩ মাস, তার পরেই ও আমাদের কাছে চলে আসবে … আমার তো বিশ্বাসই করতে পারছি না যে আমি বাবা হতে চলেছি!

তনু এক দৃষ্টে রাহাত আর রিমির দিকে তাকিয়ে থাকে। এই মানুষগুলোই তার ভালো থাকার একমাত্র কারণ। এই মানুষগুলোকে যেনো বিধাতা সকল বদনজর থেকে বাঁচিয়ে রাখে। এতদিন পর প্রথমবার তনুর মনে হলো,জীবনে মানুষের ছোট্ট জীবনে যেকোনো ভাবে যেকোনো সময় সুখ ফিরে আসতে পারে।ঠিক সে মুহূর্তে দরজা বেল বাজল। তনু দরজা খুলতেই দেখল আচারের বয়াম হাতে দুইজন পরিচিত মুখ দাঁড়িয়ে আছে। কবির আহমেদ আর আশা আহমেদ হাস্যজ্জল মুখ নিয়ে বাসার ভিতরে প্রবেশ করলো। ২ মাস আগেই তারা পাশের ফ্ল্যাটে শিফট হয়েছে।তনু কৌতূহলী কণ্ঠে বললো,

-আংকেল, আন্টি আপনারা! আপনারা বান্দরবন ট্রিপ থেকে কবে ফিরলেন?

-এইতো আজ সকালেই। রিমি সেদিন পাহাড়ি আচারের কথা বলেছিলো। সেটাই নিয়ে এসেছি।

-এতোগুলো?

-হ্যা, দুইজনে মিলে ধীরে ধীরে খাবে। মাঝে মাঝে একটু রোদে দিও, তাহলে অনেকদিন ভালো থাকবে।

রিমি তাঁদের দিকে এগিয়ে এসে বললো,

-আন্টি আপনি যে এই ২ মাসে আমার জন্য কত কিছু করলেন।

কবির আহমেদ তার কথায় বাধা দিয়ে বললো,

-একদম ভুল বললে রিমি। লাস্ট কয়েক বছরে মধ্যে লাস্ট দুই মাস আমাদের জীবনের বেস্ট সময় ছিলো।
ছেলে তো থেকেও না থাকার মতো। আমাদের দুই বুড়ো বুড়িকে তো তোমরাই গত ২ মাসে যাবত আগলে রেখেছো।

--------------

রাত তখন প্রায় বারোটার উপর। শীতের হালকা কুয়াশা পুরো গ্রামটাকে যেন ধোঁয়ার মতো ঢেকে ফেলেছে। চারপাশ এমন নীরব মনে হয় কেউ নিঃশ্বাস নিলেও শব্দ শোনা যাবে। দূরে-দূরে দু একটা কুকুরের ডাকার আওয়াজ উঠছে, আবার থেমেও যাচ্ছে। কাঁচা রাস্তার ধুলোবালি ঠাণ্ডা বাতাসে উড়ে এসে মিলিদের উঠোনের কোণায় জমেছে।

মিলিদের টিনের ঘরের ভেতর ম্লান হারিকেন জ্বলছে। আলোটা এমন দুর্বল যে ঘরের কোনায় কোন তাকালে মনে হয় ছায়া নড়ছে। মিলি বারান্দার খাটের পাশে বসে আছে, গায়ে পাতলা শাল জড়ানো। ভেতরে তার মা ঘুমিয়ে পড়েছে, কিন্তু মিলির চোখে ঘুমের ছিটেফোঁটা নেই।এতো ঠান্ডা হাওয়াতেও তার কপালে ঘাম জমে গেছে।

ঠিক এমন সময় দূর থেকে কারো হেঁটে আসার ক্ষীণ শব্দ শোনা যায়।কাঁচা মাটিতে চটি ঘষা পড়ার টুপটাপ শব্দ। মিলির নিশ্বাস আটকে যায়। উঠোনের বাঁশঝাড়ে বাতাস লাগতেই খসখস শব্দ হয়, মনে হয় কেউ লুকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বাঁশের গেটটা আস্তে করে ধীরে ধীরে খুলে যায়।হারিকেনের আলোয় পুরু শাল গায়ে একজন পুরুষের ছায়া দেখা যায়।আফজাল হোসেন দাঁড়িয়ে আছে। মিলির বুকের ভিতর ধড়ফড়ানি আরও বেড়ে যায়।

- এতো রাতে তুমি এই বাড়িতে ডাকলা কেন? ঐ বাড়িতে গেলেই হইতো। এইখানে তো তেমন ব্যবস্থা ও নাই।

- আমি আপনারে এইখানে পিরিত দেখাইতে ডাকি নাই। জরুরি কথা আছে?

-তো কইয়া ফেলো।

-আমি এক মাসের পোয়াতি।

- মানে....মানে কি? কার বাচ্চা এইডা?

-কার বাচ্চা মানে আমি আপনি বাদে আর কার লগে শুই?

-এটা তো আমার বাচ্চা হওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না।

-তো আপনি কি কইতাছেন যে আমি অন্য কারো জিনিস আপনার ঘাড়ে চাপাইতাছি।

-চাপাইতেও পারো। তুমি কার লগে দেখা সাক্ষাৎ করো তা তো আর আমি জানি না।

-মুখ সামলাইয়া কথা কন। মনে রাইখেন আমার ইজ্জত গেলে আপনার ইজ্জত ও থাকবো না।

মিলির মুখে এরকম কথা শুনে আফজাল হোসেন একটু হতচকিয়ে গেলো। মিলিকে ধীরে সুস্থে হ্যান্ডেল করতে হবে। নইলে মানসম্মান নিয়ে টানাটানি হবে।

-আইচ্ছা আমারই। তাইলে কালকে আমার লগে শহরে চলো। পরিচিত ডাক্তার আছে ঐখানে আমার । সে খালাস কইরা দেবে আনে।

- শহরে গেলে কেউ যদি যাইনা যায়?

-আরেহ অনেক বিশ্বস্ত লোক আমার। কাকপক্ষী ও টের পাইবো না।

-ঠিক আছে কালকে আমি বাজারের মাথায় দাড়াই থাকমু। আপনি ঐখান থেকে আমারে লইয়া যাইয়েন।

চলবে.......

 #সুখের_আশায়_বাঁধি_খেলাঘর  #লামিয়া_ইসলাম  #পর্ব_১১ঢাকা জজ কোর্টের ভারী কাঠের দরজা ঠেলে বের হতেই দুপুরের আলোটা তনুর কাছে ...
17/11/2025

#সুখের_আশায়_বাঁধি_খেলাঘর
#লামিয়া_ইসলাম
#পর্ব_১১

ঢাকা জজ কোর্টের ভারী কাঠের দরজা ঠেলে বের হতেই দুপুরের আলোটা তনুর কাছে অস্বস্তিকর উজ্জ্বল মনে হচ্ছিল। আজ তনুর কেসের শুনানি ছিলো।চারপাশে মানুষের ভিড়, কাগজপত্রের শব্দ আর পুলিশের ডাকে মিশে গিয়েছে কোর্ট দিনের স্বাভাবিক হট্টগোল। সিঁড়ির ওপর দাঁড়িয়েই তনুর উকিল এলা রহমান হালকা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। রিমি আর রাহাত তাদের পেছনে বের হলো। দুজনের মুখই বিবর্ণ, রায় শোনার পর যেন কেউ শক্ত করে বুকে আঘাত করেছে। মাহমুদ ইতিমধ্যে নিচে দাঁড়িয়ে হাসছে,সেই বিরক্তিকর আত্মতুষ্টির হাসি।
হাতে রশিদ—জরিমানার টাকা জমা দেওয়ার প্রমাণ।
তার মুখের ভঙ্গিটা এমন, যেন সে প্রমাণ করে দিল—দুনিয়ায় তার কিছুই হবে না।হাসু বেগম উঁচু গলায় বলল,

—দেখলা? কোর্টও জানে—আমার ছেলের সঙ্গে প্রতারণা করা যায় না!

রিমি দাঁত চেপে তাকাল, কিন্তু কিছু বলল না। আজকে তার চোখের জ্বলন্ত রাগ শব্দ হারিয়েছে।
রাহাত ধীরে ধীরে সিঁড়ি বেয়ে নামতে নামতে বলল,

—এইটা কি বিচার? এতো অত্যাচার করলো ওরা … আর তার বিনিময়ে শুধু পঞ্চাশ হাজার টাকার জরিমানা?

এলা রহমান শান্ত গলায় বললেন,

-আইনের কাঠামোয় অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। কিছু অভিযোগে জেল পাওয়া কঠিন… তাই আদালত জরিমানায় শেষ করল।মাহমুদ দেশের বাহিরে ছিলো তার জন্যই কোনো সাজা হলো না।শ

তনু এবার মৃদু কণ্ঠে বলল,

—মনে হয় আমি ভুল ভেবেছিলাম… বিচার এত সহজে পাওয়া যায় না।

রাহাত রাগে মুঠো শক্ত করল।

—তার মানে লোকটা চাইলেই যা খুশি করবে, শেষে জরিমানা দিয়ে হাসতে হাসতে চলে যাবে?

মাহমুদ তখন পাশ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মুচকি হেসে বলে উঠল,

—আইন তো বলছে আমি দোষী না। জরিমানা? ওহ, ওটা আমার একমাসের খরচ।

রাহাত তেড়ে মাহমুদের দিকে যেতে চাইলে এলা রহমান বললো,

-রাহাত,উত্তেজিত হবে না। এখনো আমরা চাইলে কোর্টে আপিল কোর্টে পারবো। এখানে কোনো সিনক্রিয়েট করলে আমরা সেই সুযোগটাও হারাবো।

-------------------

আরমান একটা কফিশপে বসে আছে। আশেপাশে টুকটাক কোলাহলের মাঝেও তার সম্পূর্ণ নজর সামনে থাকা ল্যাপটপের স্ক্রিনের দিকে নিবদ্ধ। কিছুক্ষন পরেই ক্যাপ্টেন লাবিব এসে তার সামনের চেয়ারে বসে।

-স্যার, আপনি হঠাৎ আমাকে এখানে ডাকলেন?

-হ্যাঁ লাবিব, বসো। একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলতে তোমাকে এখানে ডেকেছি। বিষয়টা ডেলিকেট, আর সেনসিটিভ।

-বুঝেছি স্যার। ঐ নারী পাচার কেসের।কেয়ামত মিয়াকে নিয়ে?

আরমান: ঠিক তাই। তুমি তো জানো, আমরা এতদিন ভেবেছিলাম কেয়ামত মিয়া শুধু মানবপাচারের লোকজনকে রুট দেয়। কিন্তু গত দুই সপ্তাহে আমার কাছে নতুন তথ্য এসেছে, সে শুধু রুট দেয় না, পুরো নেটওয়ার্কটাই সে পরিচালনা করে।

- স্যার, তার কোনো লোকের ইনফো পেয়েছেন?

-পেয়েছি।

আরমান ল্যাপটপের স্ক্রিন তার দিকে ঘুরিয়ে দিয়ে বলে

-এটা তার ডানহাত— রফিক "লংকা রফিক" নামে পরিচিত। সীমান্তমুখী ট্রলারের দেখাশোনা করে।
আর এটা আফসার। মেয়েদের ভুয়া আইডি বানায়, হাসপাতালে নকল মেডিক্যাল রিপোর্ট তৈরি করে।

-স্যার, এত বড় নেটওয়ার্ক হলে সে একা থাকতে পারে না। তার সাথে হয়তো অন্য কেউ নিশ্চয়ই আছে?

-আছে। কিন্তু তাদের নাম এখনও নিশ্চিত না।
আমাদের সন্দেহ, সীমান্ত এলাকায় স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোক আছে যারা কেয়ামতকে ব্যাকআপ দেয়। প্রতিনিয়ত টাকার লেনদেন হয়, আর সেই টাকায় তারা চোখ বুজে থাকে।

-স্যার,সেদিন রাতে চট্টগ্রামের অপারেশনে যাদের আটক করা হলো, তারা কি কিছু বলেছে?

-একটা মেয়ে,সায়রা। বয়স বেশি হলে ১৬।
তার ভাষ্যমতে কেয়ামতের লোকজন তাকে মিথ্যে চাকরির প্রলোভন দিয়ে তুলে নেয়। তারপর কয়েকদিন অচেনা জায়গায় আটকে রাখা হয়।
সোজা কথা যদি আমরা একটু দেরি করতাম, মেয়েটা আর দেশে থাকত না।

-এটা ভয়াবহ, স্যার।তো, এখন নেক্সট প্ল্যান কি?

-মূল টার্গেট কেয়ামত মিয়া। কিন্তু সরাসরি অ্যাটাক করলে কাজ হবে না।সে চতুর, নোংরা চালাক। তার চারপাশে সোর্স আছে, এমনকি পুলিশের মধ্যেও।

-তাহলে আমরা কোন দিক দিয়ে এগোব?

-ইন্টেল থেকে প্রথম যে তথ্যটা পেয়েছি, সেটা হলো
আগামী বৃহস্পতিবার রাতে কেয়ামত মিয়া ব্যক্তিগতভাবে সীমান্তে যাবে। নৌকা বদলের একটা নতুন রুট খোলা হবে।যদি এই তথ্য সত্য হয়, তাহলে সেই রাতেই আমরা তাকে ধরতে পারব।

-কিন্তু স্যার,সে তো সবসময় বডিগার্ড নিয়ে চলে।
তাকে ধরতে হলে চমক দিতে হবে।আর তার এখনকার কোনো ছবিও আমাদের কাছে নেই।

-এজন্যই আমি চাই এবার আমরা আন্ডারকভার টিম পাঠাই। দুইজন নৌকার ক্রুর মতো ছদ্মবেশ নেবে, আর আমি নিজে শ্যাডো পজিশনে থাকব।

-স্যার… আপনি নিজে?

-হ্যাঁ। ওর মতো লোককে না ধরলে আরও কত মেয়ের জীবন যে ও নরক করে দেবে।

- স্যার, আমি ও আপনার সাথে যেতে চাই।

-না,তুমি আলাদা দায়িত্বে থাকবে। কেয়ামতের লোকেরা যোগাযোগের জন্য অনেকটা ট্রিক ইউজ করে।তারা মোবাইল ট্রাকার ব্যবহার করে, ডাটাবেসেও হাত আছে। তুমি টেক অপারেশন লিড করবে। তাঁদের ফোন, গাড়ির ট্র্যাকিং, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি মনিটর… সব কিছু তোমাকে সামলাতে হবে।

-ঠিক আছে স্যার, কিন্তু একটা প্রশ্ন, আমাদের ইনফরমার “মন্টু দালাল” কি সত্যিই নির্ভরযোগ্য?

-মন্টু ধূর্ত, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু সে নিজের স্বার্থে আজ আমাদের ইনফো দিচ্ছে।
এমন লোকেরা টাকা বা নিরাপত্তার গন্ধ পেলেই যেকোনো দিকে যেতে পারে। তাই আমরা মন্টুর ওপর নির্ভর করছি না, শুধু তথ্য ব্যবহার করছি।

-কিন্তু স্যার… যদি তথ্য মিথ্যে হয়?

-তাহলে আমরা বিকল্প অপারেশন চালু করব।
আমি এই অপারেশনের তিনটা লেয়ার রেখেছি,
১. Land Team,২. Water Team,৩. Tech & Intercept Team (এটা তুমি লিড করবে)।

-বুঝেছি স্যার।কিন্তু কেয়ামতকে ধরতে গেলে তার শক্তির জায়গাটা কাট করতে হবে।যেমন তার টাকা, তার মানুষ, তার রাজনৈতিক ছায়া…

-হুম।আজ রাতেই তার আর্থিক লেনদেন ট্র্যাক করো।
নগদ,বিকাশ এগুলোর আসল ইউজার কে?কার অ্যাকাউন্টে টাকা যায়?তার রুটে কোন কোন লোক নিয়মিত টাকা পায়?

- স্যার, এটা করতে গেলে আমাকে সাইবার সেলের দুইজন অফিসারের সাথে কাজ করতে হবে।

-করো। প্রয়োজনে আরও লোক নেও, আমি অনুমতি দেব।

-------------------

কোর্ট প্রাঙ্গণের বাইরে এক কোণায় দাঁড়িয়ে আছে হাসু বেগম আর মাহমুদ। চারপাশে এখনও ভিড়, পুলিশের চলাফেরা, উকিলদের হাঁটাহাঁটি,কিন্তু তাদের মুখে শুধু বিজয়ের ছাপ।হাসু বেগম প্রথমেই গর্বে ভরপুর গলায় বলল,

—বলছিলাম না? কোর্ট–টোর্ট কিছু করতে পারবে না। আমার পোলার গায়ে কেউ হাত দিতে পারবো না।
এইটুকু জরিমানা? যাক গে। যারা ভাবছিল আমার পোলারে শেষ কইরা দিবো ধরা তারা সবাই আজ মুখ দেখাতেই পারবো না।ঐ তনু নামক ডাইনিটা তোরে কেমনে ফাঁসাইতে চাইল। দেখলি? শেষ পর্যন্ত টাকা দিয়াই ছুটি। একদম নষ্ট একটা মাইয়া। এবার মন দিয়া তুই শিলার লগে সংসার করবি।

শিলার কথা শুনতেই মাহমুদের মেজাজ আবার বিগড়ে গেলো। সেদিন রাতের ফোনে আসা সেই মেসেজগুলোর কথা তার মনে পড়ে গেলো। সে তার মাকে আর কিছু না বলেই সামনের দিকে হাঁটতে লাগলো।

চলবে.........

— বিয়ে করবে আমাকে,তনু?— কেনো করবো?— তোমাকে নিরাপদে রাখবো আমি, যেন পৃথিবীর কোনো ঝড়, কোনো দৃষ্টি, কোনো শব্দ তোমার ওপর আঘাত...
28/10/2025

— বিয়ে করবে আমাকে,তনু?

— কেনো করবো?

— তোমাকে নিরাপদে রাখবো আমি, যেন পৃথিবীর কোনো ঝড়, কোনো দৃষ্টি, কোনো শব্দ তোমার ওপর আঘাত হানতে না পারে। তোমার গায়ে আর কোনো কলঙ্কের ছায়াও পড়তে দেবো না।

— কিন্তু যে দাগগুলো ইতিমধ্যেই লেগে গেছে? যে কলঙ্কগুলো আমার শরীর, মন, আত্মায় ছাপ রেখে গেছে,ওগুলো কীভাবে মুছবেন আপনি?

— তনু, আমি সৈনিক। যুদ্ধের ময়দানে যেমন পরাজয়কে নিজের বুকে টেনে নেই, তেমনি তোমার সব কলঙ্ক আমি নিজের করে নেবো। তোমার প্রতিটি দাগকে আমার সম্মানের পদক বানাবো। তোমাকে
এমনভাবে আঁকড়ে রাখবো, যেন তোমার অতীতের প্রতিটি ছায়া আমার বুকের আলোয় মিলিয়ে যায়।আর তোমার কলঙ্কই তোমার বিশেষত্ব। যেমন চাঁদ সুন্দর কিন্তু তারও কলঙ্ক আছে। এ জন্মেই না শুধু,পরের জন্মেও তোমার কলঙ্ক বুকে নিয়ে বাঁচবো, তনু।

তনু চুপ করে থাকে। চোখের কোণে জমে থাকা জলটা গড়িয়ে পড়ে আরমানের আঙুলে। সেই মুহূর্তে তনু বুঝে যায়,কিছু মানুষ ভালোবাসে না শুধু, ভালোবাসাকে আশ্রয় বানিয়ে নেয়। আরমানের কণ্ঠ নরম হয়ে আসে,
চাঁদের আলোয় দুজনের নিঃশব্দ প্রতিজ্ঞা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।ভালোবাসা হয়তো পবিত্র নয় সবসময়, কিন্তু সত্যিকারের ভালোবাসা মানুষকে পবিত্র করে তোলে।

#সুখের_আশায়_বাঁধি_খেলাঘর
#লামিয়া_ইসলাম
আসন্ন পর্বের অংশবিশেষ

তনু আর আরমানের জুটি আপনাদের পছন্দ হবে তো?

Dreamers Beauty
28/10/2025

Dreamers Beauty

 #সুখের_আশায়_বাঁধি_খেলাঘর  #লামিয়া_ইসলাম  #পর্ব_১০থানার ভিতরের পরিবেশ এখনো থমথমে।  ভাবনার কিছুক্ষন আগেই জ্ঞান ফিরেছে। কি...
26/10/2025

#সুখের_আশায়_বাঁধি_খেলাঘর
#লামিয়া_ইসলাম
#পর্ব_১০

থানার ভিতরের পরিবেশ এখনো থমথমে। ভাবনার কিছুক্ষন আগেই জ্ঞান ফিরেছে। কিন্তু ভাবনা একদম চুপ করে আছে। হাসু বেগমকেও তেমন হম্বিতম্বী করতে দেখা যাচ্ছে না। ইতিমধ্যে ভাবনার শাশুড়ি দিলারা বেগম ও থানায় উপস্থিত হয়েছে। সবাই আবার আফসানার বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসেছে।
দিলারা বেগম বলে উঠলেন,

-দেখো আফসানা তুমি আর ঝামেলা কইরো না। কেসটা উঠাই নেও। রকিব তোমারে এখনি বিয়া করবো।

শাশুড়ির বলা কথাশুনে ভাবনা অবিশ্বাসের সাথে নিজের শাশুড়ির দিকে তাকিয়ে বললো,

-আম্মা এইসব কি বলছেন? টুনি মিনির বাপ্ ওরে বিয়ে করলে আমার কি হবে?টুনি মিনির কি হবে?

-কি হইবো মানে? তোমরাও থাকবা। আল্লাহর রহমতে আমার ৫ তলা বিল্ডিং। থাকার জায়গার অভাব নেই।

হাসু বেগম আর সহ্য না করতে পেরে ক্ষেপে উঠলেন।

-বেয়াইন এইসব কি বলতেছেন? আমার মাইয়া কি সতীনের সংসার করবো নাকি? আমাগো এলাকায় একটা মানসম্মান আছে। আর আপনি কইতাছেন ঐ বাজারের মা*গীরে আমার মাইয়ার সতীন বানাইবেন।

-তো কি করমু? আমার পোলারে জেল খাটামু? আর ঐ মাইয়া যাই হোক আমার নাতিরে জন্ম দিছে। আপনার মাইয়া তো একটা এহন একটা বাজা। দুইটা ছেরি জন্ম দিয়া তার শরীরে আর সহ্য হয় না। তো আপনার এই মাইয়ার লাইগা আমায় আমার বংশের বাত্তিরে রাস্তায় ফালাই দিমু নাকি। আর এইডা আমার ঘরের ব্যাপার আপনের নাক গলানোর দরকার নাই।

-ছি ছি ছি বেয়াইন। আমার সোজা কথা আমার মাইয়া সতীনের সংসার করবো না।

-তাইলে আপনার মাইয়ারে আমার পোলায় তালাক দিবো। আর এতো যে লাফাইতাছেন সম্মান সম্মান কইরা নিজের পোলার সংসার তো আপনেই ভাঙছেন। ওতো ভালো বউডারে তালাক দেওয়াইছেন। আর আপনের ছোট মাইয়া তো শুনছি কালকে রাত্রে কোন পোলার লগে ভাগছে।আবার কইতাছেন আপনাগো নাকি এলাকায় অনেক সম্মান।

ভাবনা এতক্ষন চুপ হয়ে ছিলো।এবার নীরবতা ভেঙে বললো,

-মা তুমি চুপ করো। আম্মা আপনার পোলারে দ্বিতীয় বিয়ে করান আমার কোনো আপত্তি নাই।

-এই তো লক্ষী মাইয়ার মতো কথা কইছো।

তখনি ৩০ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে আফসানার সাথে রকিবের বিয়ে হলো। পুরোটা সময় ভাবনা নিরব হয়ে ছিলো। পরিত্যাক্ত ছায়ার মতো সে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সবকিছু নীরবে লক্ষ্য করছিলো।

মা আর ভাইয়ের সাথে ভাবনা যখন থানা থেকে বাপের বাড়ি ফিরছিলো হাসু বেগম তাকে জিজ্ঞেস করে বসলো,

-কি করবি এখন? এতো খারাপ কেমনে হইলো আমার মাইয়ার কপাল?

-মাগো কপাল খারাপ না। পাপে ধরছে আমাদের। মানুষের মাইয়ার নামে আমরা কলঙ্ক লাগাই দিতে গেছিলাম এখন আল্লায় আমার উপরেই কলঙ্ক লাগাই দিছে। আমার অহন সতীনের ঘর করা লাগবে।

--------------------

তনু যখন বাড়ি ফিরলো তখন প্রায় সন্ধ্যার কাছাকাছি সময়। শাড়িগুলোর কাজ শেষ তাই সেগুলোই ডেলিভারি হাবে দিতে গিয়েছিলো সে। ড্রয়িং রুমে অপরিচিত কণ্ঠের শব্দ পেয়ে সেদিকে এগিয়ে গেলো। ঐখানে অপরিচিত দুজন মানুষকে সে দেখতে পেলো।তনু রুমে ঢুকতেই রাহাত দুজন বয়স্ক মহিলা পুরুষকে দেখিয়ে তনুকে বললো,

-তনু তোর হয়তো মনে নেই। উনারা হচ্ছে আমাদের মামা মামী।

তনু দুইজনের দিকে এবার ভালো করে তাকালো। পুরুষটিকে দেখতে নিরহ মনে হলেও বয়স্ক মহিলাটিকে তার কাছে মোটেও সুবিধার মনে হলো না। তাঁদের সাথে কুশল বিনিময় করে সে নিজের রুমে ফ্রেশ হতে চলে গেলো।

তনু ফ্রেশ হয়ে ড্রয়িং রুমে এসে বসতেই সুফিয়া বেগম মুখে অভিনয়ের হাসি টেনে বললো,

-তা শুনলাম তোমার নাকি ডিভোর্স হয়ে গেছে, এরপর কি করবা কিছু ভাবছো?

-কি করবো মানে? মামী আমি আবার বিজনেস শুরু করেছি।এখন এটাকেই এগিয়ে নিয়ে যাবার প্ল্যান আছে।

-এইসব বিজনেস যতই করো জীবনে টাকা বাদেও তো আরো অনেক কিছুই দরকার হয়। দেইখা রাখার লাইগা হইলেও একজন পুরুষ মানুষ জীবনে দরকার হয়।

সুফিয়া বেগমের ঠেস মারা কোথায় শুনে রুমি তাকে বললো,

-এতো মানুষের কেনো দরকার মামী? ওর ভাই ভাবী এখনো বেঁচে আছে। ও যদি সারাজীবন আমাদের কাছে থাকতে চায় আমাদের তাতে কোনো সমস্যা নেই।

-কি যে কও বউ। নিজের সংসারে ঝামেলা কেন বাড়াবা? আমি কই কি ওরে আমার ঘরের বউ হিসাবে দিয়া দেও। আমার বড়ো পোলার আগের বউডা তো অনেক শয়তান ছিলো। তাই ডাইনি ডা চইলা গেছে। তনুরে আমার ঘরের লক্ষী বানাইয়া রাখমু।

-হাসালেন মামী। আপনার ছেলের নেশার অভ্যাস আছে। তাই তো আগের বউটা চলে গেছে। আপনার ছেলের খারাপ রেপুটেশন এর জন্য কোনো মেয়ে পাচ্ছেন না।এখন তাই আমার নিরীহ ননদটাকে ফাঁদে ফেলতে চাচ্ছেন।

-বেশি বুঝতাছো তো তুমি। ডিভোর্সী ননদ নিয়া সারাজীবন ঝামেলা সহ্য করবা নাকি। আর অবশ্য সহ্য করতেই পারো কারণ তনুর তো এখন ভালো গহনাই আছে। ঐগুলার জন্যই ওরে হাতছাড়া করতে চাইতাছো না।

-মামী জানেন ওর এই অবস্থার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী হচ্ছেন আপনি। যদি সেদিন একটা বাচ্চা রাখার শর্ত না দিতেন তাহলে তনু নিজের ভাই আর মায়ের কাছে থাকতে পারতো। সৎ মায়ের প্ররোচনায় ওকে ভুল মানুষকে বিয়ে করতে হতো না। আর গহনার কথা বলছেন তো। আমার স্বামী আর বাবা মায়ের দেয়া যেসব গহনা আমার আছে তাই আমি এখনো সব পরে শেষ করতে পারি নি। আর আমি শুনলাম যে আপনার বড় ছেলে হাসিব কয়দিন আগেই নেশা করে ব্যবসার পুঁজি সব উড়িয়ে ফেলেছে। তাই কোন লোভে আপনি তনুকে বউ করতে চাচ্ছেন তা আমি ভালো করেই জানি।

এবার আর সুফিয়া বেগম রুমির কথার কোনো প্রতিউত্তর দিতে পারলো না। রেগে মেগে নিজের স্বামী আজিজ উদ্দিন কে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেলো।

--------------

আরমান আজ পুলিশ কমিশনারের অফিসে এসেছে। আরমান ঢাকা এসেছে মূলত একটা কেসের ব্যাপারে ইনফরমেশন যোগাড় করতে। যদিও আশা আহমেদের সে ব্যাপারে কোনো ধারণা নেই, জানলে হয়তো বাসা মাথায় তুলবে। সেই কেসের ব্যাপারেই কিছু ইনফরমেশন যোগাড় করতে সে জহির সাহেবের কাছে এসেছে। আরমান অফিসে কিছুক্ষন অপেক্ষা করতেই জহির সাহেব ও ইদ্রিসকে নিয়ে অফিসে পৌছালো।

-আরেহ আরমান এতদিন পর ঢাকায়? আর এখানে হঠাৎ?

-স্যার একটা কেসের ব্যাপারে দরকার ছিলো?

-তোমার পোস্টিং তো চট্টগ্রামে, এখন তো মনে হয় ছুটিতে আছো।

-স্যার ফ্যামিলি জানে ছুটিতে বাট মেইনলি কাজের জন্যই এসেছি।

-তা বলো কি দরকার?

আরমান একটা ছবি পুলিশ কমিশনার জহির সাহেবের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,

-স্যার এই লোকটাকে কি আপনি চিনেন?লোকটির নাম কেরামত মিয়া।

-হ্যা চিনি তো। এই লোককে আমি প্রায় ৩০ বছর আগে অ্যারেস্ট করেছিলাম। একজন পতিতার মার্ডার কেসের আসামি ছিলো এই লোকটা। যদিও পরবর্তীতে পর্যাপ্ত প্রমান না থাকার কারণে লোকটা ৩ মাসের মধ্যেই জেল থেকে ছাড়া পেয়েছিলো। কিন্তু একে এতো বছর পর তোমার কেনো দরকার?যদি বেশি কনফিডেন্সশিয়াল না হয় আমাকে বলতে পারো ব্যাপারটা।

-স্যার আপনার থেকে কি লুকানোর। এই লোকটা একটা এনজিওর ট্রাষ্টি। এনজিওর আড়ালে মেয়ে পাচারের একটা সিন্ডিকেট চালাচ্ছে। দেশের সব গুলো বিভাগ থেকেই এরা মেয়ে পাচার করছে। মেয়েগুলোকে এরা পাচার করে থাইল্যান্ডে নিয়ে যায়। সেখান থেকে মধ্যপ্রাচ্চেরর বিভিন্ন বড়োলোকেরা এসব মেয়েদের নিজেদের রক্ষিতা হিসেবে কিনে নেয়। আমি ওনার প্রায় ২৫ বছর পুরানো ব্যবসায়িক পার্টনার কৃষ্ণ দাসকে ধরতে পেরেছি। যদিও কৃষ্ণ দাস আর এখন ওনার সাথে বিজনেস করে না। কৃষ্ণ দাসের ক্যান্সার ধরা পড়ার পর থেকে ওনার মধ্যে অনুশোচনা হয় তাই উনি এসব কাজ ছেড়ে দেয়। কেরামত মিয়ার এই পুরানো ছবিটাই ওনার আছে। আর আমাদের যতদূর ধারণা কেরামত মিয়া নামটা ফেইক। কৃষ্ণ দাস আমাকে বলছিলো যে আপনি নাকি কেরামত মিয়াকে একবার অ্যারেস্ট করেছিলেন।

-ভাবা যায় একটা লোক গত ২৫ ধরে একটা সিন্ডিকেট চালাচ্ছে আর এখনো কেউ ওকে ধরতেই পারলো না।সামনের মঙ্গলবার ঢাকা জর্জ কোর্টে একটা মামলার শুনানিতে যাবো আমি। তুমি একটু কষ্ট করে সেদিন কোর্টে আসো। কেরামত মিয়ার কেস ফাইলটা ওখানে আছে।ঐ কেস ফাইলটায় ওনার কিছু ডিটেইলস পেয়ে যাবে।

চলবে........

কেনো নিয়মিত গল্প দিতে পারি না, তার উত্তর হচ্ছে ছবির ওনার কারণে। Dreamers Beauty  আমার খুব শখের আর ভালোবাসার একটা জায়গা। ...
22/10/2025

কেনো নিয়মিত গল্প দিতে পারি না, তার উত্তর হচ্ছে ছবির ওনার কারণে। Dreamers Beauty আমার খুব শখের আর ভালোবাসার একটা জায়গা। এই বছরের শুরুতে খুব ছোট পরিসরে দুইজন মিলে বিজনেসটা শুরু করেছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ আমার আর আমার বিজনেস পার্টনার এর দীর্ঘ ১০ মাসের পরিশ্রমের মাধ্যমে আমার এখন খুব ভালো একটা পর্যায়ে পৌঁছেছি। আর এইজন্যই বিজনেসে নজর দিতে গিয়ে লেখালেখিতে নিয়মিত হতে পারিনি। কিন্তু এখন আমার মনে হচ্ছে যে লেখালেখিতে আমার একটু মনোযোগ দেয়া উচিত। কারণ লেখালেখিও আমার খুব শখের একটা জায়গা। তাই তো এখন থেকে বিজনেসের শুধু প্যাকেজিং আর কনটেন্ট রাইটিং এর ব্যাপারটা আমি হ্যান্ডেল করবো। বাকি যেসব দিক আছে আমার বিজনেস পার্টনার আর মডারেটর সামলে নিবে। আর আমি আপনাদের জন্য দারুন সব গল্প লিখবো তাও নিয়মিত। #সুখের_আশায়_বাঁধি_খেলাঘর গল্পটা কিন্তু কাল থেকে আবার পোস্ট করা হবে। আশা করি আগের মতোই আপনারা গল্পটিকে ভালোবাসবেন আর আমার লেখালেখিতে সাপোর্ট করবেন।

 #সুখের_আশায়_বাঁধি_খেলাঘর  #লামিয়া_ইসলাম  #পর্ব_৯-মাগো আমার সর্বনাশ হয়ে গেছে। সাত সকালে চিৎকার করতে করতে মাহমুদের বড় ভাব...
11/10/2025

#সুখের_আশায়_বাঁধি_খেলাঘর
#লামিয়া_ইসলাম
#পর্ব_৯

-মাগো আমার সর্বনাশ হয়ে গেছে।

সাত সকালে চিৎকার করতে করতে মাহমুদের বড় ভাবনা নিজের রুম থেকে বেরিয়ে এলো। মেয়ের চিৎকার শুনে হাসু বেগম ও তড়িঘড়ি করে মেয়ের কাছে এলেন। হেনার নামে মিসিং কমপ্লেইন করে মাহমুদ আর আফজাল সাহেব কেবল বাড়ি ফিরেছে। ভাবনাকে এভাবে চিৎকার করতে দেখে তারাও হতবাক হয়ে গেলো। হাসু বেগম মেয়েকে বুকে আগলে নিয়ে জিজ্ঞেস করলো,

-কি হইছে মা? তুই এরকম করতাছোস কেন? আমারে খুইলা বল।

-মা টুনি, মিনির বাপ্ রে কালকে রাতে নাকি পুলিশ ধইরা নিছে।

মাহমুদ এগিয়ে এসে বললো,

-কিন্তু কেনো ধরে নিয়েছে আপা?

-ওগো বাপের নামে নাকি কোন মহিলা মামলা করছে। হেই মহিলা নাকি কইছে টুনি, মিনির বাপ নাকি হের পোলার বাপ।

-দুলাভাই কি এখনো থানায়?

-হয়। আমার শাশুড়ি ছাড়াইতে গেছিলো। হেরা কইছে কেস নাকি কোর্টে উঠবো।

-মা, তুই কান্দিস না। শয়তান বেডি মনে হয় জামাইর টাকা দেইখা জামাইরে ফাঁসাইছে।

-মা গো আমার অহন কি হইবো?

-তুই চিন্তা করিস না। আমি থানায় যাচ্ছি দেখি কি করা যায়।

ভাগ্নিকে সান্তনা দিয়ে আফজাল হোসেন মাহমুদকে নিয়ে আবার থানায় গেলো। ভাবনার বিলাপ শুনে শিলা ও ইতিমধ্যে রুম থেকে বের হয়ে এসেছে।যদিও শিলা এইসব নিয়ে বিরক্ত।

-ধ্যাত, বিয়ের পরের দিনই এরকম ঘ্যানঘ্যান শুনতে হচ্ছে। কই আমি নতুন বউ আমাকে সবাই আহ্লাদ করবে। কিন্তু এই ভাবনা নামক ড্রামা কুইন এর ড্রামাই শেষ হচ্ছে না। মাহমুদের সাথেও এখনো কথা হলো না। ও কি আমার ব্যাপারে আবার কাউকে বলে দিবে নাকি? আরেহ না, এটা ওর দ্বিতীয় বিয়ে। এবার ঝামেলা করলে দোষ ওর ওপরেই পড়বে।

শিলার এসব ভাবনার মাঝেই মিলি তার পাশে এসে দাঁড়ালো। শিলা নিজের বোনের দিকে তাকিয়ে কিছুটা ভীমরি খেলো।মিলির চোখমুখ সব ফুলে আছে,দেখে মনে হচ্ছে সারারাত কান্না করেছে।যদিও শিলা আর তাকে কিছু জিজ্ঞেস না করেই পুনরায় নিজের রুমে ফিরে গেলো।

----------------

তনু কাজ কয়েকদিনে বেশ ভালোই এগিয়েছে। নিজের পুরোনো রঙ তুলির পেইজটা আবার রি ওপেন করেছে। তার পুরানো ক্লাইন্টরাও অলরেডি আবার অর্ডার করা শুরু করেছে।

তনু আজ বারান্দায় বসে অর্ডারের শাড়ির কাজ করছিলো। এরমধ্যেই রাহাত এসে তার পাশে বসে। তনু মৃদু হেসে বললো,

-ভাইয়া আজ এতো তাড়াতাড়ি?

-হ্যা। কেমন চলছে তোর কাজ?

-ভালোই। কালকে দুইটা শাড়ির অর্ডার এর ডেলিভারি ডেট। তাই তো হাত চালিয়ে কাজ করছি।
যদিও একটু ভয় লাগছে ক্লাইন্টের পছন্দ হবে তো?

-কি যে বলিস, এতো সুন্দর কাজ কার পছন্দ হবে না। তুই না একদম মায়ের মতো গুন পেয়েছিস। তোর তো মনে নেই তখন তো তুই খুব ছোট। মা তোকে নিজের হাতে সেলাই করে ডিজাইন করা সুন্দর সুন্দর ফ্রক পড়াতো। এই নিয়ে আমি মাঝে মাঝে বেশ বিরক্ত করতাম মাকে।

-কেনো?

-এই যে আমাকে কেনা জামা পড়াতো কিন্তু তোর জন্য নিজের হাতে এতো সুন্দর জামা বানাতো তাই।আমার না খুব জেলাস ফিল হতো।

-হা হা হা। ভাইয়া তুমি অনেক হিংসুটে ছিলে।

তনুর কথায় সায় দিয়ে রাহাত ও জোরে জোরে হাসলো। রিমি পানি নিতে ড্রয়িং রুমে এসেছিলো হাসির শব্দ পেয়ে সেও বারান্দার দিকে এগিয়ে এলো।

-বাবাহ, ভাই বোন মিলে তো হাসির আসর খুলে বসেছো।

-হ্যা, আসো। তুমিও জয়েন করো।

-আমার আর খেয়েদেয়ে কাজ নেই। শোনো আজ আমার শরীরটা ভালো লাগছে না। আজকে ডিনারটা বাহিরে করবো।

-ভাবী তোমার শরীর খারাপ আগে বলবে না? আমি রাতের রান্নাটা করে দিচ্ছি।

-ধ্যাত, তনু শরীর খারাপটা তো বাহানা। বাহিরেই খাবো আমরা আজ।

-একেই বলে মেয়ে মানুষ।

-হ্যা মেয়ে মানুষ, আর এই মেয়ে মানুষটাই আপনার মেয়েকে নিজের মধ্যে নিয়ে ঘুরছে।

-তুমি এতো শিউর কিভাবে যে আমাদের মেয়েই হবে, ছেলেও তো হতে পারে।

-নাহ, আমাদের মেয়ে হবে। যে হবে তোমার আর তনুর মা। মায়ের মতো তোমাদের দুইজনকে আগলে রাখবে।

-ভাবী তাহলে তো ভালোই হয়। ছোটবেলায় মাকে পাইনি তো কি হয়েছে? বড়ো বেলায় না হয় মাকে পাবো।

-ওহ তনু, তোমাকে বলতে ভুলেই গিয়েছিলাম। পরসি আমার আম্মু আব্বু আসবে। আম্মু আব্বু তোমার সাথে দেখা করার জন্য অনেক এক্সসাইটেড হয়ে আছে।

-তাই নাকি। তাহলে তো ভালোই হয়। এক শহরের দুঃ প্রান্তে থেকেও তোমার আব্বু আম্মু আমাদের বাসায় সহজে আসেন না।

-আগে মেয়ের বাবা হও। তারপর বুঝবে যে কেনো আসে না।মেয়ের শশুরবাড়ি বাবা মা দের ঘনঘন আসতে হয় না।

-আমি একটু নির্লজ্জ বাবা হবো। মেয়েকে দেখতে মেয়ের শশুরবাড়ি ঘনঘন যাবো।

-পাগল মানুষ।

ওদের কান্ড দেখে তনু হাসতে লাগলো।দূর থেকে আজানের সুর ভেসে এলো বারান্দায়, আর তনুর হাসির রেশ মিলিয়ে গেলো সন্ধ্যার মৃদু বাতাসে।

-------------

ভাবনার স্বামী রকিবকে থানার।এক কোণে বসিয়ে রাখা হয়েছে। তার চোখেমুখে ক্লান্তি, সারারাত জেগে থাকা মানুষের যেই অবস্থা হয়। পাশেই মাহমুদ আর আফজাল হোসেন দাঁড়িয়ে ওসির সঙ্গে কথা বলছে।

— দেখেন, বিষয়টা স্পর্শকাতর। ওই মেয়েটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে, রকিবের তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো ছিল, কিন্তু পরে সে তাঅস্বীকার করেছে। ছবাদীপক্ষ যদি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান চায়, তাহলে এখনো মীমাংসার সুযোগ আছে।

আফজাল হোসেন শান্তভাবে বললেন,

-দেখেন ওসি সাহেব, রকিব আমার ভাগ্নি জামাই। পরিবারে সুখশান্তি নষ্ট করার জন্য কেউ ইচ্ছা করে এমন করবে না। আমরা একবার ওই মেয়েটির সাথে কথা বলতে চাই, দেখুন ব্যবস্থা করা যায় কিনা।

ওসি মাথা নেড়ে সম্মতি দিলেন,

—ঠিক আছে, আমি ওনাকে বলি এখানে আসতে। উনি রাজি হলে আজই এই কেসের মীমাংসা করা যাবে। তবে আপনারা ওনাকে ফোর্স করতে পারবেন না।

মেয়েটিকে নিয়ে ঢুকল এক মহিলা কনস্টেবল। মেয়েটির বয়স পচিশের কাছাকাছি। পরনে হালকা সবুজ শাড়ি, মুখে ক্লান্তি আর চেপে রাখা রাগ।মেয়েটির নাম আফসানা।রুমে রকিব, মাহমুদ, আফজাল হোসেন, হাসু বেগম আর ভাবনা বসে আছে। ওসি সাহেব মাঝখানে চেয়ার টেনে বসলেন।

— ঠিক আছে, এখন সবাই শান্তভাবে কথা বলবেন। আগে আপনার অভিযোগটা আপনি নিজেই বলুন।

আফসানা ধীরে ধীরে বলতে শুরু করলো,

— আমি রকিবের অফিসে কাজ করতাম। ৩ বছর ধরে ও আমার সঙ্গে সম্পর্ক রাখে। যখন আমার ছেলে গর্ভে আসে তখন ও আমাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয়, কিন্তু পরে বলে আমি তার বউ হওয়ার যোগ্য না। ওর নাকি বাড়িতে বউ আর সন্তান আছে। এমনকি আমার ছেলেটাকেও জারজ বলে গালি দেয়। নিজের ছেলে হিসেবে অস্বীকার করে।

রুমের নীরবতা মাঝেই ভাবনা আঁতকে উঠে বললো,

—এই মেয়ে কি বলছো তুমি? আমার স্বামীর নামে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছো।

রকিব ও নিজের স্ত্রীর কথায় সায় দিয়ে বললো,

— ভাবনা সব মিথ্যে কথা। ওই মেয়ের আমার অফিসে কাজ করত ঠিকই, কিন্তু ও একবার আমার কাছে বেশ বড় এমাউন্টের টাকা ধার চেয়েছিল, আমি দিইনি। তারপর থেকেই হুমকি দিচ্ছিল আমাকে।

মেয়েটি এবার নিঃশ্বাস ছেড়ে ভাবনার দিকে তাকিয়ে বললো,

-আপনি বলছেন আপনার স্বামী নির্দোষ। কিন্তু আপনার স্বামী কি প্রতি সোমবার আর মঙ্গলবার বাসায় থাকে?

-না তো। ঐদিন উনি গাজীপুর এর ফ্যাক্টরিতে যায়।

-মিথ্যা। ঐ দুইদিন ও আমার বাসায় থাকতোএরকম অগণিত প্রমান আছে আমার কাছে।আমাকে কেউ বিশ্বাস করবেন না জানি। অলরেডি আমার ছেলের ডি.এন.এ টেস্ট করতে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসলেই সব সত্যিটা জানতে পারবেন।।দেখুন আপনার ফেরেস্তা স্বামীর কীর্তি।

মেয়েটি নিজের ফোন থেকে কিছু ছবি বের করে ভাবনার দিকে এগিয়ে দিলো।ভাবনা ছবিতে নিজের স্বামীর পর নারীর সাথে গোপন মুহূর্ত দেখতে পেলো। ভাবনা আর সহ্য করতে না পেরে ঐখানেই অজ্ঞান হয়ে গেলো।রুমের ভেতর হুলস্থুল পড়ে গেল। মাহমুদ আর হাসু বেগম মিলে ভাবনাকে সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। ওসি সাহেব তাড়াতাড়ি চেয়ার থেকে উঠে কনস্টেবলকে ইশারা করলেন পানি আনতে। রকিব স্থির হয়ে বসে আছে। তার চোখেমুখে শূন্যতা, মুখে কোনো কথা নেই। আফসানা রুমের এক কোণে দাঁড়িয়ে নিঃশব্দে তাকিয়ে আছে ভাবনার দিকে।

চলবে.......

বুঝতেছিনা আসলেই আপনারা গল্পটা এনজয় করছেন কিনা? তাই লেখার উৎসাহ ও হারিয়ে ফেলছি। শরীর ভালো না তারপর ও আপনাদের জন্য লিখেছি। একটু কষ্ট করে রিয়েক্ট আর গঠনমূলক কমেন্ট করে দিয়েন।

একটু ব্যস্ত ছিলাম কয়েকদিন। শরীরটাও ভালো ছিলো না।  #সুখের_আশায়_বাঁধি_খেলাঘর এর পরবর্তী পর্ব গুলো কাল থেকে পোস্ট করা হবে। ...
10/10/2025

একটু ব্যস্ত ছিলাম কয়েকদিন। শরীরটাও ভালো ছিলো না। #সুখের_আশায়_বাঁধি_খেলাঘর এর পরবর্তী পর্ব গুলো কাল থেকে পোস্ট করা হবে। দেরি হওয়ার জন্য দুঃখিত।

Address

Dhaka

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Moments by Lamia posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share