23/04/2025
সুলতানের ঢাল
লিখেছেন:কবির হোসেন
ইস্তানবুলের রাত যেন কিছুটা বেশি নীরব। বসফরাসের গা ছুঁয়ে চলে যাওয়া হিম বাতাস যেন কোনো অজানা ঝড়ের পূর্বাভাস দিচ্ছে। ঠিক এমন এক রাতে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান স্পিডবোটে বসে গভীর চিন্তায় মগ্ন। তাঁর সামনে একটি মোটা খামের ওপর লেখা: Ultra Confidential: Project Black Tremor Detected – CIA/Internal.
গোপন গোয়েন্দা সূত্রে তিনি জানতে পেরেছেন—তুরস্কের মাটির গভীরে সেট করা হয়েছে এক মার্কিন অস্ত্র, যা ভূমিকম্প সৃষ্টি করতে পারে। অস্ত্রটির নাম Black Tremor। এটি এমন একটি প্রযুক্তি, যা নির্দিষ্ট তরঙ্গের মাধ্যমে কৃত্রিম কম্পন তৈরি করে। বহুদিন আগে ইরান, হাইতি এমনকি ২০২৩ সালের তুরস্কেও এর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হয়েছিল। এবার এর পূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করতে চায় তারা। উদ্দেশ্য একটাই—তুরস্ককে ভীত করা, এরদোয়ানকে থামানো।
এরদোয়ান জানতেন, এই সময় তিনি শুধু একজন রাষ্ট্রপ্রধান নন—তিনি মুসলিম বিশ্বের এক প্রতীক। তাঁর নেতৃত্বে ইসলামি রাষ্ট্রগুলোর মাঝে একটি নয়া ঐক্য গড়ে উঠছে। পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, কাতার, ইন্দোনেশিয়া—সবখানে তাঁর নামে উচ্চারিত হচ্ছে আশা। আর এই “আশা”-ই সহ্য করতে পারছে না পশ্চিমা বিশ্ব।
কিছু সপ্তাহ আগে এরদোয়ান গিয়েছিলেন তুরস্কের একটি প্রাচীন দুর্গে, যেখানে সেলজুকি ও ওসমানী যুগের গোপন প্রযুক্তির নথি সংরক্ষিত। সেই গোপন নথি থেকেই জন্ম নেয় SWORD: Seismic Wave Override and Resistance Device—একটি আধুনিক প্রযুক্তি, যা ভূকম্পন তরঙ্গ শনাক্ত করে তা প্রতিহত করতে পারে। এটি বসানো হয় ইস্তানবুল, কোনিয়া এবং আনাতোলিয়ার তিনটি স্থানে। কিন্তু CIA ঠিক তখনই তাদের ঘুঁটি চালায়।
তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা, রেফিক, গোপনে কাজ করছে আমেরিকার হয়ে। সে পাঠিয়ে দেয় SWORD স্টেশনগুলোর অবস্থান। এরপরই ইউক্রেন ঘাঁটি থেকে ছোড়া হয় একাধিক ড্রোন—লক্ষ্য: SWORD ধ্বংস। কিন্তু তারা জানতো না, SWORD-এর মূল কেন্দ্রটি এরদোয়ান নিজ হাতে স্থানান্তর করেছেন একটি প্রাচীন মসজিদের নিচে।
এই সময়ে এরদোয়ানের পাশে এসে দাঁড়ায় দুটি মুসলিম রাষ্ট্র: ইরান ও বাংলাদেশ। ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা, মেজর জেনারেল আলী রেজা, যিনি পূর্বে গোপন ইলেকট্রনিক যুদ্ধের কৌশল এবং সাইবার আক্রমণ নিয়ে আমেরিকার বিপক্ষে বেশ কিছু সফল অভিযান পরিচালনা করেছেন, এবার নিজের ঝুঁকি নিয়ে পাঠান “নাজম” নামক একটি ইলেকট্রনিক কাউন্টার-পালস ইউনিট।
তার আগে একটি দৃশ্য: তেহরান, গভীর রাত। মেজর রেজা তাঁর অফিসে এরদোয়ানের বার্তা হাতে নিয়ে বলেন, “ওরা শুধু এরদোয়ানকে ধ্বংস করতে চায় না, ওরা মুসলিম আত্মবিশ্বাসকে ধ্বংস করতে চায়।” তিনি আদেশ দেন, “নাজম অপারেশন শুরু করো। আমাদের ভাইদের ঢাল হতে হবে এবার।”
অন্যদিকে, বাংলাদেশের আর্মি হেডকোয়ার্টারে একটি সিক্রেট মিটিং চলছে। ব্রিগেডিয়ার তাহসিন, যিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সিগন্যাল কোরের নেতৃত্ব দেন, তিনি চারজন প্রযুক্তিবিদকে তুরস্কে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। তাঁদের একজন—ক্যাপ্টেন জান্নাত—সফটওয়্যার সিকিউরিটির বিশেষজ্ঞ। তুরস্কে পৌঁছে তিনি SWORD-এর মূল কোডে ঢুকে বলেন, “এই কোডে এখন বাঙালি ছোঁয়া লাগল। এখন ভূমিকম্প এলেও ধাক্কা খাবে।”
এই আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রযুক্তিকে করে আরও অপরাজেয়। ইরানের নাজম ইউনিট তরঙ্গ প্রতিরোধে সাহায্য করে, আর বাংলাদেশের টিম পুরো সিস্টেমে AI-বেইজড রেসপন্স যুক্ত করে।
২৪ ঘণ্টা পর শুরু হয় ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে ৭.৮। পুরো বিশ্ব ধারণা করে—তুরস্ক ধ্বংস হয়ে গেল! কিন্তু বিস্ময় তখনই সৃষ্টি হয়, যখন দেখা যায়—বাড়িগুলো দাঁড়িয়ে আছে, প্রাণহানি নেই, ক্ষয়ক্ষতিও তুলনামূলকভাবে নেই। এক রহস্যজনক প্রযুক্তি যেন ঢাল হয়ে রক্ষা করল গোটা দেশকে।
CNN বলে: “A Miracle in Turkey!” BBC বলে: “Why did a 7.8 quake not collapse Istanbul?” আর প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন: “তারা ভেবেছিল, আমাদের মাটি কাঁপিয়ে দিয়ে তারা আমাদের ভবিষ্যৎ কাঁপিয়ে দেবে। কিন্তু তারা জানে না, আমরা কেবল কংক্রিটের ওপর দাঁড়িয়ে নেই—আমরা ঈমানের ওপর দাঁড়িয়ে আছি।”
তুরস্ক কেবল ধ্বংস এড়ায়নি—তারা প্রমাণ করেছে, আধুনিক প্রযুক্তি আর আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ মিলেই হয় আসল শক্তি। আর মুসলিম বিশ্ব প্রথমবারের মতো বুঝে গেল—তাদের একটি ঢাল আছে, আর সেই ঢাল হলো ঐক্য, প্রযুক্তি ও বিশ্বাস।
CIA-র অপারেশন ব্যর্থ হয়। আমেরিকায় অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু হয়—কে泄露 করেছে অস্ত্রের প্রকৃত ক্ষমতা? তুরস্ক সারা মুসলিম দুনিয়ায় নতুন নেতৃত্বের মুখ হয়ে ওঠে।
বিশ্ব জানে না, যুদ্ধ এখন আর কেবল আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হয় না। কৃত্রিম ভূমিকম্প দিয়েও যুদ্ধ করা যায়। কিন্তু তুরস্ক দেখিয়ে দিল—ঈমান, জ্ঞান আর দৃঢ়তা থাকলে সেই ভূমিকম্পও ঢেউ তুলে যেতে পারে, কিন্তু গুঁড়িয়ে দিতে পারে না।
তারা সুলতানের মতোই দাঁড়িয়ে থাকে। আর পৃথিবী দেখেছে, সেই সুলতানের ঢাল ভাঙা যায় না।