28/12/2021
#জ্বীনমানব
#লেখক:মেহরাব হোসেন নীল (Me)
#পর্ব:০২
-জ্বীনিতারার এই রশ্মিই নিয়ে আমাদের জ্বীনরাজ্যের আরেকজন উত্তরাধিকারীর কাছে।(আয়না দাদীমা)
সেই রশ্মি পৃথিবীতে যেতে থাকে এবং গিয়ে পৌছায় এক ছেলের হাতের জ্বীনিচিহ্নের উপর।সে আর কেউ নয় সেই হলো মেহরাব (আমি)।সেই রশ্মি তারপর মেহরাবের হাতের জ্বীনিচিহ্ন থেকে প্রতিফলিত হয়ে গিয়ে পৌছায় জ্বীনিতারার মধ্যে এবং আকাশে রেখে আসে এক রেখা।যে সময় এটি ঘটে সে সময় মেহরাব(আমি) ঘুমিয়ে ছিলো।তাই সে কিছু বুঝতে পারেনি।
-এ রেখার মাধ্যমে তোমরা পৌছতে পারবে সেখানে যেখানে তোমাদের ভাই রয়েছে।(ইশফাতের মা)
-হ্যা দাদুভাই। তোমার মা ঠিক বলেছে।(আয়না দাদীমা)
-কিন্তু দাদীমা আমি চিনবো কিভাবে আমার ভাইকে?(ইশফাত)
-দাদুভাই তোমার ভাইয়ের হাতেও তোমার হাতের মতো জ্বীনিচিহ্ন থাকবে।(আয়না দাদীমা)
-হ্যা দাদীমা। আমি বুঝতে পেরেছি। চলুন আয়নারা। (ইশফাত)
-চলো ইশফাত।(আয়নারা)
-আল্লাহ তোমাদের সহায় হোক।(জ্বীনি দাদীমা ও ইশফাতের মা)
এরপর আয়নারা ও ইশফাত সেই চিহ্নের পিছু পিছু জ্বীনিশক্তি দ্বারা উড়ে যাচ্ছে। একসময় তারা উত্তরের দিকে চলে আসে এবং সেখানে রেখার শেষ বিন্দু দেখতে পায়।
-আয়নারা আমাদের সকলকে আলাদা হয়ে চারিদিকে খুজতে হবে এবং প্রত্যেক ছেলের হাতে দেখবেন এই চিহ্ন আছে কিনা। যে ছেলের হাতে এই চিহ্ন থাকবে সেই হলো আমার ভাই আর জ্বীনবংশের আরেকজন উত্তরাধীকারী। (ইশফাত)
-ঠিক আছে ইশফাত।(আয়নারা)
এরপর আয়নারা একদিকে আর ইশফাত অন্যদিকে চলে যায় এবং খুজতে থাকে মেহরাবকে। একসময় আয়না এবং ইশফাত একটা এলাকার মধ্যে একত্রিত হয়।
-আয়নারা পেলেন আমার ভাইকে? (ইশফাত)
-না ইশফাত। কোনো ছেলের হাতেই সেই চিহ্ন দেখতে পেলাম না। (আয়না)
-আমাদের খুব তাড়াতাড়ি খুজতে হবে আমার ভাইকে কারণ আর মাত্র কয়েকদিন পরেই আমার ভাইয়ের ১৮ বছর পূর্ণ হবে।
-আচ্ছা ইশফাত জ্বীনিতারা আলো যেই পর্যন্ত এসেছে সেটা কিন্তু একটা বাগান আর এই বাগানের কাছাকাছি জনবসতি বলতে এই জায়গাটাই আছে বাকিগুলো দূরে দূরে। হতে পারে এই জায়গাই আছে তোমার ভাই। (মস্তি আয়না)
-ঠিক বলেছেন মস্তি আয়না। আমাদের তাহলে এখানেই ছদ্দবেশে কোথাও থাকতে হবে। আর আয়নারা কেউ এখানে আপনারা আপনাদের আসল পরিচয় কাউকে বলবেন না। বলবেন আমি আপনাদের ভাই আর আপনারা আমার আপু।
-ঠিক আছে ইশফাত।(আয়না)
-নিজেদের ছদ্দবেশ ধারণ করুন সবাই আপনাদের শক্তি দ্বারা। (ইশফাত)
এরপর ইশফাত ও আয়নারা নিজেদের শক্তি দ্বারা ছদ্দবেশ ধারণ করে। তারপর তারা সেই এলাকায় প্রবেশ করে এবং তাদের সাথে দেখা হয় এক মহিলার। সেই মহিলাকে দেখে ইশফাত তাকে জিজ্ঞাসা করে
-আসসালামু আলাইকুম। আপনাদের এখানে কোনো বাসা আছে কি যেটা ভাড়া হবে?(ইশফাত)
-ওয়ালাইকুমুসসালাম। হুম বাসা আছে একটা। তা তোমরা কতজন থাকবে?(মহিলাটি)
-আমি থাকবো আর আমার ৫ বোন থাকবে।(ইশফাত)
-ও আচ্ছা। তাহলে চলো তোমাদের বাসা দেখাচ্ছি এসো আমার সাথে।(মহিলাটি)
তারপর ইশফাত ভাইয়া ও আয়নারা সেই মহিলাটির সাথে যেতে থাকে। সেই মহিলা তাদের বাসা দেখিয়ে দেয় এবং বাসাটি ইশফাত ও আয়নারা পছন্দ করে। তারপর তারপর তারা সেই বাসায় থাকবে সিদ্ধান্ত নেয়। সেই মহিলাটি রাতের খাবারে তাদেরকে ইনভাইট করে। তারা প্রথমে রাজি না হলেও মহিলাটির অনুরোধে রাজি হয়ে যায়। তারপর তারা রাতের বেলা মহিলাটির বাড়ি যায়। মহিলাটি তাদের আপ্যায়ন করতে থাকে এবং বসতে বলে। ইশফাত আশেপাশে তাকিয়ে একটা ছবির দিকে তার চোখ আটকে যায় কারণ সেই ছেলেটির মুখটা তার অনেক চেনা চেনা লাগে। সে মহিলাকে জিজ্ঞাসা করে ছেলেটি সম্পর্কে। পরে মহিলাটি বলে এটা তার ছেলে মেহরাব। মেহরাব নাম শুনে ইশফাত ভাইয়া ও আয়নারা খানিকটা স্থির হয়ে যায়। তাদের স্তব্ধ থাকা দেখে মহিলাটি বলল, কি হলো?তোমরা বসো?আমি তোমাদের জন্য খাবার নিয়ে আসছি।
আয়নারা বসে কিন্তু ইশফাত এখনো তাকিয়ে আছে ছবিটির দিকে। মনে হচ্ছে ছবিটির ছেলেটি তার খুব কাছের।
এমন সময় বাইরে থেকে একটা ছেলে বলল, মা মা আমি চলে এসেছি। ছেলেটির কন্ঠ ইশফাতের হ্রদয়ে গিয়ে বিধলো। কেনো এতো পরিচিত মনে হচ্ছে ছেলেটাকে ইশফাতের সে বুঝতে পারছে না।
মহিলাটি তখন বাইরে থেকে আসতে আসতে বললো, বাবা এসেছিস তুই?
ছেলেটি বলল,হ্যা মা। আমি এসেছি।
মহিলাটি বলল,আয় দেখ কারা এসেছে?তোর এক ভাইয়া ও আপুরা এসেছে এবং তারা এখন থেকে আমাদের উপরতলায় থাকবে। আচ্ছা বাবা তোমার আর তোমার বোনদের নামটাই তো জানা হলো না।
(ইশফাতকে উদ্দেশ্য করে)
-আমি ইশফাত। আর আমার বোনদের নাম হলো মস্তি,জলা,পানি,বাতাস,ধ্বনি।
-ও আচ্ছা। অনেক আলাদা ধরনের সুন্দর নামগুলো তোমার বোনদের।
-আচ্ছা এ হলো আমার ছেলে ইশফাত আর ইশফাত এ হলো তোর ইশফাত ভাইয়া। (মহিলাটি)
-আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া।
-ওয়ালাইকুমুসসালাম। (ইশফাত)
তারপর ছেলেটি এক হাত বাড়িয়ে দিলো ইশফাতের দিকে হাত মিলানোর জন্য। ছেলেটির হাত স্পর্শ করার সাথে সাথে তার কেমন যেনো অনুভূত হলো। মনে হলো এই ছেলের সাথে সে আগেও কথা বলেছে।
#চলবে_________