01/10/2025
# #❤️"এক মসজিদের দরজায় বদলে গেল জীবন।ঘৃণাকে জয় করল ভালোবাসা"❤️ # #
রিচার্ড ম্যাককিনি,একজন প্রাক্তন মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা।
তিনি প্রায় 25 বছর মার্কিন সেনাবাহিনীতে দায়িত্ব পালন করেন।
আফগানিস্তান,ইরাকসহ অন্যান্য মুসলিম প্রধান দেশে যুদ্ধ করেছেন তিনি। সেই যুদ্ধের অভিজ্ঞতা আর দীর্ঘদিনের প্রোপাগান্ডা তার মনে মুসলিমদের প্রতি প্রচন্ড ঘৃণা তৈরি করেছিল।রিচার্ডের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল ইসলাম হলো সহিংসতার ধর্ম। আর মুসলিমরা আমেরিকার জন্য হুমকি। সেই ঘৃণায় এক সময় তাকে ঠেলে দিয়েছিলো ভয়ংকর পরিকল্পনার দিকে। একটি মসজিদ উড়িয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছিলেন তিনি।
কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সেই ষড়যন্ত্রই পরিণত হয় তার জীবনের সবচেয়ে বড় আশীর্বাদে। তিনি নিজেই হয়ে যান মুসলিম।
তিনি আফগানিস্তান থেকে আহত অবস্থায় ফিরে আসার পর নিজের ভিতরে জমতে থাকা ঘৃণা ও দুঃখ ভুলতে পারছিলেন না।
বিবিসি তে দেওয়া সাক্ষাৎকারটিতে তিনি বলেন," ইসলামি সকল সমস্যার মূল।"
সিএন এর প্রতিবেদনে বলা হয় যে এই ঘৃনার ফলেই তিনি ঠিক করেন যে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানার একটি মসজিদে তিনি বোমা হামলা করবেন। তিনি মনে করেন যে মুসলিমরা আমেরিকাকে ধ্বংস করবে। তাই আগে থেকেই তাদেরকে ধ্বংস করতে হবে।
টু ওয়ার্ডস ইটারনীতিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রিচার্জ জানান, "সামরিক অভিজ্ঞতা কে কাজে লাগিয়ে তিনি নিজেই একটি শক্তিশালী বোমা তৈরি করেন। "
কিন্তু পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগে সেই মসজিদে যান তিনি। উদ্দেশ্য ছিল ভেতরের অবস্থান বোঝা। সেখানে গিয়ে যা হলো তা তাকে সম্পূর্ণ বদলে দেয়। তিনি আশা করেছিলেন ভেতরে গিয়ে বৈরী আচরণ দেখবেন। কিন্তু মুসলিমরা তাকে স্বাগত জানালেন, চা খাওয়ালেন কথা বললেন। এমনকি তার সামরিক পটভূমি জানার পরও তাকে আলিঙ্গন করলেন।
বিবিসি রেডিওকে দেয়া সাক্ষাৎকারে রিচার্ড বলেন, "আমি ওদের কাছে ঘৃণা নিয়ে গিয়েছিলাম কিন্তু ওরা আমাকে ভালোবাসা দিল "।
মুসলিমদের এই ভালোবাসা তাকে ভিতর থেকে নাড়িয়ে দেয়। রিচার্ড নিজের সিদ্ধান্তকে প্রশ্ন করতে থাকেন,"যদি এরা সত্যিই এত খারাপ হতো, তবে আমার প্রতি কেন এত মমতা দেখাবে "?
এরপর থেকেই তিনি ইসলাম সম্পর্কে পড়াশোনা শুরু করেন। সেই মসজিদ থেকে তাকে একটি ইংরেজি অর্থসহ কুরআন দেওয়া হয়। সেটা পড়ে তিনি জানলেন তাওহীদের ধারণা,"আল্লাহ এক তার কোন শরীক নেই"। আর এই ধারণা তার মনে গভীর প্রভাব ফেলে। পাশাপাশি তিনি দেখলেন পশ্চিমা মিডিয়ায় ইসলাম সম্পর্কে যা বলা হয় কুরআনে ঠিক তার উল্টো চিত্র।
তার মনে গভীর দাগ কাটে সূরা মায়েদার ৩২ নম্বর আয়াত।সেখানে বলা হয়েছে,"যদি কেউ কাউকে হত্যা করে -হত্যার অপরাধ বা পৃথিবীতে ফিতনা সৃষ্টির অপরাধ ছাড়া তাহলে সে যেন সমগ্র মানবজাতিকেই হত্যা করল। আর যদি কেউ একটি প্রাণ রক্ষা করল, সে যেনো সমগ্র মানবজাতিকে রক্ষা করল "
ধীরে ধীরে তার কাছে স্পষ্ট হতে থাকে ইসলাম সন্ত্রাসের নয় বরং শান্তির ধর্ম। অবশেষে একদিন তিনি সেই মসজিদের ইমামের কাছে গিয়ে নিজের মনোভাব প্রকাশ করেন। এবং কালেমা পড়ে মুসলিম হয়ে যান।
বিবিসির অডিও প্রোগ্রাম "strainger at the gate "তিনি বলেন," আমি কালেমা পড়ার সময় মনে হলো যেন বুক থেকে একটা পাহাড় নেমে গেল। "
তিনি যখন ইসলাম গ্রহণ করেন তখনো তার স্ত্রী ও সন্তান খ্রিস্টান ছিলেন। কিন্তু বেশ কিছু সময় পর তারা দুজনেও ইসলাম গ্রহণ করেন। রিচার্ড ম্যাককিনি এখন আমেরিকার বিভিন্ন জায়গায় বক্তৃতা দেন। মানুষকে জানান ঘৃণা থেকে কিভাবে ভালোবাসায় ফেরা যায়।
তার জীবনের গল্প থেকে তৈরি ডকুমেন্টারি" stranger at the gate"অস্কারে মনোনীত হয়েছিল। এই গল্পে স্পষ্ট হয়ে যায় রিচার্জ ম্যাককিনি যখন ঘৃণায় অন্ধ হয়ে ভুল পথে পা বাড়াতে যাচ্ছিলেন তখনই মহান আল্লাহ তার সামনে মসজিদের দরজা খুলে দিলেন। যেখানে তিনি পেলেন ভালোবাসা আর শান্তির শিক্ষা। আজ তিনি একজন মুসলিম আর তার কন্ঠে শোনা যায় কৃতজ্ঞতার সুর