04/05/2025
পর্ব ১: নীরব দুপুর
নাজিম আর মায়া—দুজনের আট বছরের সংসার।
প্রথম কয়েক বছর মায়া প্রায়ই বলত,
“তুমি রাগ করলেও আমি হাসব, যাতে তুমিও হাসো।”
নাজিম বিরক্ত হতো, তবু ভিতরে ভিতরে ভালো লাগতো।
কিন্তু সংসার যত পুরনো হয়েছে, তত সংলাপ কমেছে।
নাজিম অফিস থেকে ফিরেই ফোনে মুখ গুঁজে থাকে।
মায়া রান্না করে, টেবিলে রেখে ঘুমিয়ে পড়ে।
কারো কাছে আর কারো অভিযোগ নেই।
শুধু অনেক নীরবতা।
একদিন দুপুরে মায়া একটা চিঠি রেখে চলে গেলো।
> “আমি যাচ্ছি। আমার ভেতরে একটা শূন্যতা জন্মেছে—তুমি দেখতেও পাওনি। কোথায় যাচ্ছি, জানি না। শুধু জানি, তোমার থেকে দূরে থাকলেই বুঝতে পারব, তুমি আমাকে আর চাই কি না।”
নাজিম চিঠিটা হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল। তারপর ফ্রিজ খুলে এক গ্লাস পানি খেল।
চুপ করে বসে রইল সারাদিন। কারো কাছে কিছু বলল না।
................
পর্ব ২: মায়ার ভুল
মায়া চলে যায় এক বান্ধবীর বাসায়।
দেখে, তার বান্ধবীরও সংসারে অশান্তি, কিন্তু তাও তারা একসাথে।
মায়া ধীরে ধীরে বুঝতে থাকে—সব বাড়িতে ঝড় আসে।
কিন্তু কেউ কেউ জানালা বন্ধ করে বসে থাকে, কেউ কেউ বাড়ি ছেড়ে দেয়।
একদিন বিকেলে মায়া বৃষ্টি দেখে।
নাজিমকে খুব মনে পড়ে।
তার হাসি, চা বানানোর অদ্ভুত স্টাইল, আর সেই অলস বিকেলগুলো।
একটা ভেতরের টান অনুভব করে।
তাকে ঘিরেই যে এতগুলো বছর পার করেছে, সেই মানুষটাকেই এত সহজে ফেলে চলে আসা—ভুল ছিল।
রাতেই বাসে চড়ে ফেরে।
বাসায় পৌঁছেই দেখে—নাজিম ঘুমিয়ে আছে সোফায়। খাবার টেবিলে একটা প্লেট, তার প্রিয় লেবু ভর্তা আর মুগ ডালের ঘ্রাণ।
.................
পর্ব ৩: ফিরে আসা, নিঃশব্দে
মায়া দরজা খুলে ঘরে ঢুকতেই নাজিম চোখ খুলল।
কিছু বলেনি। শুধু তাকিয়ে রইল।
মায়া আস্তে বলল, “চলে যাওয়া মানে ভুল বোঝা, ঠিক না?”
নাজিম বলল না কিছুই। উঠে গেল রান্নাঘরে।
মায়া ভাবল, হয়তো এখনো রাগ।
কিন্তু একটু পর সে ফিরে এলো—হাতে এক কাপ চা।
মায়ার দিকে বাড়িয়ে বলল,
“চা বানাতে ভুলে গেছি তুমি কত চামচ চিনি খাও। বলো।”
মায়ার চোখ ভিজে উঠল।