16/05/2025
ইসলামি নীতিমালায় মানব সৃষ্টির সূচনা
মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধভাবে বাস করা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। মহান আল্লাহ তা'আলা মানুষের মধ্যে সঙ্গপ্রিয়তা সৃষ্টি করেছেন। তিনি আদম আলাইহিস সালাম ও হাওয়া আলাইহাস সালামকে সৃষ্টি করে এক পর্যায়ে তাঁর পরিকল্পনা অনুযায়ী পৃথিবীতে পাঠান। তিনি মানব সৃষ্টির উষালগ্ন থেকেই মানুষের বংশবৃদ্ধি, বিকাশ ও বসবাসের এ ধারা নির্ধারণ করে দিয়েছেন।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন-
"হে মানুষ! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় করো, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি হতে সৃষ্টি করেছেন। আর তিনি সৃষ্টি করেছেন সেই ব্যক্তি থেকে তার জোড়া। এরপর তাদের দুজন থেকেই ছড়িয়ে দিয়েছেন অসংখ্য নারী-পুরুষ।"(আল—কুরআন)
মানব সমাজ সম্পর্কে ইসলামের মূলনীতি হচ্ছে পৃথিবীতে সকল মানুষই সমান এবং ভাই ভাই। তারা সবাই একই বংশ থেকে সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ হিসেবে মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই। সকল মানুষ হজরত আদম আলাইহিস সালাম-এর সন্তান এবং আদম মাটি থেকে সৃষ্ট। পরবর্তীতে আল্লাহ তাদের বিভিন্ন জাতি ও গোষ্ঠীতে বিভক্ত করেছেন।
ইসলাম মানুষকে জাতি, বর্ণ, ভাষা ও সংস্কৃতির বিভিন্নতার কারণে বিভক্ত করে না; বরং ধর্মের ভিত্তিতে মানুষ দুটো সমাজে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এর একটি ইসলামি সমাজ আর অপরটি হচ্ছে সাধারণ সমাজ। ধর্মের ভিত্তিতে মানব সমাজ বিভক্ত হলেও মূলত মানব সমাজের উৎপত্তি একই মূল থেকে আগত।
পৃথিবীতে মানুষের বসবাসের সূচনালগ্ন থেকে প্রতিকূল পরিবেশ ও হিংস্র জীবজন্তুর আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা এবং পরস্পরের সহযোগিতার চিন্তা থেকেই মানুষ সম্মিলিতভাবে বসবাস শুরু করে। পরবর্তীকালে বাস্তব পরিস্থিতি, অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান এবং সামাজিক পরিবর্তনের প্রভাব মানুষের এ সম্মিলিত বসবাসের ধারাকে সমাজে রূপান্তরিত করে।
ঘর নির্মাণ, কৃষিকাজ, ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ, সমাজ সম্পর্কে মানুষের ধারণা একটি স্থায়ী কাঠামো লাভ করে। এ সংঘবদ্ধ জীবনে শান্তি-শৃংখলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তারা বিভিন্ন নিয়ম-কানুন, রীতিনীতি তৈরি করে। মানুষ নিজস্ব প্রয়োজন পূরণ করতে গিয়েই সমাজবদ্ধভাবে বসবাস করে।