Rudhi Multimedia

Rudhi Multimedia আমাদের এই পেজটিতে লাইভ ভিডিও, বিনোদনমূলক শর্টফিল্ম,নাটক দেয়া হয়
পেজটি ফলো করে পাশে থাকবেন।

07/08/2025

প্রবাসীর কান্না
*
সন্ধ্যার আকাশটা কেমন যেন আজ বেশিই লাল। সূর্যটা ডুবছে, আর তার শেষ আলোটুকুও যেন কেমন বিষণ্ণ দেখাচ্ছে। ঠিক যেমন আমার মনটা। এই ফ্ল্যাটের চার দেয়ালে বসে আমার জীবনটা কেমন যেন একটা খাঁচায় বন্দী পাখির মতো। পাখির মতো ডানা আছে, কিন্তু উড়বার স্বাধীনতা নেই।

সেই কবেকার কথা, যখন তুমি আর আমি একই সাথে পথ চলতাম, হাতে হাত রেখে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতাম। তোমার মুখের হাসি, তোমার খুনসুটি আর রাগ—সবকিছুই ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর অংশ। সেগুলোকে বাস্তব রূপ দিতেই আমার এই দেশ ছাড়া। কত রাত জেগে কাজ করেছি, কত কষ্ট করেছি, শুধু তোমাকে ভালো রাখার জন্য। আমার মনে ছিল একটাই আশা, একদিন আমার এই কষ্টগুলো তোমাকে সুখ দেবে।

প্রতিদিন যখন ফোনের রিংটোন বেজে উঠত, আমি অস্থির হয়ে উঠতাম। তোমার কণ্ঠের জন্য আমার মনটা উন্মুখ হয়ে থাকত। তোমার "কেমন আছো?"—এই দুটি শব্দে আমার দিনের সব ক্লান্তি দূর হয়ে যেত। তোমার ভালোবাসা ভরা কথাগুলো আমার জীবনের একমাত্র সঙ্গী ছিল।

কিন্তু সেই কণ্ঠটা এখন আর নেই। হঠাৎ করেই সব নীরব হয়ে গেল। ফোনটা বন্ধ, নম্বরটা অচল। সেই ফোন আর কখনো খুলল না। আমার বুকটা ফেটে যায় যখন ভাবি, কেন এমন হলো? কী দোষ ছিল আমার? এতদিনের সম্পর্ক, এত ভালোবাসা, এত স্বপ্ন—সব কি মিথ্যা ছিল?

আজও যখন রাত হয়, আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে তোমার সেই মুখটা। সেই হাসিমাখা মুখটা এখন আমার কাছে একটা ধাঁধার মতো মনে হয়। আমি জানি না তুমি এখন কেমন আছো, কোথায় আছো। শুধু জানি, আমার কষ্টগুলো আজও আমার বুকে চাপা পড়ে আছে। এই শহরে হাজারো মানুষের ভিড়ে আমি একা। আমার পাশে আজ কেউ নেই, শুধু আমার অতীত আর কিছু স্মৃতি।

তুমি হয়তো ভালো আছো। কিন্তু আমি আজও তোমার অপেক্ষায়। আজও আমি সেই পুরোনো দিনে ফিরে যেতে চাই, যখন তুমি আর আমি পাশাপাশি ছিলাম, যখন আমার কষ্টগুলো ছিল তোমার হাসির আড়ালে ঢাকা। কিন্তু এখন, আমার সবটুকু কষ্ট শুধু আমারই। আর এই কষ্টের কোনও শেষ নেই। এই কষ্টের নাম প্রবাসীর কান্না।

26/07/2025

মায়ের শরীরের ঘ্রাণ
*
শহরের এক কোণে, যেখানে রাতের নিয়ন আলো পৌঁছাতে পারে না ভালো করে, সেখানেই রেশমার কুঁড়েঘর। রেশমা, যার শরীরটা ছিল তার সন্তানদের মুখের আহার জোগানোর একমাত্র পুঁজি। দিনের আলোয় সে ছিল সাধারণ এক মা, ময়লা শাড়ি আর রুক্ষ চুলে। কিন্তু রাতের আঁধারে সে হয়ে উঠত ভিন্ন এক নারী, যে নিজের দেহটাকেই বেচত সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য। প্রতিটা বিনিময়, প্রতিটা স্পর্শ, তার কাছে কেবল কয়েকটা টাকার অঙ্ক ছিল। এই টাকার গন্ধটা তার কাছে গোলাপের মতো না হলেও, সন্তানদের পেটের জ্বালা মেটানোর সঞ্জীবনী শক্তি ছিল।

রেশমার তিন সন্তান—বড় মেয়ে খুশি, মেজ ছেলে রহিম আর ছোট মেয়ে সালমা। তারা জানত না তাদের মায়ের আসল পেশা কী। তারা শুধু জানত মা রোজ রাতে কোথাও যায়, আর সকালে ফিরে আসে রুটি, তরকারি আর নতুন জামাকাপড় নিয়ে। তাদের চোখে মা ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী নারী। মায়ের হাতে তৈরি করা রুটির স্বাদ ছিল তাদের কাছে অমৃতের সমান।

একদিন খুশি স্কুল থেকে ফিরে দেখল, মা খাটে শুয়ে কাঁদছে। খুশির কচি মনে আঘাত লাগল। সে মায়ের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, "মা, কাঁদছ কেন?" রেশমা কোনো উত্তর দিল না, শুধু খুশিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। সে কি করে বলবে তার ভেতরের কষ্টটা? সমাজ তাকে যে চোখে দেখে, সেই দৃষ্টিটা কি করে তার নিষ্পাপ সন্তানদের বোঝাবে?

রহিম একটু বড় হয়েছে। সে মাঝে মাঝে খেয়াল করে, মায়ের শরীরে কেমন একটা অচেনা গন্ধ। অন্য মায়েদের গায়ে যেমন তেল-সাবানের স্নিগ্ধ গন্ধ থাকে, মায়ের গায়ে তেমনটা নয়। কেমন যেন মিশ্র একটা গন্ধ—ঘাম, পারফিউম আর এক অজানা কিছুর মিশেল। রহিম একদিন তার বন্ধুকে জিজ্ঞেস করল, "তোর মায়ের গায়ে কেমন গন্ধ?" বন্ধু অবাক হয়ে বলল, "কেন, মায়ের গায়ে মায়েরই গন্ধ থাকে!" রহিমের ছোট্ট মনটা খচখচ করত। এই গন্ধটা তাকে ভাবাতো, কিন্তু সে মাকে কিছু বলতে পারত না।

সালমা সবার ছোট। সে মায়ের আঁচল ধরে ঘুরতে ভালোবাসে। মায়ের নরম স্পর্শ তার কাছে সবচেয়ে প্রিয়। একবার সালমার জ্বর হয়েছিল। রেশমা সারারাত জেগে মেয়ের কপালে জলপট্টি দিয়েছিল, কোলে নিয়ে ঘুম পাড়িয়েছিল। সেই রাতে সালমা অনুভব করেছিল, মায়ের শরীর থেকে এক অদ্ভুত উষ্ণতা ছড়াচ্ছে। সেই উষ্ণতা ছিল ভালোবাসার, ত্যাগের। সালমার কাছে মা মানেই সেই উষ্ণতার ঘ্রাণ, যা সব ভয় দূর করে দেয়।

তারা বড় হতে লাগল। খুশি বুঝতে শিখল সমাজের কঠিন নিয়মগুলো। রহিমের কানে আসতে লাগল ফিসফাস। সালমাও দেখল মায়ের চেহারায় কেমন এক ক্লান্তি। তাদের মনে প্রশ্ন জাগত, কিন্তু মায়ের চোখের দিকে তাকালে সব প্রশ্ন যেন উবে যেত। তাদের মনে মায়ের প্রতি কোনো রাগ ছিল না, কোনো অভিযোগ ছিল না। ছিল শুধু অপার ভালোবাসা আর এক অদ্ভুত শ্রদ্ধা।

একদিন রেশমা অসুস্থ হয়ে পড়ল। শরীরটা আর চলছিল না। বিছানায় শুয়ে রেশমা দেখল তার সন্তানেরা তাকে ঘিরে বসে আছে। খুশি মায়ের কপালে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে, রহিম মায়ের হাত ধরে আছে শক্ত করে, আর সালমা মায়ের আঁচল মুখে নিয়ে চুপ করে বসে আছে। তাদের চোখে কোনো ঘৃণা নেই, কোনো প্রশ্ন নেই। আছে শুধু উদ্বেগ, আর গভীর মমতা।

রেশমা বুঝতে পারল, তার সন্তানেরা তার পেশা নিয়ে কোনো দুঃখ পুষে রাখেনি। তাদের কাছে মা মানে শুধু মা-ই। তাদের চোখে, মায়ের শরীরটা ছিল তাদের পেটের আহার জোগানোর এক পবিত্র মাধ্যম। তাদের কাছে মায়ের কষ্টটা অজানা ছিল না। তারা হয়তো মায়ের কাজটা সরাসরি জানত না, কিন্তু তারা অনুভব করতে পারত মায়ের আত্মত্যাগ। মায়ের প্রতি তাদের ভালোবাসা কোনো শর্ত মেনে ছিল না। তারা মায়ের শরীরের সেই ঘ্রাণে মিশে থাকা কষ্ট, ত্যাগ আর ভালোবাসাকেই অনুভব করত। তাদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য মা যে যন্ত্রণা সহ্য করেছে, সেই যন্ত্রণাই তাদের কাছে ছিল ভালোবাসার অন্য এক প্রকাশ।

মায়ের অসুস্থ শরীরটার পাশে বসে তিন সন্তানের মন ভরে উঠল এক অদ্ভুত কৃতজ্ঞতায়। তাদের কাছে মায়ের শরীরটা বিক্রির পণ্য ছিল না, ছিল তাদের জীবনের উৎস, তাদের অস্তিত্বের ঠিকানা। আর এটাই ছিল তাদের মা সম্পর্কে তাদের সত্যিকারের অনুভব—এক নিরবচ্ছিন্ন ভালোবাসা, যা সব সামাজিক ধারণার ঊর্ধ্বে

26/07/2025

ছায়াপথের কারিগর
*
আকাশছোঁয়া ইমারতগুলোর ফাঁকে, যেখানে সূর্যালোকও খানিকটা ম্লান হয়ে আসে, সেখানেই বাস করতো ওসমান। না, তার পরিচয় কোনো অভিজাত ব্যক্তি হিসেবে নয়, বরং শহরের আনাচে-কানাচে, লোকচক্ষুর আড়ালে তার পরিচিতি ছিল 'ছায়াপথের কারিগর' হিসেবে। তার হাতের জাদুতে কত কি যে উধাও হয়ে যেত, তার ইয়ত্তা নেই। লোকে যা হারাতো, ওসমান তা খুঁজে নিতো, তবে নিজের পকেটে ঢোকানোর জন্য। তার এই 'পেশা'র পেছনে একটাই কারণ ছিল – তার তিন সন্তান, সাজিদ, ফারিয়া আর ছোটন। সে তাদের মানুষের মতো মানুষ করতে চেয়েছিল। সমাজের চোখে সম্মানের আসনে বসাতে চেয়েছিল, যেখানে সে নিজে কোনোদিন পৌঁছাতে পারেনি।

ওসমান দিনরাত পরিশ্রম করত, চুরি করত। শীতের রাতে যখন শহর ঘুমে আচ্ছন্ন থাকত, তখন ওসমান জেগে থাকত। তার লক্ষ্য থাকত ভালো স্কুল, ভালো খাবার, ভালো পোশাক। সমাজের সব বাধা পেরিয়ে তার সন্তানেরা যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে, এই ছিল তার একমাত্র ব্রত। সন্তানদের সামনে সে ছিল একজন কঠোর, তবে আদর্শ পিতা। তার ছেঁড়াফাটা পোশাক, হাতের দাগগুলো সন্তানরা কখনও প্রশ্ন করেনি, কারণ তারা জানত বাবা তাদের জন্য কতটা ত্যাগ স্বীকার করছেন।

সময় বয়ে চলল। সাজিদ বড় হয়ে একজন খ্যাতিমান স্থপতি হলো। তার তৈরি নকশাগুলো শহরের বুকে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করল। ফারিয়া হলো একজন সমাজকর্মী, যার অক্লান্ত পরিশ্রমে শত শত সুবিধাবঞ্চিত শিশু আলোর মুখ দেখল। আর ছোটন, সে হলো একজন সফল সাংবাদিক। তার কলমের খোঁচায় অন্যায় ও অবিচার প্রকাশ পেত, সমাজের ঘুম ভাঙত।

ওসমান তাদের সাফল্যের গল্পগুলো শুনত আর বুকভরা আনন্দ নিয়ে হাসত। কিন্তু সেই হাসির পেছনে লুকানো থাকত এক অব্যক্ত বেদনা। সে জানত, তার সন্তানেরা আজ যে অবস্থানে, তার পেছনে রয়েছে তার অন্ধকার অতীত। এই সফল সন্তানেরা কি কখনও জানতে পারবে তাদের বাবার অন্ধকার দিকটা? এই প্রশ্নটা তাকে কুরে কুরে খেত।

একদিন সাজিদের ডিজাইন করা একটি নতুন ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ওসমানকেও আমন্ত্রণ জানানো হলো। ওসমান তার ময়লা পোশাক পরে এক কোণে দাঁড়িয়ে ছিল। সাজিদ, ফারিয়া আর ছোটন মঞ্চে দাঁড়িয়ে মানুষের প্রশংসা কুড়াচ্ছিল। তাদের চোখে ছিল আত্মবিশ্বাস আর মুখে ছিল সাফল্যের হাসি। জনসমুদ্রের মাঝে ওসমান খেয়াল করল, একজন বৃদ্ধা ফারিয়াকে আশীর্বাদ করছেন, একজন যুবক ছোটনের দিকে শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে তাকাচ্ছেন, আর একজন তরুণী সাজিদের নকশার প্রশংসা করছেন। তাদের মুখে ছিল কৃতজ্ঞতা আর সম্মান।

ওসমান হঠাৎ অনুভব করল, তার চোখের কোণ ভিজে আসছে। সে ভেবেছিল, সে হয়তো তাদের ঠিকমতো মানুষ করতে পারেনি, তাদের অমানুষও হয়নি। কিন্তু আজ সে দেখতে পাচ্ছে, তার সন্তানেরা কেবল নিজেদের জন্য নয়, এই সমাজের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তাদের কাজ, তাদের আচরণ, তাদের মানবতাবোধ – সব কিছুই তাদের প্রাপ্য সম্মান এনে দিয়েছে। তারা অমানুষ হয়নি, বরং মানব সভ্যতার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে, যেখানে তাদের ব্যবহার আর কর্মের মাধ্যমেই তারা যোগ্য সম্মান লাভ করছে।

ওসমান বুঝতে পারল, সে ব্যর্থ নয়। হয়তো সে প্রচলিত অর্থে "সৎ" পথে তাদের বড় করেনি, কিন্তু সে তাদের এমনভাবে গড়ে তুলেছিল যেন তারা মানবতাকে ধারণ করতে পারে, সমাজের উপকারে আসতে পারে। তারা তার অন্ধকার অতীতকে আঁকড়ে ধরেনি, বরং নিজেদের আলোয় আলোকিত করেছে। আর এটাই ছিল ওসমানের জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য। তার সন্তানেরা এই মানব সভ্যতার মাঝে বিরাজমান, সবাই তাদের ব্যবহারে যোগ্য সম্মান দিয়ে থাকে – এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে! ওসমান নীরবে হাসল। তার চোখের জল তখন আর কষ্টের নয়, তা ছিল এক গভীর পরিতৃপ্তি আর গর্বের।

20/07/2025

ন্যায় ও অন্যায়ের লড়াই

শহরের এক কোণে একটি ছোট্ট বাড়ি, যার সামনে ছিল একটি বিশাল খাস পুকুর। সেই বাড়িতে থাকতো একটি মেয়ে, যে ক্লাস টেনে পড়তো। তার জীবনে সরলতা ছিল, আর ছিল বই পড়ার আর প্রকৃতির কাছাকাছি থাকার নেশা। পুকুরটিতে ছিল দেশি মাছের আনাগোনা, যা সে মাঝে মাঝেই দেখত। তার বাড়ির সামনে হওয়ায়, পুকুরের মাছেরা তাদেরও একরকম প্রতিবেশী হয়ে উঠেছিল। সে প্রায়ই মাছ দেখতে পুকুর পাড়ে যেত, প্রকৃতির এই দৃশ্য তার খুব ভালো লাগতো।

কিন্তু, এই শান্তিপূর্ণ জীবনে হঠাৎ ঝড় এলো। একদিন কিছু লোক এসে পুকুরটিকে নিজেদের সম্পত্তি বলে দাবি করল। তারা এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির আত্মীয় ছিল। তাদেরই মধ্যে একটি ছেলে, একদিন সুযোগ পেয়ে মেয়েটিকে একা পেয়ে মারধর করল। মেয়েটির অপরাধ? সে পুকুর পাড়ে বসেছিল এবং মাছ দেখতে ভালোবাসতো।

এই মারধরের পর, ঘটনাটি যখন এলাকার বড়দের কানে পৌঁছালো, তখন একটি নতুন ধরনের অন্যায় শুরু হলো। কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি যারা নিজেদেরকে 'বিচারক' বলে দাবি করতো, তারা মেয়েটির পরিবারকে হুমকি দিলো। তারা বললো, "তোমরা হিন্দু, তাই তোমাদের বাড়ি ভেঙে দেব।" তাদের এই কথায় ধর্মীয় বিভেদ আর হিংসা স্পষ্ট হয়ে উঠলো।

ঘটনার নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ
এই ঘটনায় আমরা বেশ কিছু অন্যায় দেখতে পাই:

১. শারীরিক নির্যাতন: একজন নিরপরাধ মেয়েকে মারধর করা হয়েছে। এটি একটি গুরুতর অপরাধ এবং শারীরিক নির্যাতনের শিকার হওয়া যেকোনো ব্যক্তির জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। কোনো অবস্থাতেই শারীরিক হিংসা সমর্থন করা যায় না।

২. ব্যক্তিগত সম্পত্তির ভুল দাবি: খাস পুকুর মানে হলো সরকারি সম্পত্তি, যা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। এটিকে নিজেদের বলে দাবি করা সম্পূর্ণ বেআইনি। যারা এমনটা করে, তারা আসলে সমাজের আইনকে অবজ্ঞা করে।

৩. ধর্মীয় বিভাজন: ধর্মকে ব্যবহার করে হুমকি দেওয়া হয়েছে। "তোমরা হিন্দু, তাই তোমাদের বাড়ি ভেঙে দেব" - এই ধরনের কথা শুধু অন্যায় নয়, এটি সমাজে বিভেদ তৈরি করে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে। কোনো ধর্মের উপর ভিত্তি করে কাউকে হুমকি দেওয়া বা আক্রমণ করা একটি অমার্জনীয় অপরাধ।

আমার মতামত: ন্যায় ও শিক্ষনীয় দিক
আমার মতে, এই ঘটনাটি এক কথায় চরম অন্যায় এবং এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সমাজকে সুস্থ রাখতে হলে, এই ধরনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে।

প্রথমত, যে ছেলেটি মেয়েটিকে মারধর করেছে, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। শারীরিক নির্যাতনের জন্য তার শাস্তি হওয়া উচিত।

দ্বিতীয়ত, যারা ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে হুমকি দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। ধর্ম কোনো মানুষের পরিচয়ের মাপকাঠি নয়, আর ধর্মীয় পরিচয়ের জন্য কাউকে হেনস্তা করা মানবতাবিরোধী কাজ।

তৃতীয়ত, স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ কর্তৃপক্ষের উচিত এই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করা এবং নিশ্চিত করা যে, মেয়েটির পরিবার যেন সম্পূর্ণ সুরক্ষা পায় এবং তাদের বাড়ি যেন অক্ষত থাকে।

এই ঘটনা থেকে আমাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা নেওয়া উচিত। সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তি মানেই তারা ন্যায়বিচারক নন। আসল বিচারক হলো দেশের আইন এবং সমাজের সচেতন মানুষ। আমাদের সবার উচিত অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা এবং কোনো মানুষকে তার ধর্ম, জাতি, বা সামাজিক অবস্থানের জন্য ছোট না করে সম্মান করা। এটাই একটি সভ্য সমাজের মূল ভিত্তি।

14/07/2025

দুই ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক করে অন্তঃসত্ত্বা হয় মায়া অতঃপর যা হল
*

মায়া, এক তরুণী, জীবনের এক অদ্ভুত খেলায় মেতেছিল। প্রতিদিন তার দিন কাটত দুই ভিন্ন মানুষের সাথে – জয় আর রনির সঙ্গে। জয়ের কাছ থেকে নেওয়া টাকা দিয়ে সে রনির আবদার মেটাতো, আবার রনির দেওয়া উপহার দিয়ে জয়কে খুশি রাখত। দিনে জয়ের সাথে শহরের ক্যাফেতে আড্ডা হলে, রাতে রনির হাত ধরে সিনেমা হলে কাটাতো। এক জটিল জালে জড়িয়ে পড়েছিল মায়া, যেখানে আবেগ নয়, যেন এক ধরণের চতুর খেলাই ছিল আসল উদ্দেশ্য।

একদিন সকালে, মায়ার পৃথিবীটা যেন থমকে গেল। সে জানতে পারল, সে অন্তঃসত্ত্বা। খবরটা শুনে তার হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে গেল। পেটের ভেতরে বাড়তে থাকা প্রাণের অস্তিত্ব তাকে এক চরম অনিশ্চয়তার মুখে দাঁড় করিয়ে দিল। কে এই সন্তানের বাবা? জয় না রনি? এমন এক প্রশ্নের উত্তর সে নিজেও জানত না।

ভয়ে জড়সড় মায়া প্রথমে জয়ের কাছে গেল। কাঁপতে কাঁপতে বলল, "আমি তোমার সন্তানের মা হতে চলেছি।" জয় মুহূর্তেই চোখ কপালে তুলে অস্বীকার করল, "এসব কী বলছ? এটা আমার সন্তান হতে পারে না!" হতাশ মায়া এরপর রনির কাছে গেল, একই কথা বলল। রনিও নির্দ্বিধায় জবাব দিল, "আমার সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই।"

দু'জনের কাছ থেকে একই প্রত্যাখ্যান শুনে মায়া যেন দিশেহারা হয়ে পড়ল। তার সব চতুরতা, সব কৌশল এক মুহূর্তে অর্থহীন মনে হলো। সে বুঝতে পারল, কত বড় ভুল সে করেছে। যদি সে একটিমাত্র সম্পর্কে সৎ থাকত, তাহলে আজ এই অসহায় পরিস্থিতি তৈরি হতো না। এই সন্তান এখন কার? কী করবে সে? এক গভীর হতাশা তাকে গ্রাস করল। জীবন তার কাছে অর্থহীন মনে হতে লাগল। একসময় সে চরম সিদ্ধান্ত নিতে মনস্থির করল – আত্মহত্যার পথ বেছে নেবে।

কিন্তু ভাগ্য হয়তো মায়াকে আরেকটা সুযোগ দিতে চেয়েছিল। ডাক্তারী পরীক্ষায় ধরা পড়ল, মায়া আসলে অন্তঃসত্ত্বা নয়। এটি ছিল একটি ভ্রান্ত ধারণা বা অন্য কোনো শারীরিক জটিলতা। এই খবরটা মায়ার জন্য ছিল দ্বিতীয় জীবনের বার্তা। পাথর চাপা ভার যেন তার বুক থেকে নেমে গেল।

সেদিন মায়া নতুন করে জীবনকে দেখল। সে তার ভুল বুঝতে পারল। মিথ্যা আর ছলনার সম্পর্কগুলো তাকে কোথায় ঠেলে দিচ্ছিল, তা সে পরিষ্কার দেখতে পেল। জয় আর রনি – দু'জনের সঙ্গেই সে সব সম্পর্ক ছিন্ন করল। এরপর সে তার পরিবারের কাছে ফিরে এল, নিজের ভুলের কথা স্বীকার করল এবং তাদের সাহায্যে সে পারিবারিকভাবেই বিয়ে করে নতুন জীবন শুরু করল।

আজ মায়া একজন শান্ত ও সুখী মানুষ। অতীতের সেই দিনগুলো তার কাছে শুধুই এক দুঃস্বপ্ন। সে বুঝতে পেরেছে, জীবনের সবচেয়ে বড় শান্তি লুকিয়ে আছে সততা, বিশ্বাস আর একটি স্থিতিশীল সম্পর্কের মধ্যে। মায়ার গল্পটা হয়তো অনেকের কাছেই এক কঠিন শিক্ষা, যে জীবনকে খেলার ছলে না নিয়ে, মূল্যবোধের সাথে বাঁচলে তার সৌন্দর্যটাই হয় অন্যরকম।

07/07/2025

মানুষের জীবনে এমন মুহূর্ত আসতেই পারে যখন মনে হয় একটা পথ বুঝি বন্ধ হয়ে গেল। হয়তো কোনো সুযোগ হাতছাড়া হলো, বা কোনো পরিকল্পনা ভেস্তে গেল। কিন্তু মনে রাখবেন, ব্যক্তিগুনে এক দুয়ার বন্ধ হলেও হাজার দুয়ার খোলা থাকে তার জন্য! 💫

আপনার ভেতরের শক্তি, আপনার যোগ্যতা, আপনার ধৈর্য—এগুলোই আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। একটা দরজা বন্ধ হলে হাজারো নতুন সম্ভাবনা আপনার জন্য অপেক্ষা করে। হয়তো যে পথটা বন্ধ হলো, সেটা আপনার জন্য সেরা ছিল না। হয়তো বিধাতা আপনার জন্য আরও বড় কিছু রেখেছেন! 🚀

কখনও হাল ছাড়বেন না। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন। আপনার মেধা আর পরিশ্রম দিয়ে আপনি নতুন নতুন রাস্তা তৈরি করতে পারবেন। এই বিশ্বাস আর ইতিবাচকতা নিয়েই এগিয়ে চলুন! 💪

01/07/2025

ভালোবাসার নির্মম পরিণতি: এক মায়ের অদম্য সংগ্রাম

মায়ার জীবনটা ছিল ভালোবাসার এক সরল সমীকরণে বাঁধা। সে তার সর্বস্ব দিয়ে ভালোবেসেছিল অর্ণবকে। অর্ণবের চোখে সে দেখেছিল অনাগত ভবিষ্যতের স্বপ্ন, দুজনের ছোট্ট একটি সংসার। কিন্তু মায়া বোঝেনি, অর্ণবের কাছে ভালোবাসা ছিল কেবলই শরীরী চাহিদা মেটানোর এক সহজলভ্য উপায়। দিনের পর দিন অর্ণব তাকে ব্যবহার করেছে, আর মায়া অন্ধ ভালোবাসায় সব মেনে নিয়েছে।

সময় গড়িয়েছে, আর ভালোবাসার নামে এই ব্যবহার যখন চরমে পৌঁছায়, তখন এক ভিন্ন বাস্তবতার মুখোমুখি হয় মায়া। সে গর্ভবতী। এই খবরটা অর্ণবকে জানাতেই তার আসল চেহারাটা বেরিয়ে আসে। অর্ণব পালিয়ে যায়, মায়াকে ফেলে যায় অথৈ সাগরে।

পরিবারের চাপ, সমাজের ভ্রুকুটি আর প্রিয়জনের বিশ্বাসঘাতকতা মায়াকে ঠেলে দেয় এক অন্ধকার গহ্বরে। একদিকে ভালোবাসার নামে প্রতারিত হওয়ার যন্ত্রণা, অন্যদিকে অনাগত সন্তানের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ – সব মিলিয়ে সে দিশেহারা হয়ে পড়ে। একসময় আর কোনো পথ না দেখে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় মায়া।

কিন্তু নিয়তির পরিহাস ভিন্ন ছিল। আত্মহত্যার চেষ্টাতেও সে ব্যর্থ হয়। হয়তো এটাই ছিল প্রকৃতির ইশারা, এই সন্তানই তার জীবনে নতুন অর্থ নিয়ে আসবে। বেঁচে থাকার এক নতুন প্রেরণা খুঁজে পায় মায়া। সে সিদ্ধান্ত নেয়, সে হার মানবে না। এই সন্তানকে সে জন্ম দেবে, তাকে বড় করবে, আর তাকে তার প্রাপ্য পরিচয় ফিরিয়ে দেবে।

সমাজ, পরিবার আর নিজের ভেতরের সব দ্বিধা দূরে ঠেলে মায়া শুরু করে এক অদম্য সংগ্রাম। তার গর্ভে বেড়ে ওঠা সন্তানই এখন তার বাঁচার একমাত্র কারণ, তার লড়াইয়ের শক্তি। এক নতুন দৃঢ়তায় মায়া এগিয়ে চলে, একাকী হলেও সে জানে, তার এই পথচলায় তার সন্তানই হবে তার সবচেয়ে বড় আশ্রয়।

এই গল্প এক নারীর ভালোবাসার সরলতা, প্রতারণার শিকার হয়েও তার ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা আর মাতৃত্বের অদম্য শক্তির প্রতিচ্ছবি।

23/06/2025

মায়ের আত্মত্যাগ ও একটি ভুল বোঝাবুঝি

এক ছিল ছোট্ট গ্রাম, নাম তার শান্তিপুর। সেই গ্রামে বাস করত হাসিখুশি একটি পরিবার। বাবা রহমান সাহেব, মা ফাতেমা বেগম আর তাদের একমাত্র ছেলে, আকাশ। ফাতেমা বেগম ছিলেন একজন অসাধারণ মা। আকাশের একটু ঠাণ্ডা লাগলে তার রাতের ঘুম হারাম হয়ে যেত, সামান্য জ্বর হলে চোখে জল চলে আসতো। নিজের সুখ, আরাম, আহ্লাদ সব বিসর্জন দিয়ে তিনি আকাশের দেখভাল করতেন। নিজের পুরোনো শাড়ি পরেই কাটিয়ে দিতেন, কারণ আকাশের জন্য নতুন জামা কেনা জরুরি ছিল। নিজের পছন্দের খাবার বাদ দিয়ে আকাশের পাতে তুলে দিতেন, কারণ ছেলের পুষ্টি তার কাছে সবার আগে। এভাবেই তিল তিল করে বড় করে তুলছিলেন আকাশকে।

আকাশ বড় হলো, পড়াশোনায় বেশ ভালো ছিল। একসময় শহরের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেল। মা ফাতেমা বেগমের চোখে আনন্দের জল, বুকটা গর্বে ভরে উঠলো। ধারদেনা করে, নিজের শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে হলেও তিনি আকাশের পড়াশোনার খরচ জুগিয়েছেন। আকাশও পড়াশোনা শেষ করে ভালো একটি চাকরি পেল শহরে। মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ হলো।

কিন্তু ধীরে ধীরে আকাশের পরিবর্তন হতে শুরু করল। শহরের চাকচিক্য, নতুন বন্ধু-বান্ধব আর ব্যস্ত জীবনে সে মত্ত হয়ে পড়ল। গ্রামের সহজ-সরল মা-বাবার কথা তার কাছে কেমন যেন সেকেলে লাগতে শুরু করল। মায়ের ফোন ধরা বন্ধ করে দিল, কারণ তার নাকি সময় হয় না। গ্রামে আসা কমিয়ে দিল, কারণ শহরে তার অনেক কাজ।

একদিন ফাতেমা বেগম অনেক আশা নিয়ে শহর থেকে ছেলের বাড়িতে এলেন। আকাশের ফ্ল্যাটের বাইরে দাঁড়িয়ে ডাকলেন, "আকাশ, বাবা! আমি তোর মা এসেছি।"

আকাশ দরজা খুলল বটে, কিন্তু তার মুখে হাসি ছিল না। বলল, "তুমি কেন এসেছো মা? আমার বন্ধুরা আছে, আমার তো এখন মিটিং আছে।"

ফাতেমা বেগমের চোখে জল এসে গেল। যে ছেলেকে তিনি এত কষ্ট করে মানুষ করলেন, সেই ছেলে আজ তাকে দেখে বিরক্ত হচ্ছে। তিনি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, "আমি কি তোর কাছে বোঝা হয়ে গেছি বাবা?"

আকাশের হৃদয় তখন পাষাণ হয়ে গেছে। সে বলল, "দেখো মা, আমি এখন অনেক ব্যস্ত। তুমি এখন যেতে পারো।"

এই কথা শুনে ফাতেমা বেগম আর এক মুহূর্তও দাঁড়ালেন না। নীরবে চোখ মুছতে মুছতে ফিরে গেলেন নিজের গ্রামে। তার চোখে ছিল কেবল অবিশ্বাস আর বুকে ছিল একরাশ ব্যথা।

এর কিছুদিন পর আকাশ খুব অসুস্থ হয়ে পড়ল। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলো। শহরের বন্ধুরা, অফিসের সহকর্মীরা কেউ তেমন খোঁজ নিতে এলো না। আকাশ তখন উপলব্ধি করতে পারল, তার জীবনে এমন কেউ নেই যে নিঃস্বার্থভাবে তাকে ভালোবাসে, তার জন্য চিন্তা করে। এই সময় তার কেবল মায়ের কথা মনে পড়ছিল।

আকাশের মনে পড়ল ছোটবেলার সেই দিনের কথা, যখন সে একবার খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। মা সারারাত তার কপালে জলপট্টি দিয়ে বসেছিলেন। নিজের ঘুম, খাওয়া সব ভুলে গিয়ে কেবল তাকে সুস্থ করার চেষ্টা করেছিলেন। সেই অসুস্থতার রাতে তার পাশে কেবল মা-ই ছিলেন। আজ যখন সে একা, তার পাশে কেউ নেই, তখন সে বুঝতে পারল মায়ের ভালোবাসার মূল্য।

আকাশ সুস্থ হয়েই সোজা গ্রামের বাড়িতে ছুটে গেল। মায়ের কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলল। বলল, "মা, আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমি তোমার মূল্য বুঝতে পারিনি।"

ফাতেমা বেগম ছেলেকে বুকে জড়িয়ে নিলেন। তার চোখে ছিল আনন্দাশ্রু। মায়ের কাছে সন্তানের সব ভুলই যেন ক্ষমা হয়ে যায়।

শিক্ষামূলক দিক: এই গল্পের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি, মা-বাবার নিঃস্বার্থ ভালোবাসা পৃথিবীর অন্য সব ভালোবাসার চেয়ে অনেক বড়। তারা নিজেরা কষ্ট করে সন্তানদের বড় করেন, তাদের ভবিষ্যৎ গড়তে নিজেদের সবটুকু উজাড় করে দেন। সন্তানেরা যখন বড় হয়, তখন এই আত্মত্যাগের কথা ভুলে যাওয়া উচিত নয়। মা-বাবার প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আর যত্নশীল হওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তাদের অবহেলা করলে একসময় আমরাই একা হয়ে পড়ি এবং তাদের শূন্যতা অনুভব করি। আসুন, মা-বাবার প্রতি আমরা সবাই শ্রদ্ধাশীল হই এবং তাদের মুখে হাসি ফোটাই।

আপনার কী মনে হয়, এমন ঘটনা কি আমাদের সমাজে প্রায়শই ঘটে?

16/06/2025

হারানো পুরুষত্ব
*
রায়হান সাহেব ছিলেন একজন অত্যন্ত সফল ব্যবসায়ী। কিন্তু তাঁর ব্যক্তিগত জীবন ছিল এক বিশাল শূন্যতায় ভরা। তাঁর পুরুষত্বহীনতার কারণে একের পর এক সম্পর্ক ভেঙে যাচ্ছিল। প্রথম স্ত্রীর সাথে তাঁর বিচ্ছেদ হলো, তারপর দ্বিতীয় বিয়েও টিকলো না। একে একে তিনটি বিয়ে ভাঙার পর রায়হান সাহেব সম্পূর্ণ ভেঙে পড়লেন। সমাজের চোখে তিনি হয়ে উঠলেন এক ব্যর্থ পুরুষ। প্রতিটি ব্যর্থতা তাঁকে আরও বেশি হতাশার গভীরে ঠেলে দিচ্ছিল।

এক রাতে, সকল যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে রায়হান সাহেব আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি যখন শেষবারের মতো নিজের জীবন শেষ করতে উদ্যত, ঠিক তখনই তাঁর দরজায় কড়া নাড়লো একটি পরিচিত মুখ – তাঁর দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়া, নাম সায়মা। সায়মা রায়হান সাহেবের এমন অবস্থার কথা জানতে পেরেছিলেন এবং ছুটে এসেছিলেন তাঁকে দেখতে।

সায়মা ছিলেন একজন শান্ত, ধৈর্যশীল এবং বিচক্ষণ নারী। রায়হান সাহেবের চোখে যখন মৃত্যুর ছায়া, সায়মা তাঁর পাশে বসলেন। কোনো রকম বিচার বা সহানুভূতি না দেখিয়ে তিনি শুধু মনোযোগ দিয়ে রায়হান সাহেবের সব কথা শুনলেন। রায়হান সাহেব তাঁর জীবনের সব হতাশা, অপমান আর ব্যর্থতার কথা সায়মাকে বললেন। সায়মা বুঝলেন, রায়হান সাহেবের আসল সমস্যা তাঁর শারীরিক অক্ষমতা নয়, বরং মানসিক যন্ত্রণা।

সায়মা রায়হান সাহেবকে বোঝালেন, পুরুষত্ব শুধু শারীরিক সক্ষমতার ওপর নির্ভর করে না। একজন পুরুষের সত্যিকারের শক্তি লুকিয়ে থাকে তার ধৈর্য, তার মানসিকতা, তার ভালোবাসার ক্ষমতা এবং তার সহানুভূতিতে। তিনি বোঝালেন, ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে বিশ্বাস, সম্মান আর পারস্পরিক বোঝাপড়ার ওপর, শুধুমাত্র শারীরিক সম্পর্কের ওপর নয়।

সায়মার কথায় ধীরে ধীরে রায়হান সাহেবের মনে পরিবর্তন আসতে শুরু করলো। সায়মা তাঁকে নিয়মিত কাউন্সেলিং দিতে লাগলেন। তাঁরা দু'জনে বিভিন্ন সামাজিক কাজে নিজেদের যুক্ত করলেন, যেখানে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল। রায়হান সাহেব দেখলেন, তিনি এখনো সমাজের জন্য অনেক কিছু করতে পারেন, মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারেন।

ধীরে ধীরে রায়হান সাহেব তাঁর জীবনের নতুন উদ্দেশ্য খুঁজে পেলেন। তিনি শিখলেন কীভাবে নিজের দুর্বলতাকে অতিক্রম করে মানসিক শক্তি অর্জন করতে হয়। সায়মার অনুপ্রেরণা আর ভালোবাসায় রায়হান সাহেব এক নতুন জীবনে প্রবেশ করলেন। তিনি আর সেই হতাশাগ্রস্ত মানুষটি ছিলেন না, বরং একজন আত্মবিশ্বাসী এবং ভালোবাসাময় মানুষে পরিণত হলেন। তাঁর জীবনে পুরুষত্বহীনতা একটি সীমাবদ্ধতা ছিল বটে, কিন্তু সায়মা তাঁকে বোঝালেন যে ভালোবাসা আর মানবিকতা দিয়ে এই সীমাবদ্ধতাকে জয় করা সম্ভব। রায়হান সাহেব শেষ পর্যন্ত নিজেকে ভালোবাসতে শিখলেন এবং নিজের প্রতি বিশ্বাস ফিরে পেলেন। সায়মার সাথে তাঁর সম্পর্ক ভালোবাসার এক নতুন সংজ্ঞা তৈরি করলো, যেখানে শারীরিকতার চেয়ে মানসিক বন্ধনই ছিল প্রধান।

12/06/2025

আজকে আগেভাগে আসবো সবকিছু রেডি করে রাইখো

08/06/2025

দাদার কাছে কট খেয়ে গেল দেবর বৌদি

03/06/2025

আমার খুব ভয় করছে যদি তোমার ভাই সব জানি পারে

Address

Dhaka
1000

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Rudhi Multimedia posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Category