Kader Babu

Kader Babu লেখক. সাংবাদিক. সংগঠক
সম্পাদক ও প্রকাশক. বাবুই
https://www.youtube.com/ I am a simple man...
I am a Dreamer man

‘তোমার চোখে আকাশ আমার চাঁদ উজাড় পূর্ণিমা ভিতর থেকে বলছে হৃদয় তুমি আমার প্রিয়তমা!’ একসময়ের হিট গান কেন যেন আজ মনে পড়ছে!
08/09/2025

‘তোমার চোখে আকাশ আমার চাঁদ উজাড় পূর্ণিমা ভিতর থেকে বলছে হৃদয় তুমি আমার প্রিয়তমা!’ একসময়ের হিট গান কেন যেন আজ মনে পড়ছে!

কিউটের ডিব্বা আছিলাম একখান...
04/09/2025

কিউটের ডিব্বা আছিলাম একখান...

04/09/2025

তোমায় আমি পাইতে পারি বাজি...
বলো তুমি আছো কিনা রাজি...🩵

31/08/2025

বৃষ্টি হচ্ছে ঝুম
তোমার গালে চুম
বৃষ্টি হচ্ছে খুব
দেব তোমায় ডুব।

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি!
27/08/2025

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি!

তোমাদের প্রিয় বই ‘ভূতের বন্ধু টুত’আব্দুস সামাদ আজিজ বই : ভূতের বন্ধু টুতলেখক: কাদের বাবু ধরন : শিশুতোষ গল্প প্রচ্ছদ : সো...
19/08/2025

তোমাদের প্রিয় বই ‘ভূতের বন্ধু টুত’
আব্দুস সামাদ আজিজ

বই : ভূতের বন্ধু টুত
লেখক: কাদের বাবু
ধরন : শিশুতোষ গল্প
প্রচ্ছদ : সোহাগ পারভেজ
অলংকরণ : মোমিন উদ্দীন খালেদ
প্রকাশনী : সাহস পাবলিকেশন্স
দাম : ১৫০ টাকা মাত্র

ছোট্ট বন্ধুরা! তোমরা তো গল্পের বই পড়তে ভালোবাসো। আজ একটি চমৎকার বইয়ের সাথে তোমাদের পরিচয় করিয়ে দেবো। মজার মজার গল্প রয়েছে বইটিতে। লিখেছেন তোমাদের প্রিয় শিশুসাহিত্যিক ও ছড়াকার কাদের বাবু। ওহ্, বইয়ের নামই তো বলা হয়নি। হ্যাঁ, বলছি নাম হলো ‘ভূতের বন্ধু টুত’। কী সুন্দর নাম! তাই না? অবশ্যই তোমাদের পছন্দ হয়েছে। বইয়ের ভেতরে থাকা শিশুতোষ গল্পগুলোর নামও খুব মিষ্টি মিষ্টি ‘ভূতের বন্ধু টুত’, ‘বিড়াল ছানা’, ‘ভূতং পুতং’ ও ‘আনন্দের হইচই’। কী...পড়তে ইচ্ছে করছে? করবেই তো। মচমচে, ঝরঝরে ও কোমল গদ্যে লেখা শিক্ষণীয় গল্পগুলো তোমাদের মনে দাগ কাটবে, চারপাশের জগৎ নিয়ে নতুন করে ভাবতে শেখাবে, চিন্তাশীল করে তুলবে, নতুন কিছু শেখার জন্য উদ্দীপনা ও আগ্রহ জাগাবে মনে। পাশাপাশি তোমাদের চোখ জুড়াবে গল্প নিয়ে পাতায় পাতায় আঁকা রঙিন রঙিন ছবি। এই ছবিগুলো তোমাদের ভাবনার জগতে রংয়ের পরিচয় ঘটাবে। তুমি হবে প্রাণবন্ত ও সমৃদ্ধ।
লেখক কাদের বাবু জানেন, তোমাদের মনোজগৎ বিকাশের জন্য চাই অবারিত আকাশ। মুক্ত বিহঙ্গের মতো আকাশে ওড়ার স্বপ্নসাধই পারে প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে। তাই তো তিনি সবসময় তোমাদের নিয়েই ভাবেন। সেই ভাবনা থেকেই লিখেছেন দারুণ দারুণ ছড়া ও গল্পের বই। সেগুলো থেকে ‘মেঘ ছুটিতে লাটিম ফোটে’ ‘তিন বন্ধুর ছড়া’ ‘পরীবাগের পরী’ ‘ছোটদের চিরকালীন মজার মজার ছড়া’ উল্লেখযোগ্য। নিয়মিত সম্পাদনা করছেন পত্রিকা ও ম্যাগাজিন।

শিশুতোষ গল্পের বই ‘ভূতের বন্ধু টুত’ এর প্রথম গল্পই ভূতকে নিয়ে লেখা। তোমরা তো প্রতিদিন ঘুমের আগে ভূতের গল্প শোনো দাদা-দাদি, মা-বাবার মুখে। আচ্ছা, তোমরা কি ‘ভূতের বন্ধু টুত’কে চেনো? কী, অবাক হলে! ভূতেরও আবার বন্ধু থাকে বুঝি? হ্যাঁ, থাকে তো। তাকে কেউ কেউ হয়তো চিনে থাকবে। যারা চেনো না, তারাও চিনে নিও তোমাদের বন্ধু অর্পির মতো করে। অর্পিও যখন তার আবির ভাইয়ার কাছে প্রথম শুনেছিল ভূতেরও বন্ধু আছে, সেই বন্ধুর নাম টুত, তখন খুব অবাক হয়েছিল। খানিক পরেই যখন জানল ভূত তার বন্ধুর সাথে খেলাধুলা করে, ঘুরে বেড়ায় আর দুষ্ট মানুষকে ভয় দেখায়, আর টুত হলো ভূতের মতোই এক অমানব জাতি, তাদের খালি চোখে দেখা যায় না, এই টুতও ভয়ানক দুষ্টু তখন ভাইয়াকে প্রশ্ন করল, ‘তুমি তাদের কথা জানলে কেমন করে?’ উত্তরে ভাইয়া বললেন, ‘আমি অনেক বই পড়ি। আমি জানব না তো তুই জানবি? তুই তো পিচ্চি।’ হ্যাঁ, বই পড়লে অনেক কিছু জানা যায়। তাই বলে অর্পিকে পিচ্চি বলবে? তার মেজাজ গেলো গরম হয়ে! দৌড়ে গেলো আম্মুর কাছে। তারপর কী হয়েছিল? টুত আসলে কে? কী করলে অর্পি টুতের সাথে খেলতে পারবে?
বিড়ালছানা। বইয়ের দ্বিতীয় গল্পের নাম। গল্পটিতে লেখক চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন মাতৃপ্রেমের কথা। মাতৃপ্রেমে পিছিয়ে নেই বিড়ালও। সেই বিড়ালের তুলতুলে ছানা যে তোমাদের মতো শিশুদের খুব প্রিয় তা-ও জানা যাবে গল্পটি পড়লে। গল্পের শুরুতেই রয়েছে চমক ও রহস্য, যা তোমাদের কপালে চিন্তা ভাঁজ ফেলবেই! একজন লেখকের সার্থকতা তো এখানেই। চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল ছোট্টমোট্ট মেয়ে মনির কপালেও। যখন সে দেখল ঘরে বিড়ালের আনাগোনা বেড়ে গিয়েছে। ঘটনা উদঘাটনের জন্য মনি ডিটেকটিভের মতো আচরণ করে দেখে, শাদা রঙের একটা বিড়াল ঘন ঘন তার ঘরে আসা-যাওয়া করে এক ঘণ্টা পর পর। খাটের নিচে গিয়ে দশ পনেরো মিনিট অবস্থান করে আবার চলে যায়। খাটের নিচে বিড়াল কী করে? শীতের দিনে মনির দরজা লাগানো ঘরে বিড়াল কেমন করে ঢুকে?
মনিকে তার মা বিড়াল সম্পর্কে কী কী বলেছিল? স্কুল থেকে ফিরে তার মন খারাপ হলো কেন? কেনই বা সে ভাত খাওয়া বন্ধ করে দিল? তার রাগ পরে কে ভাঙিয়েছিল?
পরের গল্পটা সেই ভূতকেই নিয়ে। তবে এই ভূতের নাম ভূতো। ভূতো থেকে ভূতং। ও ভূতের সন্তান। কী বন্ধুরা, ভয়ে গা ছমছম করছে? আহা, পড়ে তো দেখবে! ‘ভূতং পুতং’ নামের গল্পটার ছোট্ট এই ভূতং নিয়মিত স্কুলে যায়, ক্লাসের পড়াশোনা করে আর ভূত-সংগীতের তালে তালে ডিগবাজি দেয় অর্থাৎ পিটি করে। ক্লাসের টিচাররা নাচতে নাচতে তাদের ভূতাংক করান, ভূতংলা পড়ান। সব ছাত্র-ছাত্রী মনোযোগ দিয়ে পড়ে। তারা মানুষ জাতিকে হারানোর জন্য কঠিন সাধনা করে। কী ভয়ানক! কিন্তু দুঃখজনক হলো এই ভূতংয়ের কোনো বন্ধু নেই। থাকবেই বা কোত্থেকে, তাদের রাজ্যে যে কোনো ভূতো কিংবা ভূতি নেই। আচ্ছা, সে কি বন্ধু পেয়েছিল? যদি পেয়ে থাকে তাহলে সে কেমন— খুব বেশি চঞ্চল, পটপটি, চটপটি কি?
বইয়ের সর্বশেষ গল্প ‘আনন্দের হইচই’। আনন্দ তোমাদের মতোই শিশু। যার মনের কোণে উঁকি দেয় নানারকম বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্ন। জানার আগ্রহে প্রশ্নগুলো সে করে তার বাবা-মা ও মামাকে। আদরের করা দারুণ দারুণ প্রশ্নেই বুঝা যায় এযুগের ছেলেমেয়েরা কত অ্যাডভান্স। আশ্চর্য না হয়ে পারেন না বড়রা। মাঝেমধ্যে এমন আজব প্রশ্ন করে বসে আনন্দ যে, থতমত খেতে হয়! এই যেমন— ‘ডিম আগে না মুরগি আগে?’ কিছু প্রশ্ন শুনে তো না হেসে পারা যায় না— ‘ধানগাছ থেকে কী কাঠ হয়?’ আনন্দেরই বা কী দোষ, সে তো আর গ্রামে যায়নি কখনো। পরে কি আনন্দ গ্রামে গিয়েছিল? তার করা বুদ্ধিদীপ্ত সেই প্রশ্নগুলো কী ছিল? কী উত্তর দিয়েছিলেন তার বাবা-মা ও মামা?
ছোট্ট বন্ধুরা! দেখেছ কত্ত মজার মজার গল্প রয়েছে বইটিতে। উপরোক্ত সব প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে বইটি অবশ্যই তোমাদের পড়তে হবে। লেখকের শব্দের প্রয়োগ, বাক্যের ব্যবহার ও গল্পের গাঁথুনি মুগ্ধ করার মতো! বইয়ের বাইন্ডিংও খুব মজবুত। তাহলে আর দেরি কেন, চট জলদি সংগ্রহ করে ঝটপট পড়ে ফেলো প্রিয় লেখকের ‘ভূতের বন্ধু টুত’ বইটি।

আব্দুস সামাদ আজিজ : শিশুাসাহিত্যিক

কাদের বাবুর ৪০ আমাদের ২৭মোকাদ্দেস-এ-রাব্বীকাদের বাবুকে নিয়ে এই সংকলনে যতগুলো লেখা মলাটবন্দি হলো তাদের অধিকাংশ লেখাতেই লে...
19/08/2025

কাদের বাবুর ৪০ আমাদের ২৭
মোকাদ্দেস-এ-রাব্বী

কাদের বাবুকে নিয়ে এই সংকলনে যতগুলো লেখা মলাটবন্দি হলো তাদের অধিকাংশ লেখাতেই লেখক কৌশল অবলম্বন করে নিজের ঢোল নিজে পেটার একটা সুযোগ গ্রহণ করেছেন। এই লাইনটা পড়ে হয়তো ভাবছেন আমি মনে হয় এর ব্যতিক্রম হবো। বা ব্যতিক্রম কিছু লিখব। কিন্তু না ঘুরে ফিরে আমি অন্যদের মতোই সেই পথেই হাঁটলাম। মানে নিজের ঢোল নিজে পেটানোর একটা সুযোগ গ্রহণ করলাম। বিষয়টা একটু খোলাসা করে বলি। বাবুকে নিয়ে পুরনো স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বাবুর পাশাপাশি নিজের প্রশংসা করতে কেউ ছাড়েননি। লেখাগুলো পড়লেই আপনি তা উপলব্ধি করতে পারবেন। যেমন আমার লেখাটা গুরুত্ব দিয়ে পড়লেও তা উপলব্ধি করতে পারবেন নিশ্চয়।

এবার চলেন একটা বিয়োগ অংক করি। এখন ২০২৪ সাল। ঠিক ১৯৯৭ সাল থেকে শুরু করে টুকটাক গল্প করব বর্তমান পর্যন্ত। তাহলে ২০২৪ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল বিয়োগ করলে ফলাফল কত আসবে। সাদা পাতাতেও হিসাবটা করে ফেলতে পারেন। পকেটে মোবাইল ফোন থাকলেও চলবে। মোবাইল ফোন বের করে ক্যালকুলেটর অ্যাপস চালু করে বিয়োগ এর উত্তরটা বের করতে পারবেন। অথবা আপনাদের কোনো কষ্টই করতে হবে না। কেননা বিয়োগফলটা আমিও বলে দিতে পারি। ২০২৪ থেকে ১৯৯৭ বাদ দিলে বিয়োগফল আসবে ২৭। ২৭! মানে দুই যুগ প্লাস।
আসল কথায় আসি। ২৭ নিয়ে যে বিয়োগের নাটকটা করা হলো তা হলো ২৭ বছর আগের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করার ইচ্ছে ছিল। সেই ইচ্ছেটাই পূরণ করলাম আরকি। আর কাদের বাবুর সাথে আমার পরিচয়টা ২৭-এ পা দিয়েছে। তাই ২৭ নিয়ে একটা নাটক করতে হলো। আর এই লেখায় দুই যুগ আগের কিছু গল্পই আছে।

১.
রংপুরে স্থানীয় দৈনিক যুগের আলোর অংকুর মেলায় আমার লেখা দ্বিতীয় গল্পটা ছাপা হয়ে গেল ১১ জুলাই ১৯৯৭। জীবনের প্রথম গল্পটাও ছাপা হয়েছিল একই পত্রিকায়। ২৬ জুন ১৯৯৭। দেখলেন তো সুযোগ পেয়েই নিজের ঢোল পেটানো শুরু করেছি। আচ্ছা প্রথম গল্পের কথা আগে না বলে দ্বিতীয় গল্পটির কথা কেন আগে বললাম সেদিকে যাই। ১১ জুলাই ১৯৯৭ সালে একই পাতায় আমার গল্পের নিচে ‘বই বন্ধু’ শিরোনামে একটা ছড়া ছাপা হয়েছিল। চলেন ছড়াটা একটু পড়ে নিই।
বই বন্ধু
বই বই বই
বই এর মতো বন্ধু তুমি
আর পাবে কই?
বই হলো নিঃস্বার্থ বন্ধু
এর সাথে কোনদিনও
তোমার ঝগড়া হবে না,
বই-এর মতো বন্ধু তুমি
এ পৃথিবীতে একটিও পাবে না।

এই লেখাটা যে লিখেছে এখন তাকে নিয়েই লিখছি আমি। ২৭ বছর আগে এই লেখাটাই কাদের বাবুর লেখা আমার প্রথম পড়া। তখন ও লিখত মো. আব্দুল কাদের বাবু নামে। বাবু যখন এই লেখাটা লিখেছিল ও তখন হয়তো ভাবেনি বইয়ের সাথে ওর এতটাই বন্ধুত্ব হয়ে যাবে। ওর অফিস ওর বাসা ঢুকলেই প্রথম যে বিষয়টি চোখে পড়বে তা হলো বই। ও যে রুমে ঘুমায় তার চারদিকে বই। বই আর বই। বই এর মতো নিঃস্বার্থ বন্ধুকে ভালোবেসে গড়ে তুলেছে বাবুই। বইয়ের প্রতি ওর এতই যত্ন, এতই ভালোবাসা তা লিখে হয়তো বোঝাতে পারব না। তবে যেসকল লেখকের বই বাবুই থেকে বের হয়েছে তারা জানে বাবু কতটা দরদ দিয়ে সে বইটা মলাটবন্দি করেছে। বইয়ের মানের ব্যাপারে কোনো কম্প্রোমাইজ নাই। সত্যি সত্যি বইয়ের বন্ধু বাবু, বই বন্ধু বাবু।

চলেন বই নিয়ে বিখ্যাত কিছু উক্তির কথা বলি।
‘বই কিনে কেউ কোনোদিন দেউলিয়া হয় না।’— সৈয়দ মুজতবা আলী
‘বইয়ের মতো এত বিশ্বস্ত বন্ধু আর নেই।’— আর্নেস্ট হেমিংওয়ে
‘ভালো বন্ধু, ভালো বই এবং একটি শান্ত বিবেক : এটি আদর্শ জীবন।’—মার্ক টোয়েন
‘ভালো বই পড়া মানে গত শতাব্দীর মহৎ লোকের সাথে আলাপ করা।’— দেকার্ত
‘বই ছাড়া একটি কক্ষ আত্মা ছাড়া দেহের মতো।’—মার্কাস টুলিয়াস সিসারো
‘বই হচ্ছে অতীত আর বর্তমানের মধ্যে বেঁধে দেয়া সাঁকো।’—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
সেই বই যেন বাবুর আত্মা। অতীত বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ সবগুলোতে বই ছাড়া আর বাবুর অন্য কিছু নেই।

২.
এবার বাবুর সাথে আমার পরিচয়ের কথা বলি। সালটা ১৯৯৭-ই। লেখা জমা দেয়ার জন্য মাঝে মাঝে যুগের আলো অফিসে যাই। এক সন্ধ্যায় দেখলাম দুটো ছেলে আমার সমবয়সী হন হন করে সম্পাদকের রুমে ঢুকে যাচ্ছে। আবার বের হচ্ছে। দেখে আমি চমকে যাই। এই ছেলে দুটো তো এখানে চাকরি করার কথা নয়। এত অল্প বয়সে কেউ চাকরি করে না। নিশ্চয় ক্ষমতাধর কেউ এরা। এই বিষয়টাই আমার মাথায় বারবার আসছিল। ওই ছেলে দুইটার একটা ছিল রকেট অন্যটা বাবু। রকেট বাবু। অংকুর মেলাতে বুদ্ধির ব্যায়াম পরিচালনা করে। সেই যুগের আলোতে নয় বাবুর সাথে আমার পরিচয় পত্রিকাবিপণিতে। পত্রিকা বিপণিতে গিয়ে সেই ক্ষমতাধর বাবুকে আবিষ্কার করেছিলাম। খোলাসা করে বলি।

সেগুনবাগিচা ঢাকা থেকে শিশুকিশোরদের একটা পত্রিকা বেড়াত। নাম কিশোরপত্রিকা। যার সন্ধান আমি রহস্য পত্রিকার মাধ্যমে পেয়েছিলাম। রহস্য পত্রিকা পড়ত আমার এক ফুপা। সেখান থেকে নিয়ে এসে আমিও লুকিয়ে লুকিয়ে পড়তাম। যা হোক কিশোরপত্রিকা আনার জন্য প্রতি মাসের শেষ দিন অথাবা মাসের এক তারিখে হারাগাছ থেকে বাইসাইকেল নিয়ে ছুটতাম রংপুরে। জাহাজ কোম্পানির আগে স্টেশন রোডে পত্রিকা বিপণি নামে একটা ম্যাগাজিন আর বইয়ের দোকান ছিল। সেখান থেকে নিয়ে আসতাম কিশোর পত্রিকা। সম্ভবত ১৯৯৭ এর আগস্ট মাসের শেষ দিন আমি সেপ্টেম্বর সংখ্যা কিশোরপত্রিকা আনার জন্য পত্রিকা বিপণি দোকানের সামনে দাঁড়াই। দেখি সেই ক্ষমতাধর ছেলে পত্রিকা দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে একটার পর একটা ম্যাগাজিন-পত্রিকা দেখেই চলছেন। কিন্তু কিনছেন না। যেটা অন্য কেউ পারেন না। দোকানের মালিক রফিকুল আঙ্কেল রাশভারি মানুষ। হয় কেন, নয় চলে যাও। আমি কিশোর পত্রিকার খবর জানতে চাওয়াতে আমার দিকে তাকাল ছেলেটা। টাকা দিয়ে পত্রিকা কিনতেই নিজ থেকে জানতে চাইল আমার কথা। আমি কিশোর পত্রিকা পড়ি। সেও নিয়মিত পড়ে। কথায় কথায় উঠে আসল অংকুর মেলার কথা। আমার নাম বলতে ভালো করে চিনে ফেলল। আমি চিনে ফেললাম বুদ্ধির ব্যায়ামের পরিচালক বাবুকে। এরপর সেদিনই টেনে নিয়ে গিয়ে পাশেই রংপুরের বিখ্যাত শিঙাড়া হাউসে আমাকে শিঙাড়া খাইয়ে দিল। সেই থেকে পরিচয়। এরপর বন্ধুত্ব।

পরের মাসে ১৭ সেপ্টেম্বর যুগের আলোর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠান। আমরা অংকুর মেলায় ঘোষণা দেখে অনুষ্ঠানের জন্য রিহার্সেলে যাই শিল্পকলা একাডেমিতে। সেখানেও বাবুকে কিছুটা নেতৃত্ব দেখার ভূমিকায় দেখি। তানজিনা সেলিম আপা এবং বাবু সবাইকে উজ্জীবিত রাখছিল। সেই ১৭ সেপ্টেম্বরের অনুষ্ঠানে আমি একটা ছড়া পাঠ করি। আমার লেখা একটা প্যারোডি গান গায় ছোটভাই অংকুর বন্ধু মামুন। বাবু আর ওর দল মিলে একটা কুইজ পর্ব পরিচালনা করে। সেই পর্বে রাজীব হাসানসহ আরও দুজন পুরস্কার পায়। সেই অনুষ্ঠানে বর্ষসেরা অংকুর লেখক হিসেবে পুরস্কার পায় তাজনিন মেরিন লোপা। বাবুর সাথে সখ্যতা আরও বাড়তে থাকে সেই অনুষ্ঠানের পর থেকে।

৩.
অংকুর মেলার জন্মবার্ষিকীতে এপ্রিল ১৯৯৮ সালে সেরা লেখকের পুরস্কার অর্জন করে আমাদের বন্ধু আমির খসরু সেলিম। একই বছরে অর্থাৎ ১৯৯৮ সালে যুগের আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে অংকুর মেলার সেরা লেখক হিসেবে পুরস্কার পাই আমি। আমার চেয়ে বেশি খুশি হয় বাবু। ততদিনে আমরা প্রাণের বন্ধু হয়ে গেছি। আমার সেরা লিখিয়ে হওয়ার অনুভূতি জানার জন্য বাবু নিয়ে ফেলল ছন্দে ছন্দে সাক্ষাৎকার। সেটা ছাপা হলো ২৪ সেপ্টেম্বর যুগের আলো পত্রিকাতে।

৪.
আমরা একে অপরকে সব সময় চিঠি লিখতাম। এখন হয়তো হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, ইমো, ভাইভার এবং ই-মেইলের যুগ। চিঠি লেখাটা তাই হয়ে ওঠে না। সেই দুই যুগ আমরা প্রচুর চিঠি চালাচালি করেছি। যার কতগুলো আমার সংগ্রহে রয়েছে এখনো। বাবু আমাকে কখনো মোকাদ্দেছ আবার কখনো রাব্বী লিখে সম্বোধন করত। নামের কথা বলতে গিয়ে আবার নিজের কথা বলতে হয়। আমার নামটা প্রায় সময়ই ভুল ছাপা হতো। ছড়া সাক্ষাৎকারের ছবিটাতেই মোকাদ্দেছ-এর পরিবর্তে মোকাচ্ছেদ ছাপানো হয়েছিল। শুধু তাই নয় কখনো মোসাদ্দেক কখনো মোকছেদ নামও ছাপা হতো। আর আমার মন খারাপ হয়ে যেত। আমি এখন মোকাদ্দেস লিখলেও আগে মোকাদ্দেছ লিখতাম। লুৎফর রহমান রিটন সম্পাদিত ছোটদের কাগজে আমার নাম মোকাদ্দেস ছাপল। আমি অভিযোগ করে চিঠি লিখলাম। সেই চিঠি ছাপা হলো ছোটদের কাগজে। সেই খবর বাবু আমাকে চিঠিতে লিখে জানাল। চিঠি চালাচালির মাধ্যমে একটা ফাঁকিবাজি শিখেছিলাম আমরা। আর তা হলো ডাক বিভাগে তখন ২ টাকা দামের খাম ব্যবহার হতো। এখন অবশ্য ৫ টাকা দামের খাম ব্যবহার হয়। সেই ২ টাকা দামের খাম ব্যবহার না করে আমরা নরমাল খাম অথবা পুরনো পেপারে মুড়িয়ে তা ব্যবহার করে সেখানে পঞ্চাশ পয়সার ডাকটিকেট বসিয়ে বুক পোস্ট লিখে দিতাম। সেই পঞ্চাশ পয়সায় বুক পোস্ট করা চিঠি চলে যেত গন্তব্যে। এভাবেই অনেক জায়গায় চিঠি চালাচালি করতাম। পঞ্চাশ পয়সায় আমাদের কাছেও বন্ধুদের চিঠি চলে আসত। ডাক বিভাগকে ফাঁকি দিয়ে আমরা নিজেরা সাশ্রয়ী হতাম।

৫.
সম্ভবত ২০০৬ সালে বাবুর সাথে বেড়াতে গেলাম বাবুদের গ্রামের বাড়ি। তিন রাত চার দিন। ওদের বাড়ি ওর বোনের বাড়ি আরও কোথায় কোথায় জানি ঘুরেছিলাম তার বর্ণনা আমার স্মৃতির পাতায় নেই। তবে যেখানেই গিয়েছি অতি আপনজনের মতো আতিথেয়তা আমাকে মুগ্ধ করেছে। খালাম্মা, আপা এবং ছোট ভাইদের আন্তরিকতায় কখনো মনে হয়নি আমি নতুন কোন আত্মীয়র বাড়ি বেড়াতে গিয়েছি।

৬.
বাবু অবশ্য ২০০৬-এর অনেক আগেই ঢাকা চলে গিয়েছিল। ঢাকা চলে গেলেও আমাদের পত্র যোগাযোগ চলতেই থাকল। তা নিয়মিত না হলেও পত্র চলাচল চলত। আমাদের অবস্থানের দূরত্ব বাড়লেও দূরত্ব বাড়েনি বন্ধুত্বের। দূরত্ব বাড়েনি আন্তরিকতার। মাঝে মাঝে হয়তো চিঠি লিখতে আমিই দেরিই করতাম। তার জন্য শুনতে হতো বাবুর বকুনি। সেই ঢাকা আর বাবুকে ছাড়ল না। বাবু হয়ে গেল ঢাকাবাসী। আমি ঢাকা গেলে বাবুর সাথে দেখা করব না এমনটি খুব কমই ঘটেছে। বাবু ঢাকায় যেসকল বাসায় ভাড়া ছিল তার সব বাসাতে আমার পা পড়েছে। ও যতগুলো পত্রিকায় চাকরি করেছে প্রত্যেকটা পত্রিকা অফিসে আমার যাওয়া হয়েছে। ঢাকার অলিগলি ঘোরা হয়েছে ওর সাথেই। পুরো ঢাকা শহরে এবং ঢাকার বাইরে বাবুর পরিচিতজনের অধিকাংশই এই রাব্বীকে চেনে। কারণ তারা জানে বাবুর ঘনিষ্ঠ একজন বন্ধু আছে সে রাব্বী। বাবু দূরে থাকলেও আমাদের বন্ধুত্ব বিনি সুতোর বন্ধনেও অটুট আছে থাকবে।

৭.
২০০৭ সালে জীবিকার তাগিদে চাকরিতে যোগদান করে রংপুর ছাড়ি আমিও। এরপর চাকরির ব্যস্ততায় আমার লেখালেখিটা একেবারে কমে যায়। বলা চলে লিখতামই না। সেই বাবু ফোনে এরপর ফেসবুকের মেসেঞ্জারে নানাভাবে লেখালেখি নিয়ে তাগাদা দিত। ফলে ২০১৩ সাল থেকে আবার টুকটাক করে লিখতে থাকি। আমার প্রথম বই টিনির হাতে গোলাপ বের হয়েছিল সাহস পাবলিকেশন্স থেকে। সেও বাবুর কল্যাণে। প্রথমে সে চাপ দিয়ে উপন্যাসটা হাতে নিয়েছে। এরপর সেটাকে ঘষামাজা করে প্রকাশের উপযোগী করে প্রকাশের জন্য প্রকাশকের হাতে তুলে দিয়েছে। শুধু প্রথম বই-এ নয়। আমার ৫টি বইয়ের প্রত্যেকটি প্রকাশের ক্ষেত্রে বাবুর সহযোগিতা ছিল বলার মতো।

৮.
প্রথম কথায় ফিরে আসি। সেই ১৯৯৭ থেকে ২০২৪। যার বিয়োগফল ২৭। আমাদের বন্ধুত্ব ২৬ পেরিয়ে ২৭-এ পা দিয়েছে। এই দুই যুগের বেশি সময়ের স্মৃতি এক দুই পৃষ্ঠায় লিখে শেষ করা সম্ভব নয়। যা লিখে গেলাম তাও গোছানো হলো বলে আমার কাছে মনে হলো না। আরও বেশি লিখতে পারলে হয়তো আরও অনেক কিছু স্মৃতিচারণ করতে পারতাম। সেক্ষেত্রে আমার দীর্ঘ লেখাটা অনেকে জায়গা দখল করে ফেলতে পারে বলে কিবোর্ডের বাটন চাপা বন্ধ করার চেষ্টা করছি।

বাবুর ৪০তম জন্মদিন। কাদের বাবু আর মোকাদ্দেস-এ-রাব্বী’র বন্ধুত্ব ২৭। এই বন্ধুত্ব যেন চির অটুট থাকে মহান আল্লাহতালার কাছে এই চাওয়া। এই দীর্ঘ সময়ে আমাদের কখনো তর্ক-বিতর্ক, ঝগড়া, মনোমালিন্য কোনোটাই ছুঁতে পারেনি। আগামী দিনগুলোতে এগুলো আমাদের ধারের কাছে আসবে না বলে বিশ্বাস করি।
শুভ জন্মদিন বাবু। হাজার বছর বেঁচে থেকো। তোমার কর্মকাণ্ড যেন ছড়িয়ে যাক দেশ থেকে দেশান্তরে। বরাবরই যা বলি তা আজও বলব। সবসময়ের জন্য শুভ কামনা তোমার জন্য। আকাশ সমান ভালোবাসা থাকবে সবসময়।

মোকাদ্দেস-এ-রাব্বী : কথাসাহিত্যিক

কাদের বাবু : চ্যালেঞ্জ নেওয়া এক সুদর্শন যুবকের নামজাহিদ কাজীশুনুন সবাই, একটি ছেলের অল্প-স্বল্প-গল্প বলি। তাও ধরুন এক যুগ...
19/08/2025

কাদের বাবু : চ্যালেঞ্জ নেওয়া এক সুদর্শন যুবকের নাম
জাহিদ কাজী

শুনুন সবাই, একটি ছেলের অল্প-স্বল্প-গল্প বলি। তাও ধরুন এক যুগের। আমি তখন ঢাকায় নতুন। আমার ‘কবিতার ডানা’ নামের একটি ছোটগল্পগ্রন্থ বের হয়েছে বইমেলায়। তখন তিনি ব্যস্ত তুমুল লেখা-প্রেস-বুলেটিনে। মেলায় গেলে সন্ধ্যেবেলা দেখা মেলে। ঘুরে ঘুরে বুলেটিন দেন স্টলে স্টলে। কখনোবা দাঁড়িয়ে থাকা কারো হাতে। কখনোবা নিজেই থাকেন দাঁড়িয়ে বুলেটিন হাতে। মেলায় চলা মানুষগুলোর কাছে তা দেন ইচ্ছেমতো। লেখা এবং সম্পাদনা, প্রকাশনার এ জগতে ছোটবড় সবার প্রিয় নামটি তার কাদের বাবু। লেখা নিয়ে তর্ক তুমুল। তিনিও লেখক আমিও লেখক। কখন যেন বন্ধু হলাম পেলাম না টের। তিনি আমার বন্ধু বটে, কিন্তু লেখা ও বয়সে বড়। বন্ধুর আবার বয়স কিসের? তাই তো তিনি আমায় নিয়ে লেখক-পাঠক, প্রকাশকের সঙ্গে করান পরিচয়। রাজধানীর অলিগলি পথও চেনান। সেই বুলেটিনের সম্পাদনা পর্ষদে তখন আমার জায়গা হলো। ধন্য আমি, এমনিভাবে কমবেশি সবার সঙ্গে তখন আমার সখ্য হয়। বলছি এসব এক যুগ আগের কথা।

তখন আমি ‘রেডিও আমার’ এফএমে রিপোর্টার কাম প্রেজেন্টার। থাকি তখন গুলশানের লিংক রোডে। ডে অফে মাঝেমধ্যে শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটে দেখা হতো। কথা হতো। সেখানে তার টি-শার্টের শোরুম ও কফিশপ ছিল।

ঢাকায় আমার এমনি করেই চলছে বেশ। হঠাৎ রেডিওতে বেতন নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় বাংলা ভাষার প্রথম বই পড়ার অ্যাপ ‘সেইবই’-এ আমার জন্য জবের ব্যবস্থা করলেন। এই মানুষটার কোমল হৃদয়, নরম মন। প্রকাশনা নিয়েই ভাবেন সারাক্ষণ। শরীর যেমন কুতকুতে কাজে কর্মে খুঁতখুঁতে। ঠোঁট কাটা বলেই হয়তো আড়ালে আবডালে মানুষ তার নামে কথা বলে। তার কাছেই প্রকাশনার কাজ করে ছলেবলে। কারণ তার কাজের গুণে ইতোমধ্যে ‘বাবুই’ গেছে একটা জায়গায়। প্রকাশনায় স্বতন্ত্র এক প্রতিদ্বন্দ্বী দাঁড়িয়ে গেছে। এ জগতে কমবেশি সবাই তাকে সমীহ করে। তার প্রকাশনা সম্পাদনা পর্ষদ আছে। যত বড়ই হোক না লেখক-মুখ দেখে চওড়া কারো বুক [মস্তান] দেখে সম্পাদনায় থামানো যায় না তাকে। এতে করে একদিকে যেমন সম্পাদনা হচ্ছে নিরপেক্ষ অন্যদিকে হচ্ছে নিখুঁত। প্রচুর পরিশ্রমী মানুষ। দেখলে তাকে যায় না বোঝা। মনে হবে ধনীর দুলাল আলসে কুঁড়ে, আসলে সে সুদর্শন প্রেমিক পুরুষ। বন্ধু বলে আমার নিজের চোখের দেখা, কেউ তাকে রাখলে বুকে সেও তাকে বুকেই রাখে।

নিজে যেমন লিখতে জানেন অপরকে লেখাতেও জানেন। তিনি শুধু লেখকই নন, সম্পাদকও। সাংবাদিক, একজন সুসংগঠকও। যখন তখন জানেন তিনি চ্যালেঞ্জ নিতে। ডাকলে লোকে দেয় সাড়া। যেকোনো অনুষ্ঠানে মুহূর্তে লোক আনতে পারেন। আমাকে আরডিজেএর [রংপুর বিভাগ সাংবাদিক সমিতি, ঢাকা] সদস্য হতে নিজে অনলাইনে দিয়েছেন ফরম পূরণ করে। কাজী বর্ণাঢ্যকে দিয়ে আমার ব্যঙ্গাত্মক ছড়ার বইয়ের প্রচ্ছদ দিয়েছেন আঁকিয়ে। তার প্রকাশনা বাবুই থেকে শিশুতোষ গল্পের বই করেছেন প্রকাশ। এমন মানুষ এই সমাজে জন্মে যে কালেভদ্রে। চলায় চলায় বলায় বলায় ফোন কিংবা মেসেঞ্জারে নিয়মিত হয় কথা।

আরডিজেএর ইসিতে থাকায় সভায় সভায় হয় দেখা। তার বাসায় বহুবার গিয়েছি এখন প্রকাশনার কার্যালয়েও যাচ্ছি বহুবার। হচ্ছে দেখা, হচ্ছে কথা। প্রচণ্ড শীতের এই পয়দা দিনে জানাই অফুরন্ত ভালোবাসা। লেখা এবং প্রকাশনা এগিয়ে যাক আরো সেই প্রত্যাশা।

জাহিদ কাজী : কবি ও সাংবাদিক

বাবু ভাই, শহরের বুকে আপনজনআপন অপুইটপাথরের এই শহরে আমার এক দশকের পথচলার। এই চলার পথে কাদের বাবু ভাই সবসময়ই সঙ্গে ছিলেন, আ...
19/08/2025

বাবু ভাই, শহরের বুকে আপনজন
আপন অপু

ইটপাথরের এই শহরে আমার এক দশকের পথচলার। এই চলার পথে কাদের বাবু ভাই সবসময়ই সঙ্গে ছিলেন, আছেন। আশা করি ভবিষ্যতেও থাকবেন।

২০১৪’র শেষ অথবা ২০১৫’র শুরুর দিক। তখন ছড়ার জাদুকর জগলুল হায়দার, লেখক শরীফ বিল্লাহ ভাইসহ মতিঝিলে প্রায়ই আড্ডা হতো। সেখান থেকেই ছড়াকার, লেখক-সাংবাদিক কাদের বাবুর সঙ্গে পরিচয়। ঠিক পরিচয় না, প্রথম সাক্ষাৎ বলা যায়। কেননা তার নামের সঙ্গে, লেখার সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় ছিল। তখন তিনি অনলাইন পত্রিকা বাংলামেইলে কাজ করতেন। প্রায়ই দেখা হতো, আড্ডা হতো, গল্প হতো। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে কাদের বাবু হয়ে উঠলেন প্রিয় বাবু ভাই।

সখ্যতা গড়ে উঠতে উঠতেই চলে এলো একুশে বইমেলা। বাবু ভাই আগে থেকেই বইমেলায় বুলেটিন বের করতেন। নাম ছিল টিন@টিন বইমেলা বুলেটিন। টিন@টিন নামে তার আলাদা একটা ম্যাগাজিন ছিল। সেটারই বিশেষ সংখ্যা হিসেবে বের হতো এই বুলেটিন। পরবর্তীতে তার নিজের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘বাবুই’র যাত্রা শুরুর পর তা বাবুই বইমেলা বুলেটিন হিসেবে প্রকাশ হতো। যা বলছিলাম, মেলা ঘনিয়ে আসতেই বুলেটিন বের করার তোড়জোড় শুরু করলেন বাবু ভাই। সঙ্গী হলাম আমিও। রবিউল কমল ভাই ও মেছবাহ মুকুলও সঙ্গী হলেন। আমার যেহেতু টুকটাক গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ শুরু থেকেইে জানা ছিল তাই বুলেটিনের মেকাপেও (ডিজাইন) যুক্ত হলাম। তখন আমি একটা পত্রিকাতে কাজ করতাম। যার সেটাপ হতো ফকিরাপুলে। সেখানেই রাত জেগে বুলেটিন মেকাপ শেষে প্লেট করার জন্য সিটিপিতে পাঠিয়ে বের হতে হতে রাত ভোর পার হয়ে সকাল হয়ে যেত।

এরপর মেলা ঘুরে ঘুরে বুলেটিন বিলি... এই বুলেটিন সম্পাদনা করতে গিয়ে বাবু ভাইকে দেখেছি একটা লাইনও তিনি না পড়ে দিতেন না। মেকাপের আগে পরে দুবার করে পড়তেন। যা তিনি এখনো তার প্রকাশনীর বইয়েও অব্যাহত রেখেছেন। তার প্রকাশনী থেকে প্রকাশ পাওয়া সব বইয়েরই প্রতিটা লাইন তিনি আগে পড়েন, সম্পাদনা করেন, প্রুফ দেখেন। তারপর সেটা ছাপার জন্য যায়। যা বর্তমানে খুব কম প্রকাশকই করেন। তার সম্পাদনার এই বিষয়গুলো আমার ক্যারিয়ারে অনেক প্রভাব ফেলেছে। তার থেকেই সম্পাদনার বেশিরভাগ শিখেছি। আমিও যেহেতু একই সঙ্গে লেখালেখি ও সাংবাদিকতায় যুক্ত আছি, তার থেকে পাওয়া অনেক শিক্ষাই আমার কাজে লেগেছে। এখন অবশ্য তাকে ফোন দিতে হয় না, আগে কোনো বানান সন্দেহ হলে হাতের কাছে ডিকশনারি না থাকলে বাবু ভাইকেই ফোন দিতাম। সে হিসেবে বলা চলে বাবু ভাই ছিল আমার জীবন্ত ডিকশনারি (বাংলা বানান অভিধান)।

সেই থেকে আপন হয়ে ওঠা বাবু ভাইয়ের সঙ্গে চলাফেরাও বাড়ল, বাড়ল সখ্যতা। এরই মাধ্যে বাবু ভাই নিজের প্রকাশনার কাজ শুরু করেছেন। প্রথমবার মেলার মূল অংশে স্টল বরাদ্দ পাননি। লিটলম্যাগ চত্বরে তার সম্পাদিত ছড়া আনন্দ স্টলেই বাবুই থেকে প্রকাশিত বই সাজিয়ে বসা শুরু। যেহেতু ছোটদের বই নিয়ে কাজ করছেন, আর তার প্রকাশনীর বইয়ের মানও অনেক ভালো হয়, সে হিসেবে বিক্রিও অনেক ভালো হয়েছে। অনেকাংশে মেলার মূল অংশে স্টল বরাদ্দ পাওয়াদের থেকে বেশি হয়েছে বিক্রি। এসব কথা বলার কারণ—এ ক্ষেত্রে আমি বাবু ভাইয়ের কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায় দেখেছি। বাবু ভাইয়ের একটা বদনাম ছিল স্থির হতে পারেন না কোথাও। অবশ্য বাবু ভাই এই কথাটি আমাকে বলেন সবসময়— আমি কোনো কিছুতে স্থির না। বাবু ভাইর এই কথাটি মিথ্যা না শতভাগ সত্য। যা বলছিলাম, তিনি বাবুই ফ্যাশন হাউজ করেছেন, কফিশপ করেছেন, কিন্তু কয়েক বছরের মাথায় ছেড়ে দিয়েছেন। চাকরিও পরিবর্তন করেছেন অনেকবার। অবশ্য বাবু ভাই শেষ পর্যন্ত স্থির হয়েছেন। এক দশক ধরে সুনাম ও সফলতার সঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছেন বাবুই’র কার্যক্রম।

যাই হোক, বাবু ভাইয়ের প্রকাশনা শুরুর পর থেকে তার তোপখানা রোডের অফিসে আড্ডা হতো। সুযোগ পেলে চলে যেতাম। আড্ডা দিতাম, গল্প করতাম। আর আমার টমটম টাইপের একটা বাইক ছিল। তাতে চেপে বাবু ভাই আমাকে নিয়ে অনেক লেখকের সঙ্গে দেখা করতে যেতেন। অনেকের কাছ থেকে পাণ্ডুলিপি নিয়ে আসতেন। আমিও যেহেতু লিখি, কয়েকটি বইও বের হয়েছে। আমার বিষয়টা খারাপ লাগল যে, বাবু ভাই আমাকে নিয়ে সবার কাছে পাণ্ডুলিপি আনতে যায়। অথচ আমার কাছে একটা পাণ্ডুলিপি চায় না। একদিন কথাটা বলেই ফেললাম তাকে। উনি বললেন, তোমার লেখা হয় না। আমি যেমন চাই তুমি তেমন লেখো না। আমি বললাম, কেমন চান বলেন। উনি কিছু ধারণা দিলেন। সঙ্গে দিলেন সাত দিনের সময়। আমিও নিলাম চ্যালেঞ্জ।
এর তিনদিন পর দিলাম পাণ্ডুলিপি। বাবু ভাই তো অবাক! উনি বলেই বসলেন, এ লেখা কি সত্যিই তুমি লিখেছো! এরপর সেই পাণ্ডুলিপি বের হলো বই আকারে ‘সাগরে গেল মিউ ব্যাঙ’।

এভাবে চলতে চলতে একসময় আমি অনুভব করলাম এই শহরের বুকে আমার আপনজন যারা আছেন। তাদের মধ্যে দু তিনজনের মধ্যেই বাবু ভাই একজন হয়ে উঠেছেন। বলতে গেলে এই শহরের আমার বন্ধুবান্ধব তেমন নেই বললেই চলে। আমার কোথাও যাওয়ার থাকলে ধানমণ্ডি থেকে পল্টন বাবু ভাইয়ের অফিস পর্যন্তই। ক্যারিয়ার থেকে শুরু করে সব বিষয়ে বাবু ভাইয়ের সঙ্গে আলোচনা বা পরামর্শ না করলে যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তাই এখন পর্যন্ত যত যা কিছুই করেছি সব কিছুতেই তার সঙ্গে আলোচনা-পরামর্শ করেই করেছি। অজান্তে-অগোচরেই বাবু ভাই হয়ে উঠলেন শহরের বুকে অভিভাবক, এক আপনজন।

জগলুল ভাই আমেরিকা চলে যাওয়ার পর সেটা আরও বেশি অনুভব করলাম। জগলুল ভাই ছিল আমাদের সবার অভিভাবকের স্থানে। আমি সেই শূন্যতা বাবু ভাইকে দিয়ে কাটালেও বাবু ভাই কাকে দিয়ে কাটিয়েছেন তা জানা নেই।

বাবু ভাই একটা ভরসার জায়গা। পকেটে টাকা না থাকলে তার কাছ থেকে চেয়ে নেওয়া যায়। অনেক সময় বলতেও হয় না। নিজ থেকেই বুঝে দিয়ে দেন পাঁচশ-হাজার টাকা। আর শুধু অভিভাবকের স্থানেই নয়, বাবু ভাই আমার সিনিয়র বন্ধুও বটে। তার কাছে মন খুলে সব শেয়ার করা যায়, সুখ-দুখের গল্প করা যায়। একসঙ্গে ঘুরতে যাওয়া যায়। মোটকথা প্রাণ খুলে চলা যায়।

অনেক কথায় আসলে লিখতে পারতাম। লিখে শেষও করা যাবে না। আর আমার একটা বদঅভ্যাস— আমি বেশি বড় করে কিছু লিখতে পারি না। অলসতা ঘিরে ধরে। এখনও ঠিক তেমনই লাগছে। আসলে এত এত গল্প, এক দশকের পথচলার গল্প কী আর দুচার পাতায় শেষ করা যায়।
যাই হোক, সর্বোপরি বাবু ভাইয়ের মঙ্গল কামনা করি। সুস্থতা ও সুন্দর জীবন প্রত্যাশা করি। আর চাই তার স্বপ্ন পূরণ হোক।

আপন অপু : লেখক ও সাংবাদিক, ধানমণ্ডি, ঢাকা।

শৈশবের দিনগুলি আজিহা নাসিব কুমকুমরংপুরে আমাদের অনেক আনন্দমুখর শৈশব কেটেছে। তোমার অনেক গুণের মধ্যে একটি হলো বন্ধু হিসেবে ...
19/08/2025

শৈশবের দিনগুলি
আজিহা নাসিব কুমকুম

রংপুরে আমাদের অনেক আনন্দমুখর শৈশব কেটেছে। তোমার অনেক গুণের মধ্যে একটি হলো বন্ধু হিসেবে তুমি খুব ভালো। ভদ্র, হাসিখুশি ও মিশুক স্বভাবের হওয়ায় বড়রাও তোমাকে স্নেহ করতেন।

কত স্মৃতিময় মধুর সময় কেটেছে শৈশবের দিনগুলিতে। আমাদের খেলার সঙ্গী কামরাঙা গাছ আর উঠান। ছোটবেলায় আমরা একসাথে ব্যাডমিন্টন, সাতচাড়া, বোমবাস্টিং থেকে কত রকম খেলাই না খেলতাম। এখনও সেইসব দিনের কথা মনে পড়লে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ি। স্কুল থেকে ফিরে আমাদের খেলাধুলা শুরু হতো। সেটা চলত দুপুর অবধি। কখনো কখনো হাই ভলিউমে ক্যাসেট প্লেয়ারে গান ছেড়ে আমরা ব্যাডমিন্টন খেলতাম। সেইসব দিনগুলি সত্যিই কত মধুর ছিল। এখনকার ছেলেমেয়েরা তো অনেক কিছু জানেই না প্রযুক্তির কারণে।

জানো বাবু, রংপুর থেকে যখন চলে আসি তোমার দেয়া উপহার হিসেবে বই এখনও আছে। তুমি যে লেখালেখি করো এটা দেখে ভালো লাগে। দোয়া করি, তোমার সুনাম সুখ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ুক। ভালো থেকো। আনন্দে কাটুক তোমার আগামীর দিন।

সরল স্বীকারোক্তি তকীউদ্দিন মুহাম্মাদ আকরামুল্লাহ লেখক, প্রকাশক ও সম্পাদক কাদের বাবু। বাবু ভাই বলেই ডাকি। আপন অপুর মাধ্যম...
19/08/2025

সরল স্বীকারোক্তি
তকীউদ্দিন মুহাম্মাদ আকরামুল্লাহ

লেখক, প্রকাশক ও সম্পাদক কাদের বাবু। বাবু ভাই বলেই ডাকি। আপন অপুর মাধ্যমেই তার সাথে আমার পরিচয়। লেখক ও সংবাদকর্মী আপন অপু একজন ভালো ডিজাইনারও। তাই অপুকে দিয়ে একটি ম্যাগাজিনের ডিজাইন করার উদ্যোগ নিই। বাবু ভাইয়ের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বাবুই কার্যালয়ে সেই ম্যাগাজিনটির ডিজাইন করে অপু। সে সুবাদে বাবু ভাইয়ের সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বাবুই নিজেদের বই প্রকাশের পাশাপাশি অন্যদের বই-ম্যাগাজিন-স্যুভেনিয়র থেকে সব কাজই নির্ভুলভাবে করার চেষ্টা করা হয়। যা আমাকে সত্যিই মুগ্ধ করে। ফলে আমাদের কিছু কাজ বাবুই থেকে করি। পরবর্তীতে আমার রেফারেন্সেও তাকে অনেক কাজ করতে দেখেছি তার কাজের সিনসিয়ারিটি ও দক্ষতার কারণে।

শুধু ভুল সংশোধনই নয়, লেখা সম্পাদনার কাজও তিনি করে দেন। মেকআপ করার সময় ডিজাইনারের পাশে থেকে তিনি দিকনির্দেশনা দেন। ফলে একটা কাজ সুন্দর ও স্মার্ট হয়ে যায়।

বাবুই থেকে একটি ম্যাগাজিনের ডিজাইন করাতে এসে বাবু ভাইয়ের এই বিশেষ বিষয়টি আমার দৃষ্টিতে এলো। এরপর কি আর বাবু ভাইকে ছাড়া যায়! এখন যেকোনো বই, পত্রিকা-ম্যাগাজিন ডিজাইন করার ক্ষেত্রে বাবুইয়ে করানোটাই আমি উত্তম মনে করি। এতে আমি শতভাগ নিশ্চিন্ত মনে থাকি। কেননা কাজটি শতভাগ ভালো হওয়ার জন্য বাবু ভাই তো তার মেধা, মনন এবং শ্রম দেন অকুণ্ঠভাবে। তার জন্মদিন উপলক্ষে জানাই অনেক শুভ কামনা ও দোয়া।

তকীউদ্দিন মুহাম্মাদ আকরামুল্লাহ : নির্বাহী সম্পাদক, খোঁজখবর

Address

97/1 Sabujbag
Dhaka
1214

Telephone

+8801715331098

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Kader Babu posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Kader Babu:

Share

Category