17/09/2025
ইন্দোনেশিয়ান সিনেমা “সোর” নিয়ে সোরগোল
ঘুম ভাঙলো, পাশে ভবিষ্যতের স্ত্রী!
ভাবুন, এক সকালে চোখ মেলেই দেখলেন—বিছানার পাশে বসে আছেন এক নারী। তিনি দাবি করলেন, তিনি আপনার স্ত্রী। অথচ আপনি এখনো বিয়ে করেননি। আরও চমক, তিনি এসেছেন ভবিষ্যত থেকে। এখানেই শুরু ইন্দোনেশিয়ান সিনেমা Sore: Wife from the Future।
গল্প:-
জনাথান একজন তরুণ ফটোগ্রাফার। দায়িত্বজ্ঞানহীন, নিজের জীবন নিয়ে উদাসীন। হঠাৎই আসে সোরে। তার দাবি—সে ভবিষ্যত থেকে এসেছে, এবং জনাথানের স্ত্রী। সোরের উদ্দেশ্য একটাই—জনাথানকে বদলানো। অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস ছাড়ানো, দায়িত্বশীল করা, আর তাকে নতুনভাবে জীবনকে গ্রহণ করতে শেখানো। কিন্তু বারবার সময়ের লুপেও দেখা যায়—মানুষকে বদলানো সহজ নয়। সিনেমার সংলাপেই পরিষ্কার হয় দর্শনটা: “তিনটি জিনিস বদলানো যায় না—অতীত, মৃত্যু, আর বেদনা।”
অভিনয় ও নির্মাণ:-
শিলা দারা আইশা (সোরে) অনবদ্য। তার চোখে ভরসা, কণ্ঠে দৃঢ়তা। ডিওন উইয়োকো (জনাথান) চরিত্রকে বাস্তব করে তুলেছেন। লোকেশনই আরেক শক্তি—ক্রোয়েশিয়া, ফিনল্যান্ড আর ইন্দোনেশিয়ার মনোরম দৃশ্য ছবিটিকে ভিজ্যুয়ালি আলাদা উচ্চতায় নিয়ে গেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক গল্পের আবেগকে আরও গভীর করেছে।
ব্যবসা:-
মুক্তির পর ইন্দোনেশিয়ায় ছবিটি আলোড়ন তোলে। প্রায় ৩০ লাখ দর্শক সিনেমা হলে দেখেছে। বক্স অফিসে এটিকে বড় সাফল্য ধরা হচ্ছে। এমন এক সময়ে, যখন হরর আর কমেডিই বাজারে আধিপত্য করছে, সেখানে একটি রোমান্টিক সায়েন্স-ফ্যান্টাসি ছবির এমন সাফল্য নতুন দিক দেখাচ্ছে।
অস্কার যাত্রা:-
সবচেয়ে বড় খবর—এই সিনেমা ইন্দোনেশিয়ার পক্ষ থেকে ২০২৬ সালের অস্কারে Best International Feature Film বিভাগে অফিসিয়াল এন্ট্রি। মনোনয়ন মিলবে কি না, সেটা সময় বলবে। কিন্তু ইতিমধ্যেই Sore আন্তর্জাতিক আলোচনায় জায়গা করে নিয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার সিনেমা এখন:-
২০২৪ সালে দেশটিতে ৫০ মিলিয়নের বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে। Satan’s Slaves বা KKN di Desa Penari–এর মতো হরর-থ্রিলার বাজার দখল করে রেখেছে। তবে Sore দেখিয়েছে—রোমান্স, সায়েন্স ফ্যান্টাসি কিংবা দর্শনধর্মী গল্পেরও দর্শক আছে। ইঙ্গিত স্পষ্ট—ইন্দোনেশিয়ার সিনেমা শুধু স্থানীয় নয়, বৈশ্বিক মঞ্চের জন্যও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।